আন্তর্জাতিক রাজনীতির গ্র্যান্ডমাস্টার by মোহাম্মদ আবুল হোসেন



সম্ভবত আপনিও অভিযোগগুলো শুনেছেন। যদি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সঠিক হয় তাহলে বাড়িয়ে বলা হবে না যে, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর মানুষ হলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি কি ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে উল্টে দিয়েছেন? কোটি কোটি ডলারের এ প্রশ্ন এখনো যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বের মানুষের মনে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ও পরে দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে যতটা আলোচনা হয়েছে তার প্রায় সবটার সঙ্গেই উঠে এসেছে পুতিনের নাম বা রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতা। যেখানেই আলোচনা সেখানেই পুতিন। যেখানেই আলোচনা সেখানেই তার গুপ্তচর বা কূটনীতিক সংশ্লিষ্টতা। খুব ধীরগতিতে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর যেন প্রাধান্য বিস্তার করে আছেন। নির্বাচনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এমন সব অভিযোগ তদন্ত করার কথা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট কংগ্রেসের হাউস ইন্টেলিজেন্ট কমিটির। তারা তদন্ত করে দেখবে এ অভিযোগগুলো সত্যি কিনা। তবে ক্রেমলিন অব্যাহতভাবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এখন পর্যন্ত কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না, হ্যাকাররা নির্বাচনে ভোট বা ব্যালট নিয়ে কারসাজি করতে পেরেছে। কিন্তু পরিস্থিতি তার চেয়েও অনেক বেশি জটিল। প্রশ্নটা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় রাশিয়া সরকারের হ্যাকাররা কি সত্যি ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির কম্পিউটার সিস্টেম হ্যাক করেছিল? তারা কি স্পর্শকাতর ডকুমেন্ট তাদের হাতে পেয়েছিল? সেগুলো কি তারা উইকিলিকসের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছিল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও এ দল থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে ভেঙেচুরে নিঃশেষ করে দিতে? এক্ষেত্রে গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সরাসরি মুখ খোলে। তারা প্রকাশ্যে বলে, নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর জন্য ব্যক্তিগতভাবে ওই হ্যাকিং করেছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। তার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়া। আগেই বলা হয়েছে, পুতিন এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডনাল্ড ট্রাম্পকে সুবিধা করে দেয়ার মধ্যে রাশিয়া বা দেশটির নেতাদের কি উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুতিনের উদ্দেশ্য ট্রাম্পকে সহযোগিতার চেয়ে হিলারি ক্লিনটনের প্রতি তার গভীর শত্রুতা।
পুতিনের উত্থান
১৯৯১ সালে অবসান হয় শীতল যুদ্ধ। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি থেকে এ সময় পর্যন্ত ইউরোপ দু’টি আলাদা অংশে বিভক্ত ছিল। সেই বিভক্তি রেখা বা বাউন্ডারিকে বলা হয় আয়রন কার্টেইন বা লোহার বেষ্টনী। যখন সেই আয়রন কার্টেইনের পতন শুরু হয় তখন পূর্ব জার্মানির ড্রেসডেনে রাতের বেলা বৃষ্টি হচ্ছিল। তখনই ক্ষমতার মোহ পেয়ে বসে ভ্লাদিমির পুতিনকে। তখন তার বয়স মাত্র ৩৭ বছর। তিনি রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি’র টগবগে দুরন্ত এক যুবক। ড্রেসডেনে এ সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে নিয়োজিত তিনি।
