সম্ভাবনা বিনষ্টকারী রাজনীতির কবলে দেশ by মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন
বিএনপির প্রধান কার্যালয়ে তালা ও দলটির
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তার গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করার পর দেশের
রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে। উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজপথ,
রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে গোটা দেশ; ঝরছে রক্ত, মরছে মানুষ, জ্বলছে আগুন,
ধ্বংস হচ্ছে সম্পদ। সাধারণ মানুষ কার্যত যার যার ঘরে বন্দি হয়ে পড়েছে।
আতংকে মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। সামনে কী হতে যাচ্ছে, তা কারও কাছেই
স্পষ্ট নয়। সব সামাজিক শক্তি একে অপরের মুখোমুখি। এটি একটি রাষ্ট্রের জন্য
অশনিসংকেত হয়ে আবির্ভূত হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। কাজেই
চিন্তাশীল মানুষের কাছে রাষ্ট্রের পরিণতির দিকটাই এখন মুখ্য বিষয় হয়ে
দাঁড়িয়েছে। কেননা এ অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে রাষ্ট্র যে কোনো বিপজ্জনক
পরিস্থিতির দিকে মোড় নিতে পারে। বিপদাপন্ন হতে পারে গণতন্ত্র ও দেশের
স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। ধ্বংস হতে পারে মানুষের সব স্বপ্ন এবং সম্ভাবনা।
এসব ভাবনা রাজনীতিকদের ভাবনায় থাকতে হবে। দায়িত্বহীন কথাবার্তা ও আচরণ বন্ধ
করতে হবে, সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে, দমন-পীড়ন ও জুলুম-নির্যাতন বন্ধ করতে
হবে, রাজনৈতিক সংকট দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, কেউ
যদি বিশ্বের সব ক্ষমতা পেয়ে যান আর আত্মাকে হারান, তাতে কোনো প্রশান্তি
নেই।
কথায় আছে, ডানা ভাঙা হাঁস রাতে শুধু শেয়াল দেখে, তেমনি বর্তমান সরকারও মনে হয় দেখে এই বুঝি তারা ক্ষমতা হারাল। এমনটি না হলে কেন তারা বিএনপি অফিসে তালা দেবে? কেন তারা খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করবে? কেন তারা খালেদা জিয়াকে জনসভা করতে দেবে না? এসব প্রশ্ন আজ জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে। মানুষের চলাচলের স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে কি গণতন্ত্র রক্ষা দিবস পালন করা শোভনীয়? এরকম বিকৃত গণতন্ত্র নিয়ে আজকের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে সামনে এগোনো যাবে? না দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ বানানো যাবে? কাজেই আগে রাজনীতি ঠিক করতে হবে, রাজনীতি ঠিক না হলে এক সময় তাসের ঘরের মতো সব ভেঙে পড়বে। তখন এর দায়-দায়িত্ব যারা ড্রাইভিং সিটে আছেন তাদেরই নিতে হবে। তাদের আরোহীর নয়, চালকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে তাদের।
দিশেহারা হয়ে বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করার বিপজ্জনক খেলা দেশ তো নয়ই, রাজনীতি ও রাজনীতিকদের জন্যও ভালো ফল বয়ে আনতে পারে না। কোনো পেশাদার রাজনীতিক এমন জঘন্য ও আত্মঘাতী কাজ করতে পারেন না। চেয়ারপারসনকে অবরুদ্ধ করে, প্রধান কার্যালয়ে তালা দিয়ে ও নেতাকর্মীকে মামলা-হামলার মাধ্যমে জেলে আটক রাখলেই কি বিএনপি নেতৃত্বশূন্য হয়ে যাবে? না, কখনোই না; এভাবে কোনো রাজনৈতিক দলকে নেতৃত্বশূন্য করা যায় না। তখন কর্মীরা নেতৃত্ব হাতে তুলে নেবে। দলের নীরব সমর্থকরা কর্মীর দায়িত্ব পালন করবে। দমন-পীড়ন ও জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে যে শেষ রক্ষা হয় না এটি আসলে