'আসুন সাগর-রুনিকে ভুলে যাই' by সাহাদাত হোসেন পরশ
'আসুন
আমরা সাগর-রুনিকে ভুলে যাই। আর কত অপেক্ষা। আর কত দিন বুকের ওপর পাথরচাপা
কষ্ট নিয়ে বসবাস করব। আমি হতভাগ্য মা। কত মানবেতর জীবনযাপন করছি; কেউ জানে
না। এবার অপেক্ষার অধ্যায় শেষ হোক। ৪৮ ঘণ্টা কেন, ৪৮ বছরেও কিছু হবে না।
প্রহসনের বিচার চাই না। নতুন কোনো নাটকও দেখতে চাই না। বিচার আল্লাহর কাছেই
রাখলাম।' সাংবাদিক সাগর সরোয়ারের মা সালেহা মুনির এভাবেই সমকালের কাছে তার
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন।
দীর্ঘ তিন বছরেও সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যার মোটিভ আর খুনিদের শনাক্ত করা সম্ভব না হওয়ায় স্বজনদের ক্ষোভ আর হতাশার পাল্লা ভারী হচ্ছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কাছে আলোচিত এই মামলা তদন্তের ফল নিয়ে আপাতত কোনো আশার বাণী নেই। মামলাটির বর্তমান তদন্ত সংস্থা র্যাব এখনও হত্যারহস্য ভেদ করতে পারেনি। যদিও বিদেশ থেকে ইতিমধ্যে এসেছে ডিএনএ পরীক্ষার সব প্রতিবেদন।
আদালতের নির্দেশে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সাগর-রুনির বাসার নিরাপত্তারক্ষী পলাশ রুদ্র পাল ও এনামুল হক ওরফে হুমায়ুনকে। ৩২ বার তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ প্রতিবেদন দেওয়া হয় ২ ফেব্রুয়ারি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার সাতজন বর্তমানে কারাবন্দি। সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার হওয়া তানভীর রহমান নামে একজন সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন। সব মিলিয়ে আলোচিত এই মামলার তদন্তের ফল কার্যত শূন্য।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ সমকালকে বলেন, আমরা নিরাশ হতে চাই না। হত্যা রহস্য উন্মোচনে চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। বিদেশে যেসব ডিএনএ আলামত পাঠানো হয়েছিল, তার সব প্রতিবেদন দেশে এসেছে। ডিএনএ পরীক্ষার আলামত ও অন্যান্য তথ্য পর্যবেক্ষণ করে দেখা হচ্ছে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে ওই বাসা থেকে পুলিশ তাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে। ওই দিন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারের ঘোষণা দেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দফতরের নিয়মিত ক্রাইম কনফারেন্সে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছিলেন, 'তদন্তে প্রণিধানযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। খুব শিগগিরই এর রহস্য উন্মোচন করা হবে।'
দিন, সপ্তাহ, মাস পেরিয়ে তিন বছর পার হলেও নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত রয়েছে সেই তিমিরেই। পাল্টেছে মামলার তদন্ত সংস্থা। তবু খুনিরা এখনও অধরা। হত্যার মোটিভ কিংবা খুনিদের আদৌ গ্রেফতার করা সম্ভব হবে কি-না সেই আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। আদালতের নির্দেশে ২০১২ সালের বছরের ২৬ এপ্রিল হত্যার ৭৫ দিন পর কবর থেকে লাশ তুলে ভিসেরা পরীক্ষা করা হয়। ভিসেরা রিপোর্টের মাধ্যমে র্যাব শনাক্ত করতে চেয়েছিল সাগর-রুনিকে হত্যার আগে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল কি-না। তবে লাশ পচন ধরায় ওই প্রতিবেদনে এমন আলামত পাওয়া যায়নি।
থানা পুলিশ ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) তদন্তে ব্যর্থতার পর আদালতের নির্দেশে ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্ত করছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শুরু থেকেই 'সন্দেহ' 'এনামুল ইস্যু' আর 'চোরতত্ত্বে' ঘুরপাক খাচ্ছে এই মামলা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় দুই শতাধিক ব্যক্তিকে।
মামলার তদন্ত সূত্র বলছে, সাগর-রুনি হত্যা রহস্য উন্মোচন করতে ২১ জনের ডিএনএ আলামত ছাড়াও আরও কিছু জিনিসপত্র যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ওই সব আলামতের ডিএনএ প্রতিবেদন তদন্ত সংস্থার কাছে পেঁৗছেছে। সর্বশেষ হাতে পাওয়া কিছু আলামত এখন পর্যবেক্ষণ করছে র্যাব। এ ছাড়া সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় সাতজন বর্তমানে কারাবন্দি। তারা হলেন_ রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মো. সাঈদ, মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুণ, সাগর-রুনির ভাড়া বাসার নিরাপত্তাকর্মী পলাশ রুদ্র পাল ও এনামুল। তাদের প্রথম পাঁচজনই রাজধানীর মহাখালীতে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক নিতাই হত্যা মামলার আসামি। তাদের কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেননি।
নিরাপত্তাকর্মী এনামুলকে গ্রেফতারের জন্য ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। পরে তাকে গ্রেফতারও করে র্যাব। তবে সাগর-রুনির হত্যার ব্যাপারে তার কাছ থেকে তেমন কোনো ক্লু মেলেনি।
মামলার বাদী ও রুনির ভাই নওশের আলম রোমান সমকালকে বলেন, দীর্ঘশ্বাস ও হতাশা বাড়ছে। এখন আশা ছেড়ে দিয়েছি। আমাদের সঙ্গে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কেউ তেমন একটা যোগাযোগ রাখেন না। মেঘ বড় হচ্ছে আর মা-বাবাকে হারানোর কষ্ট আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছে।
