মতপার্থক্য থাকলেও সম্পর্ক অতীতের চেয়ে বিস্তৃত -ড্যান মজিনা
ঢাকাস্থ
মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা মনে করেন, কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও
বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বর্তমান সম্পর্ক অতীতের যে কোন সময়ের
চেয়ে বিস্তৃত, গভীর ও শক্তিশালী। কানাডার সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিষয়ে
মতভিন্নতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যে কোন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ঐকমত্য বা
ভিন্নমত খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ
আলীর সঙ্গে বিদায়ী বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি এ সব কথা বলেন।
ওই বৈঠকে ঢাকা-ওয়াশিংটন বিদ্যমান সম্পর্কের মতপার্থক্যগুলো চিহ্নিত করার
অনুরোধ জানিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন ড্যান মজিনা। ঢাকায় তিন বছরের বেশি সময়
দায়িত্বপালনকারী আমেরিকান ওই কূটনীতিক আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝিতে বাংলাদেশ
মিশন সম্পন্ন করে নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন। গত ১৫ই ডিসেম্বর প্রেসিডেন্টে
আবদুল হামিদের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিয়েছেন তিনি। গতকাল সংসদের
বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ ও বিরোধী ২০দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা সাবেক
প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিদায়ী বৈঠক সেরেছেন। গতকাল
রাষ্ট্রদূত হিসেবে শেষ বারের মতো পররাষ্ট্র দপ্তরে যান তিনি। বিকাল সাড়ে
তিনটায় আমেরিকান পতাকা উড়িয়ে তার গাড়িটি পররাষ্ট্র ভবনে প্রবেশ করে। গাড়ি
থেকে নামার পর এক নারী কর্মকর্তা তাকে অভ্যর্থনা জানান। পৌঁছে দেন মন্ত্রীর
দপ্তর সংলগ্ন সভাকক্ষে। সেখানে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
সঙ্গে কথা বলেন বিদায়ী মার্কিন দূত। বাইরে তখন অর্ধশতাধিক মিডিয়াকর্মীর
জটলা। ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আলোচনা চলছে। বৈঠক সূত্রের খবর, নানা আলাপে বেশ
আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মজিনা। বৈঠক শেষ হওয়ার পর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে
গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন।
শুরুতেই বিদায়ের প্রসঙ্গ, খানিকটা আপ্লুতও: সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের শুরুতেই বিদায়ের প্রসঙ্গ তোলেন ড্যান মজিনা। এ সময় তার কণ্ঠটা বেশ ভারি লাগছিল। বলেন, আপনারা অনেকেই জানেন, আর ক’দিন পর আমি ফিরে যাচ্ছি। যাওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম না। কিন্তু সময় হয়েছে অবসরের, তাই বিদায় নিতে হচ্ছে। আজ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী বৈঠক করেছি। আরেক দফা আমরা আমাদের অংশীদারী সম্পর্কের নানা বিষয় রিভিউ করেছি। আমাদের সম্পর্ক এখন যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক বেশি বিস্তৃত, গভীর ও শক্তিশালী। সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে পারার জন্য আমি গর্বিত। গত অক্টোবরে ওয়াশিংটনে আমাদের অংশীদারী সংলাপের তৃতীয় পর্ব সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে অত্যন্ত গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক এখন একটি পরিণত পর্যায়ে রয়েছে। সেখানে অনেক বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে, কিছু বিষয়ে মতপার্থক্যও আছে। কানাডার সঙ্গেও আমাদের অনেক বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। এটা স্বাভাবিক বিষয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আমরা এসব মতপার্থক্য চিহ্নিত করার ওপর জোর দিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের যত ফ্রন্ট রয়েছে তার সবগুলোতে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ রয়েছে। স্বাস্থ্য, কৃষি, বৈশ্বিক জলবাযু পরিবর্তন এবং সমুদ্রে নিরাপত্তার মতো বিষয় এর মধ্যে রয়েছে। সব খাতেই দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে চলেছে। কিউবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে উদ্যোগ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিয়েছেন সে বিষয়ে আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেছি। আমরা রোহিঙ্গাদের বিষয়েও কথা বলেছি। মিয়ানমারের এসব নাগরিকের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও অবগত। এ সময় রোহিঙ্গা ইস্যুতে মার্কিন অবস্থানের বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণ করা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ড্যান মজিনা। বলেন, সরকারের সহযোগিতা না পেলে এটি সম্ভব হতো না। আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে মার্কিন নাগরিকদের ধারণা দিতে দায়িত্ব পালনকালে প্রতি বছরে চার সপ্তাহ যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়েছি। কারণ, তারা বাংলাদেশের রানা