যাপিত জীবনের সমস্যা উত্তরণের রেসিপি by মো: মতিউর রহমান
এ দেশের একজন প্রথিতযশা ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টু তার এই বইয়ে তার বর্ণাঢ্য জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে গভীর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে বাংলাদেশের বিরাজমান অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও ব্যাপক বিবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনায় ব্যাপৃত হয়েছেন এবং এসংক্রান্ত সমস্যাবলিকে শনাক্ত ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন এবং সেগুলোর সম্ভাব্য সমাধানের দিক নির্দেশ করেছেন। বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য-উপাত্তের সতর্ক ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি তার বক্তব্যকে বলিষ্ঠ ও সমৃদ্ধ করেছেন। তিনি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে বর্তমান সরকারের দিনবদলের প্রতিশ্রুতির কতটুকু অর্জিত হয়েছে, তা পর্যালোচনা করেছেন এবং প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যকার দুস্তর ব্যবধান তুলে ধরেছেন। বক্তব্য উপস্থাপনে তার সতর্ক পর্যবেক্ষণ ও তীè বিশ্লেষণ পাঠকের দৃষ্টি কাড়বে নিঃসন্দেহে।
অর্থনীতিবিদ না হয়েও ‘অর্থনীতির দৈনন্দিন চর্চাকারী’ হিসেবে তিনি বাজেট ঘাটতি, ভর্তুকি, সরকারের মাত্রাতিরিক্ত ব্যয়, ব্যাংকব্যবস্থা থেকে কম সুদে ঋণগ্রহণ এবং তা অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞানদীপ্ত আলোচনা করেছেন। তিনি তার তীè ও তির্যক বক্তব্যে মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির ত্রুটিবিচ্যুতি তুলে ধরেছেন এবং মূল্যস্ফীতির বিচার-বিশ্লেষণে অর্থনৈতিক তত্ত্বের ব্যবহারিক প্রয়োগে যথেষ্ট মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন।
বিশ্বের ও দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তিনি নতুন সংবিধান প্রণয়নের অপরিহার্যতা এবং এর বিবেচ্য বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন, যা সরকারের নীতিনির্ধারক ও আইন প্রণেতাদের ভাবনার খোরাক যোগাবে। লেখকের প্রস্তাবাবলি বিবেচনায় নিলে এ দেশের গণমানুষের আশা-আকাক্সার প্রতিফলন ঘটবে বলে আমার বিশ্বাস। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে সম্পদ ও আয় বণ্টনে বৈষম্য বৃদ্ধি এবং সম্পদ সৃষ্টি ও এর সুষম বণ্টনে রাষ্ট্রের করণীয় সম্পর্কে লেখকের সংবেদনা পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে নিঃসন্দেহে। গভীরতাশ্রয়ী চিন্তক ও বিষয়গুলোর মর্মমূল অনুসন্ধানে রত লেখক দেশসেবার নামে শাসকগোষ্ঠীর রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন ও চৌর্যবৃত্তির চিত্র এবং নির্মম শোষণের ওপর বস্তুনিষ্ঠ ও নির্মোহ বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।
রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজ ভাবনায় প্রাণিত লেখকের বক্তব্য মানবিকবোধে ঋদ্ধ। লেখক সুশাসনের অভাব ও দুর্নীতির ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আশু সঙ্কটের যে আভাস দিয়েছেন, সে বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের সবিশেষ মনোনিবেশ করা একান্ত বাঞ্ছনীয়।
জনগণের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক মুক্তির অšে¦ষণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কারের যে যৌক্তিকতা তিনি তুলে ধরেছেন তার সাথে দ্বিমত পোষণ করার অবকাশ সামান্যই। লেখক বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য যথোচিত নীতি-কৌশল প্রণয়ন এবং সঠিক নেতৃত্বের তথা সত্যিকার জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়েছেন, বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতার আলোকে যার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
