রপ্তানির চার গুণ চা আমদানি by ফখরুল ইসলাম
ষষ্ঠ
থেকে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষাগুলোতে
একসময় চা নিয়ে রচনা লিখতে বলা হতো। চা ছিল তখন দেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল।
রপ্তানি করে আয় হতো প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। এখন আর সেই রচনা আসে না।
কারণ, অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশকেই এখন বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে চা
আমদানি করতে হচ্ছে। অবশ্য এখনো কিছু চা রপ্তানি হয়। তবে আমদানি হয় এর
প্রায় চার গুণ বেশি। চা-বাগানমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ বলছে,
২০১৩ সালে ৬ কোটি ৪০ লাখ কেজি চা পান করেছে এ দেশের মানুষ, যা ২০০৯ সালের
তুলনায় এক কোটি কেজি বেশি। চা সংসদের অভিযোগ, সরকারের মনোযোগের বাইরে
থাকা এই শিল্পটি ভুল নীতির কারণেই বিপদে পড়েছে। অন্যান্য চা উৎপাদনকারী
দেশ আমদানি নিরুৎসাহিত করলেও বাংলাদেশ হেঁটেছে উল্টো পথে। ৮৪ শতাংশ শুল্ক
হারে এ দেশে চা আমদানি করা যায়। অথচ ভারতে এ হার ১১০ এবং শ্রীলঙ্কায় ১৩০
শতাংশ।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক করে কোনো প্রতিকার পায়নি চা সংসদ। সংগঠনটি পরে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের কাছে লিখিত আবেদন জানালে তিনি বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন। চা সংসদ জানিয়েছে, নিম্নমানের চায়ে সয়লাব হচ্ছে দেশ এবং বিনা কারণে শিল্পটি মার খাচ্ছে।
বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে জানান, চা আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো এবং বাংলাদেশ মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার (বিএসটিআই) মাধ্যমে চায়ের মান নিয়ন্ত্রণের বাধ্যবাধকতা আরোপের কথা ভাবা হচ্ছে। বিষয়টি কার্যকর করবে শিল্প মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাদের এ ব্যাপারে চিঠি পাঠানো হবে।
রপ্তানি কমছে ২৩ বছর ধরে: ১৯৯০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সময়ের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৩ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবেই চা রপ্তানি কমেছে। কমেছে রপ্তানি আয়ও। চা রপ্তানি করে ১৯৯০ সালে যেখানে আয় হয়েছিল ১৫৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, ২০১৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকায়।
চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯০ সালে ২ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা রপ্তানি হয়েছিল। ২০১৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ৫ লাখ ৪০ হাজার কেজিতে।
সে কারণেই নব্বইয়ের দশকে চা রপ্তানিকারক হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল পঞ্চম। এখন কোনো অবস্থানই নেই।
২০০৯ থেকে ২০১৪—এই পাঁচ বছরে চা রপ্তানি হয়েছে ৭৫ লাখ ৭০ হাজার কেজি। ২০০৯ সালে ৩১ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করে ৪৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ২০১০ সালে ৯ লাখ ১০ হাজার কেজি রপ্তানি থেকে ১৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, ২০১১ সালে ১৪ লাখ ৭০ হাজার কেজি রপ্তানি করে ২১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, ২০১২ সালে ১৫ লাখ কেজি থেকে ২২ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং ২০১৩ সালে ৫ লাখ ৪০ হাজার কেজি রপ্তানি থেকে ১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা আয় করে বাংলাদেশ।
চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এনায়েত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘চা আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের ফলে একশ্রেণির আমদানিকারক সুযোগ নিয়েছেন। আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্ক হার অন্তত ভারতের সমান করা উচিত।’
রপ্তানির চার গুণ আমদানি: চা সংসদের তথ্যমতে, ২০০৯-২০১৩ পর্যন্ত পাঁচ বছরে ৭৫ লাখ ৭০ হাজার কেজি চা রপ্তানি হয়। অন্যদিকে এই সময়ে দেশে ২ কোটি ৮৭ লাখ ৯৩ হাজার কেজি চা আমদানিও হয়। এর মধ্যে ২০০৯ সালে ৪০ লাখ ১৩ হাজার, ২০১০ সালে ৪৯ লাখ ৮০ হাজার, ২০১১ সালে ১৯ লাখ ২০ হাজার, ২০১২ সালে ১ কোটি ৬ লাখ ২০ হাজার এবং ২০১৩ সালে ৬৯ লাখ ৬০ হাজার কেজি চা আমদানি হয়।
চা সংসদ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, ‘২০১০ সাল থেকে নিম্নমানের ও সস্তা দামের চা আমদানি হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে চা উৎপাদকেরা শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন।’
এনবিআর ২০১১ সালে চা আমদানির ওপর ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করলে আমদানিতে কিছুটা ভাটা পড়ে। দুই বছর অব্যাহত থাকার পর ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেট পাসের আগে হঠাৎ করেই তা প্রত্যাহার করা হয়।
