তারা কি সত্যিই জনগণের জন্য রাজনীতি করেন! by এ কে এম শাহনাওয়াজ
রাজনীতিকদের অন্তত বক্তব্যে-স্লোগানে আমরা
শুনতে পাই, তারা জনগণের জন্য রাজনীতি করেন। জনগণ অবরোধ-হরতাল করছে। জনগণ
হরতাল-অবরোধ প্রতিরোধ করছে। কিন্তু অবরোধ-হরতালে যে সহিংস ঘটনা ঘটছে-
পেট্রলবোমায় ঝলসে যাচ্ছে মানুষ, আগুনে পুড়ছে যানবাহন- এজন্য কি অবরোধ
আহ্বানকারীদের কেউ দুঃখ প্রকাশ করেছেন? বিএনপি নেতা রিয়াজ রহমান
সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয়েছেন- আমরা সবাই দুঃখিত, ক্ষুব্ধ। কোনো সহিংস
ঘটনায় বিএনপি নেত্রী এই প্রথম ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ
ঘটিয়ে ২০ দলীয় জোট আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে। যেদিন রিয়াজ রহমানের ওপর
হামলা হয়েছে, সেই একই দিন (মঙ্গলবার) কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা বাসে
পেট্রলবোমা হামলা হয়েছে। শিশুসহ চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে।
তাদের জন্য কে দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করবে! রাজনীতিকরা কি গলা চড়িয়ে দাবি
করতে পারবেন- তারা জনগণের জন্য রাজনীতি করেন?
বঙ্গবন্ধু-উত্তর কাল থেকে আমাদের রাজনীতিকরা চক্ষুরোগে আক্রান্ত। তারা দূরদৃষ্টি দিয়ে কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করেন না। দৃষ্টিটা থাকে সিংহাসন পর্যন্ত। পরবর্তী প্রতিক্রিয়া দেশ বা জাতির জন্য কী বার্তা বয়ে আনবে সে বিষয়ে ভাবার দায় কারও নেই। ক্ষমতার মদে এতটাই মত্ত থাকেন যে, নিজ দলের ভবিষ্যৎ শক্তি বা সম্ভ্রমের বিষয়েও কোনো খেয়াল থাকে না তাদের। রাজনীতির নায়কদের অভীষ্ট লক্ষ্য হয়ে পড়েছে ক্ষমতাশালী, অর্থশালী আর প্রতিপত্তিশালী হওয়া। এ কারণে চলমান রাজনৈতিক দর্শন দেশ ও জাতির জন্য স্বস্তি নিয়ে আসতে পারছে না। এদিক থেকে জিয়াউর রহমান কিছুটা নিজ বিবেচনায় দূরদৃষ্টিতে তাকাতে পেরেছিলেন। ক্ষমতার শক্তিতে নিজের ভবিষ্যৎকে দৃঢ় অবস্থানে দাঁড় করাতে নিজ বলয় তৈরি করে নিয়েছিলেন। তিনি ভারত ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের উল্টো শিবির থেকে নিজ অবস্থান তৈরি করার পরিকল্পনা নেন। ফলে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শিবিরের সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধেন। পাকিস্তান, সৌদি আরব আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বলয়ে নিজেকে যুক্ত করে বিএনপি নামের দলটিকে প্রতিপালন করতে থাকেন। ফলে মুখে যাই বলা হোক, বিএনপি দলটির পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জিয়াউর রহমান সে সময়ের আওয়ামী লীগের দুর্বলতা আর দুর্দশাকে পুঁজি করে নতুন দলটিকে শক্ত অবস্থান দিতে পেরেছিলেন। নতুন প্রজন্মের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের তরুণদের মন থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পেরেছিলেন ফিকে করে দিতে। বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ এসব তরুণের মনে বিতর্কিত চরিত্র ও দল হিসেবে উপস্থাপিত হতে লাগল। সূচনালগ্নে ছাত্রদল-যুবদল করে আসা বন্ধুরা এখনও সে ঘোর কাটাতে পারেননি। এটিই ছিল জিয়াউর রহমানের সাফল্য ও দূরদৃষ্টির প্রভাব। