সালাহ উদ্দিনের সর্বশেষ অবস্থান ছিল ধানমণ্ডিতে
বিএনপির
যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের সর্বশেষ অবস্থান ছিল ধানমণ্ডির ২৭
নম্বর সড়কে। ১০ মার্চ রাত আড়াইটার দিকে ওই বিএনপি নেতার ব্যবহৃত মোবাইল
ফোনটি ২৭ নম্বর সড়কের একটি টাওয়ারের নেটওয়ার্কে ধরা পড়ে। এরপর থেকে মোবাইল
ফোনটি বন্ধ রয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ঊর্ধ্বতন এক
কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেছেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদ সর্বশেষ ওই রাতে ১১টা ২২
মিনিটে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এরপর ওই মোবাইল থেকে আর কোনো কল করা
হয়নি।
তবে বিষয়টিকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ওই বিএনপি নেতার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। তিনি বলেছেন, ডিবি মিথ্যাচার করছে। যুগান্তরকে তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্বামীর সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয়েছে। রাত ১০টার কিছু পরে ওই মোবাইল থেকে একটি কল এসেছিল, কিন্তু কোনো কথা হয়নি। এদিকে স্বামীকে খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদের ছোট ভাই গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, তার স্ত্রী শামীম আরা জ্যোৎস্নাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৪ নম্বর গেটে আসেন হাসিনা আহমেদ। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেন আমার স্বামীকে খুঁজে বের করতে ব্যবস্থা নেন সেই আবেদন জানাতে এসেছি। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস- উনি মন থেকে চাইলে অবশ্যই আমি আমার স্বামীকে ফিরে পাব। তিনি আরও বলেন, তিনিও একজন মা ও স্ত্রী। আমার মনোকষ্টের কথা তিনি অবশ্যই বুঝবেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিকালে যুগান্তরকে বলেন, অন্যান্য সংস্থার মতো তারাও বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজছেন। তাকে খুঁজতে সর্বোচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত তার অবস্থান সম্পর্কে গোয়েন্দা পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপর এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, ঘটনার দিন রাত আড়াইটার দিকে ধানমণ্ডির ২৭ নম্বর সড়কে সালাহ উদ্দিন আহমেদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। এরপর থেকে মোবাইল ফোনটি একনাগাড়ে বন্ধ থাকায় তার অবস্থান সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হতে পারছেন না।
এদিকে সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধানের দাবিতে শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার সংবাদপত্রে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ ডাক দেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিনিয়র আইনজীবী সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বৃহস্পতিবার রাতে যুগান্তরকে বলেন, দেশের নাগরিকদের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। যে সরকার দেশের নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারে না তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। রাজধানী ঢাকা শহরে সরকার প্রচুরসংখ্যক আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রেখেছে। তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে একজন মানুষ গুম বা নিখোঁজ হয়ে যাওয়া সরকারের চরম ব্যর্থতা বলে আমি মনে করি।
খন্দকার মাহবুব হোসেন আরও বলেন, সালাহ উদ্দিন গুম হওয়ার জন্য সরকার ও সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাই দায়ী। শুধু সালাহ উদ্দিনই নয়, ঢাকায় এবং ঢাকার বাইরে যে কোনো নাগরিকের বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম মেনে নেয়া যায় না। সালাহ উদ্দিনের মতো একজন আইনজীবী, একজন রাজনৈতিক নেতা ও একজন সাবেক প্রতিমন্ত্রীকে কেউ অপহরণ করে নিয়ে যাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের খুঁজে বের করতে পারবে না এটা হতে পারে না। এজন্য অবশ্যই তাদের জবাবদিহি করতে হবে। তাকে খুঁজে বের করতে না পারার জন্যও সরকারকে এবং সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবশ্যই দায়ী হতে হবে।
