রাণীনগরে সরকারি গাছ কেটে নিল প্রভাবশালী মেম্বার
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার একডালা ইউপি’র আবাদপুকুর চৌরাস্তার মোড় থেকে কালীগঞ্জ যাবার বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের রাস্তার দু’পাশের প্রায় ৬০-৭০টি শিশুগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির সরকারি গাছ স্থানীয় প্রভাবশালী মেম্বারের বিরুদ্ধে কেটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বলছে ২৫-৩০টি গাছ, অথচ স্থানীয়রা বলছেন ৬০-৭০টি গাছ। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকা। ঘটনার সাত দিন পার হলেও এখনো কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকায়। উপজেলা বরেন্দ্র অফিস সূত্রে জানা, উপজেলার আবাদপুকুর বাজারের চৌরাস্তার মোড় থেকে কালীগঞ্জ যাওয়ার রাস্তাটি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এবং এই রাস্তার বনমালীকুড়ি নামক স্থান পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশের বিভিন্ন প্রজাতির গাছগুলো বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের আওতায়। সম্প্রতি বয়ে যাওয়া ঝড়ে এই রাস্তার কিছু গাছ ভেঙ্গে যায়। এই ভেঙ্গে যাওয়া ৫টি গাছ বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ২ হাজার টাকা জামানত নিয়ে একডালা ইউপির স্থানীয় সদস্য মো: হাসান মোল্লার মাধ্যমে নিলামে বিক্রয় করেন। বর্তমানে প্রায় এক মাস পার হলেও এই ৫টি গাছ না কেটে ইতিমধ্যেই রাস্তার দু’পাশের প্রায় ৬০-৭০টি শিশুগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সার্বিক সহযোগিতায় প্রভাবশালী স্থানীয় ইউপি মেম্বার দিনে ও রাতে এই গাছগুলো কেটে নিয়ে কালীগঞ্জ বাজারে বিক্রয় করেছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। অথচ নিলামে বিক্রয় করা ৫টি গাছ এখনো রাস্তার পাশে পড়ে রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকেই জানান, বিগত দিনেও স্থানীয় প্রভাবশালী মেম্বারের ইন্ধনে এই রাস্তার দু’পাশের অনেক গাছ কাটা হয়েছে। সম্প্রতি রাস্তার দু’পাশের গাছ কাটার সময় সংশ্লিষ্ট লোকজনদের জিজ্ঞেস করলে তারা বলে আমরা জানি না যে এই গাছগুলো কার। মেম্বার আমাদের গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে তাই আমরা গাছ কাটছি। তবে গাছগুলো কেটে পাশের কালীগঞ্জ বাজারে বিক্রয় করা হয়েছে বলে গোপন সূত্রে জানা। স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো: হাসান মোল্লা জানান, আমি লোকবলের অভাবে নিলামে কিনে নেওয়া গাছগুলো কাটতে পারছি না। বাকি গাছগুলো কেটে নেওয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না আপনি একডালা ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলুন। তিনি এই বিষয়ে আমার চেয়ে ভালো জানেন। একডালা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: রেজাউল ইসলাম জানান, আমি শুনেছি যে দিনে ও রাতের আধারে কে বা কাহারা ওই রাস্তার দু’পাশের কিছু গাছ কেটেছে। তবে আমার কাছে এখনো এই বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। উপজেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা মো: তিতুমীর হোসেন গাছকাটার বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে জানান, ওই রাস্তার দু’পাশের ২৫-৩০টি গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। তবে কে বা কাহারা গাছগুলো কেটেছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে এই বিষয়ে যদি আমার কাছে ব্যক্তির নাম উল্লেখপূর্বক লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয় তাহলে আমি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া বিনতে তাবিব জানান, আমি বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
No comments