এই নির্মমতার জবাব কী by উদিসা ইসলাম
বরিশালে
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি নিউজের ক্যামেরাপারসন সুমন হাসানকে
নির্যাতনের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যখন তোলপাড়, তখন মহানগর গোয়েন্দা
পুলিশের আট সদস্যকে ক্লোজড করে দায়িত্ব সেরেছে বিএমপি (বরিশাল মেট্রোপলিটন
পুলিশ)। প্রশ্ন উঠছে, এ ধরনের নির্মমতার সমাধান কেবলমাত্র ক্লোজড-এর মধ্য
দিয়ে শেষ হয় কিনা।
ভুক্তভোগী সুমনের কর্মস্থলের দায়িত্বশীল ব্যক্তি বলছেন, পুলিশ কোনও অপরাধে জড়িয়ে গেলে এবং প্রাথমিকভাবে সেটির সত্যতা পাওয়া গেলে, তখন ক্লোজডের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এটি ‘আইওয়াশ’ ছাড়া কিছু নয়। সাংবাদিক নেতারা বলছেন, কেবল ক্লোজড নয়, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ সদস্যরা সুমনকে যে নির্বিচার নির্যাতন করেছেন, সেটা সভ্য সমাজে কাম্য হতে পারে না।
তদন্ত কমিটি গঠন করে রিপোর্ট অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে মঙ্গলবারই (১৩ মার্চ) জানিয়েছেন বরিশাল মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) গোলাম রউফ। বুধবার (১৪ মার্চ) বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) সহকারী কমিশনার নাসির উদ্দিন মল্লিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কনস্টেবল মাসুদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আরও কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছেন, সেটা জানার জন্য আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করছি।’
মঙ্গলবার (১৩ মার্চ) দুপুরে বরিশাল মহানগরীর দক্ষিণ চকবাজারের পুরনো বিউটি হলের সামনে ডিবি পুলিশ একটি বাসায় মাদকের অভিযান চালালে ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক সুমন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। অভিযানের বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আট পুলিশ সদস্য মিলে সুমনের ওপর চড়াও হন। এ সময় তারা সুমনকে বেধড়ক মারধর করলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। পরবর্তীতে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর সেখানে সুমনের জ্ঞান ফিরে এলে, পুনরায় তাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করা হয়।
পরে খবর পেয়ে বরিশালের সিনিয়র সাংবাদিকরা উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রউফকে বিষয়টি জানালে তিনি সমাধানের জন্য সবাইকে তার কক্ষে নিয়ে আসেন। এ সময় সুমনের সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে এবং সুমনের কাছে নির্যাতনের কথা শুনে উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রউফ ও উত্তম কুমার পাল দুঃখ প্রকাশ করেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের উভয় পক্ষের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলে রাষ্ট্র উপকৃত হয়। পুলিশের নানা উগ্র আচরণের কারণে সাংবাদিকদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সাংবাদিকরা যখন দায়িত্ব পালন করতে যান, তখন তারা বাধা দেয়, এটা কখনও আশা করি না। পুলিশের যান্ত্রিক ক্ষেত্রে যে আধুনিকায়ন ঘটেছে, মানসিক ক্ষেত্রেও সেই আধুনিকতা আসতে হবে।’
সাংবাদিক সুমনের ওপর নির্মমতার জবাব কি আট জনের ক্লোজড-এ সীমাবদ্ধ থাকবে, প্রশ্নে ডিবিসি টেলিভিশনের সম্পাদক জায়েদুল আহসান পিন্টু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পুলিশ কোনও অপরাধে জড়িয়ে গেলে এবং প্রাথমিকভাবে যদি সেটির সত্যতা পায়, তখন ক্লোজড এর সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এটি ‘আইওয়াশ’ ছাড়া কিছু নয়। এটা কোনও শাস্তি না। বিষয়টা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এটি করা হয়। আইনে স্পষ্ট করেই বলা আছে— এ ধরনের কোনও অভিযোগ পাওয়ার পর নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩, ৭ উপ-ধারা (১) অনুযায়ী পুলিশ সুপার অথবা তার চেয়ে ঊধ্বর্তন পদমর্যাদার কোনও অফিসার তাৎক্ষণিক একটি মামলা দায়ের ও অভিযোগকারীর বক্তব্য রেকর্ড করবেন। মামলার নম্বরসহ এই অভিযোগের ব্যাপারে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে, তা অভিযোগকারীকে অবহিত করবেন এবং (৩) উপরে বর্ণিত উপ-ধারা (২) অনুযায়ী অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণকারী পুলিশ সুপার অথবা তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অভিযোগ দায়েরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়রা জজ আদালতে একটি রিপোর্ট পেশ করবেন।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া মাত্রই পুলিশ নিজ উদ্যোগে মামলা রেকর্ড করার কথা। কোনও ক্ষেত্রেই আমরা সেটার প্রয়োগ দেখি না। যদি সদিচ্ছা থাকতো, তাহলে পুলিশ সেটি করতো। তারা কখনও এটা করে না।’
জায়েদুল আহসান পিন্টু আরও বলেন, ‘আমরা এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। কেবল ক্লোজড নয়, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ সদস্যরা সুমনকে যে নির্বিচার নির্যাতন করেছেন, সেটা সভ্য সমাজে কাম্য হতে পারে না।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী পরিষদের সদস্য গোলাম মুজতবা ধ্রুব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাংবাদিকদের অধিকার আদায়, মর্যাদা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঐক্যের কোনও বিকল্প নেই। এজন্য সম্মিলিত প্রতিবাদ করা প্রয়োজন।’ আমরা সেটি করবো। আজকের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সবাইকে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, এর আগে যশোরের কোতোয়ালি থানায় এক যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় কেন জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নির্যাতনের অভিযোগে এসআই নাজমুল ও এসআই হাবিবকে আদালতে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদেশের ৩০ দিনের মধ্যে যশোরের এসপিকে এ বিষয়ে তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