গত ১০ মার্চ রাতে উত্তরার ৩নং সেক্টরের যে বাসা থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে বৃহস্পতিবার সে এলাকায় গিয়ে কথা হয় নিরাপত্তাকর্মী অপূর্ব রায়ের সঙ্গে। উত্তরা সোসাইটির ওই নিরাপত্তাকর্মী বলেন, প্রতিদিন রাতে ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩ নম্বর সড়কসহ আশপাশের কয়েকটি সড়কে প্রায় ১৫ জন নিরাপত্তাকর্মী ডিউটি করেন। রাত ৯টার পর সড়কগুলোতে প্রবেশের পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। ঘটনার রাতেও তারা ১৩বি রোডটি বন্ধ করে দেন। রাত সাড়ে ৯টার কিছু পরে ওই সড়কে কালো পিকআপ এসে থামে। এর পেছনে আরও একটি সাদা মাইক্রোবাস ছিল। ওই গাড়ি দুটিতে থাকা সাদা পোশাকের কয়েকজন লোক এ সময় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে গেট (লোহার বার) খুলে দিতে বলে।
অপূর্ব রায় বলেন, গাড়ি দুটি ৩নং সেক্টরের ১৩/বি সড়কে একটি বাসার সামনে গিয়ে থামে। নিরাপত্তাকর্মীরা এ সময় সেদিকে এগিয়ে গেলে তাদের চলে যেতে বলা হয়। তিনি আরও বলেন, ওই বাসার সামনে কিছু ছেলে ব্যাডমিন্টন খেলছিল। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দেয়া লোকজন ঝামেলার ভয় দেখিয়ে তাদের সেখান থেকে চলে যেতে বলে। এরপর যে যার মতো চলে যান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে তুলে নেয়ার তিন দিন আগে ৭ মার্চ রাতে বাড্ডা এলাকা থেকে আটক করা হয় তার ব্যক্তিগত সহকারী ওসমান গনিকে। একই রাতে গুলশান এলাকা থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদের দুজন গাড়িচালক খোকন ও শফিককে আটক করে সাদা পোশাকে থাকা আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। দুদিন পর তাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদের ব্যক্তিগত সহকারী ওসমান গনির ভাই মহসিন জানান, র্যাবের সদস্যরা তার ভাইকে আটক করেছিল। পরে তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মূলত তাদের কাছ থেকে তথ্য পেয়েই গুলশানে সালাহ উদ্দিন আহমেদ দীর্ঘদিন যে বাসায় পলাতক থেকে বিএনপির পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেলেন সেই বাসায় অভিযান চালায়। গুলশানে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে বাসার কেয়ারটেকারকে আটক করে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা। পরে তাকেও একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পরদিন কারাগারে পাঠানো হয়। তবে ব্যক্তিগত সহকারী আটকের খবর পেয়ে ওই রাতেই গুলশান ছেড়ে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩/বি সড়কের বাসায় ওঠেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
গত ১০ মার্চ রাত ১০টার দিকে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে একদল সাদা পোশাকধারী লোক উত্তরার ওই বাড়ি থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে তুলে নেয়া হয় বলে অভিযোগ করে আসছেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। পরদিন এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে উত্তরা পশ্চিম ও গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে পুলিশ জিডি নেয়নি। এরপর স্বামী সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান চেয়ে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেন। তবে আইনশৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, পুলিশ সালাহ উদ্দিনকে গ্রেফতার করেনি। তার কোনো খোঁজও পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আগামী ৮ এপ্রিল হাইকোর্টে আবার শুনানির দিন রাখা হয়েছে।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার স্বামীকে খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। তিন পৃষ্ঠার ওই স্মারকলিপিতে হাসিনা আহমেদ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনার কাছে আকুল আবেদন- আমার পরিবার, আমার সন্তানদের কথা বিবেচনা করে প্রজাতন্ত্রের নাগরিক হিসেবে আমাদের আইনি ও সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার নিমিত্তে ও সর্বোপরি মানবিক কারণে আমার স্বামীকে খুঁজে বের করার জন্য আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
স্মারকলিপিতে তিনি বলেন, আমার স্বামী যদি কোনো অপরাধ করে থাকেন অথবা তার বিরুদ্ধে যদি কোনো মামলা থাকে, তাহলে তাকে অবিলম্বে আদালতে সোপর্দ করে আইনি প্রক্রিয়ায় যথাযথ বিচার কার্যক্রম গ্রহণ করা হোক।
একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী বলেন, আমি আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমার কষ্ট ও আকাঙ্ক্ষার কথাগুলো সরাসরি বলতে চাই। আশা করি, শত ব্যস্ততার মধ্যে মহানুভবতার সঙ্গে আমাকে সাক্ষাতের জন্য আপনার মূল্যবান সময় প্রদান করে কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করবেন।
স্মারকলিপি দেয়ার পর রোদের মধ্যে হাসিনা আহমেদ কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তার সঙ্গে আসা স্বজনরা ধরাধরি করে তাকে গাড়িতে তুলে দেন। এর আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাতে এসেছি যেন তিনি আমার স্বামীকে খুঁজে বের করার ব্যবস্থা নেন। দশ দিন ধরে নিখোঁজ সালাহ উদ্দিনকে আইনশৃংখলা বাহিনী খুঁজে বের করে যাতে জনসমক্ষে হাজির করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই নির্দেশ চান হাসিনা।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি গাড়িতে করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৪ নম্বর ফটকে আসেন হাসিনা আহমেদ। সালাহ উদ্দিন আহমেদেও ছোট ভাই গিয়াসউদ্দিন আহমেদ ও তার স্ত্রী শামীম আরা জ্যোৎস্না এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন। সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠি গ্রহণ শাখায় স্মারকলিপিটি দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অফিস সহকারী আবদুল হামিদ তা গ্রহণ করেন।
এদিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে উদ্ধারে বিলম্ব হওয়ায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। বৃহস্পতিবার নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বিএমএর সাবেক কার্যকরী পরিষদের সদস্য ডা. এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তারা বলেন, সরকারের দায়িত্ব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া। তা না হলে সাধারণ জনগণের বুঝতে অসুবিধা হবে না কারা এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ঢাবির সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক এমএ মাজেদ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক জেএন তাহমিনা খাতুন, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক ড. এসএম ফায়েজ, আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, কবি আল মাহমুদ, অধ্যাপক ড. মোস্তাহিদুর রহমান, মো. আবদুল গাফ্ফার, অধ্যাপক ড. শাহ মো. ফারুক, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. আফম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক ড. সদরুল আমীন, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস ইসলাম, অধ্যাপক তাহমিনা আখতার টফি, অধ্যাপক ড. খলিলুর রহমান, অধ্যাপক ড. আমিনুর রহমান মজুমদার, অধ্যাপক ড. এম আজিজ, অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন, অধ্যাপক এমএ রশিদ, অধ্যাপক ড. ওবায়েদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন, অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মনিরুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. আবদুল মোবিন খান, আনহ আখতার হোসেন, অধ্যাপক ডা. আবদুল মান্নান মিয়া প্রমুখ।
সালাহ উদ্দিনকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে কাল বিএনপির বিক্ষোভ : বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দীন আহমেদের সন্ধান এবং তাকে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরত দেয়ার দাবিতে শনিবার বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর বিএনপি। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মহানগর আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস ও সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল শনিবার মহানগরের সব থানা ও ওয়ার্ডে বিক্ষোভ মিছিলে শরিক হতে নেতাকর্মী ও উদ্বিগ্ন নাগরিকদের অনুরোধ জানান।
