মাধ্যমিকে উপবৃত্তি- শিক্ষার প্রসারে বড় পদক্ষেপ
মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪২ লাখের বেশি দরিদ্র শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাবে সরকারের কাছ থেকে_ এটা দারুণ খবর। ৫৩টি জেলার ২১৭ উপজেলার ছাত্রছাত্রীরা এ সুবিধা পাবে। শিক্ষার প্রসারে নিঃসন্দেহে এটা বড় পদক্ষেপ। এ বৃত্তির অর্থের উৎস বাংলাদেশ সরকার। নিজস্ব সূত্র থেকে ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয় করার এ প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে 'সেকেন্ডারি এডুকেশন স্টাইপেন্ড'। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির নিয়মিত বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন লাভ করে। গত সপ্তাহে একনেক বৈঠকে দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তির জন্য আরেকটি প্রকল্প পাস হয়েছিল, যা থেকে উপকৃত হবে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। মাধ্যমিক পর্যায়ে উপবৃত্তির আওতায় ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা মাসিক ১০০ টাকা, অষ্টম শ্রেণীতে ১২০ টাকা এবং নবম ও দশম শ্রেণীর ক্ষেত্রে ১৫০ টাকা দেওয়া হবে। মাসিক বেতনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বেতনও দেওয়া হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত মাসে ১৫ টাকা এবং নবম ও দশম শ্রেণীর ক্ষেত্রে ২০ টাকা জমা পড়বে বিদ্যালয়ের তহবিলে। এ ছাড়াও এসএসসি পরীক্ষা ফি বাবদ এককালীন ৭৫০ টাকা দেওয়া হবে। প্রকল্পের মেয়াদও বেশ দূরে_ যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশ শতভাগ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে না পারবে, ততদিন এটি চালু থাকবে। উপবৃত্তি শিক্ষার্থীদের হাতে পেঁৗছে দেওয়া হবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সহজ পদ্ধতিতে। বর্তমানে পাঁচটি প্রকল্পের মাধ্যমে ষষ্ঠ থেকে স্নাতক পর্যন্ত উপবৃত্তি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এখন আরেকটি বড় প্রকল্প যুক্ত হলো। এর ফলে দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত পরিবারের ছাত্রছাত্রীরা বিশেষভাবে উপকৃত হবে। তবে শিক্ষার মান বাড়ানোর যে কঠিন চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সামনে, তা অর্জনে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদের আর্থিক এবং অন্যান্য সুবিধা বাড়ানোর প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগ দেওয়া চাই। বর্তমানে বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বেতনের শতভাগ সরকারি তহবিল থেকে প্রদান করা হয়। এতে শিক্ষকদের নিয়মিত বেতনপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছে, কিন্তু এর পরিমাণ প্রত্যাশিত মাত্রার তুলনায় অনেক কম। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পেশায় যেতে উৎসাহ বোধ করে না। তাদের জন্য অনুপ্রেরণা সৃষ্টিতে এ খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।
No comments