চা সংসদ ঢাকায় চলে যাবে? by মাসুদ মিলাদ
চার
বছর আগে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে চায়ের দ্বিতীয় নিলামকেন্দ্র স্থাপনের তৎপরতা
শুরু হয়। দুই পক্ষের বাদ-প্রতিবাদে এখনো ঝুলে আছে বিষয়টি। এবার এর সঙ্গে
যোগ হয়েছে চা সংসদের কার্যালয় বা সচিবালয় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায়
স্থানান্তরের প্রক্রিয়া। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, প্রায় ৩৬ বছর আগে চা–বাগানের মালিকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশীয় চা সংসদ’–এর কার্যালয় ঢাকায় স্থানান্তরের চেষ্টা হয়েছিল। এরপর ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে চেষ্টা হয় চা–বাগান ও বাজার তদারকির সরকারি সংস্থা ‘বাংলাদেশ চা বোর্ড’–এর কার্যালয় ঢাকায় স্থানান্তরের। ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদের মুখে দুবারই বিফলে গেছে এই চেষ্টা। বাংলাদেশীয় চা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশীয় চা সংসদ কমিটির সভায় কার্যালয় স্থানান্তরের বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই সভায় কমিটির ১২ সদস্যের মধ্যে চট্টগ্রামের দুজন সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি জানার পর চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা আপত্তি জানিয়েছেন। বাণিজ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠিও দিয়েছে চট্টগ্রাম চেম্বার।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ছয় দশকের বেশি সময় ধরে চা সংসদ সচিবালয় চট্টগ্রামে রয়েছে। চা বিপণন, আমদানি-রপ্তানি সবকিছুই চট্টগ্রাম থেকে হয়। এ অবস্থায় চা সংসদ সচিবালয় ঢাকায় স্থানান্তরের কোনো যৌিক্তকতা নেই। এ ধরনের চেষ্টার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে চেম্বারসহ চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। কারণ, এভাবে সবকিছুই ঢাকায় কেন্দ্রীভূত হলে বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে চট্টগ্রাম গুরুত্ব হারাবে।
চা সংসদ সূত্র জানায়, দেশে চা–বাগান রয়েছে ১৬৬টি। চা–বাগানের সিংহভাগ সিলেট অঞ্চলে হলেও বেচাকেনার সব অবকাঠামো গড়ে উঠেছে চট্টগ্রামে। মূলত ১৯৪৯ সালে চট্টগ্রামে চা নিলামকেন্দ্র ও চা সংসদ সচিবালয় স্থাপন করা হয়। এই সুবাদে চট্টগ্রামে চা রাখার ১৩টি গুদাম, ছয়টি ব্রোকার হাউসও গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া বিপণন, পরিবহন ব্যবসাসহ চা–কেন্দ্রিক নানা ব্যবসাও গড়ে উঠেছে চট্টগ্রামে। অবকাঠামোগত এমন সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও একেকবার একেক কার্যালয় স্থানান্তরের চেষ্টা নিয়ে ক্ষুব্ধ চট্টগ্রামের বাগানের মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশীয় চা সংসদের সচিবালয় চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের একটি ভবন থেকে ঢাকায় স্থানান্তর নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরছে দুই পক্ষ। চট্টগ্রামে এই কার্যালয় রাখার পক্ষে যুক্তি হলো—চট্টগ্রামে চায়ের নিলামকেন্দ্রসহ অবকাঠামোভিত্তিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এ কারণে ঐতিহ্য অনুযায়ী এখানেই কার্যালয়টি রাখা উচিত। আবার চা নিলামকেন্দ্র চট্টগ্রামে হওয়ায় নিলাম আয়োজন নিয়ে চা ব্যবসায়ী সমিতি ও চা সংসদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হয়। নিলাম বাজার থেকে চা কেনার পর টাকা পরিশোধের সময়সীমা নিয়ে আলোচনা করা হয় চা সংসদের সঙ্গে। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য চা সংসদের দ্বারস্থ হতে হয় ব্যবসায়ীদের।
চা সংসদের বর্তমান কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার ঠান্ডাছড়ি চা–বাগানের মালিক কাজী ইশতিয়াক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রামের চায়ের বিপণনকেন্দ্রিক সব সুযোগ-সুবিধা আছে। আবার চট্টগ্রাম থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথে যোগাযোগও সহজ। ফলে এখানেই চা সংসদের সচিবালয় থাকাটা যৌক্তিক। কমিটির যে সভায় সিদ্ধান্ত হয় সেই সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন না বলে জানান।
তবে চা সংসদ ঢাকায় স্থানান্তরের পক্ষের বাগানের মালিকেরা বলছেন, চা–বাগানের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে বাণিজ্য, অর্থ, কৃষি, ভূমি, শিল্প মন্ত্রণালয়সহ অন্তত আট-নয়টি মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করতে হয়। এ জন্য দাপ্তরিক কাজের সুবিধার্থে ঢাকায় চা সংসদ স্থানান্তর করার যৌক্তিকতা তুলে ধরছেন এ পক্ষের লোকজন। তবে এ বিষয়ে কেউ সরাসরি নাম প্রকাশ করে কথা বলতে চাননি। যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশীয় চা সংসদের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এ এম শাহ আলম প্রথম আলোকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে চা সংসদের কার্যালয় স্থানান্তর নিয়ে চা বেচাকেনায় জড়িত ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ চা ব্যবসায়ী সমিতি এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। আজ বৃহস্পতিবার সমিতির কার্যালয়ে অনলাইন নিলাম আয়োজনের বিষয়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠকে সমিতির সদস্যদের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে বলে সমিতি সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, প্রায় ৩৬ বছর আগে চা–বাগানের মালিকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশীয় চা সংসদ’–এর কার্যালয় ঢাকায় স্থানান্তরের চেষ্টা হয়েছিল। এরপর ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে চেষ্টা হয় চা–বাগান ও বাজার তদারকির সরকারি সংস্থা ‘বাংলাদেশ চা বোর্ড’–এর কার্যালয় ঢাকায় স্থানান্তরের। ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদের মুখে দুবারই বিফলে গেছে এই চেষ্টা। বাংলাদেশীয় চা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশীয় চা সংসদ কমিটির সভায় কার্যালয় স্থানান্তরের বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই সভায় কমিটির ১২ সদস্যের মধ্যে চট্টগ্রামের দুজন সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি জানার পর চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা আপত্তি জানিয়েছেন। বাণিজ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠিও দিয়েছে চট্টগ্রাম চেম্বার।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ছয় দশকের বেশি সময় ধরে চা সংসদ সচিবালয় চট্টগ্রামে রয়েছে। চা বিপণন, আমদানি-রপ্তানি সবকিছুই চট্টগ্রাম থেকে হয়। এ অবস্থায় চা সংসদ সচিবালয় ঢাকায় স্থানান্তরের কোনো যৌিক্তকতা নেই। এ ধরনের চেষ্টার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে চেম্বারসহ চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। কারণ, এভাবে সবকিছুই ঢাকায় কেন্দ্রীভূত হলে বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে চট্টগ্রাম গুরুত্ব হারাবে।
চা সংসদ সূত্র জানায়, দেশে চা–বাগান রয়েছে ১৬৬টি। চা–বাগানের সিংহভাগ সিলেট অঞ্চলে হলেও বেচাকেনার সব অবকাঠামো গড়ে উঠেছে চট্টগ্রামে। মূলত ১৯৪৯ সালে চট্টগ্রামে চা নিলামকেন্দ্র ও চা সংসদ সচিবালয় স্থাপন করা হয়। এই সুবাদে চট্টগ্রামে চা রাখার ১৩টি গুদাম, ছয়টি ব্রোকার হাউসও গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া বিপণন, পরিবহন ব্যবসাসহ চা–কেন্দ্রিক নানা ব্যবসাও গড়ে উঠেছে চট্টগ্রামে। অবকাঠামোগত এমন সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও একেকবার একেক কার্যালয় স্থানান্তরের চেষ্টা নিয়ে ক্ষুব্ধ চট্টগ্রামের বাগানের মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশীয় চা সংসদের সচিবালয় চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের একটি ভবন থেকে ঢাকায় স্থানান্তর নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরছে দুই পক্ষ। চট্টগ্রামে এই কার্যালয় রাখার পক্ষে যুক্তি হলো—চট্টগ্রামে চায়ের নিলামকেন্দ্রসহ অবকাঠামোভিত্তিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এ কারণে ঐতিহ্য অনুযায়ী এখানেই কার্যালয়টি রাখা উচিত। আবার চা নিলামকেন্দ্র চট্টগ্রামে হওয়ায় নিলাম আয়োজন নিয়ে চা ব্যবসায়ী সমিতি ও চা সংসদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হয়। নিলাম বাজার থেকে চা কেনার পর টাকা পরিশোধের সময়সীমা নিয়ে আলোচনা করা হয় চা সংসদের সঙ্গে। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য চা সংসদের দ্বারস্থ হতে হয় ব্যবসায়ীদের।
চা সংসদের বর্তমান কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার ঠান্ডাছড়ি চা–বাগানের মালিক কাজী ইশতিয়াক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রামের চায়ের বিপণনকেন্দ্রিক সব সুযোগ-সুবিধা আছে। আবার চট্টগ্রাম থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথে যোগাযোগও সহজ। ফলে এখানেই চা সংসদের সচিবালয় থাকাটা যৌক্তিক। কমিটির যে সভায় সিদ্ধান্ত হয় সেই সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন না বলে জানান।
তবে চা সংসদ ঢাকায় স্থানান্তরের পক্ষের বাগানের মালিকেরা বলছেন, চা–বাগানের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে বাণিজ্য, অর্থ, কৃষি, ভূমি, শিল্প মন্ত্রণালয়সহ অন্তত আট-নয়টি মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করতে হয়। এ জন্য দাপ্তরিক কাজের সুবিধার্থে ঢাকায় চা সংসদ স্থানান্তর করার যৌক্তিকতা তুলে ধরছেন এ পক্ষের লোকজন। তবে এ বিষয়ে কেউ সরাসরি নাম প্রকাশ করে কথা বলতে চাননি। যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশীয় চা সংসদের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এ এম শাহ আলম প্রথম আলোকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে চা সংসদের কার্যালয় স্থানান্তর নিয়ে চা বেচাকেনায় জড়িত ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ চা ব্যবসায়ী সমিতি এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। আজ বৃহস্পতিবার সমিতির কার্যালয়ে অনলাইন নিলাম আয়োজনের বিষয়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠকে সমিতির সদস্যদের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে বলে সমিতি সূত্রে জানা গেছে।
No comments