আব্বাসের প্রেস সচিব জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তারা বলেন, সালাহ উদ্দিনের নিখোঁজ হওয়ার খবরে গোটা দেশবাসী উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত। ঘটনার পর ১০ দিন অতিবাহিত হলেও সরকার অথবা সরকারের কোনো সংস্থা তাকে আটক বা গ্রেফতারের কথা স্বীকার করেনি। এমনকি তার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে তাকে খুঁজে বের করার জন্য সরকারের কাছে বারবার দাবি জানানো হলেও সরকার সে বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সরকারের এ রহস্যজনক আচরণ জনমনে সৃষ্ট উৎকণ্ঠাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে বিষয়টিকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ওই বিএনপি নেতার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। তিনি বলেছেন, ডিবি মিথ্যাচার করছে। যুগান্তরকে তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্বামীর সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয়েছে। রাত ১০টার কিছু পরে ওই মোবাইল থেকে একটি কল এসেছিল, কিন্তু কোনো কথা হয়নি। এদিকে স্বামীকে খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদের ছোট ভাই গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, তার স্ত্রী শামীম আরা জ্যোৎস্নাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৪ নম্বর গেটে আসেন হাসিনা আহমেদ। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেন আমার স্বামীকে খুঁজে বের করতে ব্যবস্থা নেন সেই আবেদন জানাতে এসেছি। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস- উনি মন থেকে চাইলে অবশ্যই আমি আমার স্বামীকে ফিরে পাব। তিনি আরও বলেন, তিনিও একজন মা ও স্ত্রী। আমার মনোকষ্টের কথা তিনি অবশ্যই বুঝবেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিকালে যুগান্তরকে বলেন, অন্যান্য সংস্থার মতো তারাও বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজছেন। তাকে খুঁজতে সর্বোচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত তার অবস্থান সম্পর্কে গোয়েন্দা পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপর এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, ঘটনার দিন রাত আড়াইটার দিকে ধানমণ্ডির ২৭ নম্বর সড়কে সালাহ উদ্দিন আহমেদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। এরপর থেকে মোবাইল ফোনটি একনাগাড়ে বন্ধ থাকায় তার অবস্থান সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হতে পারছেন না।
এদিকে সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধানের দাবিতে শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার সংবাদপত্রে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ ডাক দেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিনিয়র আইনজীবী সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বৃহস্পতিবার রাতে যুগান্তরকে বলেন, দেশের নাগরিকদের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। যে সরকার দেশের নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারে না তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। রাজধানী ঢাকা শহরে সরকার প্রচুরসংখ্যক আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রেখেছে। তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে একজন মানুষ গুম বা নিখোঁজ হয়ে যাওয়া সরকারের চরম ব্যর্থতা বলে আমি মনে করি।
খন্দকার মাহবুব হোসেন আরও বলেন, সালাহ উদ্দিন গুম হওয়ার জন্য সরকার ও সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাই দায়ী। শুধু সালাহ উদ্দিনই নয়, ঢাকায় এবং ঢাকার বাইরে যে কোনো নাগরিকের বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম মেনে নেয়া যায় না। সালাহ উদ্দিনের মতো একজন আইনজীবী, একজন রাজনৈতিক নেতা ও একজন সাবেক প্রতিমন্ত্রীকে কেউ অপহরণ করে নিয়ে যাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের খুঁজে বের করতে পারবে না এটা হতে পারে না। এজন্য অবশ্যই তাদের জবাবদিহি করতে হবে। তাকে খুঁজে বের করতে না পারার জন্যও সরকারকে এবং সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবশ্যই দায়ী হতে হবে।
