কট্টরবাদের পথেই ফুল বিছিয়ে দিল বিজেপি
উত্তরপ্রদেশের
বিপুল জয় ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপিকে কতটা আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে তার
প্রমাণ মিলল কট্টরপন্থী যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদে
আরোহণের মধ্য দিয়ে। কোনো রাখঢাক না রেখেই খুব দ্রুত দলটি বহুত্ববাদের
চর্চার ঐতিহ্যকে পেছনে সরিয়ে, সহিষ্ণুতার প্রকাশ্য আভরণকে বর্জন করে
কট্টরবাদের পথেই নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহেরা ফুল বিছিয়ে দিল বলে নিজেদের
মন্তব্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় দৈনিক আনন্দবাজার।
এতে বলা হয়, 'আদিত্যনাথ মানে বিতর্ক, অসহিষ্ণুতা ও মুসলিমবিদ্বেষ এই
বক্তব্যটি তিনি নিজেও কোনো দিন খারিজ করেননি। বস্তুত এই ভাবমূর্তিটি সযত্নে
লালন করে এসেছেন কয়েক দশক ধরে। এমনটা নয় যে, সম্প্রতি তিনি পাল্টেছেন।
এবারের ভোটেও তার কট্টর বক্তব্যের ঘোষণার ডেসিবেল বরং বাড়িয়েই গিয়েছেন এক
পর্যায় থেকে আর এক পর্যায়ে। তাকেই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়ে উত্তম পুরস্কার
দিলেন মোদি। এ পুরস্কারই যদি দেয়ার ছিল, তবে শেষ মুহূর্তের এই চমক কেন? কেন
পূর্ব ঘোষণা ছিল না? কেন বিজেপি কঠোর হিন্দুত্ববাদী মনোভাব নিয়ে ভোটে গেল
না? কারণ সেখানে আশংকা ছিল। বহু ধর্ম বহু মত বহু জাতি বহু সম্প্রদায়ের বৃহৎ
এই রাজ্য যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়?
অতএব ঝোলাটি ঢাকা রাখার দরকার ছিল তখন।
ইঙ্গিত যে একেবারে ছিল না, তা কিন্তু নয়। ৪০৩টি আসনের একটিতেও মুসলিম
প্রার্থী দাঁড় করায়নি বিজেপি। ভোটের প্রচারণায় আদিত্যনাথদের রামমন্দির
নির্মাণের সদম্ভ ঘোষণা দেখেও চুপ থেকেছিল যে দল, বিপুলভাবে ক্ষমতায় এসে সেই
কট্টরপন্থীকেই তারা যে বেছে নেবে, এখন বোঝা যাচ্ছে তাতে আশ্চর্যের কিছু
নেই। এই বার্তা অত্যন্ত স্পষ্ট। বহুত্ববাদী এই দেশের মেরুদণ্ডে সেই বার্তায়
হিমস্রোত এখন। এই দেশের মেরুদণ্ড অবশ্য অন্য ধাতুতে তৈরি। ইতিহাস সাক্ষী,
বারবার ঋজুতার পরিচয় দিয়েছে সে। সেই দেশ, তার মেরুদণ্ড, তার এ যাবৎকালের
সাধনা, ভাবনা এখন নতুন পরীক্ষার সামনে। কোনো সংশয় যেন না থাকে, জয় হবে শেষ
পর্যন্ত মানুষেরই।'
No comments