নাইমার আকাশ জয়ের গল্প by নূর ইসলাম
২০১৪
সালের ১৭ই ডিসেম্বর, বেলা ১১টা। এককভাবে প্রথম আকাশে উড়লাম। এরপর
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর শীতকালীন গ্রাজুয়েশন প্যারেডে প্রথম ফ্লাইপাস্টে
অংশ নেই ৩১শে ডিসেম্বর। একা শূন্যে ভেসে বেড়ানোর অনুভূতিই অন্যরকম। এক
রোমাঞ্চকর অনুভূতি যা আমাকে আলোড়িত করে। নিজেকে সৌভাগ্যবতী মনে করছি।
এভাবেই এককভাবে উড্ডয়নের অনুভূতি প্রকাশ করলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট নাইমা
হক। নাইমা হক নারী সামরিক বৈমানিক হিসেবে এয়ার অধিনায়ক এয়ার কমোডর সাঈদ
হোসেন, এয়ার কমোডর হাসান মাহমুদ এবং ১৮ নং বহরের অধিনায়ক উইং কমান্ডার
আহমেদ আসিফ আখতারের তত্ত্বাবধানে আকাশে ওড়েন। এ জন্য অবশ্য তাকে গ্রাউন্ডে
অনেক প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। প্রস্তুতির মধ্যে ছিল- শারীরিক যাচাই-বাছাই,
গ্রাউন্ডপাস্ট, আকাশে ওড়ার জন্য আবহাওয়া, প্রশিক্ষকদের কাছ থেকে ব্রিফিং
নেয়া। প্রশিক্ষণের শুরুটা হয়েছিল ২০১৪ সালের ৩রা আগস্ট। বাংলাদেশ
বিমানবাহিনীর প্রথম নারী সামরিক বৈমানিক হিসেবে ২৩শে সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায়
১ ঘণ্টার মিশন ছিল। সঙ্গে ছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার বাশার। নাইমা হক বলেন,
যশোরে অবস্থিত বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঘাঁটির ১৮
নম্বর স্কোয়াড্রনে আমার সঙ্গে তামান্না-ই-লুৎফিও প্রশিক্ষণে অংশ নেন।
আমাদের উড্ডয়ন প্রশিক্ষক এবং পথনির্দেশক ছিলেন বাশার, শাহ আলম, উইং
কমান্ডার আহমেদ আসিফ আখতার। ২০১৪ সালের ৩রা আগস্ট আমাদের মাঠপর্যায়ের
প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রতি দিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩/৪টা পর্যন্ত প্রশিক্ষণ
চলতো। সন্ধ্যাবেলায় নিজেদের কক্ষে এসে পরের দিনের প্রশিক্ষণের প্রস্তুতি
নিতাম। ২৩শে সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো আমরা আকাশে উড্ডয়নের প্রশিক্ষণ শুরু
করি। বেল-২০৬ হেলিকপ্টারে ২৫ ঘণ্টা উড্ডয়ন শেষে একক উড্ডয়ন সম্পন্ন করি।
নাইমা হক বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগদান করেন ২০১০ সালে। এরপর দু’বছর
বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমিতে ৬৪ নং ফ্লাইট ক্যাডেট কোর্সের অধীনে ফ্লাইট
ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণ নেন। এ কোর্সে ২২ জন ফ্লাইট ক্যাডেটের মধ্যে ৯
জন ছিলেন মেয়ে ফ্লাইট ক্যাডেট। প্রথমে আবহাওয়া কর্মকর্তা হিসেবে কমিশন লাভ
করেন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল মোহাম্মদ
ইনামুল বারি, এনডিইউ, পিএসসি, বিবিপি মেয়েদের নারী বৈমানিক হওয়ার সুযোগটি
করে দেন। ওই বছরের ৩রা আগস্ট বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ
মতিউর রহমানের ১৮ নং স্কোয়াড্রনে যোগদান করেন নাইমা।
