১০০০ ডলারে শরণার্থী মর্যাদা বিক্রি- মালয়েশিয়ায় ইউএনএইচসিআরে দুর্নীতি
মালয়েশিয়ার শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হতে ১০০০ ডলার খরচ করতে হচ্ছে মিয়ানমার ও অন্যান্য দেশের শরণার্থী প্রার্থীদের। অবৈধ এ বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের দাবি, এ অর্থ জাতিসংঘের শীর্ষ ব্যক্তিবর্গের পকেটেও যাচ্ছে। এক কর্মকর্তা নিজেদের চোর বলে আখ্যায়িত করলেন অকপটে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর আনুষ্ঠানিক শরণার্থী মর্যাদা সূচক কার্ড বিক্রি বাণিজ্য উঠে এসেছে আল-জাজিরার গোপন তদন্ত অনুসন্ধানে। এতে জাতিসংঘের এক অনুবাদক দাবি করেন, এ বাণিজ্যের যাবতীয় অর্থ জাতিসংঘের শীর্ষ ব্যক্তিদের পকেট পর্যন্ত যাচ্ছে। আমরা এটা দীর্ঘ দিন ধরে করছি। আমরা চোর, আর আমাদের উপরের চোরদের আমরা খুঁজি। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের অবহেলিত বন্দিশালাগুলো পরিদর্শনের জন্য আল-জাজিরার ‘কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স প্রোগ্রাম ১০১ ইস্ট’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপন স্টিভ চাও নিজেকে পাদ্রি হিসেবে উপস্থাপন করেন। সেখানে তিনি অনেক শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেন। এদের অনেকে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা মুসলিম। এরা মালয়েশিয়ার জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত। অনুষ্ঠানটি এ সপ্তাহে সম্প্রচারিত হয়। সাক্ষাৎকারে এসব শরণার্থী বলেছেন, তারা পুলিশের কাছে হয়রানি আর শোষণের শিকার হয়েছে। তাদের কাজ করতে এবং তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মানবেতর পরিস্থিতিতে তারা বাস করছেন। অনেক শরণার্থীকে মারধর করা হয়, হ্যান্ডকাফ পরিয়ে বা শৃঙ্খলিত করে রাখা হয়। দিনের পর দিন খাবার দেয়া হয় না অনেককে। মালয়েশিয়ায় আনুমানিক দেড় লাখ শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীর বসবাস। এর বেশির ভাগই মিয়ানমারের। মানবাধিকার গ্রুপগুলো বলছে, মালয়েশিয়া জাতিসংঘের ১৯৫১ সালের শরণার্থী চুক্তি বা ১৯৬৭ সালের শরণার্থী স্বীকৃতি প্রোটোকলের অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় কর্তৃপক্ষের দ্বারা নির্যাতনের চরম ঝুঁকি রয়েছে। সাধারণত ইউএনএইচসিআর-এর সকল সেবা বিনামূল্যে দেয়ার কথা। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার পাচার সূচকে এ বছর নিচের ধাপে নেমে এসেছে মালয়েশিয়া। এতে দেশটির নিম্নমানের মানবাধিকার রেকর্ড এবং বন্দিশালায় আটক ব্যক্তিদের পাচারে কর্মকর্তাদের যোগসাজশের কথা বলা হয়েছে। মালয়েশিয়ার ইউএনএইচসিআর মিশনে প্রতিদিন হাজারের বেশি শরণার্থী যোগ হয়। মিশনের এক মুখমাত্র জানান, কথিত দুর্নীতির দাবি নিয়ে তারা অবগত আর দুর্নীতি নিয়ে তাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে।
No comments