শাসকরা বুঝতে চায় না, ক্ষমতার মোহে তারা বিবেক-বুদ্ধি হারিয়ে এক অত্যাচারী ও স্বৈরাচারী শাসকে পরিণত হয়। শেষ পর্যন্ত জনতার শক্তির কাছে তাদের করুণ পরাজয় বরণ করতে হয়, ধিকৃত শাসক হিসেবে ইতিহাসে তাদের নাম লিপিবদ্ধ হয়। নিকট অতীতে মইন-ফখরুউদ্দীনের কুখ্যাত জরুরি সরকার রাজনীতিক ও সাধারণ মানুষের ওপর অহেতুক দমন-পীড়ন ও জেল-জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। মানুষ তাদের এখন ধিক্কার দেয়। দমন-পীড়নের ফল যে শেষ পর্যন্ত ভালো হয় না, এর চেয়ে ভালো দৃষ্টান্ত আর কিইবা হতে পারে।
আসলে ক্ষমতার মোহ পেয়ে বসেছে শাসকদের। দমন-পীড়ন, জুলুম-নির্যাতন এবং গুম-অপহরণ-গুপ্তহত্যাকে তারা ক্ষমতায় থাকার উপায় মনে করছে। হামলা-মামলা, জেল-জুলুম ও ভয়-ভীতি-আতংক সৃষ্টি করে, বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নেতৃত্বশূন্য করার বিপজ্জনক খেলায় তারা মেতেছে। শাসকদের বুঝতে হবে, বিএনপি শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়; সামাজিক শক্তিও বটে, ঢালাও গ্রেফতার ও দমন-পীড়ন চালিয়ে দলটিকে স্তব্ধ করা যাবে না। অতীতে বহুবার প্রমাণ হয়েছে, শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের গ্রেফতার করে দলটিকে স্তব্ধ করা যায় না। বরং যারাই দলটিকে স্তব্ধ করতে চেয়েছে তারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাংলাদেশের মানুষকে অনেক স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে। বাংলাদেশ ডিজিটাল হবে, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে ইত্যাদি। কথা হল, মানুষকে যে স্বপ্নই দেখানো হোক না কেন, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সবচেয়ে আগে প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। দমন-পীড়ন, গুম-গ্রেফতার ও জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তাতে গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের যেটুকু উন্নতি হয়েছে, তা ধরে রাখাই কঠিন হবে। রাজনীতিতে অশুভ শক্তির উত্থানের পথ প্রশস্ত করা বাঞ্ছনীয় নয়, রাজনীতিকরা নিখোঁজ হবেন এবং অহেতুক ও অন্যায়ভাবে জেলে যাবেন এটিও মেনে নেয়া যায় না; কেননা খোদ রাজনীতিকদের জন্যই তা ভয়ংকর, আগে পরে রাজনীতিকরাই এর শিকার হবেন। বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য এসব নিঃসন্দেহে অশনি সংকেত। রাজনীতিতে যদি পরমতসহিষ্ণুতা ও গণতান্ত্রিক মনোভাব প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে কোনোভাবেই দেশে স্থিতি ও শান্তি বিরাজ করবে না। দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও আমদানি-রফতানি ব্যাহত হবে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বন্ধ হবে, নতুন শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠবে না, দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের পথ সংকুচিত হবে, সর্বোপরি জিডিপির সূচকও নিচের দিকে নামবে।
অসহিষ্ণুতা ও বিভাজনের রাজনীতি নিয়ে একটি রফতানিমুখী দেশ চলতে পারে না। তাই আগে রাজনীতি ঠিক করতে হবে। রাজনীতিকদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। সংঘাত-সংঘর্ষের মনোভাব ত্যাগ করতে হবে। দম্ভ ও পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ বাক্য ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। জেলে আটক রাজনীতিকদের মুক্তি দিতে হবে। দ্বন্দ্ব-সংঘাত উসকে দেয় এ ধরনের বক্তৃতা-বিবৃতি দেয়া বন্ধ করতে হবে। গণতন্ত্র মেনে রাজনীতি করলে রাজনীতি কোনোভাবেই সহিংসতার পথে ধাবিত