রাজধানীর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো সাত সূচকের পাঁচটিতেই পিছিয়ে by মোশতাক আহমেদ
ঢাকার সরকারি বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার বিভিন্ন সূচকে বেসরকারি বিদ্যালয়ের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে। ঢাকার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) করা প্রাতিষ্ঠানিক স্বমূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ তুলনামূলক চিত্র পাওয়া গেছে। ঢাকার শীর্ষস্থানীয় ২২টি বিদ্যালয়ের মূল্যায়নের প্রাপ্ত পয়েন্ট পর্যালোচনায় দেখা গেছে, যে সাতটি সূচকে এ জরিপ করা হয়েছে, তাতে পাঁচটি সূচকেই ঢাকার ১১টি বেসরকারি বিদ্যালয় সরকারি বিদ্যালয়গুলোর চেয়ে এগিয়ে। ১১টি সরকারি বিদ্যালয়ের মধ্যে ছয়টি এ শ্রেণির ও পাঁচটি বি শ্রেণির। আর বেসরকারি ১১টি বিদ্যালয়ই এ শ্রেণির। এ ছাড়া স্বমূল্যায়নে দেশের ৩১৭টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চিত্রও প্রত্যাশিত নয় বলে মনে করছেন মাউশির কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ মূল্যায়ন কতখানি বস্তুনিষ্ঠ হয়েছে, সেটাই আগে ভাবা দরকার। কারণ, মূল্যায়নের তথ্য দিয়েছেন প্রধান শিক্ষকেরা। আর সরকারি বিদ্যালয়গুলো খারাপ—এটা ঢালাও বলতে রাজি নই। এমনও হতে পারে, যেহেতু সরকারি বিদ্যালয়গুলো সরাসরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে, তাই তাঁরা বস্তুনিষ্ঠ তথ্য দিয়েছেন। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিচালনা কমিটির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তথ্য দিয়ে থাকতে পারে।’
শিক্ষাসংক্রান্ত সাতটি সূচকে মোট ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে গত বছর বিদ্যালয়গুলোর ওপর জরিপ চালিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে মাউশির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখা। এতে সহায়তা করে মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর উন্নয়ন প্রকল্পনা। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে মাউশি।
মূল্যায়ন প্রতিবেদনে শীর্ষে থাকা ঢাকার ১১টি সরকারি ও ১১ বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, সরকারি বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ১০০-এর মধ্যে ৯০-এর সামান্য কিছু বেশি নম্বর পেয়ে ‘এ’ শ্রেণিতে নাম লিখিয়েছে ধানমন্ডি বয়েজ হাইস্কুল, মোহাম্মদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় ও মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। এ ছাড়া ধানমন্ডি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, গভ. ল্যাবরেটরি উচ্চবিদ্যালয়, খিলগাঁও সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, তেজগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, তেজগাঁও বালক বিদ্যালয় বি শ্রেণিতে পড়েছে। এগুলো ৮০ নম্বরের সামান্য বেশি পেয়েছে।
অন্যদিকে ঢাকার বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ‘এ’ শ্রেণিতে পড়া শীর্ষ ১১টি বিদ্যালয় হলো রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল মডেল উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ, ডেমরার শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হলিক্রস গার্লস স্কুল, মোহাম্মদ প্রিপারেটরি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, সেন্ট যোসেফ হাইস্কুল ও মনিপুর উচ্চবিদ্যালয়। সাতটি সূচকে এ বিদ্যালয়গুলো ৯০ থেকে ৯৯-এর বেশি পয়েন্ট পেয়েছে।
সাতটি সূচকের আলাদা বিশ্লেষণে দেখা যায়, শিখন ও শেখানোর পরিবেশ, প্রতিষ্ঠান প্রধানের নেতৃত্ব, ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যকারিতা, শিক্ষার্থীদের কৃতিত্ব ও সহশিক্ষাক্রম কর্মসূচিতে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো এগিয়ে রয়েছে। তবে শিক্ষকদের পেশাদারত্ব ও শিক্ষক-অভিভাবক সম্পর্কের বেলায় সরকারি বিদ্যালয়গুলো কিছুটা এগিয়ে।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, যেসব সূচকে মূল্যায়নটি করা হয়েছে সেগুলো তাদের প্রতিষ্ঠানে ঠিকমতো বাস্তবায়ন করা হয়। পড়াশোনার প্রতি বেশিও নজর দেওয়া হয়। অন্যদিকে ‘বি’ শ্রেণিতে পড়ার কারণ কী জানতে চাইলে গভ. ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, মূল্যায়ন ফরমে কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে। তাঁরা প্রথমবার যখন এই ফরমটি পূরণ করেন, তখন তিনটি বিষয়ে অস্পষ্টতা ছিল বলে ঠিকভাবে পূরণ করতে পারেননি। কিন্তু এরপর সেটি সংশোধন করে দেওয়া হয়। মনে হয় সংশোধনের পর ডাটা এন্ট্রি হয়নি। যে কারণে তাদের বিদ্যালয় ‘বি’ শ্রেণিতে পড়েছে।
মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, সারা দেশে ১৮ হাজার ৪২৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে এ শ্রেণির বিদ্যালয় এক হাজার ২০টি। এর মধ্যে সরকারি হলো ৯৫টি। বি শ্রেণির নয় হাজার ৯৮টি, সি শ্রেণির সাত হাজার ৩১৯টি, ডি শ্রেণির ৯৫৭টি এবং ৩১টি ই শ্রেণির বিদ্যালয় চিহ্নিত হয়েছে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন বলেন, সরকারি বিদ্যালয়গুলোর এ চিত্র হতাশাজনক। এ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এ জন্য অধিকতর তদারক করতে হবে।
