দৃষ্টিপাত : রিমান্ডের উৎস কী? by আহমদ উজ্জামান
২৮
ফেব্রুয়ারি। নয়া দিগন্তের তৃতীয় পৃষ্ঠায় একটি খবর : ‘রিফাতকে এসএসসি
পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিতে মায়ের আকুতি’। খবরে আছে- ‘গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে
কোনো ধরনের মামলা ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে।
আটকের দুই দিন পর তার মতো একজন কিশোরকে আদলতে হাজির করে আইসিটি আইনে
গ্রেফতার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।’ খবরটি প্রথম দেখি ২১
ফেব্রুয়ারি নয়া দিগন্তের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায়। তার পরদিন ছাপা হয়- ‘রিফাতকে
উদ্ধারে মায়ের আকুল আবেদন’। ওই খবরে আছে : ‘ছেলেকে ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান
জানিয়ে বলেন, আমার ছেলে হলি চাইল্ড স্কুলের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র রিফাত
আবদুল্লাহ খান উত্তরা হাইস্কুল কেন্দ্রে গত শুক্রবার গণিত পরীক্ষা দিয়ে বের
হওয়ার সময় পরীক্ষার হল থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর পরিচয়ে একটি মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়...।’ আমার
অধিক লেখার শক্তি নেই। রিফাতের আম্মাকে সালাম জানিয়ে বলছি- ধৈর্য ধরুন।
হজরত আলী রা: ক্ষিপ্র ক্ষিপ্ত উ™£ান্ত দুশমনের বিষাক্ত তলোয়ারের আঘাতে
মৃত্যু বরণ করার আগ মুহূর্তে বলেছিলেনÑ ‘আলহামদু লিল্লাহ। শুভক্ষণ এসে
গেছে... তোমরা আমার লাশ জমিনে পুঁতে রেখো না, উটের পিঠে তুলে মরুর বুকে
উটকে ছেড়ে দিয়ো মুক্ত স্বাধীনভাবে...।’ উট চলছে, উট চলছে মরুর দিগন্তহীন
তপ্ত বালুরাশি ছাড়িয়ে।
বিগত শতাব্দীর চল্লিশ দশকে গ্রামের হাইস্কুলের লাইব্রেরিও থাকত ইংরেজি বইয়ে ঠাসা। একটি বই ছিল TOM BROWN’S SCHOOL DAYS. যতটুকু বুঝতে পেরেছিলাম বয়সোত্তীর্ণ হওয়ার অনেক পরে, তা এই বইয়ের কিশোরস্পন্দিত দুঃসাহসিকতাপূর্ণ বয়সে কম্পিটিশন, দুষ্টুমি, জ্ঞান আহরণের স্পিরিট ছিল। এক দিকে তারা ছিল স্কুলবালক, অন্য দিকে জাতির গুণাবলিসম্পন্ন নাগরিক সামাজিক এক গোষ্ঠী। শুধু বিদ্যার্জনের জন্যই স্কুলে আসা নয়, এসেছে কর্মময় শিক্ষার মাধ্যমে জীবন গঠন করার জন্যও। রিফাতকে বিদ্যালয়ের সামনে থেকে এ দেশের ‘সাদা শার্ট’রা তুলে নিয়ে রিমান্ডে রাখছে। এই রিমান্ডের উৎস কোথায়? PENAL CODE কাদের রচনা? LEARNED JURISTS, ADVOCATE, অনুগ্রহ করে বলবেন কি? আমি বৃদ্ধ, আমাকে বুঝিয়ে দিন, এটা কি ROMAN LAW? GREEK LAW or NATURAL LAW? এই বাংলাদেশের মহামান্য উচ্চ আদালতের মাননীয় এক বিচারকের রায়ের নির্দেশ ছিল, অগত্যা রিমান্ড অত্যাবশ্যক হলে কারাগারের গেটে দৃশ্যমান, কাচে আবরিত কক্ষে পদমর্যাদাসম্মত ‘রক্ষীদল’ ও ‘আইনজ্ঞ’ ব্যক্তিদের সম্মুখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। সম্মানিত উচ্চ আদালতের বিচারক IS NOT A PUNY JUDGE. কথা হলো, মানবতাবিরোধী যে বিধি, ওটা কি আইন? আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালার নিয়ামতপূর্ণ এই শ্যামল দেশকে এমন অস্থির জাহান্নামে পরিণত করে দিলো কারা! রিফাত এক কিশোর, এক সুবিমল ছেলে। রিমান্ডে গেলে দেহের হাড় নাকি দলামচা হয়ে যায়। রিমান্ড যেন বয়স অনেক বাড়িয়ে দেয়। হেডমাস্টারের বিনা অনুমতিতে তার ALUMNUS-কে ধরে নিয়ে গেল। আখিরাতে আল্লাহর সামনে সব অন্যায়ের জবাব দিতে হবে অবশ্যই। রিফাতের গণিত পরীক্ষা শেষে বাড়ি যাওয়া