হয় না। রাজনীতিতে পরাজয়কে সহজভাবে মেনে নেয়ার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে এবং বিজয়কে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার সঙ্গে গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ছোট কোনো জনপদ নয়। জনসংখ্যার নিরিখে বিশ্বের অষ্টম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী এখন বিশ্বের অনেক শক্তিধর দেশ। চীন, ভারত ও পাকিস্তানসহ বড় বড় দেশ বাংলাদেশের ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ। কাজেই বাংলাদেশের শত্রু এখন চতুর্মুখী। এটি এদেশের রাজনীতিকদের বুঝতে হবে, সংকীর্ণ মনের রাজনীতি ত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে সামনে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে হবে।
মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
কথায় আছে, ডানা ভাঙা হাঁস রাতে শুধু শেয়াল দেখে, তেমনি বর্তমান সরকারও মনে হয় দেখে এই বুঝি তারা ক্ষমতা হারাল। এমনটি না হলে কেন তারা বিএনপি অফিসে তালা দেবে? কেন তারা খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করবে? কেন তারা খালেদা জিয়াকে জনসভা করতে দেবে না? এসব প্রশ্ন আজ জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে। মানুষের চলাচলের স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে কি গণতন্ত্র রক্ষা দিবস পালন করা শোভনীয়? এরকম বিকৃত গণতন্ত্র নিয়ে আজকের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে সামনে এগোনো যাবে? না দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ বানানো যাবে? কাজেই আগে রাজনীতি ঠিক করতে হবে, রাজনীতি ঠিক না হলে এক সময় তাসের ঘরের মতো সব ভেঙে পড়বে। তখন এর দায়-দায়িত্ব যারা ড্রাইভিং সিটে আছেন তাদেরই নিতে হবে। তাদের আরোহীর নয়, চালকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে তাদের।
দিশেহারা হয়ে বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করার বিপজ্জনক খেলা দেশ তো নয়ই, রাজনীতি ও রাজনীতিকদের জন্যও ভালো ফল বয়ে আনতে পারে না। কোনো পেশাদার রাজনীতিক এমন জঘন্য ও আত্মঘাতী কাজ করতে পারেন না। চেয়ারপারসনকে অবরুদ্ধ করে, প্রধান কার্যালয়ে তালা দিয়ে ও নেতাকর্মীকে মামলা-হামলার মাধ্যমে জেলে আটক রাখলেই কি বিএনপি নেতৃত্বশূন্য হয়ে যাবে? না, কখনোই না; এভাবে কোনো রাজনৈতিক দলকে নেতৃত্বশূন্য করা যায় না। তখন কর্মীরা নেতৃত্ব হাতে তুলে নেবে। দলের নীরব সমর্থকরা কর্মীর দায়িত্ব পালন করবে। দমন-পীড়ন ও জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে যে শেষ রক্ষা হয় না এটি আসলে শাসকরা বুঝতে চায় না, ক্ষমতার মোহে তারা বিবেক-বুদ্ধি হারিয়ে এক অত্যাচারী ও স্বৈরাচারী শাসকে পরিণত হয়। শেষ পর্যন্ত জনতার শক্তির কাছে তাদের করুণ পরাজয় বরণ করতে হয়, ধিকৃত শাসক হিসেবে ইতিহাসে তাদের নাম লিপিবদ্ধ হয়। নিকট অতীতে মইন-ফখরুউদ্দীনের কুখ্যাত জরুরি সরকার রাজনীতিক ও সাধারণ মানুষের ওপর অহেতুক দমন-পীড়ন ও জেল-জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। মানুষ তাদের এখন ধিক্কার দেয়। দমন-পীড়নের ফল যে শেষ পর্যন্ত ভালো হয় না, এর চেয়ে ভালো দৃষ্টান্ত আর কিইবা হতে পারে।