প্রতিবেদন নিয়ে গতকাল রাজধানীর জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, এ মূল্যায়ন শতভাগ সঠিক সেটা ভাবার কারণ নেই। আগামী দুই বছরের মধ্যে মূল্যায়নের মাপকাঠি আরও অনেক বেশি উন্নত করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ মূল্যায়ন কতখানি বস্তুনিষ্ঠ হয়েছে, সেটাই আগে ভাবা দরকার। কারণ, মূল্যায়নের তথ্য দিয়েছেন প্রধান শিক্ষকেরা। আর সরকারি বিদ্যালয়গুলো খারাপ—এটা ঢালাও বলতে রাজি নই। এমনও হতে পারে, যেহেতু সরকারি বিদ্যালয়গুলো সরাসরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে, তাই তাঁরা বস্তুনিষ্ঠ তথ্য দিয়েছেন। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিচালনা কমিটির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তথ্য দিয়ে থাকতে পারে।’
শিক্ষাসংক্রান্ত সাতটি সূচকে মোট ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে গত বছর বিদ্যালয়গুলোর ওপর জরিপ চালিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে মাউশির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখা। এতে সহায়তা করে মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর উন্নয়ন প্রকল্পনা। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে মাউশি।
মূল্যায়ন প্রতিবেদনে শীর্ষে থাকা ঢাকার ১১টি সরকারি ও ১১ বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, সরকারি বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ১০০-এর মধ্যে ৯০-এর সামান্য কিছু বেশি নম্বর পেয়ে ‘এ’ শ্রেণিতে নাম লিখিয়েছে ধানমন্ডি বয়েজ হাইস্কুল, মোহাম্মদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় ও মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। এ ছাড়া ধানমন্ডি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, গভ. ল্যাবরেটরি উচ্চবিদ্যালয়, খিলগাঁও সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, তেজগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, তেজগাঁও বালক বিদ্যালয় বি শ্রেণিতে পড়েছে। এগুলো ৮০ নম্বরের সামান্য বেশি পেয়েছে।
অন্যদিকে ঢাকার বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ‘এ’ শ্রেণিতে পড়া শীর্ষ ১১টি বিদ্যালয় হলো রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল মডেল উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ, ডেমরার শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হলিক্রস গার্লস স্কুল, মোহাম্মদ প্রিপারেটরি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, সেন্ট যোসেফ হাইস্কুল ও মনিপুর উচ্চবিদ্যালয়। সাতটি সূচকে এ বিদ্যালয়গুলো ৯০ থেকে ৯৯-এর বেশি পয়েন্ট পেয়েছে।
সাতটি সূচকের আলাদা বিশ্লেষণে দেখা যায়, শিখন ও শেখানোর পরিবেশ, প্রতিষ্ঠান প্রধানের নেতৃত্ব, ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যকারিতা, শিক্ষার্থীদের কৃতিত্ব ও সহশিক্ষাক্রম কর্মসূচিতে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো এগিয়ে রয়েছে। তবে শিক্ষকদের পেশাদারত্ব ও শিক্ষক-অভিভাবক সম্পর্কের বেলায় সরকারি বিদ্যালয়গুলো কিছুটা এগিয়ে।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, যেসব সূচকে মূল্যায়নটি করা হয়েছে সেগুলো তাদের প্রতিষ্ঠানে ঠিকমতো বাস্তবায়ন করা হয়। পড়াশোনার প্রতি বেশিও নজর দেওয়া হয়। অন্যদিকে ‘বি’ শ্রেণিতে পড়ার কারণ কী জানতে চাইলে গভ. ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, মূল্যায়ন ফরমে কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে। তাঁরা প্রথমবার যখন এই ফরমটি পূরণ করেন, তখন তিনটি বিষয়ে অস্পষ্টতা ছিল বলে ঠিকভাবে পূরণ করতে পারেননি। কিন্তু এরপর সেটি সংশোধন করে দেওয়া হয়। মনে হয় সংশোধনের পর ডাটা এন্ট্রি হয়নি। যে কারণে তাদের বিদ্যালয় ‘বি’ শ্রেণিতে পড়েছে।
মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, সারা দেশে ১৮ হাজার ৪২৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে এ শ্রেণির বিদ্যালয় এক হাজার ২০টি। এর মধ্যে সরকারি হলো ৯৫টি। বি শ্রেণির নয় হাজার ৯৮টি, সি শ্রেণির সাত হাজার ৩১৯টি, ডি শ্রেণির ৯৫৭টি এবং ৩১টি ই শ্রেণির বিদ্যালয় চিহ্নিত হয়েছে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন বলেন, সরকারি বিদ্যালয়গুলোর এ চিত্র হতাশাজনক। এ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এ জন্য অধিকতর তদারক করতে হবে।
প্রতিবেদন নিয়ে গতকাল রাজধানীর জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, এ মূল্যায়ন শতভাগ সঠিক সেটা ভাবার কারণ নেই। আগামী দুই বছরের মধ্যে মূল্যায়নের মাপকাঠি আরও অনেক বেশি উন্নত করা হবে।
No comments