থাকেন ভারতে বেতন জমা হয় ব্যাংকে
শিক্ষিকা লিপিকা সরকার ভারতে। তাও এক বছর আগে থেকে। অথচ তার বেতন-ভাতা সব জমা হচ্ছে ব্যাংকে। আবার সেই অর্থ তুলেও নেয়া হচ্ছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালেরই ঐতিহ্যবাহী নুরিয়া স্কুলে। গতকাল এ ঘটনা টের পেয়ে শিক্ষা অফিসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা স্কুলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে হাজিরা খাতা জব্দ করে নিয়ে যান। তবে সভাপতি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, নুরিয়া স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা লিপিকা সরকার (ইনডেস্ক নং-১০৫৯৭৬৮) চিকিৎসার জন্য ঢাকা যান ২০১৩ সালের নভেম্বরে। এরপর তিনি আর দেশে আসেননি। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারি বেতন প্রতি মাসে উত্তোলন করে রূপালী ব্যাংকের লিপিকা সরকারের নিজস্ব অ্যাকাউন্টে (১২৩২০০ নং) জমা করতে থাকেন, যা এখনও অব্যাহত আছে। শুধু তাই নয় ব্যাংকে সংবাদ নিয়ে জানা গেছে চাঞ্চল্যকর সংবাদ। গত জুন মাসে এ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। লিপিকা ছুটিতে যাওয়ার পর তার বেতন বিলের পক্ষে প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষর করেছেন। এমনকি ঈদ ও কোরবানির বোনাসও একইভাবে তার অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়। আবার এ অ্যাকাউন্ট থেকে এ বছরই ২-৩ বার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিপ্তরের আইন শাখার এক কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের ছুটি হলো বিশেষ ছুটি। যা বিনা বেতনে এবং এ ছুটিকালীন সময়ে তার অভিজ্ঞতা কাউন্ট হবে না। এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। সূত্র জানায়, তিনি বর্তমানে ঢাকায় আছেন। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর মীর জসিম জানান, এ ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবহিত নন। প্রধান শিক্ষক আমার কাছে বিল নিয়ে এলে আমি সরল বিশ্বাসে বিলে স্বাক্ষর করি। আর প্রতি শিক্ষকের বেতনের অর্থ তাদের নিজস্ব অ্যাকাউন্টে জমা হয়, যা অন্য কারও পক্ষে উত্তোলন সম্ভব নয়। তবে লিপিকা সরকারের বিষয়টি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গতকাল স্কুলে শিক্ষা বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছুটে যান। তিনি হাজিরা খাতায় লিপিকা সরকারের কোন স্বাক্ষর না দেখতে পেয়ে অবাক হন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঢাকায় থাকায় সহকারী প্রধান শিক্ষক জানান লিপিকা সরকার মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন। এর সত্যতা যাচাইয়ে ছুটির আবেদনপত্রটি দেখতে চাইলে তা প্রধান শিক্ষকের কাছে বলে জানান। এরপর ওই কর্মকর্তা হাজিরা খাতা জব্দ করেন বলে জানা গেছে। বিকালে ওই খাতার অনুলিপি সহকারী প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে সত্যায়িত করে খাতা ফেরত দেন বলে জানা গেছে।
No comments