টিআইবির প্রতি তথ্যমন্ত্রী-তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন দিন
সংসদ সদস্যদের নিয়ে সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণা প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সংসদে এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, টিআইবি সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যমূলক ও সচেতনভাবে জনগণের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করতে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
অসম্পূর্ণ ও তথ্য উপাত্তবিহীন প্রতিবেদনটি সংস্থার প্রধান কার্যালয় জার্মানির বার্লিনে পাঠানো হবে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'হেড কোয়ার্টারকে বলব- এই প্রতিবেদন আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন পেশ করুন।'গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন হাসানুল হক ইনু। বিকেল ৪টার পর ডেপুটি স্পিকার শওকত আলীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
মন্ত্রী বলেন, সমাজের বিভিন্ন মহল ও গোষ্ঠীর মধ্যে দুর্নীতিবাজ থাকা সত্ত্বেও তাদের বাইরে রেখে কেবল রাজনীতিবিদদের ঢালাওভাবে দুর্নীতিবাজ বলা একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। টিআইবিও সেই ফ্যাশন অনুসরণ করেছে। তারা সংসদ সদস্যদের হেয় এবং এই মহান সংসদকে খাটো করেছে।
ইনু বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন, যখন এই নীতি উপস্থাপন করার চেষ্টা চলছে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ঠিক তখনই টিআইবি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
মন্ত্রী বলেন, 'তাদের প্রতিবেদনে এমন কোনো তথ্য নেই যার আলোকে সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। তারা পূর্ব ধারণার একটি দুর্বল প্রতিবেদন দেশবাসীর সামনে হাজির করেছে। প্রতিবেদন দেখে আমি হতাশ হয়েছি।'
'সংসদ সদস্যদের নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদন' বিষয়ক সরকার দলের সদস্য শাহরিয়ার আলমের এক প্রশ্নের জবাবে হাসানুল হক ইনু বলেন, টিআইবির পূর্ব ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করতে সুবিধামতো পদ্ধতি বেছে নিয়েছে। তারা আলোচিত গবেষণাকাজটি সামাজিক গবেষণায় অনুসৃত পদ্ধতি যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। তারা সুবিধাজনক নমুনায়ন পদ্ধতি (Convenience Sampling) ব্যবহার করেছে, যা প্রতিনিধিত্বশীল ফলাফল উৎপাদন করে না বরং পক্ষপাত দুষ্ট হয়।
বিএনপির সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানুর প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান মহাজোট সরকারের সময় নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। তবে এ সময় বিভিন্ন ঘটনায় আটজন সাংবাদিক খুন হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন মন্ত্রী। খুন হওয়া আটজন হলেন হলেন, মাছরাঙা টেলিভিশনের সাগর সারয়ার, এটিএন বাংলার মেহেরুন রুনি, যশোরের দৈনিক গ্রামের কাগজের শার্শা উপজেলার কাশিমপুর প্রতিনিধি জামাল উদ্দিন, এনটিভির মো. আতিকুল ইসলাম, দৈনিক জনতার সহসম্পাদক মো. ফরহাদ খান, এটিএন বাংলার ক্যামেরাম্যান শফিকুল ইসলাম মিঠু, সিলেটের সাংবাদিক ফতেহ ওসমানী এবং দৈনিক ভোরের ডাকের ফরিদুর রহমান রঞ্জু।
এদিকে সরকারদলীয় মহিলা সদস্য ফরিদা আখতারের প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, টেলিভিশনের টক শোর অশালীন বক্তব্যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সংক্ষুব্ধ হলে দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় ব্যবস্থা নিতে পারেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, দেশের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার টক শোতে কেউ অশালীন বক্তব্য দিলে তার দায়-দায়িত্ব ওই ব্যক্তি ও আয়োজনকারী হিসেবে সংশ্লিষ্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ওপর বর্তায়। সরকারদলীয় সদস্য তাজুল ইসলামের এ সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সঙ্গে দায়িত্বশীলতা ও নীতিবোধ গভীরভাবে সম্পর্কিত। পূর্ণ বাক স্বাধীনতার সুযোগে কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের চরিত্র হনন কারো কাম্য নয়। সাংবিধানিক সীমারেখা প্রতিপালন করা সব সাংবাদিকের জন্য অপরিহার্য।
No comments