ভুক্তভোগী সুমনের কর্মস্থলের দায়িত্বশীল ব্যক্তি বলছেন, পুলিশ কোনও অপরাধে জড়িয়ে গেলে এবং প্রাথমিকভাবে সেটির সত্যতা পাওয়া গেলে, তখন ক্লোজডের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এটি ‘আইওয়াশ’ ছাড়া কিছু নয়। সাংবাদিক নেতারা বলছেন, কেবল ক্লোজড নয়, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ সদস্যরা সুমনকে যে নির্বিচার নির্যাতন করেছেন, সেটা সভ্য সমাজে কাম্য হতে পারে না।
তদন্ত কমিটি গঠন করে রিপোর্ট অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে মঙ্গলবারই (১৩ মার্চ) জানিয়েছেন বরিশাল মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) গোলাম রউফ। বুধবার (১৪ মার্চ) বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) সহকারী কমিশনার নাসির উদ্দিন মল্লিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কনস্টেবল মাসুদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আরও কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছেন, সেটা জানার জন্য আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করছি।’
মঙ্গলবার (১৩ মার্চ) দুপুরে বরিশাল মহানগরীর দক্ষিণ চকবাজারের পুরনো বিউটি হলের সামনে ডিবি পুলিশ একটি বাসায় মাদকের অভিযান চালালে ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক সুমন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। অভিযানের বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আট পুলিশ সদস্য মিলে সুমনের ওপর চড়াও হন। এ সময় তারা সুমনকে বেধড়ক মারধর করলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। পরবর্তীতে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর সেখানে সুমনের জ্ঞান ফিরে এলে, পুনরায় তাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করা হয়।
পরে খবর পেয়ে বরিশালের সিনিয়র সাংবাদিকরা উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রউফকে বিষয়টি জানালে তিনি সমাধানের জন্য সবাইকে তার কক্ষে নিয়ে আসেন। এ সময় সুমনের সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে এবং সুমনের কাছে নির্যাতনের কথা শুনে উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রউফ ও উত্তম কুমার পাল দুঃখ প্রকাশ করেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের উভয় পক্ষের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলে রাষ্ট্র উপকৃত হয়। পুলিশের নানা উগ্র আচরণের কারণে সাংবাদিকদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সাংবাদিকরা যখন দায়িত্ব পালন করতে যান, তখন তারা বাধা দেয়, এটা কখনও আশা করি না। পুলিশের যান্ত্রিক ক্ষেত্রে যে আধুনিকায়ন ঘটেছে, মানসিক ক্ষেত্রেও সেই আধুনিকতা আসতে হবে।’
সাংবাদিক সুমনের ওপর নির্মমতার জবাব কি আট জনের ক্লোজড-এ সীমাবদ্ধ থাকবে, প্রশ্নে ডিবিসি টেলিভিশনের সম্পাদক জায়েদুল আহসান পিন্টু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পুলিশ কোনও অপরাধে জড়িয়ে গেলে এবং প্রাথমিকভাবে যদি সেটির সত্যতা পায়, তখন ক্লোজড এর সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এটি ‘আইওয়াশ’ ছাড়া কিছু নয়। এটা কোনও শাস্তি না। বিষয়টা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এটি করা হয়। আইনে স্পষ্ট করেই বলা আছে— এ ধরনের কোনও অভিযোগ পাওয়ার পর নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩, ৭ উপ-ধারা (১) অনুযায়ী পুলিশ সুপার অথবা তার চেয়ে ঊধ্বর্তন পদমর্যাদার কোনও অফিসার তাৎক্ষণিক একটি মামলা দায়ের ও অভিযোগকারীর বক্তব্য রেকর্ড করবেন। মামলার নম্বরসহ এই অভিযোগের ব্যাপারে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে, তা অভিযোগকারীকে অবহিত করবেন এবং (৩) উপরে বর্ণিত উপ-ধারা (২) অনুযায়ী অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণকারী পুলিশ সুপার অথবা তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অভিযোগ দায়েরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়রা জজ আদালতে একটি রিপোর্ট পেশ করবেন।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া মাত্রই পুলিশ নিজ উদ্যোগে মামলা রেকর্ড করার কথা। কোনও ক্ষেত্রেই আমরা সেটার প্রয়োগ দেখি না। যদি সদিচ্ছা থাকতো, তাহলে পুলিশ সেটি করতো। তারা কখনও এটা করে না।’
জায়েদুল আহসান পিন্টু আরও বলেন, ‘আমরা এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। কেবল ক্লোজড নয়, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ সদস্যরা সুমনকে যে নির্বিচার নির্যাতন করেছেন, সেটা সভ্য সমাজে কাম্য হতে পারে না।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী পরিষদের সদস্য গোলাম মুজতবা ধ্রুব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাংবাদিকদের অধিকার আদায়, মর্যাদা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঐক্যের কোনও বিকল্প নেই। এজন্য সম্মিলিত প্রতিবাদ করা প্রয়োজন।’ আমরা সেটি করবো। আজকের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সবাইকে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, এর আগে যশোরের কোতোয়ালি থানায় এক যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় কেন জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নির্যাতনের অভিযোগে এসআই নাজমুল ও এসআই হাবিবকে আদালতে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদেশের ৩০ দিনের মধ্যে যশোরের এসপিকে এ বিষয়ে তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
No comments