গত ১০ মার্চ রাতে উত্তরার ৩নং সেক্টরের যে বাসা থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে বৃহস্পতিবার সে এলাকায় গিয়ে কথা হয় নিরাপত্তাকর্মী অপূর্ব রায়ের সঙ্গে। উত্তরা সোসাইটির ওই নিরাপত্তাকর্মী বলেন, প্রতিদিন রাতে ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩ নম্বর সড়কসহ আশপাশের কয়েকটি সড়কে প্রায় ১৫ জন নিরাপত্তাকর্মী ডিউটি করেন। রাত ৯টার পর সড়কগুলোতে প্রবেশের পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। ঘটনার রাতেও তারা ১৩বি রোডটি বন্ধ করে দেন। রাত সাড়ে ৯টার কিছু পরে ওই সড়কে কালো পিকআপ এসে থামে। এর পেছনে আরও একটি সাদা মাইক্রোবাস ছিল। ওই গাড়ি দুটিতে থাকা সাদা পোশাকের কয়েকজন লোক এ সময় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে গেট (লোহার বার) খুলে দিতে বলে।
অপূর্ব রায় বলেন, গাড়ি দুটি ৩নং সেক্টরের ১৩/বি সড়কে একটি বাসার সামনে গিয়ে থামে। নিরাপত্তাকর্মীরা এ সময় সেদিকে এগিয়ে গেলে তাদের চলে যেতে বলা হয়। তিনি আরও বলেন, ওই বাসার সামনে কিছু ছেলে ব্যাডমিন্টন খেলছিল। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দেয়া লোকজন ঝামেলার ভয় দেখিয়ে তাদের সেখান থেকে চলে যেতে বলে। এরপর যে যার মতো চলে যান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে তুলে নেয়ার তিন দিন আগে ৭ মার্চ রাতে বাড্ডা এলাকা থেকে আটক করা হয় তার ব্যক্তিগত সহকারী ওসমান গনিকে। একই রাতে গুলশান এলাকা থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদের দুজন গাড়িচালক খোকন ও শফিককে আটক করে সাদা পোশাকে থাকা আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। দুদিন পর তাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদের ব্যক্তিগত সহকারী ওসমান গনির ভাই মহসিন জানান, র্যাবের সদস্যরা তার ভাইকে আটক করেছিল। পরে তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মূলত তাদের কাছ থেকে তথ্য পেয়েই গুলশানে সালাহ উদ্দিন আহমেদ দীর্ঘদিন যে বাসায় পলাতক থেকে বিএনপির পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেলেন সেই বাসায় অভিযান চালায়। গুলশানে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে বাসার কেয়ারটেকারকে আটক করে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা। পরে তাকেও একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পরদিন কারাগারে পাঠানো হয়। তবে ব্যক্তিগত সহকারী আটকের খবর পেয়ে ওই রাতেই গুলশান ছেড়ে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩/বি সড়কের বাসায় ওঠেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
গত ১০ মার্চ রাত ১০টার দিকে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে একদল সাদা পোশাকধারী লোক উত্তরার ওই বাড়ি থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে তুলে নেয়া হয় বলে অভিযোগ করে আসছেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। পরদিন এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে উত্তরা পশ্চিম ও গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে পুলিশ জিডি নেয়নি। এরপর স্বামী সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান চেয়ে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেন। তবে আইনশৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, পুলিশ সালাহ উদ্দিনকে গ্রেফতার করেনি। তার কোনো খোঁজও পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আগামী ৮ এপ্রিল হাইকোর্টে আবার শুনানির দিন রাখা হয়েছে।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার স্বামীকে খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। তিন পৃষ্ঠার ওই স্মারকলিপিতে হাসিনা আহমেদ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনার কাছে আকুল আবেদন- আমার পরিবার, আমার সন্তানদের কথা বিবেচনা করে প্রজাতন্ত্রের নাগরিক হিসেবে আমাদের আইনি ও সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার নিমিত্তে ও সর্বোপরি মানবিক কারণে আমার স্বামীকে খুঁজে বের করার জন্য আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
স্মারকলিপিতে তিনি বলেন, আমার স্বামী যদি কোনো অপরাধ করে থাকেন অথবা তার বিরুদ্ধে যদি কোনো মামলা থাকে, তাহলে তাকে অবিলম্বে আদালতে সোপর্দ করে আইনি প্রক্রিয়ায় যথাযথ বিচার কার্যক্রম গ্রহণ করা হোক।
একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী বলেন, আমি আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমার কষ্ট ও আকাঙ্ক্ষার কথাগুলো সরাসরি বলতে চাই। আশা করি, শত ব্যস্ততার মধ্যে মহানুভবতার সঙ্গে আমাকে সাক্ষাতের জন্য আপনার মূল্যবান সময় প্রদান করে কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করবেন।