প্লাজার কথা জানে, জানে এদেশের দারিদ্র্যের কথাও। কিন্তু, সেটাই আসল বাংলাদেশ নয়। এই তিন বছরে আমি বাংলাদেশের সেসব না বলা কথাগুলোই বারবার গল্প করেছি মার্কিনিদের কাছে। আলাপকালে বারবার ড্যান মজিনা তার বিদায়ের প্রসঙ্গ টানেন। বলেন, আমি খুবই ভারাক্রান্ত মনে বাংলাদেশ ছাড়ছি। আমার বাবা কৃষক ছিলেন, এখানে আমি অনেক কৃষককে পেয়েছি, যাদের মধ্য আমি বাবার ছায়া দেখেছি। বাংলাদেশের কৃষকদের সংস্পর্শে গিয়ে আমি আমার বাবার স্পর্শ পেয়েছি। বিশেষ করে পাবনার তিন কৃষককে আমি দেখেছি। শিডিউল মিলাতে পারছিলাম না। আমার সহকর্র্মীদের বাধা ছিল তার পরও আমি গত সপ্তাহে পাবনায় গেছি, সেই তিন কৃষকের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে। আলাপচারিতায় ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ চলে আসার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে বিদায় নেন মজিনা। তার জন্য প্রস্তুত ছিল লিফট, কিন্তু তিনি সিঁড়ি ভাঙেন। তার সঙ্গে থাকা দূতাবাসের কর্মকর্তা ও পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা তাকে তার সঙ্গে পায়ে হেঁটেই গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেন।
শুরুতেই বিদায়ের প্রসঙ্গ, খানিকটা আপ্লুতও: সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের শুরুতেই বিদায়ের প্রসঙ্গ তোলেন ড্যান মজিনা। এ সময় তার কণ্ঠটা বেশ ভারি লাগছিল। বলেন, আপনারা অনেকেই জানেন, আর ক’দিন পর আমি ফিরে যাচ্ছি। যাওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম না। কিন্তু সময় হয়েছে অবসরের, তাই বিদায় নিতে হচ্ছে। আজ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী বৈঠক করেছি। আরেক দফা আমরা আমাদের অংশীদারী সম্পর্কের নানা বিষয় রিভিউ করেছি। আমাদের সম্পর্ক এখন যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক বেশি বিস্তৃত, গভীর ও শক্তিশালী। সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে পারার জন্য আমি গর্বিত। গত অক্টোবরে ওয়াশিংটনে আমাদের অংশীদারী সংলাপের তৃতীয় পর্ব সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে অত্যন্ত গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক এখন একটি পরিণত পর্যায়ে রয়েছে। সেখানে অনেক বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে, কিছু বিষয়ে মতপার্থক্যও আছে। কানাডার সঙ্গেও আমাদের অনেক বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। এটা স্বাভাবিক বিষয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আমরা এসব মতপার্থক্য চিহ্নিত করার ওপর জোর দিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের যত ফ্রন্ট রয়েছে তার সবগুলোতে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ রয়েছে। স্বাস্থ্য, কৃষি, বৈশ্বিক জলবাযু পরিবর্তন এবং সমুদ্রে নিরাপত্তার মতো বিষয় এর মধ্যে রয়েছে। সব খাতেই দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে চলেছে। কিউবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে উদ্যোগ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিয়েছেন সে বিষয়ে আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেছি। আমরা রোহিঙ্গাদের বিষয়েও কথা বলেছি। মিয়ানমারের এসব নাগরিকের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও অবগত। এ সময় রোহিঙ্গা ইস্যুতে মার্কিন অবস্থানের বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণ করা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ড্যান মজিনা। বলেন, সরকারের সহযোগিতা না পেলে এটি সম্ভব হতো না। আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে মার্কিন নাগরিকদের ধারণা দিতে দায়িত্ব পালনকালে প্রতি বছরে চার সপ্তাহ যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়েছি। কারণ, তারা বাংলাদেশের রানা প্লাজার কথা জানে, জানে এদেশের দারিদ্র্যের কথাও। কিন্তু, সেটাই আসল বাংলাদেশ নয়। এই তিন বছরে আমি বাংলাদেশের সেসব না বলা কথাগুলোই বারবার গল্প করেছি মার্কিনিদের কাছে। আলাপকালে বারবার ড্যান মজিনা তার বিদায়ের প্রসঙ্গ টানেন। বলেন, আমি খুবই ভারাক্রান্ত মনে বাংলাদেশ ছাড়ছি। আমার বাবা কৃষক ছিলেন, এখানে আমি অনেক কৃষককে পেয়েছি, যাদের মধ্য আমি বাবার ছায়া দেখেছি। বাংলাদেশের কৃষকদের সংস্পর্শে গিয়ে আমি আমার বাবার স্পর্শ পেয়েছি। বিশেষ করে পাবনার তিন কৃষককে আমি দেখেছি। শিডিউল মিলাতে পারছিলাম না। আমার সহকর্র্মীদের বাধা ছিল তার পরও আমি গত সপ্তাহে পাবনায় গেছি, সেই তিন কৃষকের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে। আলাপচারিতায় ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ চলে আসার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে বিদায় নেন মজিনা। তার জন্য প্রস্তুত ছিল লিফট, কিন্তু তিনি সিঁড়ি ভাঙেন। তার সঙ্গে থাকা দূতাবাসের কর্মকর্তা ও পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা তাকে তার সঙ্গে পায়ে হেঁটেই গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেন।
No comments