দেড় যুগেও সম্মেলন হয়নি নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগে by বিল্লাল হোসেন রবিন
দেড় যুগ পার হয়েছে, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি। ১২ বছর আগে গঠিত তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটির অস্তিত্বও এখন নেই বললেই চলে। দলের আহ্বায়কের পদত্যাগ ও যুগ্ম আহ্বায়কসহ এক ডজন নেতার মৃত্যুতে দলের কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ক্ষত-বিক্ষত দলের ভেতর শীর্ষ নেতাদের দলাদলিতে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে আহ্বায়ক কমিটির অনেকেই দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন। ফলে দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড তেমন একটা নেই বললেই চলে। বরং টেন্ডারবাজি, ভূমি দস্যুতা, জবড় দখল, চাঁদাবাজি, বিভিন্ন-সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধ সুবিধা আদায় ও তদবির বাণিজ্য করে নিজেদের আখের গুছাতেই ব্যস্ত দলের সুবিধাভোগী নেতা-কর্মীরা। এতে ক্ষুব্ধ ও হতাশ দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা। ক্ষমতাসীন এই দলের হ-য-র-ল-ব সাংগঠনিক অবস্থায় সুবিধা নিচ্ছে বিরোধী শিবির। দলীয় সূত্রমতে, ১৯৯৬ সালের ২০শে ডিসেম্বর শহরের শহীদ জিয়া হলে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ একটি বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অধ্যাপিকা নাজমা রহমান সভানেত্রী ও শামীম ওসমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিন্তু সম্মেলনের অল্প দিনের মাথায় নাজমা-শামীমের প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব দলকে দুভাগে বিভক্ত করে দেয়। ২০০১ সাল পর্যন্ত ভয়াবহভাবে চলে নাজমা-শামীমের বিরোধ। দলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ওই দুই নেতার বিরোধ এবং শামীম ওসমানের কর্মকাণ্ড ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে নারায়ণগঞ্জে। নির্বাচনে জেলার ৫টি আসনেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ভরাডুবি ঘটে। নির্বাচনের পর শামীম ওসমান বিদেশে আত্মগোপন করেন। আর নাজমা রহমান নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে অবস্থান নেন ঢাকায়। নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ। কোন্দল নিরসনে নাজমা রহমান ও শামীম ওসমানের কমিটি ভেঙে দিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে ২০০২ সালের ২৫শে মার্চ নাজমা রহমান ও শামীম ওসমানকে বাদ দিয়ে ৬১ সদস্য বিশিষ্ট খসড়া আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। পরে কয়েকজনের বিরোধিতা ও আপত্তির কারণে নাজমা রহমান ও শামীম ওসমানকে অন্তর্ভুক্ত করে ২৭শে মার্চ ঢাকার পান্থপথ সোহাগ কমিউনিটি সেন্টারে ৬৩ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। সাবেক এমপি এসএম আকরামকে আহবায়ক ও মফিজুল ইসলামকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। কথা ছিল আহ্বায়ক কমিটি তিন মাসের মধ্যে সম্মেলন করে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি করবে। এর মধ্যে ২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিজয়ী হওয়ার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়ায়। উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন দলের নেতাকর্মীরা। কিন্তু পৌর নির্বাচনের কয়েক মাস পর এস এম আকরাম ও মফিজুল ইসলামের মধ্যে মতপ্রার্থক্য দেখা দিলে এস এম আকরাম অবস্থান নেয় অধ্যাপিকা নাজমা রহমানের শিবিরে। আর মফিজুল ইসলাম শামীম ওসমানের দিকে। ফলে আবার দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ। এরপর ৮ থেকে ১০ বার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেও শেষ পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি। নাজমা রহমান ঢাকায় বসে আর শামীম ওসমান প্রবাসে থেকে জেলা আওয়ামী লীগের দুই শিবিরকে পরিচালনা করেন। দুই নেতার নির্দেশে তাদের স্ব-স্ব নেতারা উজ্জীবিত থাকে। মজার বিষয় হলো শেষ পর্যন্ত ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে নাজমা রহমান ও শামীম ওসমান দু্জনই কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি। তাদের ছাড়াই নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের ৪ প্রার্থী বিজয়ী হয়। ওদিকে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর শামীম ওসমান দেশে ফিরে তার অনুসারী নেতাকর্মীদের নিয়ে দলীয় কার্যক্রম শুরু করেন। তার তৎপরতায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে দলের দুঃসময়ে হাল ধরে রাখা নেতাকর্মীরা। নাজমা রহমানের ঢাকায় অবস্থানের কারণে তার শিবিরের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হয় এস এম আকরামকে ঘিরে। ফলে শামীম ওসমান ও এস এম আকরামকে ঘিরে প্রকাশ্যে দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ। পাল্টাপাল্টিভাবে চলতে থাকে দলের কার্যক্রম। শামীম ওসমান শিবির শহরের চাষাঢ়ায় রাইফেল ক্লাব ও সরকারি তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে এবং আকরাম শিবির শহরের ২নং রেল গেটের দলীয় কার্যালয়ে দলের কার্যক্রম চালান।