মানববন্ধন: সাংবাদিক দম্পতির নিষ্ঠুর এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে কাল বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) চত্বরে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। ডিআরইউর আয়োজনে এতে নিহতদের পরিবারের সদস্য ও গণমাধ্যম নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
দীর্ঘ তিন বছরেও সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যার মোটিভ আর খুনিদের শনাক্ত করা সম্ভব না হওয়ায় স্বজনদের ক্ষোভ আর হতাশার পাল্লা ভারী হচ্ছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কাছে আলোচিত এই মামলা তদন্তের ফল নিয়ে আপাতত কোনো আশার বাণী নেই। মামলাটির বর্তমান তদন্ত সংস্থা র্যাব এখনও হত্যারহস্য ভেদ করতে পারেনি। যদিও বিদেশ থেকে ইতিমধ্যে এসেছে ডিএনএ পরীক্ষার সব প্রতিবেদন।
আদালতের নির্দেশে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সাগর-রুনির বাসার নিরাপত্তারক্ষী পলাশ রুদ্র পাল ও এনামুল হক ওরফে হুমায়ুনকে। ৩২ বার তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ প্রতিবেদন দেওয়া হয় ২ ফেব্রুয়ারি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার সাতজন বর্তমানে কারাবন্দি। সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার হওয়া তানভীর রহমান নামে একজন সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন। সব মিলিয়ে আলোচিত এই মামলার তদন্তের ফল কার্যত শূন্য।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ সমকালকে বলেন, আমরা নিরাশ হতে চাই না। হত্যা রহস্য উন্মোচনে চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। বিদেশে যেসব ডিএনএ আলামত পাঠানো হয়েছিল, তার সব প্রতিবেদন দেশে এসেছে। ডিএনএ পরীক্ষার আলামত ও অন্যান্য তথ্য পর্যবেক্ষণ করে দেখা হচ্ছে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে ওই বাসা থেকে পুলিশ তাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে। ওই দিন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারের ঘোষণা দেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দফতরের নিয়মিত ক্রাইম কনফারেন্সে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছিলেন, 'তদন্তে প্রণিধানযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। খুব শিগগিরই এর রহস্য উন্মোচন করা হবে।'
দিন, সপ্তাহ, মাস পেরিয়ে তিন বছর পার হলেও নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত রয়েছে সেই তিমিরেই। পাল্টেছে মামলার তদন্ত সংস্থা। তবু খুনিরা এখনও অধরা। হত্যার মোটিভ কিংবা খুনিদের আদৌ গ্রেফতার করা সম্ভব হবে কি-না সেই আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। আদালতের নির্দেশে ২০১২ সালের বছরের ২৬ এপ্রিল হত্যার ৭৫ দিন পর কবর থেকে লাশ তুলে ভিসেরা পরীক্ষা করা হয়। ভিসেরা রিপোর্টের মাধ্যমে র্যাব শনাক্ত করতে চেয়েছিল সাগর-রুনিকে হত্যার আগে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল কি-না। তবে লাশ পচন ধরায় ওই প্রতিবেদনে এমন আলামত পাওয়া যায়নি।
থানা পুলিশ ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) তদন্তে ব্যর্থতার পর আদালতের নির্দেশে ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্ত করছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শুরু থেকেই 'সন্দেহ' 'এনামুল ইস্যু' আর 'চোরতত্ত্বে' ঘুরপাক খাচ্ছে এই মামলা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় দুই শতাধিক ব্যক্তিকে।
মামলার তদন্ত সূত্র বলছে, সাগর-রুনি হত্যা রহস্য উন্মোচন করতে ২১ জনের ডিএনএ আলামত ছাড়াও আরও কিছু জিনিসপত্র যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ওই সব আলামতের ডিএনএ প্রতিবেদন তদন্ত সংস্থার কাছে পেঁৗছেছে। সর্বশেষ হাতে পাওয়া কিছু আলামত এখন পর্যবেক্ষণ করছে র্যাব। এ ছাড়া সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় সাতজন বর্তমানে কারাবন্দি। তারা হলেন_ রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মো. সাঈদ, মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুণ, সাগর-রুনির ভাড়া বাসার নিরাপত্তাকর্মী পলাশ রুদ্র পাল ও এনামুল। তাদের প্রথম পাঁচজনই রাজধানীর মহাখালীতে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক নিতাই হত্যা মামলার আসামি। তাদের কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেননি।
নিরাপত্তাকর্মী এনামুলকে গ্রেফতারের জন্য ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। পরে তাকে গ্রেফতারও করে র্যাব। তবে সাগর-রুনির হত্যার ব্যাপারে তার কাছ থেকে তেমন কোনো ক্লু মেলেনি।
মামলার বাদী ও রুনির ভাই নওশের আলম রোমান সমকালকে বলেন, দীর্ঘশ্বাস ও হতাশা বাড়ছে। এখন আশা ছেড়ে দিয়েছি। আমাদের সঙ্গে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কেউ তেমন একটা যোগাযোগ রাখেন না। মেঘ বড় হচ্ছে আর মা-বাবাকে হারানোর কষ্ট আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছে।
মানববন্ধন: সাংবাদিক দম্পতির নিষ্ঠুর এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে কাল বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) চত্বরে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। ডিআরইউর আয়োজনে এতে নিহতদের পরিবারের সদস্য ও গণমাধ্যম নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
No comments