তীরবিদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র প্রশংসিত মার্কেল
জার্মানির হামবুর্গে অনুষ্ঠিত হওয়া জি ২০ শীর্ষ সম্মেলন শেষ হয়েছে। দু’দিনব্যাপী ১৯টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যদের এ বৈঠকের সাফল্য ও ব্যর্থতা নির্ণয়ে নেমে পড়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। জার্মানজুড়ে পুঁজিবাদবিরোধীদের বিক্ষোভ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্যারিস চুক্তি প্রত্যাহারের ঘোষণার মধ্যে সম্মেলন কোনো রকমে উতরে গেছে। শনিবার জি ২০ সম্মেলনের সাফল্য ও ব্যর্থতার বর্ণনা দিয়েছেন জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের বার্লিন স্টুডিওর প্রধান ডাগমার অ্যাঞ্জেল। সম্মেলনের আগে ও চলাকালীন সময়ে জার্মানিজুড়ে হিংসা, ধ্বংসলীলা, দাঙ্গা-হাঙ্গামার মাত্রা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল, দেশটিতে যা সম্পূর্ণ অপরিচিত। অ্যাঞ্জেলা বলেন, মাত্রাহীন হিংসা ও পরস্পরবিরোধী স্বার্থের সংঘাতের প্রেক্ষাপটে শীর্ষ সম্মেলনকে ঠিক সফল বলা চলে না। সম্মেলনের ফলাফল আরও খারাপ হতে পারত। ঐকমত্যের ভিত্তিতে চূড়ান্ত ঘোষণাপত্র লেখার লক্ষ্য যার রয়েছে, উপস্থিত শীর্ষ প্রতিনিধিদের দিকে নজর দিলেই তার কপালে ঘাম চলে আসতে বাধ্য। সদস্যদের আসনে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা মেলে খাঁটি স্বৈরাচারী নেতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের। কারও পরনে সাদা হাতকাটা কোট, কারও ঘাড়ে দুর্নীতির বোঝা। তাদের মধ্যে আবার ডোনাল্ড ট্রাম্প নামের এক ব্যক্তিও ছিলেন, যিনি তার ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট’ বুলি আওড়িয়ে বাড়তি উত্তেজনা সৃষ্টি করছেন।
লক্ষ্য পূরণে সাফল্য : এমন পরিস্থিতিতে শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফল নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা যেতে পারে। বিস্ময়করভাবে সবাই মিলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সংরক্ষণনীতির বিরোধিতা করেছেন। যদি কেউ নিজেকে এ ক্ষেত্রে অন্যায় আচরণের শিকার বলে মনে করেন, সে তখন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লিউটিও) নিয়মকে হাতিয়ার করতে পারবে। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের ইচ্ছা অনুযায়ী সবাই মিলে ‘একলা চল রে’ নীতির বদলে সমষ্টিগত সমাধানসূত্র মেনে নিয়েছে। এটা অবশ্যই একটা সাফল্য। ফরাসি প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে রুশ প্রতিনিধি দলও এই অর্জনের প্রশংসা করেছে। জলবায়ু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ঘোষণাপত্রে সাফল্য খুঁজতে হলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ হতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে প্যারিস চুক্তি বর্জন করেছে, তার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। জি ২০ গোষ্ঠীর ইতিহাসে এই প্রথম কোনো মতপার্থক্য এত স্পষ্টভাবে স্বীকার করা হল। বাকি ১৯টি দেশ প্যারিস চুক্তির প্রতি সম্পূর্ণ আনুগত্য দেখিয়েছে। এমনটা নাও হতে পারত। এক্ষেত্রে ফলাফল আরও খারাপ হতে পারত।
ব্যর্থতার গ্লানি : আজকের দিনে এমন ফলাফল যথেষ্ট নয়। নারীর ক্ষমতায়ন বাড়ানোর মতো ভালো আইডিয়া, আফ্রিকার সঙ্গে নতুন চুক্তি, ডিজিটাল শিক্ষার উদ্যোগের মতো বিষয় যথেষ্ট নয়। জি ২০ বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার এক নতুন চেহারা সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছে। গোটা বিশ্বে বহু মানুষ মনে করেন, বিশ্ব অর্থনীতি হাতেগোনা কিছু মানুষের জন্য উপকার বয়ে আনছে। শীর্ষ সম্মেলনের শেষে মার্কেল বলেন, সম্মেলনের আগে সুশীল সমাজের উদ্যোগ এবং সম্মেলন চলাকালীন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ অবশ্যই একটা অবদান রেখেছে। এগুলো সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে। তবে জি ২০’র কোনো বিকাশ দেখা যাচ্ছে না, মানুষের আরও কাছে আসার কোনো লক্ষণও চোখে পড়ছে না। সম্মেলনের আগে অভিযোগ উঠেছিল, নির্বাচনের এই বছরে মার্কেল শুধু নিজের প্রতীকী ছবি তুলে ধরতে আগ্রহী। আন্তর্জাতিক মঞ্চে সফল নেতার ভূমিকা পালন করতে চান না তিনি। কিন্তু হামবুর্গ শহরের প্রতীকী ছবিগুলো অন্য কথাই বলছে।
