কিবরিয়া হত্যা: সম্পূরক চার্জশিট পরিবার মেনে নিলেও প্রশ্ন রয়েই গেছে by চৌধুরী মুমতাজ আহমদ ও আমির হোসেন
পাঁচ কর্মকর্তার হাত ঘুরে অনেক কাটাছেঁড়ার পরও সকল প্রশ্নের জবাব দিতে পারেনি সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার সর্বশেষ চার্জশিটও। প্রশ্নের জবাব মিলছে না কিবরিয়া পরিবারের কাছ থেকেও। বারবার চার্জশিটে নারাজি দিলেও স্পষ্ট করছেন না কেন তাদের আপত্তি। অবশ্য পুরো সন্তুষ্ট না হলেও সর্বশেষ চার্জশিটটিকে ‘মোটামুটি গ্রহণযোগ্য’ হিসেবেই মেনে নিয়েছেন তারা। তবে এবার আপত্তি খোদ মামলার বাদীর প্রতিই। আপত্তি আছে বর্তমান পিপির প্রতিও। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন কিবরিয়া পরিবার। কিবরিয়া পরিবার সর্বশেষ চার্জশিটটিকে ‘মোটামুটি গ্রহণযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করলেও চার্জশিট পর্যালোচনায় অনেক অসঙ্গতির দেখা মিলেছে। তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি সিলেট অঞ্চলের সিনিয়র এএসপি মেহেরুন্নেসা পারুল প্রায় তিন বছরে চার্জশিট তৈরি করলেও তেমন একটা খাটাখাটনির প্রমাণ নেই এতে। অনেকটা দায়সারা এ চার্জশিট। রোগ শনাক্ত করতে না পেরে মোড়ের চিকিৎসক যেমন তার ব্যবস্থাপত্র ওষুধ দিয়ে ভরিয়ে তোলেন তেমনি অগুনতি অভিযুুক্ত আর সাক্ষীর ভিড়ে চিহ্নিত হয়নি মূল হোতারা। পূর্ববর্তী তদন্ত কর্মকর্তারা যাদের অভিযুক্ত করেছিলেন কাউকেই বাদ দেননি তিনি। নতুন করে যুক্ত করেছেন আরও ১১ জনকে। এর মধ্যে তিনটি নাম বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক একান্ত সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের মেয়র গোলাম কিবরিয়া জিকে গউছ। চার্জশিটে হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার স্পষ্ট বর্ণনা থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তা স্পষ্ট করতে পারেননি আরিফুল হক ও জিকে গউছের সংশ্লিষ্টতা। চার্জশিটে হামলার দিন হারিছ চৌধুরীর ঘটনাস্থলে উপস্থিতি ও হামলাকারীদের সঙ্গে কথোপকথনের বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। তবে আরিফুল হক ও জিকে গউছের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোন বর্ণনা নেই চার্জশিটে। এ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মুফতি হান্নানের অন্য একটি মামলায় ২০১১ সালের ৭ই এপ্রিল ঢাকার মতিঝিল থানায় দেয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তাদের চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনে মাত্র একটি লাইন ব্যবহার করেন তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি উল্লেখ করেন, স্বীকারোক্তিতে মুফতি হান্নান জানান ২০০৩ সালের শেষ দিকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের বেইলি রোডের বাসায় অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এ দু’জনও। তাদের নির্দেশ দেয়া হয় সিলেটে পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ করার জন্য। তদন্ত কর্মকর্তা স্পষ্ট করতে পারেননি কি পরিকল্পনা ছিল সেটা। রাজনীতি সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন, একজন মন্ত্রী দলের নেতাকর্মীদের যে কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিতে পারেন। তিনি কি সেদিন কিবরিয়া হত্যা পরিকল্পনার কথাই বলেছিলেন তা নিশ্চিত না করে আরিফুল হক ও জিকে গউছকে এ মামলায় সংযুক্ত করা যৌক্তিক হয়নি বলেই তাদের মন্তব্য। লুৎফুজ্জামান বাবরের সঙ্গে আরিফুল হক ও জিকে গউছের সাক্ষাতের তারিখ চার্জশিটে নির্দিষ্ট না থাকায় সেটাকে ২০০৩ সালের শেষ দিন ধরে নিলেও তা কিবরিয়া হত্যা ঘটনার এক বছরের বেশি সময়ের পূর্বে ঘটেছিল। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা ঘটনা ঘটে ২০০৫ সালের ২৭শে জানুয়ারি। কোন মজবুত সুতো ছাড়াই এক বছরের বেশি সময়ের আগে সাক্ষাতের একটি ঘটনাকে হত্যা ঘটনার সঙ্গে বেঁধে দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় সব মিলিয়ে ৩ দফা চার্জশিট দেয়া হয়েছে। মামলার মাত্র ৪৮ দিনের মাথাতেই ২০০৫ সালের ৩১শে জানুয়ারি সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মুন্সী আতিকুর রহমান হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি একেএম আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন (চার্জশিট নং: ৪১)। অতি তাড়াহুড়ায় চার্জশিট দেয়ায় তা নিয়ে সে সময় বেশ আলোচনার জন্ম হয়। আপত্তি ওঠে বাদীপক্ষের কাছ থেকেও। অনেক জটিলতার পর আবার নতুন করে তদন্ত শুরু হয় এ মামলায়। অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২০শে জুন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ জোন) মো. রফিকুল ইসলাম দ্বিতীয় দফা চার্জশিট জমা দেন আদালতে। সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পেয়ে প্রথম চার্জশিটের ১০ অভিযুক্তেরই তিনি অব্যাহতি চান। অভিযুক্তের তালিকায় যুক্ত করেন নতুন ১৪টি নাম। ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয় সে চার্জশিট (চার্জশিট নং: ১৭১)। কোন ভাবেই তা মেনে নিতে পারেননি কিবরিয়া পরিবার। এবার নিজেই নারাজি দেন শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া। তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডি সিলেট অঞ্চলের সিনিয়র এএসপি মেহেরুন্নেসা পারুল। গত ১২ই নভেম্বর সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির এ কর্মকর্তা। তিনি আগের দুই চার্জশিটে অভিযুক্ত সকলকেই অভিযুক্ত হিসেবে জায়গা দেন নতুন চার্জশিটে। সংযুক্ত করেন আরও ১১টি নাম। মৃত্যুবরণ করায় অভিযুক্ত আহসান উল্লাহ কাজলের নাম প্রত্যাহারের সুপারিশটি যৌক্তিক হলেও ঠিকানা না পাওয়া আরও দু’জনের অব্যাহতি চাওয়ার বিষয় নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অভিযুক্তদের ঠিকানা সংগ্রহ করতে না পারা তদন্ত কর্মকর্তার ব্যর্থতা বলেই তাদের মন্তব্য। তাছাড়া সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্বে থাকা আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের দায়িত্বে থাকা জিকে গউছকে পলাতক দেখানো নিয়েও প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
অনেক অসঙ্গতির পরও অবশ্য এ চার্জশিটকে মেনে নিয়েছেন শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া। সোমবার এক বিবৃতিতে চার্জশিটকে তিনি ‘মোটামুটি গ্রহণযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, ‘মোটামুটি প্রকৃত হত্যাকারী ও মদতদাতাকারী, সহায়তাকারীদের নাম চলে এসেছে।’ তবে হবিগঞ্জের সে সময়কার জেলা প্রশাসক মো. এমদাদুল হকের নাম না আসায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। বিবৃতিতে দ্বিতীয় চার্জশিট প্রদানকারী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, রফিকুল ইসলাম প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে চেয়েছিলেন। এমনকি মামলার বাদী এডভোকেট আবদুল মজিদ খানের প্রতিও অপরাধীদের আড়াল করার একই অভিযোগ উত্থাপন করেন আসমা কিবরিয়া। অভিযুক্ত করেন বর্তমান পিপি আকবর হুসেনকেও। তিনি তিনজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করার আহ্বানও জানান।
শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় সব মিলিয়ে ৩ দফা চার্জশিট দেয়া হয়েছে। মামলার মাত্র ৪৮ দিনের মাথাতেই ২০০৫ সালের ৩১শে জানুয়ারি সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মুন্সী আতিকুর রহমান হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি একেএম আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন (চার্জশিট নং: ৪১)। অতি তাড়াহুড়ায় চার্জশিট দেয়ায় তা নিয়ে সে সময় বেশ আলোচনার জন্ম হয়। আপত্তি ওঠে বাদীপক্ষের কাছ থেকেও। অনেক জটিলতার পর আবার নতুন করে তদন্ত শুরু হয় এ মামলায়। অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২০শে জুন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ জোন) মো. রফিকুল ইসলাম দ্বিতীয় দফা চার্জশিট জমা দেন আদালতে। সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পেয়ে প্রথম চার্জশিটের ১০ অভিযুক্তেরই তিনি অব্যাহতি চান। অভিযুক্তের তালিকায় যুক্ত করেন নতুন ১৪টি নাম। ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয় সে চার্জশিট (চার্জশিট নং: ১৭১)। কোন ভাবেই তা মেনে নিতে পারেননি কিবরিয়া পরিবার। এবার নিজেই নারাজি দেন শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া। তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডি সিলেট অঞ্চলের সিনিয়র এএসপি মেহেরুন্নেসা পারুল। গত ১২ই নভেম্বর সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির এ কর্মকর্তা। তিনি আগের দুই চার্জশিটে অভিযুক্ত সকলকেই অভিযুক্ত হিসেবে জায়গা দেন নতুন চার্জশিটে। সংযুক্ত করেন আরও ১১টি নাম। মৃত্যুবরণ করায় অভিযুক্ত আহসান উল্লাহ কাজলের নাম প্রত্যাহারের সুপারিশটি যৌক্তিক হলেও ঠিকানা না পাওয়া আরও দু’জনের অব্যাহতি চাওয়ার বিষয় নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অভিযুক্তদের ঠিকানা সংগ্রহ করতে না পারা তদন্ত কর্মকর্তার ব্যর্থতা বলেই তাদের মন্তব্য। তাছাড়া সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্বে থাকা আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের দায়িত্বে থাকা জিকে গউছকে পলাতক দেখানো নিয়েও প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
অনেক অসঙ্গতির পরও অবশ্য এ চার্জশিটকে মেনে নিয়েছেন শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া। সোমবার এক বিবৃতিতে চার্জশিটকে তিনি ‘মোটামুটি গ্রহণযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, ‘মোটামুটি প্রকৃত হত্যাকারী ও মদতদাতাকারী, সহায়তাকারীদের নাম চলে এসেছে।’ তবে হবিগঞ্জের সে সময়কার জেলা প্রশাসক মো. এমদাদুল হকের নাম না আসায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। বিবৃতিতে দ্বিতীয় চার্জশিট প্রদানকারী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, রফিকুল ইসলাম প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে চেয়েছিলেন। এমনকি মামলার বাদী এডভোকেট আবদুল মজিদ খানের প্রতিও অপরাধীদের আড়াল করার একই অভিযোগ উত্থাপন করেন আসমা কিবরিয়া। অভিযুক্ত করেন বর্তমান পিপি আকবর হুসেনকেও। তিনি তিনজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করার আহ্বানও জানান।
No comments