দেশে ফেরার অপেক্ষায় প্রিয়া সাহা -শিতাংশু গুহ
এক
সাংবাদিক কল করে জানতে চান, ‘প্রিয়া সাহা কি কানাডা চলে যাচ্ছেন?’ বললাম,
‘প্রিয়া সাহা আমেরিকায় আছেন, দেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেই শুনছি।
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ‘সবুজ সংকেত’ পেলে চলে যাবেন।’
ইতিমধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছেন। বলেছেন, গ্রেপ্তার নয়,
আমরা প্রিয়া সাহাকে সহায়তা দেবো। অন্য মন্ত্রীদের সুর নরম।
শেখ হাসিনা নির্দেশ দেয়ার আগ পর্যন্ত বড় বড় নেতারা স্রোতের টানে গা ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। তাদের অনেকের কথাবার্তা ছিল চেয়ারের সঙ্গে বেমানান। এখন তারা ‘এবাউট টার্ন’ করছেন শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে নিয়ে একদা কথা বেরিয়েছিল যে, ভারতীয় পার্লামেন্টে শুধু একজন পুরুষ। একই কথা এখন বলা যায়, আমাদের সংসদে শুধু একজন পুরুষ।
তিনি শেখ হাসিনা। বুদ্ধিজীবীরা আবার প্রমাণ করেছেন, তারা উদার তো ননই, স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ক্ষমতাও নেই? ব্যতিক্রম আছেন, সেটা ততটা দৃশ্যমান নয়।
বরং ইয়ং কিছু ছেলেমেয়ে মুক্ত ফোরামে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন।
প্রিয়া ইস্যুতে এবার দেশের সাম্প্রদায়িক কুৎসিত চেহারাটি আবার বীভৎসভাবে দেখা গেছে। এমনিতে ক্রিকেট খেলার সময় সেটা দেখা যায়। তখন অনেকে বলেন, খেলার মধ্যে রাজনীতি টেনে আনা ঠিক নয়। এখন তারা কি বলবেন? বিভিন্ন সময়ে একেকটা ঘটনায় অনেকের ‘আসল চেহারা’ বেরিয়ে পড়ে। প্রিয়া সাহা অনেক বর্ণচোরা প্রোগ্রেসিভের আসল রূপ উন্মোচন করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ঘরানার একটি অংশ মৌলবাদীদের সুরে কথা বলেছেন। শফি হুজুর, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন প্রমুখ মৌলবাদী গ্রুপ প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি কোনো মন্তব্য করেনি।
দেশে ঐক্য পরিষদ প্রিয়া সাহাকে বরখাস্ত করেছে। এলাকার লোকজন বিক্ষোভ করেছে। তার এনজিও ‘শাড়ি’র পঁচিশ জন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। আবদুল গাফফার চৌধুরী ‘হতাশাব্যঞ্জক’ একটি কলাম লিখেছেন। ড. আবুল বারাকাত নিজের গবেষণার বিপক্ষে কথা বলেছেন। অর্থাৎ সবাই প্রিয়া সাহার সঙ্গে দূরত্ব রাখতে চেষ্টা করছেন। ঐক্য পরিষদে ক্যু হয়েছে সরকারকে খুশি করার জন্য। বিক্ষোভ বা পদত্যাগের ঘটনার পেছনে কারো ইন্ধন রয়েছে। আর মিডিয়ার একাংশ ‘নিউজের’ বদলে ‘গুজব’ প্রকাশ করছে। টিভি’র কয়েকটি ‘টকশো’র কথাবার্তা, ‘রাজা যত বলে, পারিষদ বলে তার শতগুণ?’
সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া ভালো বলেছেন, ‘যেখানে অনেক দেশের প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি ঢুকতে পারেন না, সেখানে প্রিয়া সাহা ঢুকলেন কীভাবে?’ বিষয়টি সেখানেই? অনেকের গা-জ্বালার কারণ এটা। তারা জানেন প্রিয়া সাহা অসত্য কিছু বলেননি, রাষ্ট্র বা সরকারের বিরুদ্ধেও নন, এমনকি ঢালাওভাবে মুসলমানদের বিরুদ্ধেও নন, তিনি বলেছেন, ‘মৌলবাদী মুসলিমরা’ তার ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে। প্রিয়া সাহা বললেন, মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে, অন্যরা ক্ষেপলেন কেন?
