মধ্যবিত্তের টিকে থাকার লড়াই- বাজারে ছুটছে পাগলা ঘোড়া
নানা
অজুহাতে একের পর এক নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। পরে দাম কমানোর মতো অবস্থা হলেও
আর কমে না। দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রেও কোনো ধরনের যৌক্তিকতার প্রশ্নের কোনো
জবাব মেলে না। এভাবে লাগামহীনভাবে পণ্যমূল্য বাড়ায় দিনদিন নাভিশ্বাস উঠছে
মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষের। দ্রব্যমূল্য যেন এখন এক পাগলা ঘোড়া।
ছুটছে তো ছুটছেই। পণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা
বাজার সংশ্লিষ্টদের চোখে পড়ার মতো কোনো উদ্যোগ নেই। অন্যদিকে বিভিন্ন
সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কিছু নিত্যপণ্যের বাজারনিয়ন্ত্রিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে
ব্যবসায়ীদের। এদিকে নতুন বাজেট ঘোষণার পর লাগামহীনভাবে বেড়েই চলছে চাল,
ভোজ্যতেল এবং রসুনসহ ভোগ্য পণের দাম। বিভিন্ন ধরনের মসলার দামও বেড়েছে। এতে
বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা। জীবনধারণের জন্য
দুবেলা খাওয়ার জন্য মোটা চাল কিনতে হলেও কেজি প্রতি খরচ করতে হচ্ছে ৪৫
টাকার ওপরে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, অধিক মুনাফার আশায় প্রতি বছরই রমজানের আগে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করে তুলতে পাঁয়তারা চালায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তারা এ অপতৎপরতা চালায়। সরকারের সঙ্গে বৈঠকে ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষায় নানা আশ্বাস দিলেও পরে তা রক্ষা করেন না তারা। রমজান, ঈদ এলেই এরা সাধারণ ভোক্তাদের পকেট কাটার উৎসবে মেতে ওঠেন। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, গত এক বছরে চালের দাম বেড়েছে ৪২ শতাংশ, অন্য চালের দাম বেড়েছে গড়ে ২০ শতাংশ। খাসির মাংসের দাম বেড়েছে ২৬ শতাংশ। গরুর মাংসের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ। চিনির দাম বেড়েছে ২১ শতাংশ। ১৫ শতাংশ বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। রসুনের (আমদানি) দাম বেড়েছে ৬২ শতাংশ পর্যন্ত। লবণের দাম বেড়েছে ১৪ শতাংশ।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, বাজারে চালের সংকট নেই। তার পরও চাল ও চিনির দাম বাড়ানো হচ্ছে। কিছু লোক অতি উৎসাহী হয়ে এ কাজ করছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা ১১ মাস ব্যবসা করে আর রোজার মাসে মুনাফা ছাড় দেয়। আর বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা রোজার মাসকে মুনাফা লাভের মোক্ষম সময় ধরে নেয়। আমাদের দেশের জনগণের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।
হাওরে ফসলহানীর কারণে চালের দাম বেড়েছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলছেন, আমদানি করা চাল দেশে এলে বাজারে দাম কমবে। এক প্রশ্নে কৃষিমন্ত্রী বলেন, চালের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে সেটা কেউই অস্বীকার করবে না। তিনি বলেন, পাহাড়ি ঢল ও আগাম বন্যায় এবার হাওরের দুই-তৃতীয়াংশ ফসল ডুবে গেছে। এছাড়া বোরো ফসল নষ্ট হয়েছে। ফলে ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হবে।
রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছোলার দাম রমজানের শুরুতে ছিল ৮০ টাকা। এখন এই পণ্যের দাম হয় ৮৫ টাকা। একইভাবে চিনির দাম রোজার শুরুতে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা হলেও এখন তা ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। বিক্রেতারা বলেন, ছোলা আর চিনির দাম পাইকারি বাজারে বেড়েছে বলে আমাদের বেশি দামে বেচতে হচ্ছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে বলে তাদেরও বাড়াতে হয়েছে। পাইকারি বিক্রেতারা বলেন, প্রতি বস্তা ছোলা ৩ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি করছি। বস্তাপ্রতি মাত্র ৫০ টাকা লাভ করছি।