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, এ যুগের আওয়ামী লীগ আর জন্ম সংকটে থাকা বিএনপি কারও আচরণ আর দর্শনে গণতন্ত্র বাঁচিয়ে রাখার কোনো চেষ্টা নেই। জনগণকে নিয়ে ভাবার বদলে ক্ষমতার সিঁড়ি ডিঙ্গাতে সব পক্ষ শুধু ‘জনগণ’ জপমালা করেন। আর সব শেষে জনগণের বুকে পা রেখে মসনদে চড়ে বসেন। কিন্তু গণতান্ত্রিক চেতনা বিচ্ছিন্ন রাজনীতির এসব বিধায়করা দূরদৃষ্টি দিয়ে দেখতে চান না গণশক্তি একটি শাশ্বত শক্তি। শেষ পর্যন্ত টিকতে হলে গণশক্তিকে পরোয়া করেই বা শ্রদ্ধা দেখিয়েই টিকতে হবে।
সারা পৃথিবী খুঁজতে হবে না, বাংলাদেশের অতীতে চোখ রাখলেই জানা যাবে, যুগ যুগ ধরে এ মাটির সফল শাসকরা গণশক্তির ওপরই আস্থা রেখেছেন বেশি। খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দে বাংলার উত্তরাংশ দখল করে তা ভারতীয় মৌর্য সাম্রাজ্যের অংশ করেছিলেন সম্রাট অশোক। এ সময়ের রাজশক্তির দৃষ্টি ছিল জনকল্যাণের দিকে। মৌর্যদের পর ভারতীয় গুপ্ত সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে বাংলা। এ পর্বের শাসকরাও সুশাসন বজায় রাখেন। ফলে কোনো জনঅসন্তোষ তৈরি হয়নি। কিন্তু গুপ্ত শাসনের অবসান হলে গণশক্তির ওপর শ্রদ্ধা দেখাতে পারেননি স্থানীয় রাজারা। প্রতিক্রিয়ায় একশ’ বছরের জন্য অরাজকতায় ডুবে যায় বাংলা। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বাংলার মানুষ গণতান্ত্রিক বোধকে জাগিয়ে তুলেছিল। তারা সম্মিলিতভাবে নির্বাচিত করে গোপালকে। তিনি শক্তিশালী পাল বংশের পত্তন করলেন। আট শতক থেকে পরবর্তী চারশ’ বছর সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বৌদ্ধ পাল রাজারা। কিন্তু পালদের হাত থেকে রাষ্ট্রক্ষমতা কেড়ে নেয়া সেন রাজারা গণশক্তিকে পরোয়া করেননি। দাক্ষিণাত্য থেকে এসে অন্যায়ভাবে দখল করেছিলেন বাংলার রাজদণ্ড। নিজেদের গণরোষ থেকে বাঁচাতে বর্ণপ্রথা চাপিয়ে দিয়ে বাংলার মানুষকে শ্রেণীবিভক্ত করে দেন। এ দেশের সংগ্রামী মানুষকে শূদ্র অভিধায় কোণঠাসা করে নির্যাতন করতে থাকেন। তবে এর ফল খুব ভালো হয়নি। নির্যাতিত মানুষের নীরব সমর্থন পেয়ে তেরো শতকের শুরুতে বহিরাগত তুর্কি যোদ্ধারা দখল করে বাংলার সিংহাসন।
আচরণে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধারণ করেছিলেন এ মুসলিম সুলতানরা। মধ্যযুগের প্রায় ছয়শ’ বছর মুসলিম সুলতান আর মোগল সুবেদাররা অসাম্প্রদায়িক গণমুখী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন। মধ্যযুগের হিন্দু কবিরা তাদের গ্রন্থে মুসলমান শাসকদের প্রশংসা করেছিলেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে, বিশেষ করে প্রশাসনিক কৌশল হিসেবে হলেও ইংরেজ শাসকরাও গণশক্তিকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। ১৭৫৭ সাল থেকে বাংলায় ঔপনিবেশিক শাসনের যাত্রা শুরু হলেও শাসকরা দাফতরিক ভাষা ইংরেজি করেনি। বুঝেছিল, নানা ভাষাভাষীর ভারতে ভাষায় হাত দিলে দ্বন্দ্ব শুরু হতে পারে। তাই প্রায় ছয়শ’ বছর ধরে চলা রাজভাষা ফার্সিকেই বহাল রাখে তারা। অনেক পরে ক্ষেত্র প্রস্তুত হলে ১৮৩৫ সালে সবার সম্মতিতে ইংরেজিকে করে দাফতরিক ভাষা। পাকিস্তানি শাসকরা গণশক্তিকে মূল্য দেয়নি। এর পরিণতি তো বারবার আমরা প্রত্যক্ষ করেছি।
