সরকারি ডিসপেনসারিতেই মানা হয় না অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার নিয়ম! by তাসকিনা ইয়াসমিন
জয়নাব
বিবির (৭০) গ্যাসের সমস্যা। তাই তিনি এসেছেন চিকিৎসকের কাছে। তাকে
তিনদিনের ওষুধ দিয়ে আবার তিনদিন পর আসার জন্য বলেছেন সংশ্লিষ্ট ওষুধদাতা।
জয়নব বিবি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমারে কইসে তিনদিন পর আবার আইতে, আইলে
আবার দেবে।’
রাজধানীর আজিমপুর, হাজারীবাগ, জনসন রোড, মিরপুরসহ ১৭টি সরকারি ডিসপেনসারিতে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া সব দিনে নিয়মিতভাবে সকাল আটটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এমবিবিএস চিকিৎসকরা (বিসিএস স্বাস্থ্য) রোগী দেখেন। একই সঙ্গে চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী এখান থেকে রোগীদের সব ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়। কিন্তু চাহিদার তুলনায় ওষুধের পরিমাণ কম থাকায় সবসময় অ্যান্টিবায়োটিকসহ সব ওষুধের পুরো ডোজ পূরণ করে দেওয়া হয় না। পরে রোগীদের আসতে বলা হলেও সব রোগীরা না আসায় তারা অ্যান্টিবায়োটিকের পুরো ডোজ পূরণ হচ্ছে না।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ রোগীদের যথেচ্ছাচার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে বডিতে ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা চালাচ্ছে। আর এক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বললেও খোদ সরকারি ডিসপেনসারিতেই উল্টো চিত্র দেখা গেছে।
তেজগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ‘আমরা যে কাজটা করি, সাতদিনের না দিয়ে দুই বা তিন দিনের দিচ্ছি। এটা পুরোটা না দিতে পারলে আমরা বলে দিই যে তিনদিন পর আপনি আবার এসে নিয়ে যাবেন। আমাদের এখানে যারা আসে তারা ওয়ার্কিং ডিসট্যান্সের মধ্যেই আসে। যারা দূর থেকে আসে তাদের সবগুলো ওষুধ দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি।’
তিনি বলেন, ‘সব রোগীতো কথা শোনেন না। তবে অনেক রোগীই কথা শোনেন। আমরা স্পষ্ট লিখে দিই সাতদিন খেতে হবে। পাঁচদিন হলে পাঁচদিন খেতে হবে। যাওয়ার সময় বলে দেই আপনার ওষুধ শেষ হলে এসে নিয়ে যাবেন।’
অনিয়মিত ব্যবহার প্রসঙ্গে বলেন, ‘কিছু অ্যান্টিবায়োটিক আছে দিনে একবার খেলেই হয়। কিছু আছে দিনে দু’বার খেতে হয়। কিন্তু আমাদের পক্ষে সবসময় সব ওষুধ একদিনে প্রোভাইড করা সম্ভব হয় না।’
তবে অ্যান্টিবায়োটিক ফুলকোর্সের ওষুধ দিয়ে দেন বলে জানান মিরপুর-১০ সরকারি বহির্বিভাগ চিকিৎসালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মাহবুবা আফসারী। তিনি বলেন, ‘হয়তো কোনও ওষুধ কম থাকলে কম দিতে পারে, কিন্তু সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক ফুলকোর্সই দেওয়া হয়। ভেঙে ভেঙে দেওয়া হয় না।’
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. মাহবুব কবীর বলেন, ‘অ্যান্টিবায়োটিকের উল্টাপাল্টা ব্যবহার হচ্ছে, হাউডোজ ব্যবহার হচ্ছে, অ্যান্টিবায়োটিকের মান খারাপ, ইনগ্রেডিয়েন্টস খারাপ, ভিতরে ইনগ্রেডিয়েন্টস কম দেওয়া হচ্ছে, ৫০০ মিলিগ্রামের যায়গায় ৩০০-৩৫০ মিলিগ্রাম দেওয়া হচ্ছে। এগুলো খেয়ে খেয়েই তো মানুষের বডি রেজিস্ট্যান্স নষ্ট হচ্ছে। আমরা চিঠি দিয়েছি এ ব্যাপারে।’
ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. এহসানুল করিম বলেন, ‘অ্যান্টিবায়োটিক আসলে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী বিক্রি করতে হবে এটা আইনেও আছে। বেশিরভাগ ওষুধের দোকানের তো লাইসেন্সই নেই। কারণ লাইসেন্স নিতে গেলে একজন করে ফার্মাসিস্ট থাকতে হবে। এটা ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের দেখার কথা। কিন্তু তারা সেভাবে দেখে বলে মনে হয় না। তাদের ১৫ জন ডিস্ট্রিক্ট অফিসার আছে তাদের অধীনে কর্মী নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সরকারি ডিসপেনসারিগুলোতে পুরোপুরি অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারে না। যেখানে লাগবে যা তার চেয়ে কম দিলাম। এটা টোটাল সরকারি ব্যবস্থার কারণে দেওয়া সম্ভব হয় না। আমাদের বরাদ্দের অবস্থা যে খারাপ এটা তো সবাই জানে। আমরা তো সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই যেন আমাদের বরাদ্দ বাড়ানো হয়। আমাদের স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ দশমিক ছয় শতাংশ। এটা তো বেশি হওয়া উচিত। আসলে এই পরিসংখ্যান দেখেই তো বোঝা যায়, স্বাস্থ্যখাতের কি অবস্থা।’