নিত্যপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে ভারত থেকে আমদানি করা রসুনের। রমজানের শুরুতে এই রসুন প্রতি কেজি ২৮০ টাকা ছিল। এখন সেই রসুন প্রতি কেজি ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। বিক্রেতা আসিফ বলেন, পাইকারি বাজারে আমদানি করা রসুনের সরবরাহ কম বলেই এর দাম বেশি।
এখন বাজারে মোটা স্বর্ণা চাল কেজিপ্রতি ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা, পারিজা ৪৫ থেকে ৪৮, মিনিকেট একটু ভালোমানের ৫৬ থেকে ৬০, মিনিকেট (সাধারণ) ৫২ থেকে ৫৪, বিআর আটাশ ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়, নাজিরশাইল ৫৪, ভালোমানের নাজিরশাইল ৫৬ থেকে ৬০ টাকা, পায়জাম ৪৮ থেকে ৫০, বাসমতি ৬০ টাকা, কাটারিভোগ ৭৬ থেকে ৭৮, হাস্কি নাজির ৪৫ এবং পোলাও চাল খোলা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় ধরে বিক্রি হচ্ছে।
সূত্র জানায়, চালের দাম বাড়লেও এর সুফল পায়নি ধান উৎপাদনকারী কৃষক। কারণ কৃষক পর্যায় থেকে ন্যায্যমূল্যের চেয়ে কম দামে ধান কিনে মজুত করা হয়েছে। এখন মজুতকৃত ধানের দাম বাড়িয়ে চালের বাজার থেকে অতি মুনাফা করছেন মিলমালিকরা। এছাড়া এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে স্থানীয় দালাল ও ফড়িয়ারাও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের অভাবে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্রের ‘আছর’ ভর করছে চালের বাজারে। আর এ কারণে দাম কমছে না। চাল বিক্রেতা মাঈনউদ্দিন চালের দামের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে বলেন, বাজারে চালের সরবরাহ কম, তাই দাম বেশি। এ বছর বৃষ্টিতে ধানক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, সরকার চাল আমদানির ঘোষণা দিয়েছে। আমদানি শুরু হলে চালের দর কমতে পারে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মামুনুর রশিদ জানান, গত ৮-১০ বছরে মোটা চালের দর এত বাড়েনি। অন্য বছর এ সময়টাতে মোটা চালের কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় কেনা যেত। কিন্তু চলতি বছর মোটা চাল কিনতে ৪৫ টাকার বেশি গুনতে হচ্ছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, অধিক মুনাফার আশায় প্রতি বছরই রমজানের আগে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করে তুলতে পাঁয়তারা চালায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তারা এ অপতৎপরতা চালায়। সরকারের সঙ্গে বৈঠকে ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষায় নানা আশ্বাস দিলেও পরে তা রক্ষা করেন না তারা। রমজান, ঈদ এলেই এরা সাধারণ ভোক্তাদের পকেট কাটার উৎসবে মেতে ওঠেন। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, গত এক বছরে চালের দাম বেড়েছে ৪২ শতাংশ, অন্য চালের দাম বেড়েছে গড়ে ২০ শতাংশ। খাসির মাংসের দাম বেড়েছে ২৬ শতাংশ। গরুর মাংসের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ। চিনির দাম বেড়েছে ২১ শতাংশ। ১৫ শতাংশ বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। রসুনের (আমদানি) দাম বেড়েছে ৬২ শতাংশ পর্যন্ত। লবণের দাম বেড়েছে ১৪ শতাংশ।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, বাজারে চালের সংকট নেই। তার পরও চাল ও চিনির দাম বাড়ানো হচ্ছে। কিছু লোক অতি উৎসাহী হয়ে এ কাজ করছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা ১১ মাস ব্যবসা করে আর রোজার মাসে মুনাফা ছাড় দেয়। আর বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা রোজার মাসকে মুনাফা লাভের মোক্ষম সময় ধরে নেয়। আমাদের দেশের জনগণের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।