সম্মেলনকে ‘সফল’ বললেন ট্রাম্প : জার্মানির হামবুর্গে অনুষ্ঠিত সম্মেলনটি ‘চমৎকার সাফল্য’ অর্জন করেছে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি থেকে বের হয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জি ২০ গোষ্ঠীর ১৮টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতবিরোধ সত্ত্বেও এ ঘোষণা দেন তিনি। সম্মেলনের শেষদিন শনিবার সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জীবাশ্ম জ্বালানি আরও দক্ষ ও পরিচ্ছন্নভাবে ব্যবহার করায় সাহায্য করতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র। প্যারিস চুক্তির অন্তর্গত দেশগুলোর মধ্যে বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধে সম্মিলিতভাবে কাজ করাই এ চুক্তির প্রধান লক্ষ্য। আয়োজক দেশ জার্মানির চ্যান্সেলর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে দুঃখবোধ করলেও বাকি দেশগুলো পুনরায় আলোচনার বিরোধিতা করায় তিনি ‘তৃপ্ত’ হয়েছেন। তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান জানান, তিনিও এখন প্যারিস চুক্তিতে তার দেশের অবস্থান নিয়ে সন্দিহান। কারণ এ চুক্তি থেকে মার্কিন প্রত্যাহারের ঘোষণা উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ পাওয়াকে ক্ষুণœ করছে। এরপরও তুরস্ক প্যারিস চুক্তিতে সই করায় ফ্রান্স প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, চুক্তিতে সই করার যে আর্থিক খরচ হবে সেই ক্ষতিপূরণ তুরস্ক পাবে। এরদোগান জানান, তুর্কি পার্লামেন্ট এখনও প্যারিস চুক্তিতে অনুমোদন দেয়নি। এছাড়াও ট্রাম্প অন্যান্য দেশের নেতাদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও কথা বলেছেন। শনিবার এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প লেখেন, জি ২০ সম্মেলন সুন্দরভাবে সফল হয়েছে। অ্যাঞ্জেলা মার্কেল নিপুণতার সঙ্গে এটি সম্পন্ন করেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ! ট্রাম্পের শেষ আলোচনা ছিল উত্তর কোরিয়ার পরমাণু প্রচেষ্টা নিয়ে। পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বলেন, ‘কিছু একটা করতে হবে’। জিনপিংও সম্মতি দিয়ে বলেন, উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিয়ে বলেন, কিছু স্পর্শকাতর বিষয় থাকলেও তাদের সম্পর্কের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। তিনি দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সফরের পরামর্শও দিয়েছেন।
লক্ষ্য পূরণে সাফল্য : এমন পরিস্থিতিতে শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফল নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা যেতে পারে। বিস্ময়করভাবে সবাই মিলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সংরক্ষণনীতির বিরোধিতা করেছেন। যদি কেউ নিজেকে এ ক্ষেত্রে অন্যায় আচরণের শিকার বলে মনে করেন, সে তখন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লিউটিও) নিয়মকে হাতিয়ার করতে পারবে। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের ইচ্ছা অনুযায়ী সবাই মিলে ‘একলা চল রে’ নীতির বদলে সমষ্টিগত সমাধানসূত্র মেনে নিয়েছে। এটা অবশ্যই একটা সাফল্য। ফরাসি প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে রুশ প্রতিনিধি দলও এই অর্জনের প্রশংসা করেছে। জলবায়ু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ঘোষণাপত্রে সাফল্য খুঁজতে হলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ হতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে প্যারিস চুক্তি বর্জন করেছে, তার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। জি ২০ গোষ্ঠীর ইতিহাসে এই প্রথম কোনো মতপার্থক্য এত স্পষ্টভাবে স্বীকার করা হল। বাকি ১৯টি দেশ প্যারিস চুক্তির প্রতি সম্পূর্ণ আনুগত্য দেখিয়েছে। এমনটা নাও হতে পারত। এক্ষেত্রে ফলাফল আরও খারাপ হতে পারত।