স্মারকলিপি দেয়ার পর রোদের মধ্যে হাসিনা আহমেদ কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তার সঙ্গে আসা স্বজনরা ধরাধরি করে তাকে গাড়িতে তুলে দেন। এর আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাতে এসেছি যেন তিনি আমার স্বামীকে খুঁজে বের করার ব্যবস্থা নেন। দশ দিন ধরে নিখোঁজ সালাহ উদ্দিনকে আইনশৃংখলা বাহিনী খুঁজে বের করে যাতে জনসমক্ষে হাজির করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই নির্দেশ চান হাসিনা।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি গাড়িতে করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৪ নম্বর ফটকে আসেন হাসিনা আহমেদ। সালাহ উদ্দিন আহমেদেও ছোট ভাই গিয়াসউদ্দিন আহমেদ ও তার স্ত্রী শামীম আরা জ্যোৎস্না এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন। সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠি গ্রহণ শাখায় স্মারকলিপিটি দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অফিস সহকারী আবদুল হামিদ তা গ্রহণ করেন।
এদিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে উদ্ধারে বিলম্ব হওয়ায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। বৃহস্পতিবার নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বিএমএর সাবেক কার্যকরী পরিষদের সদস্য ডা. এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তারা বলেন, সরকারের দায়িত্ব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া। তা না হলে সাধারণ জনগণের বুঝতে অসুবিধা হবে না কারা এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ঢাবির সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক এমএ মাজেদ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক জেএন তাহমিনা খাতুন, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক ড. এসএম ফায়েজ, আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, কবি আল মাহমুদ, অধ্যাপক ড. মোস্তাহিদুর রহমান, মো. আবদুল গাফ্ফার, অধ্যাপক ড. শাহ মো. ফারুক, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. আফম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক ড. সদরুল আমীন, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস ইসলাম, অধ্যাপক তাহমিনা আখতার টফি, অধ্যাপক ড. খলিলুর রহমান, অধ্যাপক ড. আমিনুর রহমান মজুমদার, অধ্যাপক ড. এম আজিজ, অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন, অধ্যাপক এমএ রশিদ, অধ্যাপক ড. ওবায়েদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন, অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মনিরুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. আবদুল মোবিন খান, আনহ আখতার হোসেন, অধ্যাপক ডা. আবদুল মান্নান মিয়া প্রমুখ।
সালাহ উদ্দিনকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে কাল বিএনপির বিক্ষোভ : বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দীন আহমেদের সন্ধান এবং তাকে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরত দেয়ার দাবিতে শনিবার বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর বিএনপি। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মহানগর আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস ও সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল শনিবার মহানগরের সব থানা ও ওয়ার্ডে বিক্ষোভ মিছিলে শরিক হতে নেতাকর্মী ও উদ্বিগ্ন নাগরিকদের অনুরোধ জানান।
আব্বাসের প্রেস সচিব জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তারা বলেন, সালাহ উদ্দিনের নিখোঁজ হওয়ার খবরে গোটা দেশবাসী উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত। ঘটনার পর ১০ দিন অতিবাহিত হলেও সরকার অথবা সরকারের কোনো সংস্থা তাকে আটক বা গ্রেফতারের কথা স্বীকার করেনি। এমনকি তার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে তাকে খুঁজে বের করার জন্য সরকারের কাছে বারবার দাবি জানানো হলেও সরকার সে বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সরকারের এ রহস্যজনক আচরণ জনমনে সৃষ্ট উৎকণ্ঠাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
No comments