বার্লিন প্রাচীর পতনের কয়েক সপ্তাহ পরে  ১৯৮৯ সালের ৫ই ডিসেম্বর পূর্ব জার্মানির গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান কার্যালয় স্টাসি’তে হামলা চালায় জনতা। দৃশ্যত অসহায় হয়ে পড়েন ওই সংস্থার গোয়েন্দারা। ওই ড্রেসডেনেই বিশাল একটি ভবনে অবস্থিত কেজিবির প্রধান কার্যালয়। সেদিকে চোখ পড়ে লুটেরা, উত্তেজিত উচ্ছৃঙ্খল জনতার। তারা সেখানে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। তাদের ভয়ে প্রহরীরা ভবনের ভেতরে ঢুকে যান। এ সময় হামলাকারীদের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। তখন কি করলেন পুতিন! তিনি চুলা জ্বালালেন। পূর্ব সতর্কতা হিসেবে তাতে পুড়িয়ে ফেললেন কেজিবির গোপন হাজার হাজার নথিপত্র। তারপর কেজিবির এই প্রধান কার্যালয় থেকে বেরিয়ে এলেন একজন। তিনি ধীর, শান্ত। তিনি বললেন, ‘তোমরা ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করো না। আমার কমরেডদের অস্ত্র তাক করা আছে। জরুরি অবস্থায় সেগুলো চালানোর নির্দেশ দেয়া আছে তাদের’। তার এ বলিষ্ঠ ঘোষণায় পিছু হটে জনতা। সেই টগবগে, কৌশলী যুবকটিই হলেন ভ্লাদিমির পুতিন। সেদিনই তিনি কেজিবিতে নিজেকে ইনচার্জ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত বিখ্যাত ম্যাগাজিন দ্য ইকোনমিস্টের মস্কো ব্যুরো প্রধান ছিলেন এ ম্যাগাজিনের সিনিয়র সম্পাদক এডওয়ার্ড লুকাস। তিনি বলেন, বার্লিন দেয়াল পতনের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার সুযোগ সৃষ্টি হয় পুতিনের সামনে। ওই সময় সহায়তা চেয়ে মস্কোতে ফোন করেন তিনি। জবাবে বলা হয়, আপনার নিজেকেই কাজ করতে হবে। রাশিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান সাংবাদিক ও লেখক মাশা গেসেন বলেন, কথাটা শুনতে কেমন যেন গভীর এক ষড়যন্ত্রের মতো মনে হলো।
নিউ ইয়র্কার পত্রিকার সম্পাদক ডেভিড রেমনিকের মতে, এই ঘটনা পুতিনের মনে এক রকম ভীতির সঞ্চার করেছিল। এই আতঙ্ক পুতিন তার সারা জীবন বয়ে বেড়াচ্ছেন। তার সেই ভয় হলো- পপুলার আপরাইজিং বা জনবিস্ফোরণের আতঙ্ক। ওই মুহূর্ত থেকেই পুতিন আতঙ্কের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। তবে মাশা গেসেন বলেন, নেতৃত্ব মানেই হলো নিয়ন্ত্রণ। পুতিন এ কথাটাই ব্যবহার করে থাকেন। নিজের দেশের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কেজিবিতে ক্যারিয়ার গড়ার পরেই তিনি দ্রুততার সঙ্গে রাজনৈতিক পদে আসীন হন। রাশিয়া ফেডারেশনে ২০০০ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট হন তিনি। তার আগে প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন বরিস ইয়েলৎসিন। পুতিন যে বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন সেই একই বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জর্জ ডব্লিউ বুশ। তিনি রাশিয়ায় নবনির্বাচিত এই নেতার সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার চেষ্টা করেন। ২০০১ সালে তাদের সাক্ষাৎ হয়। তখন পুতিন সম্পর্কে বুশ বলেছিলেন, পুতিন তার দেশের প্রতি গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু পুতিনের ক্ষমতার মেয়াদ অল্প কয়েক বছর পূরণ হতেই বুশ প্রশাসন তার সুর পাল্টে ফেলে। পুতিন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সে বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বুশ। ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের জন্য লড়াই করেন হিলারি ক্লিনটন। ওই সময়ে এব্‌ং ২০১১ সালে বিশ্বজুড়ে যখন গণতন্ত্রের পক্ষে প্রতিবাদ হচ্ছিল তখন পুতিনের কড়া সমালোচনা করেন হিলারি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ঘটনায় হিলারির ওপর ক্ষেপেছেন পুতিন। এ কারণেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে হিলারির বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে থাকতে পারেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় হিলারি ক্লিনটন ছিলেন একজন সিনেটর। সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ যেমনটা বলেছিলেন- তিনি পুতিনের অন্তরাত্মা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন- তা নিয়ে উপহাস করেন হিলারি। কারণ, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কেজিবির একজন সাবেক এজেন্ট। ‘তাই তার কোনো ব্যক্তিত্ব থাকতে পারে না’। এরপর ২০১১ সালে তৃতীবারের জন্য প্রেসিডেন্ট হওয়ার খায়েশ প্রকাশ করেন পুতিন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর মস্কোতে তখন সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের পক্ষ নেন যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। ওই সময় অনুষ্ঠিত বিতর্কিত রাশিয়ার পার্লামেন্ট নির্বাচন ‘অবাধ ও মুক্ত’ নয় বলে অভিহিত করেন তিনি। হিলারি যোগ করেন, ‘অন্য যেকোনো দেশের মানুষের মতো রাশিয়ার মানুষেরও অধিকার আছে। তাদের অধিকার আছে যে, তাদের বক্তব্য শোনা হোক। তাদের ভোট গণনায় নেয়া হোক’। হিলারির এসব বক্তব্যকে পুতিন তার ওপর ব্যক্তিগত আক্রমণ হিসেবে দেখেছেন। ফলে তিনি টেবিল উল্টে দিয়েছেন। পাল্টা অভিযোগ আনেন তিনি। বলেন, হিলারি ক্লিনটন প্রতিবাদকে উস্কে দিচ্ছেন রাশিয়ার নির্বাচন নিয়ে এবং রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তিনি হস্তক্ষেপ করছেন। ওই সময় পুতিন বলেন, ‘আমাদের দেশের কিছু মানুষের মতো কথা বলছেন তিনি (হিলারি)। এর মধ্য দিয়ে তিনি তাদেরকে একটি সংকেত দিচ্ছেন। তারা (জনতা) এই সংকেত বা সিগন্যালে কর্ণপাত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমর্থনে তারা সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে’। রাশিয়া ও বাকি বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক সময়ে তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আসেন পুতিন। স্মরণ করা যেতে পারে, ২০১১ সালটি ছিল এমন একটি বছর যখন মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু হয়েছে। একে বলা হয় আরব বসন্ত।
পুতিন যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখনও তিনি রাশিয়ায় ছিলেন শক্তিধর বা স্ট্রংম্যান। ২০০৮ সালে তিনি যদিও প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করেন কিন্তু অনেক বিশ্লেষক বলেন, সব কিছুতেই ঘুঁটি চেলেছেন তিনি। কারণ, তার ঘনিষ্ঠ মিত্র দমিত্রি মেদভেদেভ ছিলেন প্রেসিডেন্ট। পুতিন ফের ক্ষমতায় আসেন ২০১২ সালে। ততক্ষণ পর্যন্ত তার এই ঘনিষ্ঠ মিত্র প্রশাসন চালিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মেদভেদেভ প্রেসিডেন্ট থাকলেও কলকাঠি ছিল পুতিনের হাতে। এখন যেটা বলা হচ্ছে তাহলো ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাশিয়া শাসন করে যেতে পারেন পুতিন। যদি তা-ই হয় তাহলে জোসেফ স্টালিনের পর তিনিই হতে যাচ্ছেন দীর্ঘমেয়াদি প্রথম কোনো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
প্রসঙ্গক্রমে, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগ্রহ প্রকাশ করেন, তখন রাশিয়া কাকে সমর্থন করবে সে বিষয়ে নিয়ে কোনো দ্বিধাই করা চলে না বলে মনে করেন নিউ ইয়র্কার পত্রিকার সাংবাদিক ডেভিড রেমনিক। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই পুতিন চেয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটন পরাজিত হোন। কারণ, তিনি ঘৃণা করেন হিলারি ক্লিনটনকে’।
