বয়স হয়েছে সাহস কমেনি, প্রাণ দিতে প্রস্তুত আছি
বিএনপি
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সরকারকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, গণতন্ত্র
পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে একটা গুলি চালানো হলে জনগণ এর জবাব দেবে।
বন্দুক-গুলি, বোমা, টিয়ার শেল- সবকিছুকে উপেক্ষা করে এবার আন্দোলনে নামতে
হবে। বৃহস্পতিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে ছাত্র কনভেনশনে
আন্দোলনে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, এ
বিজয়ের মাস শেষে যেকোনো সময় আমি আন্দোলনের ডাক দেব। তোমরা প্রস্তুত হও।
ছাত্র-জনতাকে আমি বলছি, এ জালেম সরকারের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সবাই
রাস্তায় নামুন। স্লোগান, হাততালি আর গালাগালি বাদ দিয়ে সাবেক ও বর্তমান
ছাত্রনেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। এবার ঢাকার রাজপথ খালি যাবে
না। নেতাকর্মীদের সাহস দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বয়স হয়েছে, কিন্ত সাহস আছে।
গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিতেও রাজি আছি। তোমাদের সঙ্গে আমিও রাজপথে নামব।
সব রাজনৈতিক দলকে যার যার অবস্থান থেকে এ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে
তোলারও আহ্বান জানান তিনি।
তারেক রহমানকে নিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের জবাবে খালেদা বলেন, অন্যকে উপদেশ দেয়ার আগে আপনার ভাষা সংযত করুন। নিজের জিহ্বা ঠিক করেন, নিজের মুখটা সামাল দেন। যে ভাষায় কথা বলছেন, আপনি দেশের স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী হলেও এসব কথা আপনার মুখে শোভা পায় না। সংযত হয়ে কথা বলুন, তাহলে জনগণ কিছুটা হলেও শান্তি পাবে। ছাত্রলীগের গুণ্ডাদের সামলান। তিনি বলেন, আমরা যা বলি, সত্য বলি। তথ্য-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে বলি। আমাদের ছেলেপেলেদের এমন শিক্ষা দেইনি। তিনি বলেন, ‘আমাদের গালি দিতে দিতে বিদেশীদেরও বাদ দেয়া হয় না। বিদেশীদেরও যা খুশি তা-ই বলা হয়।’
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন দেশের অবস্থা খারাপ হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশ পিছিয়ে যাবে। শেখ হাসিনা থাকলে দেশের গণতন্ত্র এমনকি বাংলাদেশ থাকবে না।
আবারও নির্দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচন দেয়ার দাবি জানিয়ে খালেদা বলেন, এখনও সময় আছে, গুম-খুন-হত্যা-গুলি বন্ধ করুন। যদি ভালো কাজ করে থাকেন, জনপ্রিয়তা থাকলে নির্বাচন দিয়ে প্রমাণ করুন। জনপ্রিয়তা প্রমাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন।
৯০-এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগে এ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সারা দেশ থেকে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের নির্বাচিত ও সাবেক নেতারা অংশ নিয়েছেন। দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে আসা নেতাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ জন বক্তব্য রাখেন। এদিকে সকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এরপরই অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ডাকসুর তৎকালীন ভিপি ও কনভেনশনের সভাপতি আমানউল্লাহ আমান। সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতৃত্বে ‘স্বৈরাচারী’ আওয়ামী লীগ সরকারকে হটানোর শপথ নেয়ার কথা জানিয়ে আমান সবাইকে এ সংগ্রামে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান। কনভেনশন পরিচালনা করেন ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন।
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে কনভেনশনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, নজরুল ইসলাম খান ও মির্জা আব্বাস এবং সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, হাবিবুর রহমান হাবিব, মোস্তাফিজুল ইসলাম বাবুল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, শিরিন সুলতানা, হাবিব উন নবী খান সোহেল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, খন্দকার লুৎফুর রহমান, সাইফুদ্দিন মনি, কামরুজ্জামান রতন, কাদির কামাল, শামসুজ্জামান সামু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোতাহার হোসেন, আশরাফ উদ্দিন খান, আজিজুল বারী হেলাল, আলী