বইয়ের দু-একটি জায়গায় ছোটখাটো মুদ্রণবিভ্রাট দৃষ্ট হয়। যেমনÑ ২৪ পৃষ্ঠায় ‘তুলনামূলক সুবিধা’ ও ‘প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা’র পরস্পর বিপরীত ইংরেজি অনুবাদ মুদ্রিত হয়েছে। বইয়ের ভূমিকা ও বই পরিচিতি শেষে ডান দিকে লেখকের নাম এবং বাম দিকে তারিখ উল্লেখ করলে ভালো হতো। যা হোক, অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা বইটি পাঠে অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী, গবেষক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং সরকারের নীতিনির্ধারকসহ বিভিন্ন মহল উপকৃত হবে, এই বিশ্বাসে স্থিত হওয়া যায়।
লেখক : বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব
অর্থনীতিবিদ না হয়েও ‘অর্থনীতির দৈনন্দিন চর্চাকারী’ হিসেবে তিনি বাজেট ঘাটতি, ভর্তুকি, সরকারের মাত্রাতিরিক্ত ব্যয়, ব্যাংকব্যবস্থা থেকে কম সুদে ঋণগ্রহণ এবং তা অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞানদীপ্ত আলোচনা করেছেন। তিনি তার তীè ও তির্যক বক্তব্যে মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির ত্রুটিবিচ্যুতি তুলে ধরেছেন এবং মূল্যস্ফীতির বিচার-বিশ্লেষণে অর্থনৈতিক তত্ত্বের ব্যবহারিক প্রয়োগে যথেষ্ট মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন।
বিশ্বের ও দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তিনি নতুন সংবিধান প্রণয়নের অপরিহার্যতা এবং এর বিবেচ্য বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন, যা সরকারের নীতিনির্ধারক ও আইন প্রণেতাদের ভাবনার খোরাক যোগাবে। লেখকের প্রস্তাবাবলি বিবেচনায় নিলে এ দেশের গণমানুষের আশা-আকাক্সার প্রতিফলন ঘটবে বলে আমার বিশ্বাস। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে সম্পদ ও আয় বণ্টনে বৈষম্য বৃদ্ধি এবং সম্পদ সৃষ্টি ও এর সুষম বণ্টনে রাষ্ট্রের করণীয় সম্পর্কে লেখকের সংবেদনা পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে নিঃসন্দেহে। গভীরতাশ্রয়ী চিন্তক ও বিষয়গুলোর মর্মমূল অনুসন্ধানে রত লেখক দেশসেবার নামে শাসকগোষ্ঠীর রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন ও চৌর্যবৃত্তির চিত্র এবং নির্মম শোষণের ওপর বস্তুনিষ্ঠ ও নির্মোহ বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।
রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজ ভাবনায় প্রাণিত লেখকের বক্তব্য মানবিকবোধে ঋদ্ধ। লেখক সুশাসনের অভাব ও দুর্নীতির ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আশু সঙ্কটের যে আভাস দিয়েছেন, সে বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের সবিশেষ মনোনিবেশ করা একান্ত বাঞ্ছনীয়।
জনগণের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক মুক্তির অšে¦ষণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কারের যে যৌক্তিকতা তিনি তুলে ধরেছেন তার সাথে দ্বিমত পোষণ করার অবকাশ সামান্যই। লেখক বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য যথোচিত নীতি-কৌশল প্রণয়ন এবং সঠিক নেতৃত্বের তথা সত্যিকার জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়েছেন, বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতার আলোকে যার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
বইয়ের দু-একটি জায়গায় ছোটখাটো মুদ্রণবিভ্রাট দৃষ্ট হয়। যেমনÑ ২৪ পৃষ্ঠায় ‘তুলনামূলক সুবিধা’ ও ‘প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা’র পরস্পর বিপরীত ইংরেজি অনুবাদ মুদ্রিত হয়েছে। বইয়ের ভূমিকা ও বই পরিচিতি শেষে ডান দিকে লেখকের নাম এবং বাম দিকে তারিখ উল্লেখ করলে ভালো হতো। যা হোক, অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা বইটি পাঠে অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী, গবেষক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং সরকারের নীতিনির্ধারকসহ বিভিন্ন মহল উপকৃত হবে, এই বিশ্বাসে স্থিত হওয়া যায়।
লেখক : বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব
No comments