হলো না। তার বাকি পরীক্ষা দেয়া হলো না। এর অর্থ, ভবিষ্যতের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হলো এই কিশোরের। জীবন হয়তো আর তার স্বাভাবিক ধারায় চলবে না। কেউ বলল নাÑ অল্পবয়েসী ছেলে, পরীক্ষা দিচ্ছে... নজরদারিতে তো আছেই, যাবে কোথায়? বাঘে-হরিণে তো পানি খাচ্ছেই। এই কিশোরের স্বাস্থ্য পরীক্ষা এখনই দরকার। তাকে বাকি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিতে হবে। স্বাধীনতা মলিন হয়ে গেছে, এটা দেখে যেতে চাই না। আমরা ন্যায়পরায়ণতার আশ্রয় চাই। রিফাতদের জীবনের নিরাপত্তা দিন। রিফাতের আম্মার আর্ত আবেদন বিবেকবানের হৃদয়ে সাড়া না তুলে পারে না। এটা সভ্য দেশ। কোনো AMAZONIAN Country নয়। আল্লাহ রিফাতের হায়াত দারাজ করুন। আশা রাখতে হবেÑ শুভক্ষণ নিকটবর্তী।
আহমদ উজ্জামান
রংপুর
বিগত শতাব্দীর চল্লিশ দশকে গ্রামের হাইস্কুলের লাইব্রেরিও থাকত ইংরেজি বইয়ে ঠাসা। একটি বই ছিল TOM BROWN’S SCHOOL DAYS. যতটুকু বুঝতে পেরেছিলাম বয়সোত্তীর্ণ হওয়ার অনেক পরে, তা এই বইয়ের কিশোরস্পন্দিত দুঃসাহসিকতাপূর্ণ বয়সে কম্পিটিশন, দুষ্টুমি, জ্ঞান আহরণের স্পিরিট ছিল। এক দিকে তারা ছিল স্কুলবালক, অন্য দিকে জাতির গুণাবলিসম্পন্ন নাগরিক সামাজিক এক গোষ্ঠী। শুধু বিদ্যার্জনের জন্যই স্কুলে আসা নয়, এসেছে কর্মময় শিক্ষার মাধ্যমে জীবন গঠন করার জন্যও। রিফাতকে বিদ্যালয়ের সামনে থেকে এ দেশের ‘সাদা শার্ট’রা তুলে নিয়ে রিমান্ডে রাখছে। এই রিমান্ডের উৎস কোথায়? PENAL CODE কাদের রচনা? LEARNED JURISTS, ADVOCATE, অনুগ্রহ করে বলবেন কি? আমি বৃদ্ধ, আমাকে বুঝিয়ে দিন, এটা কি ROMAN LAW? GREEK LAW or NATURAL LAW? এই বাংলাদেশের মহামান্য উচ্চ আদালতের মাননীয় এক বিচারকের রায়ের নির্দেশ ছিল, অগত্যা রিমান্ড অত্যাবশ্যক হলে কারাগারের গেটে দৃশ্যমান, কাচে আবরিত কক্ষে পদমর্যাদাসম্মত ‘রক্ষীদল’ ও ‘আইনজ্ঞ’ ব্যক্তিদের সম্মুখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। সম্মানিত উচ্চ আদালতের বিচারক IS NOT A PUNY JUDGE. কথা হলো, মানবতাবিরোধী যে বিধি, ওটা কি আইন? আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালার নিয়ামতপূর্ণ এই শ্যামল দেশকে এমন অস্থির জাহান্নামে পরিণত করে দিলো কারা! রিফাত এক কিশোর, এক সুবিমল ছেলে। রিমান্ডে গেলে দেহের হাড় নাকি দলামচা হয়ে যায়। রিমান্ড যেন বয়স অনেক বাড়িয়ে দেয়। হেডমাস্টারের বিনা অনুমতিতে তার ALUMNUS-কে ধরে নিয়ে গেল। আখিরাতে আল্লাহর সামনে সব অন্যায়ের জবাব দিতে হবে অবশ্যই। রিফাতের গণিত পরীক্ষা শেষে বাড়ি যাওয়া হলো না। তার বাকি পরীক্ষা দেয়া হলো না। এর অর্থ, ভবিষ্যতের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হলো এই কিশোরের। জীবন হয়তো আর তার স্বাভাবিক ধারায় চলবে না। কেউ বলল নাÑ অল্পবয়েসী ছেলে, পরীক্ষা দিচ্ছে... নজরদারিতে তো আছেই, যাবে কোথায়? বাঘে-হরিণে তো পানি খাচ্ছেই। এই কিশোরের স্বাস্থ্য পরীক্ষা এখনই দরকার। তাকে বাকি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিতে হবে। স্বাধীনতা মলিন হয়ে গেছে, এটা দেখে যেতে চাই না। আমরা ন্যায়পরায়ণতার আশ্রয় চাই। রিফাতদের জীবনের নিরাপত্তা দিন। রিফাতের আম্মার আর্ত আবেদন বিবেকবানের হৃদয়ে সাড়া না তুলে পারে না। এটা সভ্য দেশ। কোনো AMAZONIAN Country নয়। আল্লাহ রিফাতের হায়াত দারাজ করুন। আশা রাখতে হবেÑ শুভক্ষণ নিকটবর্তী।
আহমদ উজ্জামান
রংপুর
No comments