দুর্ভাগ্য, নিজ ঘরে এতসব উদাহরণ থাকার পরও আমাদের রাজনীতিকরা গণশক্তিকে তাচ্ছিল্য আর অপমান করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। বারবার হোঁচট খাচ্ছেন, তবুও হুঁশ হচ্ছে না। এর কারণ আমাদের রাজনীতির আদর্শ জনগণের কল্যাণ চিন্তা নয়। জনগণের নাম ব্যবহার করে প্রতারকের মতো সুবিধার ফসল ঘরে তোলাই হচ্ছে এ ধারার রাজনীতিকদের মোক্ষ। সীমাবদ্ধ দৃষ্টি বলেই সব পক্ষের উদ্দেশ্য ক্ষমতায় যাওয়া এবং সব চর্ব, চোষ্য, লেহ্য আকণ্ঠ হজম করা। তারপর গণআদালতে ফাঁসি হলেও কিছু যায় আসে না। কিছুকাল ঘাপটি মেরে থাকব। আবার সুবিধামতো ‘জনগণ’ ‘জনগণ’ জিকির তুলে মসনদের দিকে ছুটব।
এ কারণেই বিএনপি জোটের ডাকা অবরোধ এবং নানা স্থানে অবরোধের স্যালাদ হিসেবে হরতাল যোগ করে সপ্তাহকাল ধরে জনজীবন বিপন্ন করে তুলছে বিএনপি। সরকারি দমন নীতির কারণে বিএনপির প্রতি সাধারণ মানুষের সহানুভূতি থাকতে পারত; কিন্তু জনগণের স্বাভাবিক জীবন বিপন্ন করা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি উল্টো বিএনপিকে জনঅসন্তোষের মুখোমুখি করছে। অথচ এ সত্যকে একেবারেই আমলে নিতে চাচ্ছেন না বিএনপির নেতা-নেত্রীরা। বাস্তব ক্ষেত্রে স্পষ্ট হয়েছে, গণমানুষ সম্পৃক্ত হয়নি এ কর্মসূচিতে। তাই সব যানবাহনই চলছে। মানুষ চলাচল করছে। তারপরও কি জনজীবন স্বাভাবিক বলব? চোরাগোপ্তা হামলায় জীবন যাচ্ছে স্কুলছাত্র, শিক্ষক, পরিবহন কর্মচারী থেকে শুরু করে নানা পেশার মানুষের। বোমায় ঝলসে যাওয়া মানুষ মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। যাদের ক্ষমতায় যাওয়া-আসার সঙ্গে কোনো ভূমিকা নেই। সব সচল আছে, তবু ক’জন অভিভাবক সাহস পাচ্ছেন তাদের সন্তানকে স্কুল-কলেজে পাঠাতে? ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের বিয়েতে যাওয়া কর্তব্য বিবেচনা করার পরও সাহস পাচ্ছি না গাড়ি নিয়ে বেরোতে। জরুরি হলেও অনেকে ঢাকার হাসপাতালে আনতে পারছেন না দূর-দূরান্তে থাকা জটিল রোগীকে। কৃষক তার ফসল নিয়ে বসে আছেন। দেশের হাজার কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে প্রতিদিন। রাজনীতিকরা ছেঁদো কথা যতই বলুন না কেন- মানুষের কাছে স্পষ্ট, মানুষ জানে, বিএনপি এ অরাজকতা চাপিয়ে দিচ্ছে দলকে নিঃশেষিত হয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে আর ক্ষমতার মসনদে বসতে। এসবের বাস্তবায়ন করতে বলির পাঠা বানাচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এসব হিংস্র মানসিকতার নেতা-নেত্রীদের জানা উচিত গণসমর্থনহীন সহিংসতার পথে কখনও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় না।
