মুসলিমদের প্রশংসা করলেন জার্মান প্রেসিডেন্ট গাউক
জার্মান প্রেসিডেন্ট ইয়োখিম গাউক সে দেশে বসবাসরত মুসলমানদের প্রশংসা করেছেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্যারিসের সন্ত্রাসী ঘটনার বিরুদ্ধে বার্লিনে বিশাল মানববন্ধনে তিনি বলেন, এ কর্মসূচি প্রমাণ করে, ইসলাম ধর্ম ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে সন্ত্রাসের কোনো যোগসূত্র থাকতে পারে না। ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণের সামনে জার্মানির কেন্দ্রীয় ইসলামিক ফোরাম আয়োজিত মানববন্ধনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ অংশ নেন। জার্মান প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশপ্রেমিক শব্দের অর্থ হলো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে মেনে নিয়ে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের একসঙ্গে বসবাস। জার্মানিতে বসবাসরত সব সম্প্রদায়ই জার্মান।পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত দিয়ে শুরু হয় মানববন্ধন। এতে জার্মান প্রেসিডেন্ট ছাড়াও চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, মন্ত্রিসভার সদস্য, জার্মানিতে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং মুসলিম, খ্রিষ্ট্রান ও ইহুদি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। জার্মানির কেন্দ্রীয় ইসলামিক ফোরামের সভাপতি আমান মাজায়েক প্যারিসের সন্ত্রাসী ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, প্যারিসের দুই ঘটনায় একজন মুসলিম পুলিশের নিহত হওয়া এবং সুপার মার্কেটে এক মুসলমান যুবকের ইহুদি ক্রেতাদের প্রাণ রক্ষাই প্রমাণ করে, সন্ত্রাসের সঙ্গে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের কোনো সম্পর্ক নেই।
এর আগের দিন আঙ্গেলা ম্যার্কেল সাবেক জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিশ্চিয়ান ভুল্ফের বক্তব্য স্মরণ করে বলেন, ‘ইসলাম ধর্মও জার্মানের অন্তর্গত’। তিনি ২০১৪ সালে জার্মানিতে আসা প্রায় দুই লাখ সিরীয় শরণার্থীকে বসবাসের সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলেও জানান। মানববন্ধনে বার্লিনে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক মুসলমান অধিবাসী অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারী এক তরুণ বলেন, ইসলাম ধর্মের দোহাই দিয়ে, জিহাদের দোহাই দিয়ে বিপুলসংখ্যক তরুণকে ইউরোপ থেকে ইরাক ও সিরিয়ার যুদ্ধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ‘পাশ্চাত্যের ইসলামীকরণের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমী ইউরোপীয়রা’ (পেগিডা) নামে একটি আন্দোলনের ব্যানারে গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে জার্মানির ড্রেসডেন শহরে প্রতি সোমবার মিছিল-সমাবেশ হচ্ছে। বিভিন্ন জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে ইসলামবিরোধী এ আন্দোলনের জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান। এ রকম প্রেক্ষাপটে এ দেশে বসবাসরত মুসলমানরা এই প্রথম শীর্ষ রাজনীতিকদের উপস্থিতি ও সংহতি প্রকাশের মধ্য দিয়ে প্রকাশ্য কোনো অনুষ্ঠান করলেন।
No comments