ভয়াবহ রূপে ডেঙ্গু, ‘এডিস’ নিয়ন্ত্রণে আমদানি হচ্ছে ‘জিনোটাইপ’ মশা by জাকিয়া আহমেদ
ডেঙ্গু
ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর সংবাদও পাওয়া গেছে। রাজধানীর
হাসপাতালগুলো ভরে গেছে ডেঙ্গু রোগীতে। চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছেন ভিড়
সামলাতে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এবারের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর
সংখ্যা গত কয়েক বছরের তুলনায় অধিক। তারা একে ডেঙ্গু এপিডেমিক হিসেবে উল্লেখ
করেছেন, ইংরেজি ‘এপিডেমিক’ এর বাংলা অর্থ ‘মহামারি’।
একাধিক সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে জানায়, চলতি সপ্তাহেই ডেঙ্গুকে মহামারি হিসেবে উল্লেখ করতে পারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানী ঢাকা প্রবলভাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। আর বর্তমানে যে অবস্থাটি রয়েছে, সেটিকে সরাসরি মহামারি না বললেও এর কাছাকাছি বলছেন তারা। তাদের ভাষ্যমতে, ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। যা আক্রান্ত হবার তা হয়েছে, এখনও যদি প্রতিরোধ করা না যায়, তাহলে এর ব্যাপকতা কোথায় গিয়ে থামছে সে বিষয়ে চিন্তিত তারা। এদিকে, সিটি করপোরেশনকে মশা নিধনে সহযোগিতা করতে বিদেশ থেকে ‘জিনোটাইপ’ মশা আমদানির মাধ্যমে ডেঙ্গুবাহী ‘এডিস’ মশা নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহাখালীর বেসরকারি ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এক বছর আট মাস বয়সী সৌম্য বিশ্বাস। বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
তিনি বলেন, ‘শিশুটিকে পিআইসিইউতে (পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) রাখা হলেও অবস্থা ছিল খুব ক্রিটিক্যাল। তাকে আরেকটি হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে এখানে ভর্তি করা হয়েছিল। শিশুটি ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে (মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে) মারা যায়। এনিয়ে এই হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট চার শিশুর মৃত্যু হলো।
গত শনিবার (২০ জুলাই) রাজধানীর বনশ্রীর আল-রাজি ইসলামিয়া হাসপাতালে মারা যায় ৩৪ দিনের শিশু মুসা মাহমুদ। শুধু এই দুই হাসপাতালেই পাঁচ শিশু মারা গেছে ডেঙ্গুতে।
এছাড়াও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪০৬ জন। এছাড়া মিটফোর্ড হাসপাতালে ২১১ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৬৫ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৩০ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১৪২ জন এবং মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১২৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বাংলা ট্রিবিউনের অনুসন্ধানে এ পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যুর সত্যতা পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকার সরকারি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে কোনও সিট খালি নেই। সিট না পেয়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ফ্লোরিং করছেন অনেক রোগী, অনেকেই অপেক্ষা করছেন সিটের আশায়। কোনও কোনও পরিবারের একাধিক সদস্য ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কেবল ঢাকাতেই নয়,রাজধানী ঢাকা ছাড়িয়ে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট ও বরিশালেও।
স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই-মাহবুব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাকা শহর এখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। ডেঙ্গুর যে প্রাদুর্ভাব, তাতে করে একটি কঠিন ক্রাইসিসের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।’
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, আমাদের দেশে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। এবার আর্লি ব্রেকআউট হয়েছে বলেই এই সময়ে এতো বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। তাই স্বাভাবিক যে নিয়ম রয়েছে, সেই নিয়ম অনুযায়ী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে, সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
তবে অধিদফতর ডেঙ্গুর জীবানুবাহী ‘এডিস’ মশা নিয়ন্ত্রণে ‘জিনোটাইপ’ মশা আমদানির কথা ভাবছে বলেও জানিয়েছেন ডা. আবুল কালাম আজাদ। মঙ্গলবার সকালে এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিদের আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আলোচনায় আমরা তাদের জিনোটাইপ মশা আমদানি, বাংলাদেশে এর কার্যকারিতা এবং সম্ভাব্য প্রয়োজনীয়তা যাচাইয়ে সহযোগিতার কথা বলেছি, তারাও আমাদের এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।’
‘জিনোটাইপ’ মশা কী করে ‘এডিস’ মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে জানতে চাইলে ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, এই মশা মূলত পুরুষ। এসব মশা ছেড়ে দেওয়া হলে তারা এডিস স্ত্রী মশার সঙ্গে মিলিত হয়, সেই স্ত্রী এডিস মশা ডিম পারলেও সে মশা থেকে তখন লার্ভা হয় না। ধীরে ধীরে এভাবেই এডিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর কার্যকারিতা পাওয়া গেছে। এর আগে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বেশ কিছু দেশে এভাবে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।