ব্যর্থতার গ্লানি : আজকের দিনে এমন ফলাফল যথেষ্ট নয়। নারীর ক্ষমতায়ন বাড়ানোর মতো ভালো আইডিয়া, আফ্রিকার সঙ্গে নতুন চুক্তি, ডিজিটাল শিক্ষার উদ্যোগের মতো বিষয় যথেষ্ট নয়। জি ২০ বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার এক নতুন চেহারা সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছে। গোটা বিশ্বে বহু মানুষ মনে করেন, বিশ্ব অর্থনীতি হাতেগোনা কিছু মানুষের জন্য উপকার বয়ে আনছে। শীর্ষ সম্মেলনের শেষে মার্কেল বলেন, সম্মেলনের আগে সুশীল সমাজের উদ্যোগ এবং সম্মেলন চলাকালীন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ অবশ্যই একটা অবদান রেখেছে। এগুলো সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে। তবে জি ২০’র কোনো বিকাশ দেখা যাচ্ছে না, মানুষের আরও কাছে আসার কোনো লক্ষণও চোখে পড়ছে না। সম্মেলনের আগে অভিযোগ উঠেছিল, নির্বাচনের এই বছরে মার্কেল শুধু নিজের প্রতীকী ছবি তুলে ধরতে আগ্রহী। আন্তর্জাতিক মঞ্চে সফল নেতার ভূমিকা পালন করতে চান না তিনি। কিন্তু হামবুর্গ শহরের প্রতীকী ছবিগুলো অন্য কথাই বলছে।
সম্মেলনকে ‘সফল’ বললেন ট্রাম্প : জার্মানির হামবুর্গে অনুষ্ঠিত সম্মেলনটি ‘চমৎকার সাফল্য’ অর্জন করেছে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি থেকে বের হয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জি ২০ গোষ্ঠীর ১৮টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতবিরোধ সত্ত্বেও এ ঘোষণা দেন তিনি। সম্মেলনের শেষদিন শনিবার সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জীবাশ্ম জ্বালানি আরও দক্ষ ও পরিচ্ছন্নভাবে ব্যবহার করায় সাহায্য করতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র। প্যারিস চুক্তির অন্তর্গত দেশগুলোর মধ্যে বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধে সম্মিলিতভাবে কাজ করাই এ চুক্তির প্রধান লক্ষ্য। আয়োজক দেশ জার্মানির চ্যান্সেলর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে দুঃখবোধ করলেও বাকি দেশগুলো পুনরায় আলোচনার বিরোধিতা করায় তিনি ‘তৃপ্ত’ হয়েছেন। তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান জানান, তিনিও এখন প্যারিস চুক্তিতে তার দেশের অবস্থান নিয়ে সন্দিহান। কারণ এ চুক্তি থেকে মার্কিন প্রত্যাহারের ঘোষণা উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ পাওয়াকে ক্ষুণœ করছে। এরপরও তুরস্ক প্যারিস চুক্তিতে সই করায় ফ্রান্স প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, চুক্তিতে সই করার যে আর্থিক খরচ হবে সেই ক্ষতিপূরণ তুরস্ক পাবে। এরদোগান জানান, তুর্কি পার্লামেন্ট এখনও প্যারিস চুক্তিতে অনুমোদন দেয়নি। এছাড়াও ট্রাম্প অন্যান্য দেশের নেতাদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও কথা বলেছেন। শনিবার এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প লেখেন, জি ২০ সম্মেলন সুন্দরভাবে সফল হয়েছে। অ্যাঞ্জেলা মার্কেল নিপুণতার সঙ্গে এটি সম্পন্ন করেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ! ট্রাম্পের শেষ আলোচনা ছিল উত্তর কোরিয়ার পরমাণু প্রচেষ্টা নিয়ে। পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বলেন, ‘কিছু একটা করতে হবে’। জিনপিংও সম্মতি দিয়ে বলেন, উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিয়ে বলেন, কিছু স্পর্শকাতর বিষয় থাকলেও তাদের সম্পর্কের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। তিনি দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সফরের পরামর্শও দিয়েছেন।
No comments