সরকারপক্ষও কি যথাযথ কর্তব্য পালন করছে? তাদেরও কি লক্ষ্য নয় বিএনপিকে নিঃশেষ করা এবং নিজেদের ক্ষমতার ভিত পাকাপোক্ত করা? তাই জনগণকে রক্ষার পদক্ষেপ দেখা যায় না। দিনের পর দিন অরাজকতা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিপক্ষ; কিন্তু আলোচনা করে ফয়সালা করার কোনো উদ্যোগ নেই। আর যদি শক্তি দিয়ে দমনও করতে চায়, সে লক্ষ্যও পূরণ হচ্ছে না। মনে হয় সাধারণ মানুষ এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, এ অসুস্থ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে আলোচনা বা শক্তি প্রয়োগ সব কিছুকেই মানুষ সমর্থন দেবে। কারণ জনগণের কথা ভেবে কোনো পক্ষই তো মধ্যপন্থা খুঁজতে চাইছে না। জনগণ চায় মুক্তি।
বিএনপি নেতারা কি একবারও ভাবছেন জনগণের সমর্থন নেই তবুও কেন অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন? রাজনীতি মানুষকে কতটা অমানবিক করে তোলে তা দেখে বিস্মিত হতে হয়। ভেবেছিলাম মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের জাল স্বাক্ষর আর বিজেপি নেতার নাম ভাঙিয়ে মিথ্যা ফোনালাপের কথা ফাঁস হওয়ার পর খালেদা জিয়াসহ সাধারণ নেতারা লজ্জা না পেলেও সিনিয়র ও রাজনীতিতে বিদগ্ধ নেতারা লজ্জায় অধবদন হবেন। অথচ আশ্চর্য, দুদিন আগে টিভিতে দেখলাম ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের মতো সিনিয়র শিক্ষিত বিএনপি নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে আসার পর সাংবাদিকদের কাছে কলের পুতুলের মতো বলে যাচ্ছেন, নেত্রী ‘শান্তিপূর্ণ’ অবরোধ চালিয়ে যেতে বলেছেন। পাশাপাশি অব্যাহত অশান্তির ছবি টিভির পর্দা গুলজার করছিল। আগুন জ্বলছিল বাসে, পণ্য বোঝাই ট্রাকে। সাভারে ব্যানার টানিয়ে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের মেয়েরা চলন্ত বাসের ওপর একের পর এক ঢিল ছুড়ে যাচ্ছে। জনগণ আতংক নিয়ে জীবন-জীবিকার পথে ছুটছে। অবরোধ আমলে না নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে ড্রাইভার আর গাড়ির যাত্রী জনগণ। এরপর সাধারণ মানুষের মনে ভীতি ছড়িয়ে তাদের জীবন বিপন্ন করে এবং অর্থনীতি ধ্বংস করে আমাদের রাজনীতিকরা ‘জনগণকে সঙ্গে নিয়ে’ অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন! এতটাই নির্লজ্জ রাজনীতি এখন আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। বিরোধী দল কতটা উন্মত্ততা দেখাচ্ছে, সরকার কতটা দমন নীতি চালু রাখছে, তা সাধারণ মানুষের আর দেখার সময় নেই। নিজেদের রক্ষা নিজেদেরই করতে হবে। উনিশ শতকের ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ আরনল্ড টয়নবি সভ্যতার অগ্রযাত্রাকে দেখিয়েছিলেন একটি সূত্রের মধ্য দিয়ে। আর তার সূত্রটি হচ্ছে ‘থিওরি অব চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড রেসপন্স’। অর্থাৎ সৃষ্টির আদি থেকে মানুষসহ সব প্রাণিকুলকে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। যে সফলভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছে সে টিকে আছে আর যে পারেনি সে হারিয়ে গেছে। যেমন ডায়নোসর ও ম্যামথের মতো প্রাণী বিরুদ্ধ পরিবেশ মোকাবিলা করতে না পেরে হারিয়ে গেছে। আবার লাখ লাখ বছর ধরে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তেলাপোকা ঠিকই টিকে আছে। আমরা মনে করি, ক্ষমতার মদে মত্ত নষ্ট রাজনীতি আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। টিকে