ধানের মূল্য না পেয়ে দিশাহারা কৃষক
টাঙ্গাইলে
প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ টাকায়। অন্যদিকে একজন শ্রমিকের দিন মজুরি
৮৫০-৯০০ টাকা। এতে প্রতি মণ ধানে কৃষকের গুনতে হচ্ছে লোকসান। ফলে কৃষকরা
দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর
আব্দুল মালেক সিকদার ও বাসাইল উপজেলার কাশিল গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম
নিজের পাকা ধানে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মালেক
সিকদার ও নজরুল ইসলামের এই প্রতিবাদে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এলাকার অধিকাংশ
কৃষক। পাকা ধানে আগুন দেখে অনেকেই ছুটে আসেন।
এ বিষয়ে মালেক সিকদার ও নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতিমণ ধানের দাম থেকে প্রতি শ্রমিকের মজুরির দাম দ্বিগুণ। এবার ধান আবাদ করে আমরা মাঠে মারা পড়েছি। তাই মনের দুঃখে পাকা ধানে আগুন দিয়েছি। আমরা দেশের প্রতিটি কৃষককে জানাতে চাই তারা যেন আমাদের এই প্রতিবাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। আমাদের মৌলিক অধিকারটুকুও কেড়ে নিতে চায় সরকার। তাই দেশের সব কৃষককে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।
এদিকে, কালিহাতীর আউলটিয়া গ্রামের মিজানুর রহমান মজনু নামের আরেক কৃষক তার ক্ষেতের পাকা ধান এলাকাবাসীকে বিনামূল্যে দিয়ে দিয়েছেন। এলাকাবাসী ধান কেটে অর্ধেক অংশ নিজে এবং বাকি অর্ধেক অংশ ক্ষেত মালিককে দিয়ে দিচ্ছেন। যে ধান কৃষকের মুখে হাসি ফুটাবে সেই ধানই যেন বর্তমানে কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকের মুখে হাসি নেই বাজারে গিয়ে কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। চালকল মালিক ও সরকারি গুদামে ধান কেনার কারণে ধানে ভয়াবহ দরপতন চলছে। আমনের পর এবার বোরো ধানে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে চরম ক্ষুব্ধ কৃষক। কৃষকের অসহায়ত্বের সুযোগ নিচ্ছে ব্যাপারি ও ফরিয়ারা। মৌসুমের শুরুতেই পড়তি দামে তেতো অভিজ্ঞতায় বিরক্ত কৃষক। লোকসানের গ্যাড়াকলে কৃষক উৎপাদন খরচের অর্ধেক দামও পাচ্ছে না ধানে। এর আগে গত আমন মৌসুমেও কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য পায়নি। ৪শ’ থেকে ৬শ’ টাকা মণে শুকনো আমন ধান বিক্রি হয়েছে। এ বছর এক বিঘা বোরো জমি চাষ করতে কৃষকের খরচ হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার টাকা সে জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে ১৫ মণের মতো। প্রতি মণ ধান ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি করে কৃষক পেয়েছেন সাড়ে ৭ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় কৃষকের লোকসান ৬ হাজার টাকা। ফলে এ ধানই যেন কৃষকের গলার কাঁটা ও মাথা ব্যথার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রকিবুল ইসলাম নামের এক চাষি বলেন, বীজতলা থেকে শুরু করে প্রতি মণ ধান ঘরে তুলতে হাজার টাকার ওপরে খরচ হয়। কিন্তু ধান বিক্রি করছি অর্ধেক দামে। এবার আমরা পথে বসে গেছি। এ ছাড়া আরো কয়েকজন কৃষক আক্ষেপ করে বলেন, কৃষককে ধানের ন্যায্য দাম দিয়ে বাঁচাতে হলে সরকারের সুদৃষ্টি প্রয়োজন। এদিকে, উত্তরবঙ্গেও প্রবেশদ্বার এলেঙ্গাতে শ্রমিকের হাটে রোববার সকালে গিয়ে দেখা যায় রংপুর থেকে আসা একজন শ্রমিক ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকায় প্রতিদিনের জন্য বিক্রি হচ্ছে। সেই সঙ্গে তাদের ধানের জমির মালিককে তিনবেলা খাবারও দিতে হচ্ছে। কৃষি নিয়ে কাজ করা এনজিও কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, বর্তমানে কৃষকদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। লাভ তো দূরের কথা ধান চাষ করে কৃষক আর্থিকভাবে বিপুল পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিষয়টি সরকারের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন পাকা ধানক্ষেত আগুন দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা। কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য দেয়া উচিত। কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএম শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে ধানের উৎপাদন খরচ ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা। আর ধানের বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতি বিঘায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা কৃষকের লোকসান হচ্ছে। এমতাবস্থায় সরকারকে কৃষিকাজে যান্ত্রিকীকরণ ও ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তবেই কৃষক উপকৃত হবে।