হায়দার বাবুল, শফিউল বারী বাবু, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, হেলেন জেরিন খান, আসিফা আশরাফী পাপিয়া, শফিকুল ইসলাম মিলন, মীর সরাফত আলী সপু, মাহবুবুর রহমান শামীম, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, সাইফুল আলম নীরব, হাবিবুর রশিদ হাবিব, হাসান মামুন, ভিপি সাইফুল ইসলাম, বদরুল আলম নাসিম, মাহবুবুল হক নান্নু, শামসুল আলম তোফা, মুন্সি ফজলুল বাছেত আঞ্জু, হারুন অর রশিদ আজাদ, আল আমিন, মিজানুর রহমান চৌধুরী, গাজী রায়হান উদ্দীন টুকু, ইলিয়াস আহমেদ, রহমত ইলাহী, গোলাম কাদির কামাল, ইফতেখার হোসেন, বিলকিস জাহান শিরিন, ফরহাদ ইকবাল, নেওয়াজ হালিম আরলি, রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান প্রমুখ।
খালেদা জিয়া বলেন, আমরা শান্তি চাই, দেশের গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে চাই। আওয়ামী লীগ সংবিধানকে এমনভাবে পরিবর্তন করেছে, যাতে নির্বাচন করলে অন্য কেউ ক্ষমতায় আসতে না পারে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে না বলেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এমনকি অনেক রাজনৈতিক দলও এতে অংশ নেয়নি। তাদের আহ্বানে দেশের মানুষ ওই নির্বাচন বর্জন করেছে। নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে কোনো মানুষ ছিল না। ছিল কুকুর।
বর্তমান সংসদকে অবৈধ দাবি করে তিনি বলেন, এ অবৈধ সংসদে যে আইন করা হচ্ছে সেগুলোও অবৈধ।
পুলিশকে গুলি না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের তো মা-বাবা, ভাই-বোন ও সন্তান আছে। কাদের গুলি করবেন? গুলি চালাবেন না।’ শেখ হাসিনার বাবার দেয়া বক্তব্যের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বিএনপি প্রধান বলেন, ‘আমি বলব না, একটা গুলি চালালে পাল্টা গুলি চলবে। আমি বলব, একটা গুলিও চালাবেন না। র্যাব বাতিল করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এ বাহিনীর সদস্যরা পেশাদার খুনি হয়ে গেছে। কর্নেল জিয়াকে গ্রেফতার করলে সব গুম-খুনের তথ্য বের হয়ে আসবে। জিয়া হয়তো বলবেন, তিনি নির্দেশ পালন করেছেন। আমরা সেটাই শুনতে চাই, কে নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্প্রতি কিছু সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে খালেদা জিয়া বলেন, সাবেক সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এটা সঠিক নয়। সময় শেষ হয়ে এলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ ধরনের ভুল তথ্য দিয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী ছিলাম। বিরোধীদলীয় নেতা ছিলাম। আমি দেশের নাগরিক। আমার সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তারা বৈঠক করলে সমস্যা কোথায়? আপনি বিডিআরের খুনিদের সঙ্গে চা খেতে পারেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বলে, প্রশাসনের সবাই নাকি বিএনপির লোক। সবাই আমাদের লোক হলে তোমাদের সমর্থন-ই তো নেই। তোমরা চুরি করে ক্ষমতায় এসেছ।’ সম্প্রতি এক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপির গন্ধ পেলেই ওএসডি বা চাকরিচ্যুত করা হয়। সিভিল প্রশাসন ও পুলিশে ভালো ভালো অফিসারদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীতেও একই অবস্থা। প্রধানমন্ত্রীর ১৫ মামলা এবং তার দলের নেতাকর্মীদের ৮ হাজার মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে দাবি করে বিএনপি প্রধান বলেন, মিগ-২৯সহ অনেক মামলা আছে, যেগুলোতে শেখ হাসিনার সাজা হতো। মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সঙ্গে আঁতাত করে ক্ষমতায় এসে ওইসব মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমার এবং আমার দলের নেতাকর্মীদের মামলা চললে, শেখ হাসিনার মামলাও পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।