এদিকে ২০০৯ সালের ২৩শে জুন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের দলীয় এমপি সারাহ বেগম কবরীর সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধে জড়িয়ে পড়েন শামীম ওসমান। ওই বিরোধের ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালের জানুয়ারি প্রথম দিকে ফতুল্লার ডিআইটি মাঠে কবরী ও শামীম ওসমান পাল্টাপাল্টি শোডাউন করে একে অপরকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। একই বছরের ১৮ই মে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পরিবহন মালিকদের পক্ষ নিয়ে এমপি কবরীর দিকে দফায় দফায় তেড়ে যান শামীম ওসমান এবং শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় তুঙ্গে ওঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভক্তি। শামীম ওসমানকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার প্রস্তুতি নেন এমপি কবরী, এসএম আকরাম, আনোয়ার হোসেন ও ডা. আইভী প্রমুখ। আর প্রতিশোধ নেয় তারা ২০১১ সালের ৩০শে অক্টোবরের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে।
ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শামীম ওসমান ও আকরাম সমর্থিত আওয়ামী লীগের বিরোধ চরম আকার ধারণ করেন। কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগ শামীম ওসমানকে সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেন। কিন্তু কেন্দ্রের চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে এস এম আকরাম সমর্থিত আওয়ামী লীগ নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীকে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেয়। নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয় সেলিনা হায়াৎ আইভী। কিন্তু নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টার মাথায় আকস্মিকভাবে এস এম আকরাম আহ্বায়কের পদ থেকে পদত্যাগ করায় জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি উলটপালট হয়ে যায়। এদিকে সিটি নির্বাচনে শামীম ওসমানের পরাজয়ে তার শিবির অনেকটা ঝিমিয়ে পড়ে। কমে যায় শামীম ওসমানের তৎপরতা। উজ্জীবিত আইভী-আনোয়ার শিবির দলীয় কার্যালয়ে দলের কার্যক্রম চালাতে থাকে। ওদিকে আওয়ামী লীগ থেকে এস এম আকরাম পদত্যাগ করায় দলের আহ্বায়কের পদ শূন্য হয়ে যায়। ১৭ই ফেব্রুয়ারি মারা যান যুগ্ম আহ্বায়ক প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুল ইসলাম। এর আগে বিভিন্ন সময়ে মারা গিয়েছেন আহবায়ক কমিটির সদস্য প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আনসার আলী, গোলাম মোর্শেদ খান ফারুকী, আলী হোসেন, আবদুল হাই, ফিরোজ মাস্টার, মুনেম মুন্না, আবদুর রশিদ, এম এ কুদ্দুছ, আবুল হাসনাতসহ একডজন নেতা। আর নানা কারণে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাবেক সভানেত্রী অধ্যাপিকা নাজমা রহমান, আ ন ম বাহাউল হক, কায়কোবাদ ভুইয়া, মিজানুর রহমান, সাবেক এমপি এমদাদ হোসেন ভুঁইয়া, সাবেক এমপি কেএম শফিউল্লাহ, মোমতাজ হোসেন, আশরাফ উদ্দিন চুন্নুসহ অনেকেই দলের কার্যক্রম থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন অনেক আগেই। বর্তমানে সক্রিয় আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম ওসমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, আনিসুর রহমান দিপু, সামছুল ইসলাম ভুঁইয়া, শেখ হায়দার আলী, আরজু রহমান ভুঁইয়াসহ আহ্বায়ক কমিটির ১০-১২ জন সদস্য। ফলে ৬৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অস্তিত্ব এখন কাগজ-কলমে। এস এম আকরামের পদত্যাগের পর শামীমবিরোধী শিবিরের হাল ধরেন সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। তাদের ঘিরে শহরে আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মকাণ্ড চলতে থাকে। তবে ঝিমিয়ে পড়া শামীম শিবির চাঙ্গা হয়ে ওঠে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে নির্বাচিত হন শামীম ওসমান। এতে ঘুরে দাঁড়ায় তার শিবির। শামীম ওসমান তার শিবিরকে নিজের মতো করে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপনির্বাচনের পর ‘বিশেষ সুবিধা’ নিতে আইভী শিবির ছেড়ে একটি গ্রুপ যোগ দেয় ওসমান পরিবার শিবিরে। ফলে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ওসমান পরিবার। তবে শামীম বিরোধী শিবিরের একক নেতৃত্বে রয়েছেন সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। অন্যদিকে দলীয় কর্মকাণ্ডের চেয়ে শামীম ওসমান তার বিরোধী শিবিরকে কোণঠাসা করতেই ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এদিকে ২০০৯ সালের ২৩শে জুন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের দলীয় এমপি সারাহ বেগম কবরীর সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধে জড়িয়ে পড়েন শামীম ওসমান। ওই বিরোধের ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালের জানুয়ারি প্রথম দিকে ফতুল্লার ডিআইটি মাঠে কবরী ও শামীম ওসমান পাল্টাপাল্টি শোডাউন করে একে অপরকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। একই বছরের ১৮ই মে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পরিবহন মালিকদের পক্ষ নিয়ে এমপি কবরীর দিকে দফায় দফায় তেড়ে যান শামীম ওসমান এবং শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় তুঙ্গে ওঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভক্তি। শামীম ওসমানকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার প্রস্তুতি নেন এমপি কবরী, এসএম আকরাম, আনোয়ার হোসেন ও ডা. আইভী প্রমুখ। আর প্রতিশোধ নেয় তারা ২০১১ সালের ৩০শে অক্টোবরের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে।
ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শামীম ওসমান ও আকরাম সমর্থিত আওয়ামী লীগের বিরোধ চরম আকার ধারণ করেন। কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগ শামীম ওসমানকে সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেন। কিন্তু কেন্দ্রের চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে এস এম আকরাম সমর্থিত আওয়ামী লীগ নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীকে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেয়। নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয় সেলিনা হায়াৎ আইভী। কিন্তু নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টার মাথায় আকস্মিকভাবে এস এম আকরাম আহ্বায়কের পদ থেকে পদত্যাগ করায় জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি উলটপালট হয়ে যায়। এদিকে সিটি নির্বাচনে শামীম ওসমানের পরাজয়ে তার শিবির অনেকটা ঝিমিয়ে পড়ে। কমে যায় শামীম ওসমানের তৎপরতা। উজ্জীবিত আইভী-আনোয়ার শিবির দলীয় কার্যালয়ে দলের কার্যক্রম চালাতে থাকে। ওদিকে আওয়ামী লীগ থেকে এস এম আকরাম পদত্যাগ করায় দলের আহ্বায়কের পদ শূন্য হয়ে যায়। ১৭ই ফেব্রুয়ারি মারা যান যুগ্ম আহ্বায়ক প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুল ইসলাম। এর আগে বিভিন্ন সময়ে মারা গিয়েছেন আহবায়ক কমিটির সদস্য প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আনসার আলী, গোলাম মোর্শেদ খান ফারুকী, আলী হোসেন, আবদুল হাই, ফিরোজ মাস্টার, মুনেম মুন্না, আবদুর রশিদ, এম এ কুদ্দুছ, আবুল হাসনাতসহ একডজন নেতা। আর নানা কারণে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাবেক সভানেত্রী অধ্যাপিকা নাজমা রহমান, আ ন ম বাহাউল হক, কায়কোবাদ ভুইয়া, মিজানুর রহমান, সাবেক এমপি এমদাদ হোসেন ভুঁইয়া, সাবেক এমপি কেএম শফিউল্লাহ, মোমতাজ হোসেন, আশরাফ উদ্দিন চুন্নুসহ অনেকেই দলের কার্যক্রম থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন অনেক আগেই। বর্তমানে সক্রিয় আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম ওসমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, আনিসুর রহমান দিপু, সামছুল ইসলাম ভুঁইয়া, শেখ হায়দার আলী, আরজু রহমান ভুঁইয়াসহ আহ্বায়ক কমিটির ১০-১২ জন সদস্য। ফলে ৬৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অস্তিত্ব এখন কাগজ-কলমে। এস এম আকরামের পদত্যাগের পর শামীমবিরোধী শিবিরের হাল ধরেন সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। তাদের ঘিরে শহরে আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মকাণ্ড চলতে থাকে। তবে ঝিমিয়ে পড়া শামীম শিবির চাঙ্গা হয়ে ওঠে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে নির্বাচিত হন শামীম ওসমান। এতে ঘুরে দাঁড়ায় তার শিবির। শামীম ওসমান তার শিবিরকে নিজের মতো করে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপনির্বাচনের পর ‘বিশেষ সুবিধা’ নিতে আইভী শিবির ছেড়ে একটি গ্রুপ যোগ দেয় ওসমান পরিবার শিবিরে। ফলে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ওসমান পরিবার। তবে শামীম বিরোধী শিবিরের একক নেতৃত্বে রয়েছেন সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। অন্যদিকে দলীয় কর্মকাণ্ডের চেয়ে শামীম ওসমান তার বিরোধী শিবিরকে কোণঠাসা করতেই ব্যস্ত সময় পার করছেন।
No comments