সিয়াম পালনকারী তিনটি শক্তি অর্জন করে
সিয়াম সাধনা ও রমজানকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এ সাধনা সিয়াম পালনকারীকে তিনটি শক্তিতে শক্তিশালী করে। আর এ শক্তিগুলো ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে উন্নতি ও সাফল্যের ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা পালন করে।
প্রথম শক্তি হল সহিষ্ণুতা : ধৈর্য সহিষ্ণুতা এমন এক মহৎ গুণ যা মানুষকে পৌঁছে দেয় তার সফলতার চরম বিন্দুতে। সহিষ্ণুতা এমন এক রুহানি শক্তি যা যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত অস্ত্রের চেয়েও বেশি কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত। রমজানে একজন সিয়াম পালনকারী পানাহার, জৈবিক ক্ষুধা নিবারণসহ বহু বৈধ উপকরণ উপভোগ থেকে বিরত থেকে নিজেকে আল্লাহর সামনে সমর্পণ করে চরম সহিষ্ণুতা ও ধৈর্যের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে। সে নিজেকে ধৈর্যশীল ও পরমসহিষ্ণু হিসেবে গড়ে তোলে। যে সহিষ্ণুতা তাকে নিয়ে যায় মহাপ্রাপ্তির সোপানে। এ ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা ব্যক্তি এবং সমাজ জীবনে বড় প্রয়োজন। আর এর অভাবে আজ সমাজ জীবন বড়ই দুর্বীষহ হয়ে উঠেছে। অধৈর্য আর সহিষ্ণুহীনতায় জন্ম নেয় নানা অপরাধ, মানুষ জড়িয়ে পড়ে পাপাচারে। ঝগড়া-বিবাদ, কলহ-দ্বন্দ্ব, মারামারি, হানাহানি, ধোঁকা, প্রতারণ, প্রবঞ্চনাসহ নানা অমানবিক গুণাবলি যা আমাদের সমাজের নিত্যদিনের সঙ্গী, সবই সহিষ্ণুহীনতার ফসল। রমজান ধৈর্য সহিষ্ণুতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে একজন মানুষকে খাঁটি মানুষে পরিণত করতে চায়।
দ্বিতীয় শক্তি আনুগত্য : আনুুগত্যের মহাগুণ ও শক্তি একজন সিয়াম পালনকারী তার সিয়াম সাধনার মাধ্যমে নিজের মাঝে প্রতিষ্ঠা করতে পারে। একজন মুসলমান রমজান মাসে পানাহার ও অন্যান্য আরও নানা অভ্যাস থেকে এ জন্যই বিরত থাকে যে এটা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর নির্দেশ। সে তার আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্যে আরাম ও কষ্ট, সুখ ও দুঃখ কিছুরই পরোয়া করে না। সে জানে, আল্লাহকে নিজের প্রভু বলে স্বীকার করেছে এবং এ অঙ্গীকার করেছে যে, অভাব বা সমৃদ্ধি সুদিন বা দুর্দিন সুখ বা দুঃখ সর্বাবস্থায় অনুগত থাকবে। তাই প্রকৃত অর্থে সিয়াম পালনকারী কোনো বান্দা সেহরির সময় শেষ হওয়ার ১ মিনিট পরে আর পানাহার করে না। আবার ইফতার সময় হওয়ার ১ মিনিট আগেও কিছু খায় না। যদি এর ব্যতিক্রম করে তাহলে তাকে সিয়াম পালনকারী হিসেবে ধরা হয় না। এখানে সে আল্লাহর নির্দেশের সামনে পূর্ণ মাত্রায় নিজেকে সমর্পণ করে অনুগত গোলাম হিসেবে প্রকাশ করছে। সিয়ামের উদ্দেশ্য এটাই, সে যেমন রমজানের এক মাস আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সপে দিচ্ছে, এভাবে বাকি ১১ মাসও যেন সে আল্লাহর নির্দেশের অনুগত হয়ে জীবন যাপন করে।
তৃতীয় শক্তি শৃঙ্খলা : রমজান মাসে মুসলমানরা বিশেষ একটি নিয়মের অধীনে পানাহার করে, নিদ্রায় যায় ও জাগ্রত থাকে। রমজান মাসে মুসলিম সমাজ একই নিয়মে আবর্তিত হয়। সিয়াম পালনকারী দিবাভাগে অভুক্ত থাকে ও সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে, এশা, তারাবি ও ফজরের নামাজ সবই একটি নিয়মের অধীনে আদায় করে। এ সময় গোটা মুসলিম সমাজে একটি সুশৃঙ্খল ও পরিপাটি পরিবেশ বিরাজ করে। দুনিয়ার আর অন্য কোনো জাতি বা ধর্মে এমন শৃঙ্খলা দেখা যায় না। যে নিয়মের অধীনে ছোট-বড়, ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, রাজা-প্রজা সবাই সমান হয়ে যায়। এ তিনটি চারিত্রিক শক্তি একজন মুসলমানের মাঝে সৃষ্টি করে সিয়াম সাধনা। এ শক্তিতে যদি মুসলিম জাতি ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে সব অপশক্তি হবে পরাভূত আর মুসলিম জাতি হবে সফল।
