ধর্ষণে গর্ভধারণ ভূমিষ্ঠের পর সন্তানকে গলাটিপে হত্যা by মহিউদ্দিন অদুল
মোবাইল
ফোনে প্রেম। এরপর বিয়ের প্রলোভনে কাবু। ঢাকা থেকে একেবারে নিয়ে যায়
ময়মনসিংহ। এরপর ধর্ষণ। একা নয়। আরো চারজন এক সঙ্গে চালায় পাসবিকতা। এতে
গর্ভবতী হয়ে পড়ে ১৯ বছরের ওই যুবতী। এর দায় নিতে অস্বীকার করে প্রেমিক
সোহেল (২৫)। তাই ভূমিষ্ঠের পরই নিজের সন্তানকে গলাটিপে খুন করে ওই যুবতী।
লাশ লুকিয়ে রাখে বাড়ির ছাদে। গত ২রা মার্চ রাতে রাজধানীর রমনা থানার বেইলি
রোডের বেইলি রিজ অ্যাপার্টমেন্টের এক ফ্ল্যাটে ঘটে এই ঘটনা।
গত ৫ই মার্চ নবজাতকের লাশ উদ্ধার হয়। সম্প্রতি এই ঘটনার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। ওই যুবতী ও প্রেমিক সোহেল এবং অপর দুই ধর্ষণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই যুবতী এবং ধর্ষকদের একজন মইনুল দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এ ঘটনায় রাজধানীর রমনা থানায় হত্যা ও ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় দায়ের হওয়া ধর্ষণ মামলার তদন্ত চলছে।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান মানবজমিনকে বলেন, গণধর্ষণের পর ওই যুবতী গর্ভবতী হয়ে পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। প্রেমিক সোহেলের অস্বীকৃতি ও সমাজে লোকলজ্জার ভয়ে ভূমিষ্ঠের পরই নবজাতককে খুন করে। আদালতেও এই লোমহর্ষক ঘটনার পুরো বর্ণনা দিয়েছে ওই নারী।
মামলার এজাহার, স্বীকারোক্তি ও পুলিশ সূত্রগুলো জানায়, রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল আবাসিক ভবন বেইলি রিজ অ্যাপার্টমেন্টের এক ফ্ল্যাটে ওই যুবতী ৪ বছর ধরে কাজ করতো। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার দারাকপুর গ্রামে। তাদের এক গ্রাম পর শলফা গ্রাম। শলফার বাসিন্দা আলী হোসেনের ছেলে সোহেল। ঘটনার আগে দু’বছর ধরে মোবাইল ফোনে সোহেল তার সঙ্গে প্রেম করে যাচ্ছিল। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ঈদুল ফিতরের সময় সোহেল ওই যুবতীকে গ্রামে নিয়ে যায়। তারপর ঈদের দিন তার সঙ্গে সাক্ষাতের কথা বলে রাতে সোহেল তাকে নিজ গ্রামে ডেকে নেয়। কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে স্থানীয় পাট খেতের পাশে আসে। সেখানে সোহেল তাকে ধর্ষণ করে। আহত অবস্থায় ফেলে রেখে সেখান থেকে সটকে পড়ে। সোহেলের এই অপকর্ম জানতে পারে কাছাকাছি থাকা আরও কয়েকজন। তখন সেখানে থাকা হামিদুল (৩৫), মইনুল (২০), আলী হোসেন (৫০) এবং দুলুও পাট খেতে গিয়ে যুবতীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর সে যুবতী কাউকে কিছু না জানিয়ে আবার ঢাকায় ওই বাসার কাজে ফিরে। এ ঘটনার কয়েক মাস পরে বুঝতে পারে সে গর্ভবতী। বিষয়টি জানিয়ে সোহেলকে মোবাইলে বাচ্ছার দায় নিতে ও বিয়ে করতে অনুরোধ জানায়। সোহেল বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বারবার বাচ্ছা নষ্ট করে ফেলার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তাতে নিজের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে ভেবে ওই যুবতী বাচ্ছা নষ্ট করেনি। অবশেষে গত ২রা মার্চ রাতে তার প্রসব বেদনা উঠলে বাথরুমে যায়। এক পর্যায়ে কারও সহযোগিতা ছাড়াই এক পুত্র সন্তান প্রসব করে। প্রসবের পরই নিজ সন্তানকে গলাটিপে শ্বাস রোধ করে খুন করে। তারপর কাপড় পেঁচিয়ে লাশ বাথরুমের কোনায় রেখে দেয়। পরদিন সকালে ওই বাসায় থাকা দুটি পুরাতন সংবাদপত্র পেঁচিয়ে শপিং ব্যাগে ঢুকিয়ে লাশ একটি গামলায় রেখে তার উপর ভেজা কাপড় দিয়ে ছাদে যায়। ছাদে দু’টি পাইপের মাঝখানে শপিং ব্যাগটি রেখে চলে আসে। লাশে পচন ধরলে কাক ঠুকরাতে শুরু করে। ছড়াতে থাকে দুর্গন্ধও। দু’দিন পর ৫ই মার্চ ওই ভবনের অপর ফ্ল্যাটের কাজের বুয়া ছাদে গেলে তা দেখতে পায়। এরপর পুলিশে খবর দিলে লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) ময়নাতদন্তের পর লাশের ডিএনএ প্রোফাইল সংগ্রহ করা হয়।
