কার বউ? কার ছেলে? by আব্বাছ হোসেন
লক্ষ্মীপুরে মারজাহান বেগম নামে এক বউয়ের
দুই স্বামী। তাকে নিয়ে চলছে দু’জনের টানাটানি- সাড়ে চার মাসের শিশু ছেলে আল
আমিন কার। এ ঘটনার তদন্তের দাবি করেছেন লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার
সাগরী গ্রামের রফিক উল্যার ছেলে মারজাহান বেগমের স্বামী জয়নাল আবেদিন।
জয়নাল আবেদিন গতকাল লক্ষ্মীপুর আদালত প্রাঙ্গণে কাঁদতে কাঁদতে মানবজমিনকে
বলেন, স্ত্রী মারজাহান বেগম ও সন্তান আল আমিন ছাড়া আমি বাঁচবো না। আমি আমার
স্ত্রী ও সন্তানকে চাই। তিনি আরও জানান, ২০১১ সাল থেকে মারজাহান বেগমের
সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রথমে যোগাযোগ, তারপর প্রেম, ভালবাসা ও অতঃপর সঙ্গে
বিয়ে। ২০১২ সালের ৫ই মে তিন লাখ টাকার দেনমোহরে কাবিননামা রেজিস্ট্রি হয়।
পরে ১০ই মে লক্ষ্মীপুর নোটারি পাবলিক এফিডেভিটের মাধ্যমে আইন অনুযায়ী বিয়ের
কাজ সম্পন্ন হয়। দীর্ঘদিন মারজাহান বেগম আমার রায়পুরে সাগরী গ্রামের
বাড়িতে বসবাস করে আসছে। সাড়ে ৪ মাস আগে আমাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তান
জন্ম নেয়। তার নাম রাখা হয়েছে আল আমিন। সমপ্রতি আমার স্ত্রী মারজাহান বেগম ও
আমার পুত্র সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। পরে স্ত্রী সন্তানকে
দেখতে শ্বশুরবাড়িতে যাই। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে স্ত্রীকে আমার বাড়িতে আসার
জন্য বলা হয়। এ সময় শ্বশুর বাড়ির লোকজন ও স্ত্রী মারজাহান বেগম পরের দিন
যাবে বলে আমাকে জানায়। এরপর আমি নিজ বাড়িতে ফিরে আসি। গত ৯ই অক্টোবর
নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানায় আমার স্ত্রী মারজাহান বেগম একটি
চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলা করে আমার বিরুদ্ধে। এর পরে জানতে পারি আমার
স্ত্রী মারজাহান বেগমের এর আগেও একটি বিয়ে হয়েছে। ওই স্বামী আজাদ হোসেন
বিদেশ থেকে দেশে এসে আমার স্ত্রী মারজাহান বেগমের সঙ্গে ঘরসংসার শুরু
করেছে। বর্তমানে মারজাহান বেগম স্বামী হিসেবে আমাকে স্বীকৃত দিচ্ছে না এবং
আমার শিশু সন্তান আল আমিনকে দেখতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
এ দিকে মারজাহান বেগমের দুই স্বামী, এক শিশু সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে সাধারণ মানুষ ও দুই পরিবারের মধ্যে চলছে নানা গুঞ্জন। তবে প্রথম স্বামী আজাদ হোসেন ৬ মাস আগে বিদেশ থেকে ছুটিতে বাড়িতে আসেন। গত ২০ দিন আগে ছুটি শেষ করে পুনরায় বাহরাইনে কর্মস্থলে চলে যান। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার ও সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করে পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করার দাবি করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী, জয়নাল আবেদিন ও তার পরিবার।
নিকাহনামা সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের চরকাকড়া গ্রামের অলি আহমেদের ছেলে আজাদ হোসেনের সঙ্গে ২০০৯ সালের ২৩শে নভেম্বর মারজাহান বেগমের তিন লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহ হয়। এরপর আজাদ চলে যায় বিদেশে বাহরাইন। এসময় স্বামীর অনুপস্থিতিতে বিয়ের তথ্য গোপন রেখে লক্ষ্মীপুরের জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে গড়ে তোলেন গভীর সম্পর্ক। এক পর্যায়ে উভয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ২০১২ সালের ৯ই মে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার সাগরদী গ্রামের রফিক উল্যার ছেলে জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে তিন লাখ টাকা দেনমোহরে নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের চরকাকড়া গ্রামের ওবায়দুল হকের মেয়ে মারজাহান বেগমের বিয়ে হয়। লক্ষ্মীপুর নিকাহ অফিসের কাজী মাওলানা সালেহ আহমদ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নিকাহ অফিসের কাজী হাফেজ আহমদ পৃথক পৃথকভাবে তাদের নিকাহ সম্পন্ন করেন।
মামা আবদুল হাই জানান, বিষয়টি মিটমাটের প্রক্রিয়া চলছে।
No comments