যুক্তরাষ্ট্র-কিউবা সম্পর্কের শত বর্ষের টানাপোড়েন
শতাব্দীকালের
টানাপোড়েন ভুলে বন্ধুত্বের নতুন অক্ষে প্রবেশ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবা।
অর্ধশতাব্দী পর প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক।
কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের এই নতুন ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের
স্নায়ুযুদ্ধকালের শত্রু সমাজতান্ত্রিক কিউবার সঙ্গে মিত্রতা বিশ্ব
ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। যুক্তরাষ্ট্র-কিউবার দ্বিপাক্ষিক
সম্পর্কের শতাধিক বছরের ইতিহাস এখানে তুলে ধরা হল
১৮৯৮
যুক্তরাষ্ট্র স্পেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। কিউবা তখন স্পানিশ উপনিবেশ। যুদ্ধে স্পেনের পরাজয়ের পর কিউবার দখল নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
১৯০২
কিউবা স্বাধীন হয়। কিন্তু শর্ত থাকে, যুক্তরাষ্ট্র তার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারবে। প্রেসিডেন্ট হন টমাস এস্ত্রাদা।
১৯০৬
জোসে মিগুয়েল গোমেজের নেতৃত্বে বিদ্রোহের জেরে এস্ত্রাদা পদত্যাগ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় কিউবা দখল করে নেয়। তিন বছর পর গোমেজ প্রেসিডেন্ট হন।
১৯১২
বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গদের বিক্ষোভ দমনে মার্কিন বাহিনী কিউবায় ফিরে আসে।
১৯৩৪
কিউবার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র তার হস্তক্ষেপের অধিকার উঠিয়ে নেয়।
১৯৫৩
যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত প্রেসিডেন্ট ফুলগেনিকো বাতিস্তার বিরুদ্ধে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থান করেন ফিদেল ক্যাস্ত্রো।
১৯৫৮
বাতিস্তার ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা উঠিয়ে নেয়।
১৯৫৯
নয় হাজার গেরিলা যোদ্ধা নিয়ে হাভানায় অপারেশন চালান ক্যাস্ত্রো। বাতিস্তা পালিয়ে পালিয়ে যান এবং ক্যাস্ত্রো প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণ করেন।
১৯৬০
ক্ষতিপূরণ ছাড়াই সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়য়করণ করেন ক্যাস্ত্রো। ওয়াশিংটন হাভানার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
১৯৬১
নির্বাসিত কিউবানরা যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় পিগস উপসাগরে অভিযান চালায়। ক্যাস্ত্রো কিউবাকে কমিউনিস্ট রাষ্ট্র ঘোষণা করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে জোট করেন।
১৯৬২
কিউবায় সোভিয়েত ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনে ক্যাস্ত্রো রাজি হলে সোভিয়েত-মার্কিন সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয় ও পারমাণবিক যুদ্ধের আশংকা তৈরি হয়।
১৯৬৩
দু’বছরে সিআইএ ক্যাস্ত্রোকে হত্যার চেষ্টা করে অন্তত পাঁচটি অভিযান চালায়।
১৯৭৭
পারস্পরিক স্বার্থরক্ষার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র-কিউবা সম্পর্কে সামান্য উন্নতি হয়।
১৯৮০
ক্যাস্ত্রো নির্বাসনের সুযোগ দিলে দেশটির ১ লাখ ২৫ হাজার নাগরিক কিউবা ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেয়।
১৯৯৬
মার্কিন কংগ্রেস কিউবার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে হেলমস বার্তন আইন পাস করে।
১৯৯৮
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত কিউবানদের স্বজনের কাছে অর্থ পাঠানোর নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আনে ওয়াশিংটন।
২০০০
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ কিউবার ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপ করেন।
২০০১
হারিকেন মিশেলে আঞাত হানার পর কিউবান সরকারের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্র খাদ্য সহায়তা পাঠায়। ৪০ বছরের মধ্যে এই প্রথম কিউবায় খাদ্য রফতানি করে যুক্তরাষ্ট্র।
২০০২
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার কিউবা সফর করেন। ক্যাস্ত্রো ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম কোনো মার্কিন নেতার সফর। এদিকে কিউবায় জৈব অস্ত্র বৃদ্ধির অভিযোগে দেশটিকে ‘শয়তানের অক্ষ’ তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র।