কিন্তু ওই বহুতল বড় ভবনটিতে ২২৩টি ফ্ল্যাট থাকায় কিছুতেই রহস্য উদঘাটন হচ্ছিল না। লাশ পেঁচানো দু’টি সংবাদপত্রের সূত্র ধরে পরে হকারের মাধ্যমে সন্দেহের তালিকা কমিয়ে দু’টিতে আসে। তারপর দুই বাসার কাজের মেয়েকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশেষে ওই যুবতী স্বীকার করে। তারপর তাকে এক সপ্তাহ ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। নবজাতকের লাশ উদ্ধারের পর করা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) তদন্তের সূত্র ধরে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই যুবতী ও সোহেলকে আসামি করে ৮ই মার্চ একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় গ্রেপ্তারের পর সেই যুবতী এখন কাশিমপুর কারাগারে রয়েছে। একই ঘটনায় ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় ওই যুবতী বাদী হয়ে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। তাতে ওই ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। কিছুদিন আগে মইনুল গ্রেপ্তার হয়েছে। এখন সোহেল, হামিদুল ও মইনুল ময়মনসিংহ কারাগারে রয়েছে। পলাতক রয়েছে আলী হোসেন ও দুলু।
ময়মনসিংহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ মোল্লা বলেন, গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পর ওই মেয়ে তখন থানায় এসে মামলা দায়ের করলে বিষয়টি এত দূর গড়াতো না। নবজাতক খুনের সূত্র ধরেই কিছুদিন আগে বিষয়টি স্থানীয় থানার নজরে আসে। ধর্ষণের মামলা হয়। গ্রেপ্তারের পর মইনুল ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলী হোসেন বলেন, প্রথম দিকে ওই নবজাতক খুনের রহস্য উদঘাটন বেশ দুরূহ ছিল। বিশাল অ্যাপার্টমেন্টের ২২৩ ফ্ল্যাটের মধ্যে কোন পরিবারকে সন্দেহ করা যায়, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে ছিল দ্বিধা। অবশেষে লাশ মোড়ানো বাংলা ও ইংরেজি দুটি সংবাদপত্রের সূত্র ধরে হকারের সহযোগিতায় দু’পরিবারকে সন্দেহের তালিকায় আনা হয়। তারপর জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে কাজের মেয়েটি স্বীকার করে। তারপর তার চিকিৎসা শেষে ময়মনসিংহ গিয়ে ঘটনার পুরো রহস্য উদঘাটন হয়।
গত ৫ই মার্চ নবজাতকের লাশ উদ্ধার হয়। সম্প্রতি এই ঘটনার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। ওই যুবতী ও প্রেমিক সোহেল এবং অপর দুই ধর্ষণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই যুবতী এবং ধর্ষকদের একজন মইনুল দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এ ঘটনায় রাজধানীর রমনা থানায় হত্যা ও ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় দায়ের হওয়া ধর্ষণ মামলার তদন্ত চলছে।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান মানবজমিনকে বলেন, গণধর্ষণের পর ওই যুবতী গর্ভবতী হয়ে পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। প্রেমিক সোহেলের অস্বীকৃতি ও সমাজে লোকলজ্জার ভয়ে ভূমিষ্ঠের পরই নবজাতককে খুন করে। আদালতেও এই লোমহর্ষক ঘটনার পুরো বর্ণনা দিয়েছে ওই নারী।
মামলার এজাহার, স্বীকারোক্তি ও পুলিশ সূত্রগুলো জানায়, রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল আবাসিক ভবন বেইলি রিজ অ্যাপার্টমেন্টের এক ফ্ল্যাটে ওই যুবতী ৪ বছর ধরে কাজ করতো। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার দারাকপুর গ্রামে। তাদের এক গ্রাম পর শলফা গ্রাম। শলফার বাসিন্দা আলী হোসেনের ছেলে সোহেল। ঘটনার আগে দু’বছর ধরে মোবাইল ফোনে সোহেল তার সঙ্গে প্রেম করে যাচ্ছিল। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ঈদুল ফিতরের সময় সোহেল ওই যুবতীকে গ্রামে নিয়ে যায়। তারপর ঈদের দিন তার সঙ্গে সাক্ষাতের কথা বলে রাতে সোহেল তাকে নিজ গ্রামে ডেকে নেয়। কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে স্থানীয় পাট খেতের পাশে আসে। সেখানে সোহেল তাকে ধর্ষণ করে। আহত অবস্থায় ফেলে রেখে সেখান থেকে সটকে পড়ে। সোহেলের এই অপকর্ম জানতে পারে কাছাকাছি থাকা আরও কয়েকজন। তখন সেখানে থাকা হামিদুল (৩৫), মইনুল (২০), আলী হোসেন (৫০) এবং দুলুও পাট খেতে গিয়ে যুবতীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর সে যুবতী কাউকে কিছু না জানিয়ে আবার ঢাকায় ওই বাসার কাজে ফিরে। এ ঘটনার কয়েক মাস পরে বুঝতে পারে সে গর্ভবতী। বিষয়টি জানিয়ে সোহেলকে মোবাইলে বাচ্ছার দায় নিতে ও বিয়ে করতে অনুরোধ জানায়। সোহেল বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বারবার বাচ্ছা নষ্ট করে ফেলার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তাতে নিজের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে ভেবে ওই যুবতী বাচ্ছা নষ্ট করেনি। অবশেষে গত ২রা মার্চ রাতে তার প্রসব বেদনা উঠলে বাথরুমে যায়। এক পর্যায়ে কারও সহযোগিতা ছাড়াই এক পুত্র সন্তান প্রসব করে। প্রসবের পরই নিজ সন্তানকে গলাটিপে শ্বাস রোধ করে খুন করে। তারপর কাপড় পেঁচিয়ে লাশ বাথরুমের কোনায় রেখে দেয়। পরদিন সকালে ওই বাসায় থাকা দুটি পুরাতন সংবাদপত্র পেঁচিয়ে শপিং ব্যাগে ঢুকিয়ে লাশ একটি গামলায় রেখে তার উপর ভেজা কাপড় দিয়ে ছাদে যায়। ছাদে দু’টি পাইপের মাঝখানে শপিং ব্যাগটি রেখে চলে আসে। লাশে পচন ধরলে কাক ঠুকরাতে শুরু করে। ছড়াতে থাকে দুর্গন্ধও। দু’দিন পর ৫ই মার্চ ওই ভবনের অপর ফ্ল্যাটের কাজের বুয়া ছাদে গেলে তা দেখতে পায়। এরপর পুলিশে খবর দিলে লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) ময়নাতদন্তের পর লাশের ডিএনএ প্রোফাইল সংগ্রহ করা হয়।
কিন্তু ওই বহুতল বড় ভবনটিতে ২২৩টি ফ্ল্যাট থাকায় কিছুতেই রহস্য উদঘাটন হচ্ছিল না। লাশ পেঁচানো দু’টি সংবাদপত্রের সূত্র ধরে পরে হকারের মাধ্যমে সন্দেহের তালিকা কমিয়ে দু’টিতে আসে। তারপর দুই বাসার কাজের মেয়েকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশেষে ওই যুবতী স্বীকার করে। তারপর তাকে এক সপ্তাহ ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। নবজাতকের লাশ উদ্ধারের পর করা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) তদন্তের সূত্র ধরে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই যুবতী ও সোহেলকে আসামি করে ৮ই মার্চ একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় গ্রেপ্তারের পর সেই যুবতী এখন কাশিমপুর কারাগারে রয়েছে। একই ঘটনায় ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় ওই যুবতী বাদী হয়ে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। তাতে ওই ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। কিছুদিন আগে মইনুল গ্রেপ্তার হয়েছে। এখন সোহেল, হামিদুল ও মইনুল ময়মনসিংহ কারাগারে রয়েছে। পলাতক রয়েছে আলী হোসেন ও দুলু।
ময়মনসিংহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ মোল্লা বলেন, গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পর ওই মেয়ে তখন থানায় এসে মামলা দায়ের করলে বিষয়টি এত দূর গড়াতো না। নবজাতক খুনের সূত্র ধরেই কিছুদিন আগে বিষয়টি স্থানীয় থানার নজরে আসে। ধর্ষণের মামলা হয়। গ্রেপ্তারের পর মইনুল ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলী হোসেন বলেন, প্রথম দিকে ওই নবজাতক খুনের রহস্য উদঘাটন বেশ দুরূহ ছিল। বিশাল অ্যাপার্টমেন্টের ২২৩ ফ্ল্যাটের মধ্যে কোন পরিবারকে সন্দেহ করা যায়, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে ছিল দ্বিধা। অবশেষে লাশ মোড়ানো বাংলা ও ইংরেজি দুটি সংবাদপত্রের সূত্র ধরে হকারের সহযোগিতায় দু’পরিবারকে সন্দেহের তালিকায় আনা হয়। তারপর জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে কাজের মেয়েটি স্বীকার করে। তারপর তার চিকিৎসা শেষে ময়মনসিংহ গিয়ে ঘটনার পুরো রহস্য উদঘাটন হয়।
No comments