টাকা ভাগাভাগি হতো ঢাকায় হোটেলে বসে
রংপুর জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর জাল করে ৪ শতাধিক আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানকারী সামসুল ইসলাম রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। জালিয়াতি করে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানের বিষয়ে তার সম্পৃক্ততা তিনি স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, জালিয়াত চক্র টাকা ভাগাভাগি করতে ঢাকার আন্তর্জাতিকমানের হোটেলে বসে। এর সঙ্গে জেলা প্রশাসনের ও বহিরাগত একাধিক ব্যক্তি জড়িত। তাকে সঙ্গে নিয়ে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান ঘটনাস্থল রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন। সামসুল রংপুর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) দফতরের জেএম শাখার অফিস সহকারী ছিলেন। তিনি ডিসির স্বাক্ষর জাল করে অস্ত্রের লাইসেন্স জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত। বুধবার তাকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। মামলাটি তদন্ত করছেন দুদক রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান। তিনি জানিয়েছেন, মামলাটি খুবই স্পর্শকাতর। তাই অনেক তথ্য জানা গেলেও আগাম কিছু বলা যাচ্ছে না। এতে জড়িত অন্যদের পালিয়ে যাওয়ার আশংঙ্কা থাকে। তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন, সামসুল জেরার মুখে খুব সতর্কভাবে উত্তর দিচ্ছেন। এরপরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে তার কাছ থেকে।
তার ওই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত অন্তত ৩ জনের নাম প্রকাশ করেছে সামসুল। একটি সূত্রে জানা গেছে, রংপুরের পীরগঞ্জের দু’জন জালিয়াত চক্রের সঙ্গে জড়িত। তারা জালিয়াতি করে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান ও আগ্নেয়াস্ত্র কেনাবেচার কাজও করত। ওই চক্রটি তাদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ও যোগাযোগ রক্ষা করত ঢাকায় আন্তর্জাতিকমানের হোটেলে বসে। সেখানে তাদের টাকা ভাগাভাগি হতো। কয়েকজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এ কাজে জড়িত বলেও খবর পাওয়া গেছে। তদন্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান জানান, সামসুলের দেয়া তথ্যে তিনি হতবাক হয়েছেন। যদিও সামসুল বলছেন, তিনি শুধু জেলা প্রশাসকের দফতরে জেএম শাখায় যোগদানের পর থেকে অস্ত্রের লাইসেন্স জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। এ কাজ তিনি চালিয়েছেন গত ৮ মাস ধরে। তবে ঘটনাক্রম এবং পারিপার্শ্বিকতা তা বলে না। যুগান্তরে গত ২৬ মে ‘রংপুরে ডিসির জাল স্বাক্ষরে ৪শ’ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স’ শিরোনামে খবর প্রকাশের পর সামসুল ইসলাম পালিয়ে যায়। র্যাবের একটি দল দীর্ঘদিন তার গতিবিধি লক্ষ্য করছিল। অনুসন্ধান ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার রাতে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে দুদক কার্যালয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
No comments