২০০৩
জর্জ ডব্লিউ বুশ কিউবার সমাজতান্ত্রিক শাসন উৎখাতের ঘোষণা দেন।
২০০৪
কিউবায় ডলার ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একমাত্র স্থানীয় মুদ্রা পেসোকে বাধ্যতামূলক করা হয়।
২০০৬
ফিদেল ক্যাস্ত্রো অসুস্থ হয়ে অস্ত্রোপচারের জন্য ভাই রাউল ক্যাস্ত্রোর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ প্রথম সরাসরি কিউবা রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের আহ্বান জানান। কয়েকমাস পর রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জিফ ফ্লেক ১০ সদস্যের প্রতিনিধি নিয়ে কিউবা সফর করেন, যা ১৯৫৯ সালের বিপ্লবের পর প্রথম।
২০০৮
ব্রাজিল সম্মেলনে রাউল ক্যাস্ত্রো কিউবার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান।
২০০৯
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কিউবার পারিবারিক ভ্রমণ ও রেমিটেন্সের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন।
২০১১
ইউএসএইড কর্মী মার্কিন নাগরিক অ্যালন গ্রসকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয় কিউবা। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে নতুন টানাপোড়েন শুরু হয়।
২০১২
গ্রস ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানে আসতে রাজি হয় কিউবা।
২০১৩
ওবামা কিউবার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ঘোষণা দেন।
জুন ২০১৩- নভেম্বর ২০১৪
যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবার মধ্যে সিরিজ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে পোপ ফ্রান্সিস ব্যক্তিগতভাবে ওবামা ও ক্যাস্ত্রোর কাছে চিঠি লিখে আলোচনার আহ্বান জানান। নভেম্বরে ভ্যাটিকানে মার্কিন ও কিউবান প্রতিনিধির মধ্যে চূড়ান্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
১৭ ডিসেম্বর ২০১৪
ওয়াশিংটন ঘোষণা করে, গ্রস মুক্তি পেয়েছেন এবং তিনি দেশে ফিরছেন। বারাক ওবামা কিউবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক নীতি বদলিয়ে কিউবার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ঘোষণা দেন।
একই সঙ্গে পাঁচ দশকের অর্থনৈতিক অবরোধও উঠিয়ে নেয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। একই সময়ে কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ত্রো ঘোষণা দিয়েছেন ওয়াশিংটন-হাভানা নতুন যুগে প্রবেশ করছে।
১৮৯৮
যুক্তরাষ্ট্র স্পেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। কিউবা তখন স্পানিশ উপনিবেশ। যুদ্ধে স্পেনের পরাজয়ের পর কিউবার দখল নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
১৯০২
কিউবা স্বাধীন হয়। কিন্তু শর্ত থাকে, যুক্তরাষ্ট্র তার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারবে। প্রেসিডেন্ট হন টমাস এস্ত্রাদা।
১৯০৬
জোসে মিগুয়েল গোমেজের নেতৃত্বে বিদ্রোহের জেরে এস্ত্রাদা পদত্যাগ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় কিউবা দখল করে নেয়। তিন বছর পর গোমেজ প্রেসিডেন্ট হন।
১৯১২
বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গদের বিক্ষোভ দমনে মার্কিন বাহিনী কিউবায় ফিরে আসে।
১৯৩৪
কিউবার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র তার হস্তক্ষেপের অধিকার উঠিয়ে নেয়।
১৯৫৩
যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত প্রেসিডেন্ট ফুলগেনিকো বাতিস্তার বিরুদ্ধে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থান করেন ফিদেল ক্যাস্ত্রো।
১৯৫৮
বাতিস্তার ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা উঠিয়ে নেয়।
১৯৫৯
নয় হাজার গেরিলা যোদ্ধা নিয়ে হাভানায় অপারেশন চালান ক্যাস্ত্রো। বাতিস্তা পালিয়ে পালিয়ে যান এবং ক্যাস্ত্রো প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণ করেন।
১৯৬০
ক্ষতিপূরণ ছাড়াই সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়য়করণ করেন ক্যাস্ত্রো। ওয়াশিংটন হাভানার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
১৯৬১
নির্বাসিত কিউবানরা যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় পিগস উপসাগরে অভিযান চালায়। ক্যাস্ত্রো কিউবাকে কমিউনিস্ট রাষ্ট্র ঘোষণা করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে জোট করেন।