রাজধানীর আজিমপুর, হাজারীবাগ, জনসন রোড, মিরপুরসহ ১৭টি সরকারি ডিসপেনসারিতে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া সব দিনে নিয়মিতভাবে সকাল আটটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এমবিবিএস চিকিৎসকরা (বিসিএস স্বাস্থ্য) রোগী দেখেন। একই সঙ্গে চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী এখান থেকে রোগীদের সব ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়। কিন্তু চাহিদার তুলনায় ওষুধের পরিমাণ কম থাকায় সবসময় অ্যান্টিবায়োটিকসহ সব ওষুধের পুরো ডোজ পূরণ করে দেওয়া হয় না। পরে রোগীদের আসতে বলা হলেও সব রোগীরা না আসায় তারা অ্যান্টিবায়োটিকের পুরো ডোজ পূরণ হচ্ছে না।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ রোগীদের যথেচ্ছাচার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে বডিতে ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা চালাচ্ছে। আর এক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বললেও খোদ সরকারি ডিসপেনসারিতেই উল্টো চিত্র দেখা গেছে।
তেজগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ‘আমরা যে কাজটা করি, সাতদিনের না দিয়ে দুই বা তিন দিনের দিচ্ছি। এটা পুরোটা না দিতে পারলে আমরা বলে দিই যে তিনদিন পর আপনি আবার এসে নিয়ে যাবেন। আমাদের এখানে যারা আসে তারা ওয়ার্কিং ডিসট্যান্সের মধ্যেই আসে। যারা দূর থেকে আসে তাদের সবগুলো ওষুধ দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি।’
তিনি বলেন, ‘সব রোগীতো কথা শোনেন না। তবে অনেক রোগীই কথা শোনেন। আমরা স্পষ্ট লিখে দিই সাতদিন খেতে হবে। পাঁচদিন হলে পাঁচদিন খেতে হবে। যাওয়ার সময় বলে দেই আপনার ওষুধ শেষ হলে এসে নিয়ে যাবেন।’
অনিয়মিত ব্যবহার প্রসঙ্গে বলেন, ‘কিছু অ্যান্টিবায়োটিক আছে দিনে একবার খেলেই হয়। কিছু আছে দিনে দু’বার খেতে হয়। কিন্তু আমাদের পক্ষে সবসময় সব ওষুধ একদিনে প্রোভাইড করা সম্ভব হয় না।’
তবে অ্যান্টিবায়োটিক ফুলকোর্সের ওষুধ দিয়ে দেন বলে জানান মিরপুর-১০ সরকারি বহির্বিভাগ চিকিৎসালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মাহবুবা আফসারী। তিনি বলেন, ‘হয়তো কোনও ওষুধ কম থাকলে কম দিতে পারে, কিন্তু সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক ফুলকোর্সই দেওয়া হয়। ভেঙে ভেঙে দেওয়া হয় না।’
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. মাহবুব কবীর বলেন, ‘অ্যান্টিবায়োটিকের উল্টাপাল্টা ব্যবহার হচ্ছে, হাউডোজ ব্যবহার হচ্ছে, অ্যান্টিবায়োটিকের মান খারাপ, ইনগ্রেডিয়েন্টস খারাপ, ভিতরে ইনগ্রেডিয়েন্টস কম দেওয়া হচ্ছে, ৫০০ মিলিগ্রামের যায়গায় ৩০০-৩৫০ মিলিগ্রাম দেওয়া হচ্ছে। এগুলো খেয়ে খেয়েই তো মানুষের বডি রেজিস্ট্যান্স নষ্ট হচ্ছে। আমরা চিঠি দিয়েছি এ ব্যাপারে।’
ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. এহসানুল করিম বলেন, ‘অ্যান্টিবায়োটিক আসলে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী বিক্রি করতে হবে এটা আইনেও আছে। বেশিরভাগ ওষুধের দোকানের তো লাইসেন্সই নেই। কারণ লাইসেন্স নিতে গেলে একজন করে ফার্মাসিস্ট থাকতে হবে। এটা ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের দেখার কথা। কিন্তু তারা সেভাবে দেখে বলে মনে হয় না। তাদের ১৫ জন ডিস্ট্রিক্ট অফিসার আছে তাদের অধীনে কর্মী নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সরকারি ডিসপেনসারিগুলোতে পুরোপুরি অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারে না। যেখানে লাগবে যা তার চেয়ে কম দিলাম। এটা টোটাল সরকারি ব্যবস্থার কারণে দেওয়া সম্ভব হয় না। আমাদের বরাদ্দের অবস্থা যে খারাপ এটা তো সবাই জানে। আমরা তো সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই যেন আমাদের বরাদ্দ বাড়ানো হয়। আমাদের স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ দশমিক ছয় শতাংশ। এটা তো বেশি হওয়া উচিত। আসলে এই পরিসংখ্যান দেখেই তো বোঝা যায়, স্বাস্থ্যখাতের কি অবস্থা।’
No comments