একাধিক সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে জানায়, চলতি সপ্তাহেই ডেঙ্গুকে মহামারি হিসেবে উল্লেখ করতে পারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানী ঢাকা প্রবলভাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। আর বর্তমানে যে অবস্থাটি রয়েছে, সেটিকে সরাসরি মহামারি না বললেও এর কাছাকাছি বলছেন তারা। তাদের ভাষ্যমতে, ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। যা আক্রান্ত হবার তা হয়েছে, এখনও যদি প্রতিরোধ করা না যায়, তাহলে এর ব্যাপকতা কোথায় গিয়ে থামছে সে বিষয়ে চিন্তিত তারা। এদিকে, সিটি করপোরেশনকে মশা নিধনে সহযোগিতা করতে বিদেশ থেকে ‘জিনোটাইপ’ মশা আমদানির মাধ্যমে ডেঙ্গুবাহী ‘এডিস’ মশা নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহাখালীর বেসরকারি ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এক বছর আট মাস বয়সী সৌম্য বিশ্বাস। বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
তিনি বলেন, ‘শিশুটিকে পিআইসিইউতে (পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) রাখা হলেও অবস্থা ছিল খুব ক্রিটিক্যাল। তাকে আরেকটি হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে এখানে ভর্তি করা হয়েছিল। শিশুটি ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে (মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে) মারা যায়। এনিয়ে এই হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট চার শিশুর মৃত্যু হলো।
গত শনিবার (২০ জুলাই) রাজধানীর বনশ্রীর আল-রাজি ইসলামিয়া হাসপাতালে মারা যায় ৩৪ দিনের শিশু মুসা মাহমুদ। শুধু এই দুই হাসপাতালেই পাঁচ শিশু মারা গেছে ডেঙ্গুতে।
এছাড়াও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪০৬ জন। এছাড়া মিটফোর্ড হাসপাতালে ২১১ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৬৫ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৩০ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১৪২ জন এবং মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১২৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বাংলা ট্রিবিউনের অনুসন্ধানে এ পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যুর সত্যতা পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকার সরকারি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে কোনও সিট খালি নেই। সিট না পেয়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ফ্লোরিং করছেন অনেক রোগী, অনেকেই অপেক্ষা করছেন সিটের আশায়। কোনও কোনও পরিবারের একাধিক সদস্য ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কেবল ঢাকাতেই নয়,রাজধানী ঢাকা ছাড়িয়ে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট ও বরিশালেও।
স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই-মাহবুব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাকা শহর এখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। ডেঙ্গুর যে প্রাদুর্ভাব, তাতে করে একটি কঠিন ক্রাইসিসের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।’
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, আমাদের দেশে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। এবার আর্লি ব্রেকআউট হয়েছে বলেই এই সময়ে এতো বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। তাই স্বাভাবিক যে নিয়ম রয়েছে, সেই নিয়ম অনুযায়ী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে, সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
তবে অধিদফতর ডেঙ্গুর জীবানুবাহী ‘এডিস’ মশা নিয়ন্ত্রণে ‘জিনোটাইপ’ মশা আমদানির কথা ভাবছে বলেও জানিয়েছেন ডা. আবুল কালাম আজাদ। মঙ্গলবার সকালে এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিদের আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আলোচনায় আমরা তাদের জিনোটাইপ মশা আমদানি, বাংলাদেশে এর কার্যকারিতা এবং সম্ভাব্য প্রয়োজনীয়তা যাচাইয়ে সহযোগিতার কথা বলেছি, তারাও আমাদের এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।’
‘জিনোটাইপ’ মশা কী করে ‘এডিস’ মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে জানতে চাইলে ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, এই মশা মূলত পুরুষ। এসব মশা ছেড়ে দেওয়া হলে তারা এডিস স্ত্রী মশার সঙ্গে মিলিত হয়, সেই স্ত্রী এডিস মশা ডিম পারলেও সে মশা থেকে তখন লার্ভা হয় না। ধীরে ধীরে এভাবেই এডিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর কার্যকারিতা পাওয়া গেছে। এর আগে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বেশ কিছু দেশে এভাবে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।
No comments