এ কারণেই নিম্নমানের চা আমদানি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন চা সংসদের সাবেক সভাপতি সাফওয়ান চৌধুরী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘এতে শুধু নিম্নমানের চা-ই আমদানি হচ্ছে না, বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাও চলে যাচ্ছে বিদেশে।’
রাজস্ববঞ্চিত সরকার: চা বোর্ডের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার কেজি চা আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ১৫০ কোটি ৫৮ লাখ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। কিন্তু এতে উৎপাদক ও সরকারি কোষাগারের ক্ষতি হয়েছে ৬০৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
চা বোর্ডের সাবেক উপপরিচালক (বর্তমানে চা সংসদের সচিব) কাজী মোজাফফর আহাম্মদ তাঁর এক বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধে বলেন, ২০১৩ সালে ৬ কোটি ৬২ লাখ ৬০ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়। ২০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের আগে ২৭২ টাকা ৫৩ পয়সা দরে বিক্রি হয় ৬৬ লাখ কেজি চা। শুল্ক প্রত্যাহারের পর বিক্রি হয় ১৯১ টাকা ১২ পয়সা দরে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৬০ হাজার কেজি চা। প্রতি কেজিতে ৮১ টাকা ৪১ পয়সা কম হিসাবে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয় ৪৮৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
আর সরকারের রাজস্ব ক্ষতির হিসাবটি হচ্ছে—শুল্ক প্রত্যাহারের আগে রাজস্ব ১৩৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা হলেও প্রত্যাহারের পর হয় ৯০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ক্ষতি ৪৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আমদানির ফলে মূল্য কমে যাওয়ার কারণে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বাবদ ক্ষতি হয় ৭২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। শুল্ক ও মূসক মিলিয়ে রাজস্ব ক্ষতি ১২১ কোটি ৩ লাখ টাকা। আর উৎপাদক ও রাজস্ব মিলিয়ে মোট ক্ষতি ৬০৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
সিলেটের মালনিছড়া চা-বাগানের মাধ্যমে ১৮৫৪ সালে বাংলাদেশে চা চাষ শুরু হয়। তবে বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয় ১৮৫৭ সালে। বর্তমানে হেক্টরপ্রতি গড়ে উৎপাদিত হচ্ছে ১ হাজার ২৪৭ কেজি চা।
চা সংসদের তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে মোট ১ লাখ ১৫ হাজার ৯০৪ হেক্টর জমিতে এ, বি ও সি—এই তিন শ্রেণির ১৬৩টি চা-বাগান রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯০টি চা-বাগান রয়েছে মৌলবীবাজার জেলায়। এ ছাড়া হবিগঞ্জ ও সিলেটে ২০টি করে, চট্টগ্রামে ২২টি, পঞ্চগড়ে নয়টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও রাঙামাটিতে একটি করে চা-বাগান রয়েছে।
চা সংসদ সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৩৫টি দেশে বর্তমানে চা উৎপাদিত হচ্ছে এবং বিশ্ববাসী দিনে ৩০০ কোটি কাপ চা পান করছে।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক করে কোনো প্রতিকার পায়নি চা সংসদ। সংগঠনটি পরে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের কাছে লিখিত আবেদন জানালে তিনি বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন। চা সংসদ জানিয়েছে, নিম্নমানের চায়ে সয়লাব হচ্ছে দেশ এবং বিনা কারণে শিল্পটি মার খাচ্ছে।
বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে জানান, চা আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো এবং বাংলাদেশ মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার (বিএসটিআই) মাধ্যমে চায়ের মান নিয়ন্ত্রণের বাধ্যবাধকতা আরোপের কথা ভাবা হচ্ছে। বিষয়টি কার্যকর করবে শিল্প মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাদের এ ব্যাপারে চিঠি পাঠানো হবে।
রপ্তানি কমছে ২৩ বছর ধরে: ১৯৯০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সময়ের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৩ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবেই চা রপ্তানি কমেছে। কমেছে রপ্তানি আয়ও। চা রপ্তানি করে ১৯৯০ সালে যেখানে আয় হয়েছিল ১৫৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, ২০১৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকায়।
চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯০ সালে ২ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা রপ্তানি হয়েছিল। ২০১৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ৫ লাখ ৪০ হাজার কেজিতে।
সে কারণেই নব্বইয়ের দশকে চা রপ্তানিকারক হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল পঞ্চম। এখন কোনো অবস্থানই নেই।
