সংলাপের বিকল্প নেই -জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে দুই নেত্রীর কাছে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তার গুরুত্ব কোনো পক্ষই অস্বীকার করতে পারে না। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ইতিবাচক সাড়া দিতে ব্যর্থ হলে তার অর্থ দাঁড়াবে, আরও হরতাল-অবরোধ, পেট্রলবোমা, আরও ‘ক্রসফায়ার’। ৪৪ দিনের অবরোধে নিহত হয়েছেন ৯৪ জন এবং ‘ক্রসফায়ারে’ মারা গেছেন ২১ জন। যেকোনো মূল্যে এই সংঘাতময় পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে হবে। এটা সত্যিই দুঃখজনক যে বান কি মুনের চিঠি পাওয়ার পর প্রায় বেশ সময় পার হয়ে গেলেও দুই নেত্রীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের লক্ষণ নেই, বরং একে অন্যের বিরুদ্ধে কঠোরতর অবস্থান নিয়ে চলছেন। প্রতিদিন পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বান কি মুন উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে শান্তিপূর্ণ উপায়ে রাজনৈতিক বিরোধ মিটিয়ে ফেলার কথা বলেছেন। এ কথা বুঝিয়ে বলার জন্য জাতিসংঘের মহাসচিবকে চিঠি দিতে হয় কেন? এটা তো আমাদের দৈন্যের প্রকাশ। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা বান কি মুন উল্লেখ করেছেন। আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকার অনেক দেশে সংঘাতপূর্ণ পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আমাদের শান্তিরক্ষীরা সফল ভূমিকা রাখছেন, অথচ সেই আমাদের দেশেই এত রাজনৈতিক অশান্তি! এটা দেখে আমাদের মাথা নিচু হয়ে আসে। আমরা বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। দেশের রাজনৈতিক সংকট জটিল, এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু কোনো সংকটই সমাধানের অনুপযোগী নয়। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গত দুই বছরে তিনি তিনবার ঢাকায় এসেছেন। তখন সফল হননি বলে যে এবারও একই পরিণতি বরণ করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। আমরা আশাবাদী হতে চাই। দুই দলের নমনীয় মনোভাবই অসাধ্য সাধন করতে পারে।
No comments