আফসানাকে তাড়া করছে আগুন by ইকবাল হোসেন
তরুণী
আফসানা কেবলি তার চারপাশে আগুন দেখছেন। তার চোখেমুখে শুধুই ভয়। চরম মানসিক
যন্ত্রণার এক ছবি তাকে তাড়া করছে। গনগনে আগুনের সে ছবি হয়তো তার জীবন থেকে
কোনোদিন সরে যাবে না। মানসিক ও শারীরিকভাবে ভীষণ বিপর্যস্ত মেয়েটির
প্রশ্ন, 'আমরা তো কোনো রাজনীতি করি না। তাহলে আমাদের ওপর এ জঘন্যতম হামলা
কেন? কেন আগুন?' তার এই প্রশ্নে উপস্থিত কারও মুখেই কোনো ভাষা নেই। কারও
কাছেই তিনি প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছেন না। রংপুরে পেট্রোলবোমায় বাসে আগুনলাগা
আর তাতে মানুষকে পুড়ে যেতে দেখেছেন সেই বাসের যাত্রী আফসানা। দশ দিন আগে
তার দাদা মারা গেছেন। দাদাকে শেষ দেখা দেখতে পরিবারের সবাই মিলে ১২ দিন আগে
ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের উলিপুরে এসেছিল আফসানাদের পরিবার। 'মঙ্গলবার রাত
তখন একটার কাছাকাছি। বাসে ছোট ভাই আল-আমিনের পাশে বসে আছি।' এই দুটি বাক্য
বলার পরেই আফসানার চোখেমুখে রাজ্যের আতঙ্ক এসে ভর করল। তার পর দাউদাউ
আগুনের আঁচের স্মৃতিতে সে বিমর্ষ, তার কণ্ঠ জড়িয়ে আসছে, 'হঠাৎ বৃষ্টির মতো
ঢিল এসে পড়তে লাগল বাসের ওপর। এর পর দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে শুরু করল
বাসটিতে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মানুষের বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার-চেঁচামেচি।
বাঁচাও বাঁচাও চিৎকারে বাতাস ভারি হয়ে উঠছিল।' আফসানা থামলেন। দু'চোখে হাত
দিয়ে যেন সেই ভয়াবহ স্মৃতি ঢেকে দিতে চাইলেন। কিন্তু মনের গভীর থেকে আসা
জ্বলজ্বলে স্মৃতির ভারে আবারও তার কণ্ঠে কান্না, 'যে যেভাবে পারে প্রাণ
বাঁচাতে চেষ্টা করছে। কেউ জানালা দিয়ে, কেউ দরজা নিয়ে বের হয়। আমরা কীভাবে
বাস থেকে নেমেছি তার কিছুই মনে করতে পারছি না। জীবনে এমন দৃশ্য দেখিনি।'
গাজীপুর ভাওয়াল সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আফসানা বেগম। তিনি বাস থেকে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন। তার পরিবারের ১০ সদস্যের কয়েকজন এখনও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন হাসপাতালে। তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, দু'দিন আগে উলিপুরে দাদার দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন তারা। অবরোধের কারণে গাজীপুর যেতে পারছিলেন না। তাদের পরিবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মঙ্গলবার রাত ৮টা ১০ মিনিটে খলিল এক্সক্লুসিভ বাসে উলিপুর থেকে ঢাকায় রওনা দেয়। রংপুরের মিঠাপুকুরে বাসটি এলে ঘটে বর্বরতম ঘটনাটি। দুর্বৃত্তদের পেট্রোলবোমায় আফসানার ফুফু তছিরনের দেহের ৯৩ শতাংশ পুড়ে যায়। তিনি এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। ডাক্তার বলেছেন, তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। আফসানার মামি মনোয়ারা বেগম ও তাদের দুই কন্যা নুশরাত ও নাদিয়াকে রংপুর সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তা ছাড়া আফসানার দুই ভাবি লাকি ও মিনারা, তাদের মেয়ে ফারজানা ও নিরব, মা ছালেহা বেগম অগি্নদগ্ধ হয়েছেন। তারা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভাই আল-আমিন বাস থেকে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন। তিনিও চিকিৎসাধীন।
ঘটনার কথা বলতে গিয়ে আফসানা জানান, তার পেছনের সিটে এক মহিলা বাচ্চা নিয়ে বসে ছিল। তারা আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। মা আর শিশু বাচ্চাটির পুড়ে যাওয়ার কথা বলতে গিয়ে আফসানার চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। শানিত কণ্ঠে তার প্রতিক্রিয়া, 'আমরা তো কোনো দোষ করিনি। জীবনের তাগিদে আমরা উলিপুর গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় যাচ্ছিলাম। যেভাবে আক্রমণ করা হলো তাতে মনে হয় আমাদের বাসের সবাইকে ওরা পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল।'
গাজীপুর ভাওয়াল সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আফসানা বেগম। তিনি বাস থেকে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন। তার পরিবারের ১০ সদস্যের কয়েকজন এখনও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন হাসপাতালে। তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, দু'দিন আগে উলিপুরে দাদার দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন তারা। অবরোধের কারণে গাজীপুর যেতে পারছিলেন না। তাদের পরিবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মঙ্গলবার রাত ৮টা ১০ মিনিটে খলিল এক্সক্লুসিভ বাসে উলিপুর থেকে ঢাকায় রওনা দেয়। রংপুরের মিঠাপুকুরে বাসটি এলে ঘটে বর্বরতম ঘটনাটি। দুর্বৃত্তদের পেট্রোলবোমায় আফসানার ফুফু তছিরনের দেহের ৯৩ শতাংশ পুড়ে যায়। তিনি এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। ডাক্তার বলেছেন, তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। আফসানার মামি মনোয়ারা বেগম ও তাদের দুই কন্যা নুশরাত ও নাদিয়াকে রংপুর সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তা ছাড়া আফসানার দুই ভাবি লাকি ও মিনারা, তাদের মেয়ে ফারজানা ও নিরব, মা ছালেহা বেগম অগি্নদগ্ধ হয়েছেন। তারা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভাই আল-আমিন বাস থেকে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন। তিনিও চিকিৎসাধীন।
ঘটনার কথা বলতে গিয়ে আফসানা জানান, তার পেছনের সিটে এক মহিলা বাচ্চা নিয়ে বসে ছিল। তারা আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। মা আর শিশু বাচ্চাটির পুড়ে যাওয়ার কথা বলতে গিয়ে আফসানার চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। শানিত কণ্ঠে তার প্রতিক্রিয়া, 'আমরা তো কোনো দোষ করিনি। জীবনের তাগিদে আমরা উলিপুর গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় যাচ্ছিলাম। যেভাবে আক্রমণ করা হলো তাতে মনে হয় আমাদের বাসের সবাইকে ওরা পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল।'
No comments