চ্যালেঞ্জের মুখে আলীগ by আবদুল্লাহ আল মামুন
ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ক্ষমতাসীনরা। বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন নস্যাৎ করা এবং দুই বড় সিটিতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতেই নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে শাসক দলের মধ্যে তৈরি হয়েছে নতুন সমীকরণ।
ঢাকায় মেয়র পদে দুজনকে প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। কিন্তু এ ঘোষণার পরপরই আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাও প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে ইতিমধ্যে প্রচারণা শুরু করেছেন। তারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়েও নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। শুধু তাই নয়, তাদের কেউ কেউ বিএনপির সমর্থন আদায়ে জোর প্রচেষ্টাও চালাচ্ছেন। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দলের সিনিয়র নেতাদের বৈঠকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদের প্রার্থী সমর্থনের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। সেখানে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম নাছিরকে সমর্থন দেয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে প্রার্থী হিসেবে দলীয়ভাবে সমর্থন করা না হলে তিনি দলীয় সমর্থন ছাড়াই নির্বাচন করতে পারেন অথবা দলীয় অন্য প্রার্থীর পক্ষে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নামবেন কিনা- তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সরকারি দলের একাধিক নেতার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় একে রাজনৈতিকভাবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট কাজে লাগাতে পারে বলে আশঙ্কা ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকদের। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের লক্ষ্য পূরণের ব্যাপারে চিন্তিত আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড।
সরকারি দলের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির কৌশলগত অবস্থান বিবেচনা করতে হচ্ছে। তারা (২০ দলীয় জোট) এখন পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা বর্জনের ঘোষণা দেয়নি। কাউকে সমর্থন করবে কিনা- সেটাও পরিষ্কার নয়। তাই দলের হাইকমান্ড তিন সিটি নির্বাচনের স্ট্র্যাটেজি ঠিক কি ধরনের হবে তা এখনই চূড়ান্ত করতে পারছে না। বিএনপির সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে এলে এক ধরনের আবার না এলে আরেক ধরনের কৌশল প্রণয়ন করে মাঠে নামার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা।
সূত্র আরও জানায়, বিএনপি না এলে নারায়ণগঞ্জ সিটির আদলে নির্বাচন করার ব্যাপারে তাদের একটা প্রাথমিক সিদ্ধান্ত রয়েছে। সেখানে বিএনপির অনুপস্থিতিতে দল থেকে একজনকে সমর্থন দেয়া হয়। কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আরেক নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। সেই কৌশল এবারও প্রয়োগ করার প্রাথমিকভাবে চিন্তা-ভাবনা ছিল। এতে মেয়র পদে দলের একাধিক প্রার্থী রেখে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে পারলে বিএনপির আন্দোলন পুরোপুরি ভেস্তে যাবে- এমন ধারণা ছিল তাদের। কিন্তু এখন এই কৌশল অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন দলের কোনো কোনো নীতিনির্ধারক। কারণ ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে বিদ্রোহী দুই প্রার্থী বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
আবার বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সমর্থন নিয়ে উত্তরে মেয়র পদে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে বিকল্পধারার সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী। তিনি ইতিমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে।
ঢাকার দক্ষিণে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার পছন্দের মেয়র প্রার্থী সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে গণভবনে ডেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সাঈদ খোকন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার পক্ষে রয়েছেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজসহ অধিকাংশ নগর নেতা।
মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম আওয়ামী লীগের সমর্থন আদায়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার পক্ষে রয়েছেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- বাম সংগঠন থেকে আসা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য। হাজী সেলিম ডিসিসি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে জানা গেছে। স্বতন্ত্র এই এমপি ওয়ার্ড কমিশনার থাকার সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন।