২০০৯ থেকে ২০১৪—এই পাঁচ বছরে চা রপ্তানি হয়েছে ৭৫ লাখ ৭০ হাজার কেজি। ২০০৯ সালে ৩১ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করে ৪৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ২০১০ সালে ৯ লাখ ১০ হাজার কেজি রপ্তানি থেকে ১৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, ২০১১ সালে ১৪ লাখ ৭০ হাজার কেজি রপ্তানি করে ২১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, ২০১২ সালে ১৫ লাখ কেজি থেকে ২২ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং ২০১৩ সালে ৫ লাখ ৪০ হাজার কেজি রপ্তানি থেকে ১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা আয় করে বাংলাদেশ।
চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এনায়েত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘চা আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের ফলে একশ্রেণির আমদানিকারক সুযোগ নিয়েছেন। আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্ক হার অন্তত ভারতের সমান করা উচিত।’
রপ্তানির চার গুণ আমদানি: চা সংসদের তথ্যমতে, ২০০৯-২০১৩ পর্যন্ত পাঁচ বছরে ৭৫ লাখ ৭০ হাজার কেজি চা রপ্তানি হয়। অন্যদিকে এই সময়ে দেশে ২ কোটি ৮৭ লাখ ৯৩ হাজার কেজি চা আমদানিও হয়। এর মধ্যে ২০০৯ সালে ৪০ লাখ ১৩ হাজার, ২০১০ সালে ৪৯ লাখ ৮০ হাজার, ২০১১ সালে ১৯ লাখ ২০ হাজার, ২০১২ সালে ১ কোটি ৬ লাখ ২০ হাজার এবং ২০১৩ সালে ৬৯ লাখ ৬০ হাজার কেজি চা আমদানি হয়।
চা সংসদ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, ‘২০১০ সাল থেকে নিম্নমানের ও সস্তা দামের চা আমদানি হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে চা উৎপাদকেরা শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন।’
এনবিআর ২০১১ সালে চা আমদানির ওপর ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করলে আমদানিতে কিছুটা ভাটা পড়ে। দুই বছর অব্যাহত থাকার পর ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেট পাসের আগে হঠাৎ করেই তা প্রত্যাহার করা হয়।
এ কারণেই নিম্নমানের চা আমদানি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন চা সংসদের সাবেক সভাপতি সাফওয়ান চৌধুরী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘এতে শুধু নিম্নমানের চা-ই আমদানি হচ্ছে না, বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাও চলে যাচ্ছে বিদেশে।’
রাজস্ববঞ্চিত সরকার: চা বোর্ডের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার কেজি চা আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ১৫০ কোটি ৫৮ লাখ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। কিন্তু এতে উৎপাদক ও সরকারি কোষাগারের ক্ষতি হয়েছে ৬০৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
চা বোর্ডের সাবেক উপপরিচালক (বর্তমানে চা সংসদের সচিব) কাজী মোজাফফর আহাম্মদ তাঁর এক বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধে বলেন, ২০১৩ সালে ৬ কোটি ৬২ লাখ ৬০ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়। ২০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের আগে ২৭২ টাকা ৫৩ পয়সা দরে বিক্রি হয় ৬৬ লাখ কেজি চা। শুল্ক প্রত্যাহারের পর বিক্রি হয় ১৯১ টাকা ১২ পয়সা দরে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৬০ হাজার কেজি চা। প্রতি কেজিতে ৮১ টাকা ৪১ পয়সা কম হিসাবে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয় ৪৮৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
আর সরকারের রাজস্ব ক্ষতির হিসাবটি হচ্ছে—শুল্ক প্রত্যাহারের আগে রাজস্ব ১৩৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা হলেও প্রত্যাহারের পর হয় ৯০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ক্ষতি ৪৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আমদানির ফলে মূল্য কমে যাওয়ার কারণে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বাবদ ক্ষতি হয় ৭২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। শুল্ক ও মূসক মিলিয়ে রাজস্ব ক্ষতি ১২১ কোটি ৩ লাখ টাকা। আর উৎপাদক ও রাজস্ব মিলিয়ে মোট ক্ষতি ৬০৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
সিলেটের মালনিছড়া চা-বাগানের মাধ্যমে ১৮৫৪ সালে বাংলাদেশে চা চাষ শুরু হয়। তবে বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয় ১৮৫৭ সালে। বর্তমানে হেক্টরপ্রতি গড়ে উৎপাদিত হচ্ছে ১ হাজার ২৪৭ কেজি চা।
চা সংসদের তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে মোট ১ লাখ ১৫ হাজার ৯০৪ হেক্টর জমিতে এ, বি ও সি—এই তিন শ্রেণির ১৬৩টি চা-বাগান রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯০টি চা-বাগান রয়েছে মৌলবীবাজার জেলায়। এ ছাড়া হবিগঞ্জ ও সিলেটে ২০টি করে, চট্টগ্রামে ২২টি, পঞ্চগড়ে নয়টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও রাঙামাটিতে একটি করে চা-বাগান রয়েছে।
চা সংসদ সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৩৫টি দেশে বর্তমানে চা উৎপাদিত হচ্ছে এবং বিশ্ববাসী দিনে ৩০০ কোটি কাপ চা পান করছে।
No comments