এ বিষয়ে মালেক সিকদার ও নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতিমণ ধানের দাম থেকে প্রতি শ্রমিকের মজুরির দাম দ্বিগুণ। এবার ধান আবাদ করে আমরা মাঠে মারা পড়েছি। তাই মনের দুঃখে পাকা ধানে আগুন দিয়েছি। আমরা দেশের প্রতিটি কৃষককে জানাতে চাই তারা যেন আমাদের এই প্রতিবাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। আমাদের মৌলিক অধিকারটুকুও কেড়ে নিতে চায় সরকার। তাই দেশের সব কৃষককে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।
এদিকে, কালিহাতীর আউলটিয়া গ্রামের মিজানুর রহমান মজনু নামের আরেক কৃষক তার ক্ষেতের পাকা ধান এলাকাবাসীকে বিনামূল্যে দিয়ে দিয়েছেন। এলাকাবাসী ধান কেটে অর্ধেক অংশ নিজে এবং বাকি অর্ধেক অংশ ক্ষেত মালিককে দিয়ে দিচ্ছেন। যে ধান কৃষকের মুখে হাসি ফুটাবে সেই ধানই যেন বর্তমানে কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকের মুখে হাসি নেই বাজারে গিয়ে কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। চালকল মালিক ও সরকারি গুদামে ধান কেনার কারণে ধানে ভয়াবহ দরপতন চলছে। আমনের পর এবার বোরো ধানে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে চরম ক্ষুব্ধ কৃষক। কৃষকের অসহায়ত্বের সুযোগ নিচ্ছে ব্যাপারি ও ফরিয়ারা। মৌসুমের শুরুতেই পড়তি দামে তেতো অভিজ্ঞতায় বিরক্ত কৃষক। লোকসানের গ্যাড়াকলে কৃষক উৎপাদন খরচের অর্ধেক দামও পাচ্ছে না ধানে। এর আগে গত আমন মৌসুমেও কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য পায়নি। ৪শ’ থেকে ৬শ’ টাকা মণে শুকনো আমন ধান বিক্রি হয়েছে। এ বছর এক বিঘা বোরো জমি চাষ করতে কৃষকের খরচ হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার টাকা সে জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে ১৫ মণের মতো। প্রতি মণ ধান ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি করে কৃষক পেয়েছেন সাড়ে ৭ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় কৃষকের লোকসান ৬ হাজার টাকা। ফলে এ ধানই যেন কৃষকের গলার কাঁটা ও মাথা ব্যথার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রকিবুল ইসলাম নামের এক চাষি বলেন, বীজতলা থেকে শুরু করে প্রতি মণ ধান ঘরে তুলতে হাজার টাকার ওপরে খরচ হয়। কিন্তু ধান বিক্রি করছি অর্ধেক দামে। এবার আমরা পথে বসে গেছি। এ ছাড়া আরো কয়েকজন কৃষক আক্ষেপ করে বলেন, কৃষককে ধানের ন্যায্য দাম দিয়ে বাঁচাতে হলে সরকারের সুদৃষ্টি প্রয়োজন। এদিকে, উত্তরবঙ্গেও প্রবেশদ্বার এলেঙ্গাতে শ্রমিকের হাটে রোববার সকালে গিয়ে দেখা যায় রংপুর থেকে আসা একজন শ্রমিক ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকায় প্রতিদিনের জন্য বিক্রি হচ্ছে। সেই সঙ্গে তাদের ধানের জমির মালিককে তিনবেলা খাবারও দিতে হচ্ছে। কৃষি নিয়ে কাজ করা এনজিও কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, বর্তমানে কৃষকদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। লাভ তো দূরের কথা ধান চাষ করে কৃষক আর্থিকভাবে বিপুল পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিষয়টি সরকারের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন পাকা ধানক্ষেত আগুন দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা। কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য দেয়া উচিত। কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএম শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে ধানের উৎপাদন খরচ ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা। আর ধানের বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতি বিঘায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা কৃষকের লোকসান হচ্ছে। এমতাবস্থায় সরকারকে কৃষিকাজে যান্ত্রিকীকরণ ও ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তবেই কৃষক উপকৃত হবে।
No comments