ডিসিসি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে হাজী সেলিম বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, এখনও মাঠে আছি। সবার কাছে যাচ্ছি। দলীয় সমর্থনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি দলের সমর্থন পাব। যদি আওয়ামী লীগের সমর্থন না পান তাহলে কি করবেন? জানতে চাইলে হাজী সেলিম বলেন, এমপি থেকে পদত্যাগ করে মেয়র নির্বাচন করব। ডিসিসি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনি (হাজী সেলিম) বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে শোনা যাচ্ছে- এমন প্রশ্ন করা হলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করিনি। তিনি জানান, আগে ঘর গোছাই। তারপর বাইরেরটা গোছাব।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডিসিসি দক্ষিণে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ডিসিসি দক্ষিণে মেয়র পদে সমর্থনের বিষয়ে জানিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। তফসিল ঘোষণার পর তিনি এ মুহূর্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এদিকে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনিসুল হককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। রয়েছেন সরকার সমর্থক আরেক প্রার্থী এখলাস উদ্দিন মোল্লা। পল্লবীর সরকারদলীয় এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার আপন ভাই তিনি। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে এখলাস মোল্লা আওয়ামী লীগে যোগ দেন। সর্বশেষ ২০১৪-এর ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি ঢাকা-১৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মজুমদারের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। আসন্ন ডিসিসি নির্বাচনে সমর্থন পেতে এখলাস উদ্দিন মোল্লা বিএনপির হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এখলাস উদ্দিন মোল্লা বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, তার সঙ্গে জনগণ রয়েছে। তিনি মেয়র পদে স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন। বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে এখলাস মোল্লা বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সবার সঙ্গেই তার যোগাযোগ রয়েছে।
এ অবস্থায় ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে শাসক দল যে সম্ভাব্য সংকটের মুখোমুখি দাঁড়াতে যাচ্ছে- তা অনেকটাই নিশ্চিত বলে মনে করছেন সরকারের অনেক নীতিনির্ধারকই। তবে এ ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। বৃহস্পতিবার তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমরা ডিসিসি উত্তর ও দক্ষিণে ২ জনকে সমর্থন জানাব। দলের নেতাকর্মীরা এ দুজনের পক্ষে কাজ করবে। আওয়ামী লীগের মধ্য থেকে একাধিক প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। তিনি আশা করছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থিতা ঘোষণার পর এ সংকট (একাধিক প্রার্থী) কেটে যাবে।
ঢাকায় মেয়র পদে দুজনকে প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। কিন্তু এ ঘোষণার পরপরই আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাও প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে ইতিমধ্যে প্রচারণা শুরু করেছেন। তারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়েও নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। শুধু তাই নয়, তাদের কেউ কেউ বিএনপির সমর্থন আদায়ে জোর প্রচেষ্টাও চালাচ্ছেন। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দলের সিনিয়র নেতাদের বৈঠকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদের প্রার্থী সমর্থনের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। সেখানে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম নাছিরকে সমর্থন দেয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে প্রার্থী হিসেবে দলীয়ভাবে সমর্থন করা না হলে তিনি দলীয় সমর্থন ছাড়াই নির্বাচন করতে পারেন অথবা দলীয় অন্য প্রার্থীর পক্ষে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নামবেন কিনা- তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সরকারি দলের একাধিক নেতার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় একে রাজনৈতিকভাবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট কাজে লাগাতে পারে বলে আশঙ্কা ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকদের। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের লক্ষ্য পূরণের ব্যাপারে চিন্তিত আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড।
সরকারি দলের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির কৌশলগত অবস্থান বিবেচনা করতে হচ্ছে। তারা (২০ দলীয় জোট) এখন পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা বর্জনের ঘোষণা দেয়নি। কাউকে সমর্থন করবে কিনা- সেটাও পরিষ্কার নয়। তাই দলের হাইকমান্ড তিন সিটি নির্বাচনের স্ট্র্যাটেজি ঠিক কি ধরনের হবে তা এখনই চূড়ান্ত করতে পারছে না। বিএনপির সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে এলে এক ধরনের আবার না এলে আরেক ধরনের কৌশল প্রণয়ন করে মাঠে নামার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা।