গত কয়েক বছরে টাকা পাচারের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও তার দলের লোকজন জড়িত দাবি করে তিনি বলেন, ২০১১, ২০১২ ও ২০১৩ সালে সুইস ব্যাংকে প্রচুর টাকা পাচার হয়েছে। সুন্দরবনের ঘটনা পরিকল্পিত দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, সুন্দরবনকে ধ্বংস করতে এটি করা হয়েছে। যার ট্যাংকার দুর্ঘটনাকবলে পড়েছে, তাকে ধরা হয়নি। হয়তো সে আওয়ামী ঘরানার কেউ হবে। চাল আমদানির সমালোচনা করে তিনি বলেন, কমিশন পেতে আমদানি করা হচ্ছে। লুটপাট তাদের মূল উদ্দেশ্য। এভাবে লুট করে দেশকে শেষ করে ফেলছে তারা। সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে খালেদা বলেন, দেশে কোনো বিনিয়োগ নেই। গ্যাস-বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে দেশী ও বিদেশীরা বিনিয়োগ করছে না। শিক্ষাঙ্গনও এ সরকার ধ্বংস করে ফেলছে। নকল করে পাসের হার বাড়ানো হচ্ছে, কিন্ত শিক্ষার মান বাড়ছে না। এর আগে সকালে কনভেনশনের উদ্বোধনী বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘অশিক্ষিত জানোয়ার’ বলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারেকের সত্য ভাষণে সরকারের গায়ে ‘জ্বালা’ ধরেছে মন্তব্য করে সরকার প্রধানকে ‘সংযত হয়ে’ কথা বলার আহ্বান জানান তিনি।
তারেক রহমানকে নিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের জবাবে খালেদা বলেন, অন্যকে উপদেশ দেয়ার আগে আপনার ভাষা সংযত করুন। নিজের জিহ্বা ঠিক করেন, নিজের মুখটা সামাল দেন। যে ভাষায় কথা বলছেন, আপনি দেশের স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী হলেও এসব কথা আপনার মুখে শোভা পায় না। সংযত হয়ে কথা বলুন, তাহলে জনগণ কিছুটা হলেও শান্তি পাবে। ছাত্রলীগের গুণ্ডাদের সামলান। তিনি বলেন, আমরা যা বলি, সত্য বলি। তথ্য-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে বলি। আমাদের ছেলেপেলেদের এমন শিক্ষা দেইনি। তিনি বলেন, ‘আমাদের গালি দিতে দিতে বিদেশীদেরও বাদ দেয়া হয় না। বিদেশীদেরও যা খুশি তা-ই বলা হয়।’
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন দেশের অবস্থা খারাপ হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশ পিছিয়ে যাবে। শেখ হাসিনা থাকলে দেশের গণতন্ত্র এমনকি বাংলাদেশ থাকবে না।
আবারও নির্দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচন দেয়ার দাবি জানিয়ে খালেদা বলেন, এখনও সময় আছে, গুম-খুন-হত্যা-গুলি বন্ধ করুন। যদি ভালো কাজ করে থাকেন, জনপ্রিয়তা থাকলে নির্বাচন দিয়ে প্রমাণ করুন। জনপ্রিয়তা প্রমাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন।
৯০-এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগে এ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সারা দেশ থেকে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের নির্বাচিত ও সাবেক নেতারা অংশ নিয়েছেন। দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে আসা নেতাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ জন বক্তব্য রাখেন। এদিকে সকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এরপরই অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ডাকসুর তৎকালীন ভিপি ও কনভেনশনের সভাপতি আমানউল্লাহ আমান। সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতৃত্বে ‘স্বৈরাচারী’ আওয়ামী লীগ সরকারকে হটানোর শপথ নেয়ার কথা জানিয়ে আমান সবাইকে এ সংগ্রামে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান। কনভেনশন পরিচালনা করেন ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন।
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে কনভেনশনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, নজরুল ইসলাম খান ও মির্জা আব্বাস এবং সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, হাবিবুর রহমান হাবিব, মোস্তাফিজুল ইসলাম বাবুল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, শিরিন সুলতানা, হাবিব উন নবী খান সোহেল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, খন্দকার লুৎফুর রহমান, সাইফুদ্দিন মনি, কামরুজ্জামান রতন, কাদির কামাল, শামসুজ্জামান সামু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোতাহার হোসেন, আশরাফ উদ্দিন খান, আজিজুল বারী হেলাল, আলী হায়দার বাবুল, শফিউল বারী বাবু, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, হেলেন জেরিন খান, আসিফা আশরাফী পাপিয়া, শফিকুল ইসলাম মিলন, মীর সরাফত আলী সপু, মাহবুবুর রহমান শামীম, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, সাইফুল আলম নীরব, হাবিবুর রশিদ হাবিব, হাসান মামুন, ভিপি সাইফুল ইসলাম, বদরুল আলম নাসিম, মাহবুবুল হক নান্নু, শামসুল আলম তোফা, মুন্সি ফজলুল বাছেত আঞ্জু, হারুন অর রশিদ আজাদ, আল আমিন, মিজানুর রহমান চৌধুরী, গাজী রায়হান উদ্দীন টুকু, ইলিয়াস আহমেদ, রহমত ইলাহী, গোলাম কাদির কামাল, ইফতেখার হোসেন, বিলকিস জাহান শিরিন, ফরহাদ ইকবাল, নেওয়াজ হালিম আরলি, রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান প্রমুখ।