প্রিয়া সাহা তার অপ্রিয় সত্য কথার জন্য দেশে ব্যাপকভাবে নিন্দিত। একইভাবে সাহসী ভূমিকার জন্য তিনি বাংলাদেশের দুই কোটি সংখ্যালঘু এবং বহির্বিশ্বে নন্দিত, অনেকে তার সাহসের ভূয়সী প্রশংসা করছেন। প্রিয়া সাহা দুই কোটি সংখ্যালঘুর মনের কথা বলেছেন। এটি বুঝতে হবে, ‘যে হাত মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে করমর্দন করতে পারে, সেই হাতকে ততটা দুর্বল ভাবার কোনো কারণ নেই।’ তিনি দেশপ্রেমিক, তাই দেশে থাকার আগ্রহের কথা বেশ জোরালোভাবেই প্রকাশ করেছেন।
প্রিয়া সাহার বক্তব্য দেশে- প্রবাসে সংখ্যালঘু আন্দোলনকে বেগবান করবে। দেশে সংখ্যালঘুদের দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নে সরকার যত্নবান হবেন। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়, বিশ্ব এতকাল তা জানতো, মানতো না। হিন্দু বা অন্যান্য সংখ্যালঘু স্লো-জেনোসাইডের কথা বারবার উচ্চারিত হলেও প্রিয়া সাহার ৩৭ মিলিয়ন সংখ্যালঘু ‘ডিসএপেয়ার’ শব্দটি এর সত্যতা নিশ্চিত করে দিয়েছে। প্রিয়া সাহা নিজে ‘ডিসএপেয়ার’ শব্দটি’র ব্যাখ্যা দিয়েছেন। অনেকের মতে, এটি ‘মিসিং’ হতে পারতো? ঘটনা যাই হোক, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন আন্তর্জাতিকরণ হয়ে গেছে। মিসিং জনসংখ্যা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে, সংখ্যালঘু ‘হারিয়ে যাচ্ছেন’ এই তত্ত্ব প্রিয়া সাহা প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন।
কলকাতার দৈনিক যুগশঙ্খ ২৩শে জুলাই ব্যানার হেডিং করেছে, ‘হারিয়ে যাওয়া ৩ কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু ভারতেই আছেন।’ দেশে প্রবাসে কিছু মিডিয়া একটি ছবি দেখিয়ে প্রিয়া সাহার সঙ্গে ইসরাইলী লবির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আবিষ্কার করে ফেলেছে। এর মধ্যে তারা মেহেন্দি সাফাদি’র যোগাযোগ টেনে বের করে নিয়ে আসে। ছবিতে দেখা যায়, ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাঁড়িয়ে কথা বলছেন, পেছনে বসে প্রিয়া সাহা। ভাগ্য ভালো, দৈনিক কালের কণ্ঠ বলে দিয়েছে যে, ছবিটি স্টেট ডিপার্টমেন্টের। তদুপরি, প্রিয়াকে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যে পোশাকে দেখা করেছেন, ছবিতে একই পোশাক পরিহিতা ছিলেন। অর্থাৎ তিনি হয়তো তখন ওভাল অফিসে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন? সুতরাং, ইহুদী ষড়যন্ত্রটাও বুমেরাং হয়ে গেল! প্রিয়া সাহার কপালটাই ভালো, কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে দিচ্ছে না।
শেখ হাসিনা নির্দেশ দেয়ার আগ পর্যন্ত বড় বড় নেতারা স্রোতের টানে গা ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। তাদের অনেকের কথাবার্তা ছিল চেয়ারের সঙ্গে বেমানান। এখন তারা ‘এবাউট টার্ন’ করছেন শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে নিয়ে একদা কথা বেরিয়েছিল যে, ভারতীয় পার্লামেন্টে শুধু একজন পুরুষ। একই কথা এখন বলা যায়, আমাদের সংসদে শুধু একজন পুরুষ।
তিনি শেখ হাসিনা। বুদ্ধিজীবীরা আবার প্রমাণ করেছেন, তারা উদার তো ননই, স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ক্ষমতাও নেই? ব্যতিক্রম আছেন, সেটা ততটা দৃশ্যমান নয়।
বরং ইয়ং কিছু ছেলেমেয়ে মুক্ত ফোরামে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন।
প্রিয়া ইস্যুতে এবার দেশের সাম্প্রদায়িক কুৎসিত চেহারাটি আবার বীভৎসভাবে দেখা গেছে। এমনিতে ক্রিকেট খেলার সময় সেটা দেখা যায়। তখন অনেকে বলেন, খেলার মধ্যে রাজনীতি টেনে আনা ঠিক নয়। এখন তারা কি বলবেন? বিভিন্ন সময়ে একেকটা ঘটনায় অনেকের ‘আসল চেহারা’ বেরিয়ে পড়ে। প্রিয়া সাহা অনেক বর্ণচোরা প্রোগ্রেসিভের আসল রূপ উন্মোচন করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ঘরানার একটি অংশ মৌলবাদীদের সুরে কথা বলেছেন। শফি হুজুর, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন প্রমুখ মৌলবাদী গ্রুপ প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি কোনো মন্তব্য করেনি।
দেশে ঐক্য পরিষদ প্রিয়া সাহাকে বরখাস্ত করেছে। এলাকার লোকজন বিক্ষোভ করেছে। তার এনজিও ‘শাড়ি’র পঁচিশ জন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। আবদুল গাফফার চৌধুরী ‘হতাশাব্যঞ্জক’ একটি কলাম লিখেছেন। ড. আবুল বারাকাত নিজের গবেষণার বিপক্ষে কথা বলেছেন। অর্থাৎ সবাই প্রিয়া সাহার সঙ্গে দূরত্ব রাখতে চেষ্টা করছেন। ঐক্য পরিষদে ক্যু হয়েছে সরকারকে খুশি করার জন্য। বিক্ষোভ বা পদত্যাগের ঘটনার পেছনে কারো ইন্ধন রয়েছে। আর মিডিয়ার একাংশ ‘নিউজের’ বদলে ‘গুজব’ প্রকাশ করছে। টিভি’র কয়েকটি ‘টকশো’র কথাবার্তা, ‘রাজা যত বলে, পারিষদ বলে তার শতগুণ?’
সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া ভালো বলেছেন, ‘যেখানে অনেক দেশের প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি ঢুকতে পারেন না, সেখানে প্রিয়া সাহা ঢুকলেন কীভাবে?’ বিষয়টি সেখানেই? অনেকের গা-জ্বালার কারণ এটা। তারা জানেন প্রিয়া সাহা অসত্য কিছু বলেননি, রাষ্ট্র বা সরকারের বিরুদ্ধেও নন, এমনকি ঢালাওভাবে মুসলমানদের বিরুদ্ধেও নন, তিনি বলেছেন, ‘মৌলবাদী মুসলিমরা’ তার ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে। প্রিয়া সাহা বললেন, মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে, অন্যরা ক্ষেপলেন কেন?
প্রিয়া সাহা তার অপ্রিয় সত্য কথার জন্য দেশে ব্যাপকভাবে নিন্দিত। একইভাবে সাহসী ভূমিকার জন্য তিনি বাংলাদেশের দুই কোটি সংখ্যালঘু এবং বহির্বিশ্বে নন্দিত, অনেকে তার সাহসের ভূয়সী প্রশংসা করছেন। প্রিয়া সাহা দুই কোটি সংখ্যালঘুর মনের কথা বলেছেন। এটি বুঝতে হবে, ‘যে হাত মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে করমর্দন করতে পারে, সেই হাতকে ততটা দুর্বল ভাবার কোনো কারণ নেই।’ তিনি দেশপ্রেমিক, তাই দেশে থাকার আগ্রহের কথা বেশ জোরালোভাবেই প্রকাশ করেছেন।
প্রিয়া সাহার বক্তব্য দেশে- প্রবাসে সংখ্যালঘু আন্দোলনকে বেগবান করবে। দেশে সংখ্যালঘুদের দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নে সরকার যত্নবান হবেন। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়, বিশ্ব এতকাল তা জানতো, মানতো না। হিন্দু বা অন্যান্য সংখ্যালঘু স্লো-জেনোসাইডের কথা বারবার উচ্চারিত হলেও প্রিয়া সাহার ৩৭ মিলিয়ন সংখ্যালঘু ‘ডিসএপেয়ার’ শব্দটি এর সত্যতা নিশ্চিত করে দিয়েছে। প্রিয়া সাহা নিজে ‘ডিসএপেয়ার’ শব্দটি’র ব্যাখ্যা দিয়েছেন। অনেকের মতে, এটি ‘মিসিং’ হতে পারতো? ঘটনা যাই হোক, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন আন্তর্জাতিকরণ হয়ে গেছে। মিসিং জনসংখ্যা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে, সংখ্যালঘু ‘হারিয়ে যাচ্ছেন’ এই তত্ত্ব প্রিয়া সাহা প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন।
কলকাতার দৈনিক যুগশঙ্খ ২৩শে জুলাই ব্যানার হেডিং করেছে, ‘হারিয়ে যাওয়া ৩ কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু ভারতেই আছেন।’ দেশে প্রবাসে কিছু মিডিয়া একটি ছবি দেখিয়ে প্রিয়া সাহার সঙ্গে ইসরাইলী লবির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আবিষ্কার করে ফেলেছে। এর মধ্যে তারা মেহেন্দি সাফাদি’র যোগাযোগ টেনে বের করে নিয়ে আসে। ছবিতে দেখা যায়, ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাঁড়িয়ে কথা বলছেন, পেছনে বসে প্রিয়া সাহা। ভাগ্য ভালো, দৈনিক কালের কণ্ঠ বলে দিয়েছে যে, ছবিটি স্টেট ডিপার্টমেন্টের। তদুপরি, প্রিয়াকে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যে পোশাকে দেখা করেছেন, ছবিতে একই পোশাক পরিহিতা ছিলেন। অর্থাৎ তিনি হয়তো তখন ওভাল অফিসে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন? সুতরাং, ইহুদী ষড়যন্ত্রটাও বুমেরাং হয়ে গেল! প্রিয়া সাহার কপালটাই ভালো, কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে দিচ্ছে না।
No comments