সূত্র আরও জানায়, বিএনপি না এলে নারায়ণগঞ্জ সিটির আদলে নির্বাচন করার ব্যাপারে তাদের একটা প্রাথমিক সিদ্ধান্ত রয়েছে। সেখানে বিএনপির অনুপস্থিতিতে দল থেকে একজনকে সমর্থন দেয়া হয়। কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আরেক নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। সেই কৌশল এবারও প্রয়োগ করার প্রাথমিকভাবে চিন্তা-ভাবনা ছিল। এতে মেয়র পদে দলের একাধিক প্রার্থী রেখে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে পারলে বিএনপির আন্দোলন পুরোপুরি ভেস্তে যাবে- এমন ধারণা ছিল তাদের। কিন্তু এখন এই কৌশল অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন দলের কোনো কোনো নীতিনির্ধারক। কারণ ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে বিদ্রোহী দুই প্রার্থী বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
আবার বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সমর্থন নিয়ে উত্তরে মেয়র পদে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে বিকল্পধারার সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী। তিনি ইতিমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে।
ঢাকার দক্ষিণে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার পছন্দের মেয়র প্রার্থী সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে গণভবনে ডেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সাঈদ খোকন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার পক্ষে রয়েছেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজসহ অধিকাংশ নগর নেতা।
মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম আওয়ামী লীগের সমর্থন আদায়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার পক্ষে রয়েছেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- বাম সংগঠন থেকে আসা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য। হাজী সেলিম ডিসিসি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে জানা গেছে। স্বতন্ত্র এই এমপি ওয়ার্ড কমিশনার থাকার সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন।
ডিসিসি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে হাজী সেলিম বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, এখনও মাঠে আছি। সবার কাছে যাচ্ছি। দলীয় সমর্থনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি দলের সমর্থন পাব। যদি আওয়ামী লীগের সমর্থন না পান তাহলে কি করবেন? জানতে চাইলে হাজী সেলিম বলেন, এমপি থেকে পদত্যাগ করে মেয়র নির্বাচন করব। ডিসিসি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনি (হাজী সেলিম) বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে শোনা যাচ্ছে- এমন প্রশ্ন করা হলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করিনি। তিনি জানান, আগে ঘর গোছাই। তারপর বাইরেরটা গোছাব।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডিসিসি দক্ষিণে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ডিসিসি দক্ষিণে মেয়র পদে সমর্থনের বিষয়ে জানিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। তফসিল ঘোষণার পর তিনি এ মুহূর্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এদিকে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনিসুল হককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। রয়েছেন সরকার সমর্থক আরেক প্রার্থী এখলাস উদ্দিন মোল্লা। পল্লবীর সরকারদলীয় এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার আপন ভাই তিনি। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে এখলাস মোল্লা আওয়ামী লীগে যোগ দেন। সর্বশেষ ২০১৪-এর ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি ঢাকা-১৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মজুমদারের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। আসন্ন ডিসিসি নির্বাচনে সমর্থন পেতে এখলাস উদ্দিন মোল্লা বিএনপির হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এখলাস উদ্দিন মোল্লা বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, তার সঙ্গে জনগণ রয়েছে। তিনি মেয়র পদে স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন। বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে এখলাস মোল্লা বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সবার সঙ্গেই তার যোগাযোগ রয়েছে।
এ অবস্থায় ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে শাসক দল যে সম্ভাব্য সংকটের মুখোমুখি দাঁড়াতে যাচ্ছে- তা অনেকটাই নিশ্চিত বলে মনে করছেন সরকারের অনেক নীতিনির্ধারকই। তবে এ ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। বৃহস্পতিবার তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমরা ডিসিসি উত্তর ও দক্ষিণে ২ জনকে সমর্থন জানাব। দলের নেতাকর্মীরা এ দুজনের পক্ষে কাজ করবে। আওয়ামী লীগের মধ্য থেকে একাধিক প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। তিনি আশা করছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থিতা ঘোষণার পর এ সংকট (একাধিক প্রার্থী) কেটে যাবে।
No comments