বিশ্বব্যাংকের ৮শ’ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা
তৈরি পোশাক শিল্পের বাইরে রফতানিমুখী চামড়া, পাদুকা, প্লাস্টিক ও হালকা প্রকৌশল শিল্পে শ্রমিকদের কর্মদক্ষতা বাড়াতে ১০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ (প্রতি ডলার ৮০ টাকা হারে) দাঁড়ায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। এ অর্থ ব্যয় করে চট্টগ্রামের মিরসরাই, মুন্সীগঞ্জের কেরানীগঞ্জ, সিরাজদিখান এবং ঢাকার তেজগাঁও ও সাভার এলাকায় বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। এ প্রকল্পে ঋণ প্রস্তাব ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাংকের বোর্ড সভায় অনুমোদন পেয়েছে। রোববার সংস্থার ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের সহায়তা নিয়ে এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জব শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। রফতানিমুখী চামড়া, পাদুকা, প্লাস্টিক ও হালকা প্রকৌশল শিল্পে শ্রমিকদের কর্মদক্ষতা বাড়াতে এ প্রকল্প সহায়তা করবে। ফলে গার্মেন্ট সেক্টরের বাইরে এ খাতগুলোতে ৯০ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বলেছেন, চীনের পর বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি তৈরি পোশাক রফতানি করছে। রফতানি খাতের বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার প্রবৃদ্ধিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে মান বজায় রেখে প্রতিযোগী সক্ষমতা বাড়বে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। তাছাড়া নতুন বাজারে পণ্য রফতানিসহ দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো বিশ্ববাজারে প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে।
এ প্রকল্পের টিম লিডার মাইকেল অলিভ এগমান উল্লেখ করেছেন, এ প্রকল্পে নারীসহ অন্য শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। ফলে প্রকল্প শেষ নাগাদ শ্রমিকদের মজুরি ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ চার খাতে রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অনেক বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। এর ফলে চার খাতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের পরিমাণও বাড়বে বলে মনে করে সংস্থাটি। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে বিশ্বব্যাংক জানায়, বাংলাদেশ থেকে পাদুকা রফতানি প্রতি বছর গড়ে ২৩ শতাংশ হারে বাড়ছে। পরিমাণে কম হলেও ইলেকট্রুনিক্স পণ্যের রফতানি বাড়ছে ৫১ শতাংশ হারে। চামড়া ও চামড়া শিল্পের রফতানি বছরে ৪৩ শতাংশ হারে বাড়ছে। আর প্লাস্টিক পণ্যের রফতানি বাড়ছে ২৩ শতাংশ হারে। এ চার খাতের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে রফতানিতে পোশাক খাতের ওপর নির্ভরতা কমে আসবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্বব্যাংকের সহায়ক প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) তহবিল থেকে পাওয়া এ ঋণ ৬ বছরের রেয়াতকালসহ ৩৮ বছরে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। রেয়াতকাল পরবর্তী সময়ে উত্তোলন করা অর্থের শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ পরিশোধ করতে হবে।
No comments