নাইমা হকের জন্ম ঢাকায়। বাবা এম নাজমুল হক কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক উপ-পরিচালক। মা নাসরিন বেগম গৃহিণী। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। বড় বোন মনিরা হক সহকারী কমিশনার ভূমি এবং ভাই মোহাম্মদ বদরুল হক বেসিক ব্যাংকের সহকারী ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন। নাঈমা হক জানান, বাবা-মা উভয়েই ছেলেবেলা থেকেই তাদের ভাইবোনদের পড়াশোনা এবং একজন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি হলিক্রস স্কুল থেকে ২০০৭ সালে এসএসসি, ২০০৯ সালে এইচএসসি পাস করেন। বিমানবাহিনীতে যোগদান করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের অধীনে বিএসসি অ্যারোনটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে গ্রাজুয়েশন করেন ২০১৩ সালে।
বৈমানিক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে নাইমা বলেন, আমার দাদা আবদুল ওয়াহেদ খন্দকার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইন্ডিয়ান রয়েল এয়ারফোর্সে কর্মরত ছিলেন। দাদাকে দেখিনি, বাবার মুখে দাদার বৈমানিক জীবনের নানা গল্প শুনে ছোটবেলা থেকেই বৈমানিক হওয়ার স্বপ্ন দেখি। এছাড়া আমার বাবা-মা আমার ইচ্ছা পূরণে কখনওই বাধা দেননি। বরং সব কাজেই আমাকে সাহস জুগিয়েছেন। তাদের অপূরণীয় সাহায্য-সহযোগিতার কারণে আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। নাইমা হক পিতামাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি তার সহকর্মী ও প্রশিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কাজের ব্যস্ততার কারণে নাইমার অবসর নেই বললেই চলে। এরপরও সামান্য সময় পেলে তিনি ঘুরে বেড়ান। অবসরে তিনি বই পড়েন, গান শোনেন। ছবি তুলতেও ভালোবাসেন।
নাইমা হকের জন্ম ঢাকায়। বাবা এম নাজমুল হক কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক উপ-পরিচালক। মা নাসরিন বেগম গৃহিণী। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। বড় বোন মনিরা হক সহকারী কমিশনার ভূমি এবং ভাই মোহাম্মদ বদরুল হক বেসিক ব্যাংকের সহকারী ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন। নাঈমা হক জানান, বাবা-মা উভয়েই ছেলেবেলা থেকেই তাদের ভাইবোনদের পড়াশোনা এবং একজন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি হলিক্রস স্কুল থেকে ২০০৭ সালে এসএসসি, ২০০৯ সালে এইচএসসি পাস করেন। বিমানবাহিনীতে যোগদান করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের অধীনে বিএসসি অ্যারোনটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে গ্রাজুয়েশন করেন ২০১৩ সালে।
বৈমানিক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে নাইমা বলেন, আমার দাদা আবদুল ওয়াহেদ খন্দকার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইন্ডিয়ান রয়েল এয়ারফোর্সে কর্মরত ছিলেন। দাদাকে দেখিনি, বাবার মুখে দাদার বৈমানিক জীবনের নানা গল্প শুনে ছোটবেলা থেকেই বৈমানিক হওয়ার স্বপ্ন দেখি। এছাড়া আমার বাবা-মা আমার ইচ্ছা পূরণে কখনওই বাধা দেননি। বরং সব কাজেই আমাকে সাহস জুগিয়েছেন। তাদের অপূরণীয় সাহায্য-সহযোগিতার কারণে আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। নাইমা হক পিতামাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি তার সহকর্মী ও প্রশিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কাজের ব্যস্ততার কারণে নাইমার অবসর নেই বললেই চলে। এরপরও সামান্য সময় পেলে তিনি ঘুরে বেড়ান। অবসরে তিনি বই পড়েন, গান শোনেন। ছবি তুলতেও ভালোবাসেন।
No comments