হাওরে ফসলহানীর কারণে চালের দাম বেড়েছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলছেন, আমদানি করা চাল দেশে এলে বাজারে দাম কমবে। এক প্রশ্নে কৃষিমন্ত্রী বলেন, চালের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে সেটা কেউই অস্বীকার করবে না। তিনি বলেন, পাহাড়ি ঢল ও আগাম বন্যায় এবার হাওরের দুই-তৃতীয়াংশ ফসল ডুবে গেছে। এছাড়া বোরো ফসল নষ্ট হয়েছে। ফলে ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হবে।
রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছোলার দাম রমজানের শুরুতে ছিল ৮০ টাকা। এখন এই পণ্যের দাম হয় ৮৫ টাকা। একইভাবে চিনির দাম রোজার শুরুতে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা হলেও এখন তা ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। বিক্রেতারা বলেন, ছোলা আর চিনির দাম পাইকারি বাজারে বেড়েছে বলে আমাদের বেশি দামে বেচতে হচ্ছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে বলে তাদেরও বাড়াতে হয়েছে। পাইকারি বিক্রেতারা বলেন, প্রতি বস্তা ছোলা ৩ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি করছি। বস্তাপ্রতি মাত্র ৫০ টাকা লাভ করছি।
নিত্যপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে ভারত থেকে আমদানি করা রসুনের। রমজানের শুরুতে এই রসুন প্রতি কেজি ২৮০ টাকা ছিল। এখন সেই রসুন প্রতি কেজি ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। বিক্রেতা আসিফ বলেন, পাইকারি বাজারে আমদানি করা রসুনের সরবরাহ কম বলেই এর দাম বেশি।
এখন বাজারে মোটা স্বর্ণা চাল কেজিপ্রতি ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা, পারিজা ৪৫ থেকে ৪৮, মিনিকেট একটু ভালোমানের ৫৬ থেকে ৬০, মিনিকেট (সাধারণ) ৫২ থেকে ৫৪, বিআর আটাশ ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়, নাজিরশাইল ৫৪, ভালোমানের নাজিরশাইল ৫৬ থেকে ৬০ টাকা, পায়জাম ৪৮ থেকে ৫০, বাসমতি ৬০ টাকা, কাটারিভোগ ৭৬ থেকে ৭৮, হাস্কি নাজির ৪৫ এবং পোলাও চাল খোলা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় ধরে বিক্রি হচ্ছে।
সূত্র জানায়, চালের দাম বাড়লেও এর সুফল পায়নি ধান উৎপাদনকারী কৃষক। কারণ কৃষক পর্যায় থেকে ন্যায্যমূল্যের চেয়ে কম দামে ধান কিনে মজুত করা হয়েছে। এখন মজুতকৃত ধানের দাম বাড়িয়ে চালের বাজার থেকে অতি মুনাফা করছেন মিলমালিকরা। এছাড়া এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে স্থানীয় দালাল ও ফড়িয়ারাও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের অভাবে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্রের ‘আছর’ ভর করছে চালের বাজারে। আর এ কারণে দাম কমছে না। চাল বিক্রেতা মাঈনউদ্দিন চালের দামের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে বলেন, বাজারে চালের সরবরাহ কম, তাই দাম বেশি। এ বছর বৃষ্টিতে ধানক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, সরকার চাল আমদানির ঘোষণা দিয়েছে। আমদানি শুরু হলে চালের দর কমতে পারে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মামুনুর রশিদ জানান, গত ৮-১০ বছরে মোটা চালের দর এত বাড়েনি। অন্য বছর এ সময়টাতে মোটা চালের কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় কেনা যেত। কিন্তু চলতি বছর মোটা চাল কিনতে ৪৫ টাকার বেশি গুনতে হচ্ছে।
No comments