আসলে ক্ষমতার মোহ পেয়ে বসেছে শাসকদের। দমন-পীড়ন, জুলুম-নির্যাতন এবং গুম-অপহরণ-গুপ্তহত্যাকে তারা ক্ষমতায় থাকার উপায় মনে করছে। হামলা-মামলা, জেল-জুলুম ও ভয়-ভীতি-আতংক সৃষ্টি করে, বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নেতৃত্বশূন্য করার বিপজ্জনক খেলায় তারা মেতেছে। শাসকদের বুঝতে হবে, বিএনপি শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়; সামাজিক শক্তিও বটে, ঢালাও গ্রেফতার ও দমন-পীড়ন চালিয়ে দলটিকে স্তব্ধ করা যাবে না। অতীতে বহুবার প্রমাণ হয়েছে, শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের গ্রেফতার করে দলটিকে স্তব্ধ করা যায় না। বরং যারাই দলটিকে স্তব্ধ করতে চেয়েছে তারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাংলাদেশের মানুষকে অনেক স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে। বাংলাদেশ ডিজিটাল হবে, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে ইত্যাদি। কথা হল, মানুষকে যে স্বপ্নই দেখানো হোক না কেন, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সবচেয়ে আগে প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। দমন-পীড়ন, গুম-গ্রেফতার ও জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তাতে গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের যেটুকু উন্নতি হয়েছে, তা ধরে রাখাই কঠিন হবে। রাজনীতিতে অশুভ শক্তির উত্থানের পথ প্রশস্ত করা বাঞ্ছনীয় নয়, রাজনীতিকরা নিখোঁজ হবেন এবং অহেতুক ও অন্যায়ভাবে জেলে যাবেন এটিও মেনে নেয়া যায় না; কেননা খোদ রাজনীতিকদের জন্যই তা ভয়ংকর, আগে পরে রাজনীতিকরাই এর শিকার হবেন। বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য এসব নিঃসন্দেহে অশনি সংকেত। রাজনীতিতে যদি পরমতসহিষ্ণুতা ও গণতান্ত্রিক মনোভাব প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে কোনোভাবেই দেশে স্থিতি ও শান্তি বিরাজ করবে না। দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও আমদানি-রফতানি ব্যাহত হবে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বন্ধ হবে, নতুন শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠবে না, দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের পথ সংকুচিত হবে, সর্বোপরি জিডিপির সূচকও নিচের দিকে নামবে।
অসহিষ্ণুতা ও বিভাজনের রাজনীতি নিয়ে একটি রফতানিমুখী দেশ চলতে পারে না। তাই আগে রাজনীতি ঠিক করতে হবে। রাজনীতিকদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। সংঘাত-সংঘর্ষের মনোভাব ত্যাগ করতে হবে। দম্ভ ও পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ বাক্য ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। জেলে আটক রাজনীতিকদের মুক্তি দিতে হবে। দ্বন্দ্ব-সংঘাত উসকে দেয় এ ধরনের বক্তৃতা-বিবৃতি দেয়া বন্ধ করতে হবে। গণতন্ত্র মেনে রাজনীতি করলে রাজনীতি কোনোভাবেই সহিংসতার পথে ধাবিত হয় না। রাজনীতিতে পরাজয়কে সহজভাবে মেনে নেয়ার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে এবং বিজয়কে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার সঙ্গে গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ছোট কোনো জনপদ নয়। জনসংখ্যার নিরিখে বিশ্বের অষ্টম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী এখন বিশ্বের অনেক শক্তিধর দেশ। চীন, ভারত ও পাকিস্তানসহ বড় বড় দেশ বাংলাদেশের ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ। কাজেই বাংলাদেশের শত্রু এখন চতুর্মুখী। এটি এদেশের রাজনীতিকদের বুঝতে হবে, সংকীর্ণ মনের রাজনীতি ত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে সামনে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে হবে।
মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
No comments