থাকতে হলে আমাদেরই ফুঁসে উঠতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, গণশক্তির ফুঁসে ওঠার সময় এসে গেছে। অনাচারকারীদের প্রতিহত করতে মানুষকেই মাঠে নামতে হবে। মানুষের শক্তির কাছে পেট্রলবোমা ও ককটেলের শক্তি অতি তুচ্ছ। সত্যিই যদি মানুষ পথে নেমে আসে, তবে এর শেষ পরিণতি চলমান রাজনীতির জন্য খুব ভালো হবে না। আমরা আশা করব, একটিবার অন্তত দূরদৃষ্টি দিয়ে এ সত্য উভয় পক্ষের মহান রাজনীতিকরা অনুধাবন করবেন।
ড. এ কে এম শাহনাওয়াজ : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
বঙ্গবন্ধু-উত্তর কাল থেকে আমাদের রাজনীতিকরা চক্ষুরোগে আক্রান্ত। তারা দূরদৃষ্টি দিয়ে কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করেন না। দৃষ্টিটা থাকে সিংহাসন পর্যন্ত। পরবর্তী প্রতিক্রিয়া দেশ বা জাতির জন্য কী বার্তা বয়ে আনবে সে বিষয়ে ভাবার দায় কারও নেই। ক্ষমতার মদে এতটাই মত্ত থাকেন যে, নিজ দলের ভবিষ্যৎ শক্তি বা সম্ভ্রমের বিষয়েও কোনো খেয়াল থাকে না তাদের। রাজনীতির নায়কদের অভীষ্ট লক্ষ্য হয়ে পড়েছে ক্ষমতাশালী, অর্থশালী আর প্রতিপত্তিশালী হওয়া। এ কারণে চলমান রাজনৈতিক দর্শন দেশ ও জাতির জন্য স্বস্তি নিয়ে আসতে পারছে না। এদিক থেকে জিয়াউর রহমান কিছুটা নিজ বিবেচনায় দূরদৃষ্টিতে তাকাতে পেরেছিলেন। ক্ষমতার শক্তিতে নিজের ভবিষ্যৎকে দৃঢ় অবস্থানে দাঁড় করাতে নিজ বলয় তৈরি করে নিয়েছিলেন। তিনি ভারত ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের উল্টো শিবির থেকে নিজ অবস্থান তৈরি করার পরিকল্পনা নেন। ফলে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শিবিরের সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধেন। পাকিস্তান, সৌদি আরব আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বলয়ে নিজেকে যুক্ত করে বিএনপি নামের দলটিকে প্রতিপালন করতে থাকেন। ফলে মুখে যাই বলা হোক, বিএনপি দলটির পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জিয়াউর রহমান সে সময়ের আওয়ামী লীগের দুর্বলতা আর দুর্দশাকে পুঁজি করে নতুন দলটিকে শক্ত অবস্থান দিতে পেরেছিলেন। নতুন প্রজন্মের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের তরুণদের মন থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পেরেছিলেন ফিকে করে দিতে। বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ এসব তরুণের মনে বিতর্কিত চরিত্র ও দল হিসেবে উপস্থাপিত হতে লাগল। সূচনালগ্নে ছাত্রদল-যুবদল করে আসা বন্ধুরা এখনও সে ঘোর কাটাতে পারেননি। এটিই ছিল জিয়াউর রহমানের সাফল্য ও দূরদৃষ্টির প্রভাব। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, এ যুগের আওয়ামী লীগ আর জন্ম সংকটে থাকা বিএনপি কারও আচরণ আর দর্শনে গণতন্ত্র বাঁচিয়ে রাখার কোনো চেষ্টা নেই। জনগণকে নিয়ে ভাবার বদলে ক্ষমতার সিঁড়ি ডিঙ্গাতে সব পক্ষ শুধু ‘জনগণ’ জপমালা করেন। আর সব শেষে জনগণের বুকে পা রেখে মসনদে চড়ে বসেন। কিন্তু গণতান্ত্রিক চেতনা বিচ্ছিন্ন রাজনীতির এসব বিধায়করা দূরদৃষ্টি দিয়ে দেখতে চান না গণশক্তি একটি শাশ্বত শক্তি। শেষ পর্যন্ত টিকতে হলে গণশক্তিকে পরোয়া করেই বা শ্রদ্ধা দেখিয়েই টিকতে হবে।