১৯৬২
কিউবায় সোভিয়েত ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনে ক্যাস্ত্রো রাজি হলে সোভিয়েত-মার্কিন সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয় ও পারমাণবিক যুদ্ধের আশংকা তৈরি হয়।
১৯৬৩
দু’বছরে সিআইএ ক্যাস্ত্রোকে হত্যার চেষ্টা করে অন্তত পাঁচটি অভিযান চালায়।
১৯৭৭
পারস্পরিক স্বার্থরক্ষার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র-কিউবা সম্পর্কে সামান্য উন্নতি হয়।
১৯৮০
ক্যাস্ত্রো নির্বাসনের সুযোগ দিলে দেশটির ১ লাখ ২৫ হাজার নাগরিক কিউবা ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেয়।
১৯৯৬
মার্কিন কংগ্রেস কিউবার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে হেলমস বার্তন আইন পাস করে।
১৯৯৮
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত কিউবানদের স্বজনের কাছে অর্থ পাঠানোর নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আনে ওয়াশিংটন।
২০০০
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ কিউবার ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপ করেন।
২০০১
হারিকেন মিশেলে আঞাত হানার পর কিউবান সরকারের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্র খাদ্য সহায়তা পাঠায়। ৪০ বছরের মধ্যে এই প্রথম কিউবায় খাদ্য রফতানি করে যুক্তরাষ্ট্র।
২০০২
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার কিউবা সফর করেন। ক্যাস্ত্রো ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম কোনো মার্কিন নেতার সফর। এদিকে কিউবায় জৈব অস্ত্র বৃদ্ধির অভিযোগে দেশটিকে ‘শয়তানের অক্ষ’ তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র।
২০০৩
জর্জ ডব্লিউ বুশ কিউবার সমাজতান্ত্রিক শাসন উৎখাতের ঘোষণা দেন।
২০০৪
কিউবায় ডলার ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একমাত্র স্থানীয় মুদ্রা পেসোকে বাধ্যতামূলক করা হয়।
২০০৬
ফিদেল ক্যাস্ত্রো অসুস্থ হয়ে অস্ত্রোপচারের জন্য ভাই রাউল ক্যাস্ত্রোর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ প্রথম সরাসরি কিউবা রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের আহ্বান জানান। কয়েকমাস পর রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জিফ ফ্লেক ১০ সদস্যের প্রতিনিধি নিয়ে কিউবা সফর করেন, যা ১৯৫৯ সালের বিপ্লবের পর প্রথম।
২০০৮
ব্রাজিল সম্মেলনে রাউল ক্যাস্ত্রো কিউবার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান।
২০০৯
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কিউবার পারিবারিক ভ্রমণ ও রেমিটেন্সের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন।
২০১১
ইউএসএইড কর্মী মার্কিন নাগরিক অ্যালন গ্রসকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয় কিউবা। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে নতুন টানাপোড়েন শুরু হয়।
২০১২
গ্রস ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানে আসতে রাজি হয় কিউবা।
২০১৩
ওবামা কিউবার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ঘোষণা দেন।
জুন ২০১৩- নভেম্বর ২০১৪
যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবার মধ্যে সিরিজ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে পোপ ফ্রান্সিস ব্যক্তিগতভাবে ওবামা ও ক্যাস্ত্রোর কাছে চিঠি লিখে আলোচনার আহ্বান জানান। নভেম্বরে ভ্যাটিকানে মার্কিন ও কিউবান প্রতিনিধির মধ্যে চূড়ান্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
১৭ ডিসেম্বর ২০১৪
ওয়াশিংটন ঘোষণা করে, গ্রস মুক্তি পেয়েছেন এবং তিনি দেশে ফিরছেন। বারাক ওবামা কিউবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক নীতি বদলিয়ে কিউবার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ঘোষণা দেন।
একই সঙ্গে পাঁচ দশকের অর্থনৈতিক অবরোধও উঠিয়ে নেয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। একই সময়ে কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ত্রো ঘোষণা দিয়েছেন ওয়াশিংটন-হাভানা নতুন যুগে প্রবেশ করছে।
No comments