খালেদা জিয়া বলেন, আমরা শান্তি চাই, দেশের গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে চাই। আওয়ামী লীগ সংবিধানকে এমনভাবে পরিবর্তন করেছে, যাতে নির্বাচন করলে অন্য কেউ ক্ষমতায় আসতে না পারে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে না বলেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এমনকি অনেক রাজনৈতিক দলও এতে অংশ নেয়নি। তাদের আহ্বানে দেশের মানুষ ওই নির্বাচন বর্জন করেছে। নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে কোনো মানুষ ছিল না। ছিল কুকুর।
বর্তমান সংসদকে অবৈধ দাবি করে তিনি বলেন, এ অবৈধ সংসদে যে আইন করা হচ্ছে সেগুলোও অবৈধ।
পুলিশকে গুলি না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের তো মা-বাবা, ভাই-বোন ও সন্তান আছে। কাদের গুলি করবেন? গুলি চালাবেন না।’ শেখ হাসিনার বাবার দেয়া বক্তব্যের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বিএনপি প্রধান বলেন, ‘আমি বলব না, একটা গুলি চালালে পাল্টা গুলি চলবে। আমি বলব, একটা গুলিও চালাবেন না। র্যাব বাতিল করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এ বাহিনীর সদস্যরা পেশাদার খুনি হয়ে গেছে। কর্নেল জিয়াকে গ্রেফতার করলে সব গুম-খুনের তথ্য বের হয়ে আসবে। জিয়া হয়তো বলবেন, তিনি নির্দেশ পালন করেছেন। আমরা সেটাই শুনতে চাই, কে নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্প্রতি কিছু সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে খালেদা জিয়া বলেন, সাবেক সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এটা সঠিক নয়। সময় শেষ হয়ে এলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ ধরনের ভুল তথ্য দিয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী ছিলাম। বিরোধীদলীয় নেতা ছিলাম। আমি দেশের নাগরিক। আমার সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তারা বৈঠক করলে সমস্যা কোথায়? আপনি বিডিআরের খুনিদের সঙ্গে চা খেতে পারেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বলে, প্রশাসনের সবাই নাকি বিএনপির লোক। সবাই আমাদের লোক হলে তোমাদের সমর্থন-ই তো নেই। তোমরা চুরি করে ক্ষমতায় এসেছ।’ সম্প্রতি এক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপির গন্ধ পেলেই ওএসডি বা চাকরিচ্যুত করা হয়। সিভিল প্রশাসন ও পুলিশে ভালো ভালো অফিসারদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীতেও একই অবস্থা। প্রধানমন্ত্রীর ১৫ মামলা এবং তার দলের নেতাকর্মীদের ৮ হাজার মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে দাবি করে বিএনপি প্রধান বলেন, মিগ-২৯সহ অনেক মামলা আছে, যেগুলোতে শেখ হাসিনার সাজা হতো। মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সঙ্গে আঁতাত করে ক্ষমতায় এসে ওইসব মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমার এবং আমার দলের নেতাকর্মীদের মামলা চললে, শেখ হাসিনার মামলাও পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।
গত কয়েক বছরে টাকা পাচারের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও তার দলের লোকজন জড়িত দাবি করে তিনি বলেন, ২০১১, ২০১২ ও ২০১৩ সালে সুইস ব্যাংকে প্রচুর টাকা পাচার হয়েছে। সুন্দরবনের ঘটনা পরিকল্পিত দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, সুন্দরবনকে ধ্বংস করতে এটি করা হয়েছে। যার ট্যাংকার দুর্ঘটনাকবলে পড়েছে, তাকে ধরা হয়নি। হয়তো সে আওয়ামী ঘরানার কেউ হবে। চাল আমদানির সমালোচনা করে তিনি বলেন, কমিশন পেতে আমদানি করা হচ্ছে। লুটপাট তাদের মূল উদ্দেশ্য। এভাবে লুট করে দেশকে শেষ করে ফেলছে তারা। সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে খালেদা বলেন, দেশে কোনো বিনিয়োগ নেই। গ্যাস-বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে দেশী ও বিদেশীরা বিনিয়োগ করছে না। শিক্ষাঙ্গনও এ সরকার ধ্বংস করে ফেলছে। নকল করে পাসের হার বাড়ানো হচ্ছে, কিন্ত শিক্ষার মান বাড়ছে না। এর আগে সকালে কনভেনশনের উদ্বোধনী বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘অশিক্ষিত জানোয়ার’ বলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারেকের সত্য ভাষণে সরকারের গায়ে ‘জ্বালা’ ধরেছে মন্তব্য করে সরকার প্রধানকে ‘সংযত হয়ে’ কথা বলার আহ্বান জানান তিনি।
No comments