সারা পৃথিবী খুঁজতে হবে না, বাংলাদেশের অতীতে চোখ রাখলেই জানা যাবে, যুগ যুগ ধরে এ মাটির সফল শাসকরা গণশক্তির ওপরই আস্থা রেখেছেন বেশি। খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দে বাংলার উত্তরাংশ দখল করে তা ভারতীয় মৌর্য সাম্রাজ্যের অংশ করেছিলেন সম্রাট অশোক। এ সময়ের রাজশক্তির দৃষ্টি ছিল জনকল্যাণের দিকে। মৌর্যদের পর ভারতীয় গুপ্ত সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে বাংলা। এ পর্বের শাসকরাও সুশাসন বজায় রাখেন। ফলে কোনো জনঅসন্তোষ তৈরি হয়নি। কিন্তু গুপ্ত শাসনের অবসান হলে গণশক্তির ওপর শ্রদ্ধা দেখাতে পারেননি স্থানীয় রাজারা। প্রতিক্রিয়ায় একশ’ বছরের জন্য অরাজকতায় ডুবে যায় বাংলা। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বাংলার মানুষ গণতান্ত্রিক বোধকে জাগিয়ে তুলেছিল। তারা সম্মিলিতভাবে নির্বাচিত করে গোপালকে। তিনি শক্তিশালী পাল বংশের পত্তন করলেন। আট শতক থেকে পরবর্তী চারশ’ বছর সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বৌদ্ধ পাল রাজারা। কিন্তু পালদের হাত থেকে রাষ্ট্রক্ষমতা কেড়ে নেয়া সেন রাজারা গণশক্তিকে পরোয়া করেননি। দাক্ষিণাত্য থেকে এসে অন্যায়ভাবে দখল করেছিলেন বাংলার রাজদণ্ড। নিজেদের গণরোষ থেকে বাঁচাতে বর্ণপ্রথা চাপিয়ে দিয়ে বাংলার মানুষকে শ্রেণীবিভক্ত করে দেন। এ দেশের সংগ্রামী মানুষকে শূদ্র অভিধায় কোণঠাসা করে নির্যাতন করতে থাকেন। তবে এর ফল খুব ভালো হয়নি। নির্যাতিত মানুষের নীরব সমর্থন পেয়ে তেরো শতকের শুরুতে বহিরাগত তুর্কি যোদ্ধারা দখল করে বাংলার সিংহাসন।
আচরণে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধারণ করেছিলেন এ মুসলিম সুলতানরা। মধ্যযুগের প্রায় ছয়শ’ বছর মুসলিম সুলতান আর মোগল সুবেদাররা অসাম্প্রদায়িক গণমুখী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন। মধ্যযুগের হিন্দু কবিরা তাদের গ্রন্থে মুসলমান শাসকদের প্রশংসা করেছিলেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে, বিশেষ করে প্রশাসনিক কৌশল হিসেবে হলেও ইংরেজ শাসকরাও গণশক্তিকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। ১৭৫৭ সাল থেকে বাংলায় ঔপনিবেশিক শাসনের যাত্রা শুরু হলেও শাসকরা দাফতরিক ভাষা ইংরেজি করেনি। বুঝেছিল, নানা ভাষাভাষীর ভারতে ভাষায় হাত দিলে দ্বন্দ্ব শুরু হতে পারে। তাই প্রায় ছয়শ’ বছর ধরে চলা রাজভাষা ফার্সিকেই বহাল রাখে তারা। অনেক পরে ক্ষেত্র প্রস্তুত হলে ১৮৩৫ সালে সবার সম্মতিতে ইংরেজিকে করে দাফতরিক ভাষা। পাকিস্তানি শাসকরা গণশক্তিকে মূল্য দেয়নি। এর পরিণতি তো বারবার আমরা প্রত্যক্ষ করেছি।
দুর্ভাগ্য, নিজ ঘরে এতসব উদাহরণ থাকার পরও আমাদের রাজনীতিকরা গণশক্তিকে তাচ্ছিল্য আর অপমান করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। বারবার হোঁচট খাচ্ছেন, তবুও হুঁশ হচ্ছে না। এর কারণ আমাদের রাজনীতির আদর্শ জনগণের কল্যাণ চিন্তা নয়। জনগণের নাম ব্যবহার করে প্রতারকের মতো সুবিধার ফসল ঘরে তোলাই হচ্ছে এ ধারার রাজনীতিকদের মোক্ষ। সীমাবদ্ধ দৃষ্টি বলেই সব পক্ষের উদ্দেশ্য ক্ষমতায় যাওয়া এবং সব চর্ব, চোষ্য, লেহ্য আকণ্ঠ হজম করা। তারপর গণআদালতে ফাঁসি হলেও কিছু যায় আসে না। কিছুকাল ঘাপটি মেরে থাকব। আবার সুবিধামতো ‘জনগণ’ ‘জনগণ’ জিকির তুলে মসনদের দিকে ছুটব।
