গণপিটুনিতে নিহত ৮ জনের কেউই ছেলেধরা ছিল না -পুলিশ প্রধান
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারী |
বাংলাদেশে পদ্মা সেতুতে মাথা লাগবে -
এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহতদের মধ্যে কেউ
ছেলেধরা ছিল না বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বুধবার রাজধানী ঢাকার পুলিশ
হেডকোয়াটার্সে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাভেদ
পাটোয়ারী বলেন, "দুঃখজনক হলেও সত্যি, গণপিটুনির প্রতিটি ঘটনা আমরা
বিশ্লেষণ করেছি। গণপিটুনির শিকার হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের কেউই অপহরণকারী ছিল
না, কেউই ছেলেধরা ছিল না।"
সাংবাদিকদের মি. পাটোয়ারী জানান,
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরণের বিভ্রান্তির সৃষ্টির মাধ্যমে গত কয়েকদিনে
আট জনের প্রাণহানি হয়েছে। "এ ধরণের ঘটনা পুলিশ সদর দপ্তরের নজরে আসার
সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।"
তিনি বলেন, নেত্রকোনায় গত ১৮ তারিখে শিশু সজীবের কাটা মাথা যার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিলো সেই রবিন মাদকাসক্ত ছিল।
"সে এর আগেও তার স্ত্রীকে গলাকাটতে হামলে পড়েছিলো ব্লেড নিয়ে। যার কারণে তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়।"
তাকে এর আগেও গ্রেফতার করেছিলো পুলিশ।
'স্কুল-কলেজে সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে'
পুলিশের
এই মহাপরিদর্শক আরো জানান, গণপিটুনি প্রতিরোধে স্কুল, কলেজ ও
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে উপস্থিত থাকবে সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্য।
তিনি
বলেন, অভিভাবকদের সাথে কিংবা দলবদ্ধভাবে যেন শিক্ষার্থীরা নিরাপদে স্কুলে
যেতে পারে সেবিষয়ে জনগণকে সচেতন করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
এছাড়া
প্রত্যেকটা স্কুল-কলেজের পাশে সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিও
থাকবে, বলেন তিনি। "এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সিসিটিভির আওতাভুক্ত করা যায়
কিনা তা স্কুল কর্তৃপক্ষকেও আমরা উদ্বুদ্ধ করছি।"
"তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মাঠ পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ব্যবস্থা নিতে," বলেন তিনি।
'৬০টি ফেসবুক আইডি, ২৫টি ইউটিউব লিংক, ১০ টি অনলাইন পোর্টাল বন্ধ'
বাংলাদেশ
পুলিশের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে জনসচেতনতামূলক ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে
বলে তিনি জানান। এ ধরণের যেকোন পরিস্থিতিতে পুলিশের সহায়তা নেয়ার জন্য
৯৯৯ নম্বরে জন সাধারণের প্রতি যোগাযোগ করার আহ্বান করেছেন।
তিনি
বলেন, "সন্দেহজনক ৬০টি ফেসবুক আইডি, ২৫টি ইউটিউব লিংক, ১০ টি অনলাইন
পোর্টাল বন্ধ করে দিয়েছি এধরণের গুজব ছড়ানোর জন্য। এছাড়া র্যাব গুজব
রটনাকারী উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পেজ, চ্যানেল ও লিংক বন্ধ করে দিয়েছে এবং
অপরাধীদের গ্রেফতার করছে।"
হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ড, লোকালয় বা জনসমাগম স্থানে জনগনকে অবহিত এবং জন সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য ছোট ছোট সভা করা হচ্ছে।
স্কুল,
কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোতে পুলিশ সদস্যদের সকালে অ্যাসেম্বিলিতে গিয়ে মত
বিনিময় করতে এবং বিষয়টি যে একটি গুজব ছাড়া কিছু নয় তা নিয়ে সচেতনতা
বৃদ্ধি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, কমিউনিটি পুলিশি ব্যবস্থাকে জোরদার করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সভা করতে বলা হয়েছে।
"বুধবার থেকে এধরণের সচেতনতা কার্যক্রম আরো জোরদার হবে এবং অব্যাহত থাকবে।"
No comments