লেখক : সায়খুল হাদীস, খতিব ও প্রাবন্ধিক।
প্রথম শক্তি হল সহিষ্ণুতা : ধৈর্য সহিষ্ণুতা এমন এক মহৎ গুণ যা মানুষকে পৌঁছে দেয় তার সফলতার চরম বিন্দুতে। সহিষ্ণুতা এমন এক রুহানি শক্তি যা যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত অস্ত্রের চেয়েও বেশি কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত। রমজানে একজন সিয়াম পালনকারী পানাহার, জৈবিক ক্ষুধা নিবারণসহ বহু বৈধ উপকরণ উপভোগ থেকে বিরত থেকে নিজেকে আল্লাহর সামনে সমর্পণ করে চরম সহিষ্ণুতা ও ধৈর্যের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে। সে নিজেকে ধৈর্যশীল ও পরমসহিষ্ণু হিসেবে গড়ে তোলে। যে সহিষ্ণুতা তাকে নিয়ে যায় মহাপ্রাপ্তির সোপানে। এ ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা ব্যক্তি এবং সমাজ জীবনে বড় প্রয়োজন। আর এর অভাবে আজ সমাজ জীবন বড়ই দুর্বীষহ হয়ে উঠেছে। অধৈর্য আর সহিষ্ণুহীনতায় জন্ম নেয় নানা অপরাধ, মানুষ জড়িয়ে পড়ে পাপাচারে। ঝগড়া-বিবাদ, কলহ-দ্বন্দ্ব, মারামারি, হানাহানি, ধোঁকা, প্রতারণ, প্রবঞ্চনাসহ নানা অমানবিক গুণাবলি যা আমাদের সমাজের নিত্যদিনের সঙ্গী, সবই সহিষ্ণুহীনতার ফসল। রমজান ধৈর্য সহিষ্ণুতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে একজন মানুষকে খাঁটি মানুষে পরিণত করতে চায়।
দ্বিতীয় শক্তি আনুগত্য : আনুুগত্যের মহাগুণ ও শক্তি একজন সিয়াম পালনকারী তার সিয়াম সাধনার মাধ্যমে নিজের মাঝে প্রতিষ্ঠা করতে পারে। একজন মুসলমান রমজান মাসে পানাহার ও অন্যান্য আরও নানা অভ্যাস থেকে এ জন্যই বিরত থাকে যে এটা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর নির্দেশ। সে তার আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্যে আরাম ও কষ্ট, সুখ ও দুঃখ কিছুরই পরোয়া করে না। সে জানে, আল্লাহকে নিজের প্রভু বলে স্বীকার করেছে এবং এ অঙ্গীকার করেছে যে, অভাব বা সমৃদ্ধি সুদিন বা দুর্দিন সুখ বা দুঃখ সর্বাবস্থায় অনুগত থাকবে। তাই প্রকৃত অর্থে সিয়াম পালনকারী কোনো বান্দা সেহরির সময় শেষ হওয়ার ১ মিনিট পরে আর পানাহার করে না। আবার ইফতার সময় হওয়ার ১ মিনিট আগেও কিছু খায় না। যদি এর ব্যতিক্রম করে তাহলে তাকে সিয়াম পালনকারী হিসেবে ধরা হয় না। এখানে সে আল্লাহর নির্দেশের সামনে পূর্ণ মাত্রায় নিজেকে সমর্পণ করে অনুগত গোলাম হিসেবে প্রকাশ করছে। সিয়ামের উদ্দেশ্য এটাই, সে যেমন রমজানের এক মাস আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সপে দিচ্ছে, এভাবে বাকি ১১ মাসও যেন সে আল্লাহর নির্দেশের অনুগত হয়ে জীবন যাপন করে।
তৃতীয় শক্তি শৃঙ্খলা : রমজান মাসে মুসলমানরা বিশেষ একটি নিয়মের অধীনে পানাহার করে, নিদ্রায় যায় ও জাগ্রত থাকে। রমজান মাসে মুসলিম সমাজ একই নিয়মে আবর্তিত হয়। সিয়াম পালনকারী দিবাভাগে অভুক্ত থাকে ও সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে, এশা, তারাবি ও ফজরের নামাজ সবই একটি নিয়মের অধীনে আদায় করে। এ সময় গোটা মুসলিম সমাজে একটি সুশৃঙ্খল ও পরিপাটি পরিবেশ বিরাজ করে। দুনিয়ার আর অন্য কোনো জাতি বা ধর্মে এমন শৃঙ্খলা দেখা যায় না। যে নিয়মের অধীনে ছোট-বড়, ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, রাজা-প্রজা সবাই সমান হয়ে যায়। এ তিনটি চারিত্রিক শক্তি একজন মুসলমানের মাঝে সৃষ্টি করে সিয়াম সাধনা। এ শক্তিতে যদি মুসলিম জাতি ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে সব অপশক্তি হবে পরাভূত আর মুসলিম জাতি হবে সফল।
লেখক : সায়খুল হাদীস, খতিব ও প্রাবন্ধিক।
No comments