হিলারিকে ঘৃণা করেন পুতিন এবং মনে করেন হিলারি বিজয়ী হলে রাশিয়ার নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবেন- এ জন্যই কি তবে তিনি ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছেন? প্রশ্নটা সহজ। কিন্তু উত্তর দেয়া কঠিন। সিএনএনের সুপরিচিত সাংবাদিক ফরিদ জাকারিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস উপরের কথাগুলোকে সমর্থন করে বলেন, ‘আমি মনে করি এগুলোই পুতিনের হস্তক্ষেপের কারণ। আমি পুরোপুরিভাবে আশ্বস্ত হয়েছি, রাশিয়ানরা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছিল’। পুতিন প্রত্যক্ষ করেছেন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন। তারপর থেকেই তিনি তার মিশন স্থির করেছেন। তিনি রাশিয়াকে অর্থনৈতিক ও জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে শক্তিশালী করতে চেয়েছেন। এ জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। বাড়তে বাড়তে তা শতকরা ৮৬ ভাগে পৌঁছেছে। রাশিয়ার সমাজবিজ্ঞানী ওলগা ক্রিশতানোভস্কায়া ব্যাখ্যা করেন, পুতিন কাজ করেছেন গড়পড়তায় সব রাশিয়ানের জন্য। এতে পশ্চিমাদের সঙ্গে মাঝে মাঝে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে তাকে। যেমন ন্যাটো সম্প্রসারণ ইস্যু। কোনোভাবে যদি ধারণা প্রতিষ্ঠা করা যায়, যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে রাশিয়া স্মার্ট হবে, তাতে শুধু সুবিধা পাবেন রাশিয়ার এই নেতা। ওলগা ক্রিশতানোভস্কায়া এটাকেই তার দেশের আদর্শ স্তম্ভ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, অনেক আগেই সোভিয়েত নেতারা সতর্কতার সঙ্গে একটি ধারণা জনগণের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাদের সমস্যাগুলো আসলে কি? ওলগা ক্রিশতানোভস্কায়া বলেন, তারা বুঝিয়েছেন এসব সমস্যার মূলে ওইসব মানুষ যারা দুষ্টচক্রের আমেরিকান, যাদের ত্রুটি আছে, যারা আমাদের জন্য সবচেয়ে খারাপ কাজ করে। তাই পুতিন যখন তার নিজস্ব নীতি বাস্তবায়ন করতে যান, তখন তিনি দ্রুততার সঙ্গে পুরনো এই শত্রুর ইস্যুকে বেছে নেন। তাকে নতুন শত্রু খুঁজে নিতে হয় না। তাই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে তিনি হস্তক্ষেপ করেছেন এমন অভিযোগ শুনে পুতিন হাসেন। ব্লুমবার্গ নিউজকে বলেছেন, তিনি এর কিছুই জানেন না। সেপ্টেম্বরে তিনি বলেছেন, এখনকার দিনে কত হ্যাকার আছে আপনি জানেন? তারা আত্মনিবেদিত ও মূল্যবান কাজ করছে। তাদের চেক দেয়া একটি অত্যন্ত কঠিন কাজ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠিক এ কারণেই সাইবার আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন। এ কাজটি করাসহ যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী অবকাঠামোগুলোতে দুর্বল জায়গাগুলো সম্পর্কে তাদের জ্ঞান কাজে লাগিয়েছে। এখন এজন্য সুনির্দিষ্ট করে কাউকে দায়ী করাটাও কঠিন হতে পারে। রিপাবলিকান দল থেকে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পতো নির্দিষ্টভাবে ই-মেইল ফাঁস হওয়াতে কিছু মনে করেন নি। তিনি রাশিয়ার কথিত হ্যাকিং থেকে সুবিধা পেয়েছেন। এ নিয়ে বেশ কিছু তদন্ত হয়েছে বা হচ্ছে। রাশিয়ার একটি ব্যাংক ও ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের মধ্যে সম্পর্ক থাকা একটি কম্পিউটার সার্ভার নিয়ে তদন্ত করছে এফবিআই। ট্রাম্পের প্রচারণা টিম ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক থাকার বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে কংগ্রেস। যদি তদন্তে  অভিযোগের সত্যতা উঠে আসে তা হবে সুদূরপ্রসারী।

No comments

Powered by Blogger.