এ কারণেই বিএনপি জোটের ডাকা অবরোধ এবং নানা স্থানে অবরোধের স্যালাদ হিসেবে হরতাল যোগ করে সপ্তাহকাল ধরে জনজীবন বিপন্ন করে তুলছে বিএনপি। সরকারি দমন নীতির কারণে বিএনপির প্রতি সাধারণ মানুষের সহানুভূতি থাকতে পারত; কিন্তু জনগণের স্বাভাবিক জীবন বিপন্ন করা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি উল্টো বিএনপিকে জনঅসন্তোষের মুখোমুখি করছে। অথচ এ সত্যকে একেবারেই আমলে নিতে চাচ্ছেন না বিএনপির নেতা-নেত্রীরা। বাস্তব ক্ষেত্রে স্পষ্ট হয়েছে, গণমানুষ সম্পৃক্ত হয়নি এ কর্মসূচিতে। তাই সব যানবাহনই চলছে। মানুষ চলাচল করছে। তারপরও কি জনজীবন স্বাভাবিক বলব? চোরাগোপ্তা হামলায় জীবন যাচ্ছে স্কুলছাত্র, শিক্ষক, পরিবহন কর্মচারী থেকে শুরু করে নানা পেশার মানুষের। বোমায় ঝলসে যাওয়া মানুষ মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। যাদের ক্ষমতায় যাওয়া-আসার সঙ্গে কোনো ভূমিকা নেই। সব সচল আছে, তবু ক’জন অভিভাবক সাহস পাচ্ছেন তাদের সন্তানকে স্কুল-কলেজে পাঠাতে? ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের বিয়েতে যাওয়া কর্তব্য বিবেচনা করার পরও সাহস পাচ্ছি না গাড়ি নিয়ে বেরোতে। জরুরি হলেও অনেকে ঢাকার হাসপাতালে আনতে পারছেন না দূর-দূরান্তে থাকা জটিল রোগীকে। কৃষক তার ফসল নিয়ে বসে আছেন। দেশের হাজার কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে প্রতিদিন। রাজনীতিকরা ছেঁদো কথা যতই বলুন না কেন- মানুষের কাছে স্পষ্ট, মানুষ জানে, বিএনপি এ অরাজকতা চাপিয়ে দিচ্ছে দলকে নিঃশেষিত হয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে আর ক্ষমতার মসনদে বসতে। এসবের বাস্তবায়ন করতে বলির পাঠা বানাচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এসব হিংস্র মানসিকতার নেতা-নেত্রীদের জানা উচিত গণসমর্থনহীন সহিংসতার পথে কখনও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় না।
সরকারপক্ষও কি যথাযথ কর্তব্য পালন করছে? তাদেরও কি লক্ষ্য নয় বিএনপিকে নিঃশেষ করা এবং নিজেদের ক্ষমতার ভিত পাকাপোক্ত করা? তাই জনগণকে রক্ষার পদক্ষেপ দেখা যায় না। দিনের পর দিন অরাজকতা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিপক্ষ; কিন্তু আলোচনা করে ফয়সালা করার কোনো উদ্যোগ নেই। আর যদি শক্তি দিয়ে দমনও করতে চায়, সে লক্ষ্যও পূরণ হচ্ছে না। মনে হয় সাধারণ মানুষ এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, এ অসুস্থ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে আলোচনা বা শক্তি প্রয়োগ সব কিছুকেই মানুষ সমর্থন দেবে। কারণ জনগণের কথা ভেবে কোনো পক্ষই তো মধ্যপন্থা খুঁজতে চাইছে না। জনগণ চায় মুক্তি।
বিএনপি নেতারা কি একবারও ভাবছেন জনগণের সমর্থন নেই তবুও কেন অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন? রাজনীতি মানুষকে কতটা অমানবিক করে তোলে তা দেখে বিস্মিত হতে হয়। ভেবেছিলাম মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের জাল স্বাক্ষর আর বিজেপি নেতার নাম ভাঙিয়ে মিথ্যা ফোনালাপের কথা ফাঁস হওয়ার পর খালেদা জিয়াসহ সাধারণ নেতারা লজ্জা না পেলেও সিনিয়র ও রাজনীতিতে বিদগ্ধ নেতারা লজ্জায় অধবদন হবেন। অথচ আশ্চর্য, দুদিন আগে টিভিতে দেখলাম ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের মতো সিনিয়র শিক্ষিত বিএনপি নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে আসার পর সাংবাদিকদের কাছে কলের পুতুলের মতো বলে যাচ্ছেন, নেত্রী ‘শান্তিপূর্ণ’ অবরোধ চালিয়ে যেতে বলেছেন। পাশাপাশি অব্যাহত অশান্তির ছবি টিভির পর্দা গুলজার করছিল। আগুন জ্বলছিল বাসে, পণ্য বোঝাই ট্রাকে। সাভারে ব্যানার টানিয়ে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের মেয়েরা চলন্ত বাসের ওপর একের পর এক ঢিল ছুড়ে যাচ্ছে। জনগণ আতংক নিয়ে জীবন-জীবিকার পথে ছুটছে। অবরোধ আমলে না নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে ড্রাইভার আর গাড়ির যাত্রী জনগণ। এরপর সাধারণ মানুষের মনে ভীতি ছড়িয়ে তাদের জীবন বিপন্ন করে এবং অর্থনীতি ধ্বংস করে আমাদের রাজনীতিকরা ‘জনগণকে সঙ্গে নিয়ে’ অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন! এতটাই নির্লজ্জ রাজনীতি এখন আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। বিরোধী দল কতটা উন্মত্ততা দেখাচ্ছে, সরকার কতটা দমন নীতি চালু রাখছে, তা সাধারণ মানুষের আর দেখার সময় নেই। নিজেদের রক্ষা নিজেদেরই করতে হবে। উনিশ শতকের ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ আরনল্ড টয়নবি সভ্যতার অগ্রযাত্রাকে দেখিয়েছিলেন একটি সূত্রের মধ্য দিয়ে। আর তার সূত্রটি হচ্ছে ‘থিওরি অব চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড রেসপন্স’। অর্থাৎ সৃষ্টির আদি থেকে মানুষসহ সব প্রাণিকুলকে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। যে সফলভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছে সে টিকে আছে আর যে পারেনি সে হারিয়ে গেছে। যেমন ডায়নোসর ও ম্যামথের মতো প্রাণী বিরুদ্ধ পরিবেশ মোকাবিলা করতে না পেরে হারিয়ে গেছে। আবার লাখ লাখ বছর ধরে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তেলাপোকা ঠিকই টিকে আছে। আমরা মনে করি, ক্ষমতার মদে মত্ত নষ্ট রাজনীতি আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। টিকে থাকতে হলে আমাদেরই ফুঁসে উঠতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, গণশক্তির ফুঁসে ওঠার সময় এসে গেছে। অনাচারকারীদের প্রতিহত করতে মানুষকেই মাঠে নামতে হবে। মানুষের শক্তির কাছে পেট্রলবোমা ও ককটেলের শক্তি অতি তুচ্ছ। সত্যিই যদি মানুষ পথে নেমে আসে, তবে এর শেষ পরিণতি চলমান রাজনীতির জন্য খুব ভালো হবে না। আমরা আশা করব, একটিবার অন্তত দূরদৃষ্টি দিয়ে এ সত্য উভয় পক্ষের মহান রাজনীতিকরা অনুধাবন করবেন।
ড. এ কে এম শাহনাওয়াজ : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
No comments