স্নো ওয়ার্ডেন by মানিক রহমান
ছবিটা দেখুন। একজন স্নো ওয়ার্ডেন কাজ করছে। ছবিটা তার কাজ বলে দিচ্ছে। তবু ব্যাখ্যা দেওয়া যেতে পারে। স্নো ওয়ার্ডেন মানে তুষার প্রহরী। সাধারণ প্রহরী বলতে যা বোঝায় তা থেকে তুষার প্রহরী কিছুটা ভিন্ন। খবরটা বিবিসির। সম্প্রতি বিবিসি নিউজ একটি সংবাদে শব্দটি এনেছে।
সেই খবরেরই ছবি এটা। ইংল্যান্ডের ইয়র্ক শহরের স্নো ওয়ার্ডেন কর্তৃপক্ষ একশ'জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দিয়েছে। যারা প্রচণ্ড শীতে রাস্তায় তুষারাপাত পড়লে পরিষ্কার করবে। বোঝাই যাচ্ছে ইংল্যান্ডে শীতের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। আমাদের দেশেও ব্যতিক্রম নয়। অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহ শেষ হচ্ছে। ক'দিন পরই হেমন্তের বদলে ঋতু হিসেবে শীতের আগমন ঘটবে। সেটা হয়তো কাগজে-কলমে কিংবা হিসাবের বেলায়। বাস্তবের শীত কিন্তু চলে এসেছে। গ্রামে তো বটেই, শহরেও এখন শীতের ছাপ শুরু হয়ে গেছে। ভোররাতের হিমেল হাওয়ায় প্রত্যেকে কাঁথা, কম্বল কিংবা লেপটা গায়ে তুলে না নিয়ে পারে না। শীতের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে সর্বত্র। দোকানিরা যেমন গরম কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন, তেমনি ফ্যাশন হাউসগুলোও বসে নেই। লেপ-তোশকের দোকানিদের শ্রান্তি নেই। মানুষ ছুটছে হাটে-মার্কেটে। কিনছে তার কাঙ্ক্ষিত শীতের পোশাক।শীতের এই প্রস্তুতিটা যেমন ইংল্যান্ডে দেখলাম, তেমনি দেশেও দেখা গেল। আসলে শীতের প্রকোপ যে দেশে যেমন প্রস্তুতিটাও সেখানে তেমন। ইংল্যান্ডের মতো শীতপ্রধান দেশগুলোর কথা চিন্তা করা যাক। যেখানে তাপমাত্রা মাইনাস ডিগ্রিতে থাকে। যেখানে রাস্তায় বরফ জমে। গোটা বিশ্বের প্রায় ৭২টি দেশে বরফ পড়ে। ইউরোপের প্রায় অধিকাংশ দেশের এ অবস্থা। তাদের প্রস্তুতির জন্য যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সিটির প্রস্তুতির কথা এনেছে বিবিসি। এনেছে স্নো ওয়ার্ডেনের কথা। নিয়োগকৃত এসব তুষার প্রহরীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। গত বছরও কর্তৃপক্ষ এ রকম ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দিয়েছিল। সেটা যথেষ্ট নয় বলে এ বছর সংখ্যাটা একশ'। দায়িত্ব পালন করাকালে তাদের একটি বেলচা, ভারী কোট এবং হাতের গ্গ্নাভস দেওয়া হবে। আর তাদের নিরাপত্তার জন্য প্রশিক্ষণ নিয়েই তারা কাজে নামবে। স্নো ওয়ার্ডেনের ধারণা, প্রথম উদ্ভাবিত হয় কানাডার ক্যালগরি সিটির একটি গ্রুপের মাধ্যমে। দ্য স্নো অ্যাঞ্জেল নামের এই গ্রুপটি প্রচণ্ড শীতে ভুক্তভোগীদের সাহায্য করে থাকে। এখানেও শীত প্রস্তুতির আরেকটা স্বরূপ পাওয়া গেল। আমাদের দেশেও শীত ভুক্তভোগী মানুষের জন্য অনেকেই স্বেচ্ছাসেবকমূলক কাজ করেন। সেটা মোটাদাগে বললে শীতার্তদের জন্য কাপড় সংগ্রহ। কয়েকদিন আগেও আমরা সামহোয়ারইন ব্লগে 'ব্লগারদের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম ২০১২' শীর্ষক স্টিকি পোস্ট দেখেছি। এটা তারই অংশ। কারণ, শীত সবার জন্য সমান আসে না। কেউ প্রচণ্ড শীতে কষ্ট পায়। শীতের পোশাক পায় না। এমনকি বিভিন্ন সময়ে পত্রপত্রিকায় আমরা শীতে মারা যাওয়ার সংবাদও দেখি। একই সঙ্গে তাদের পাশে দাঁড়ানোর মতো মানুষও আমাদের সমাজে রয়েছে। যেটা সকল সমাজে, দেশে সমান। তবে এখানকার ইয়র্ক শহরের স্নো ওয়ার্ডেনরাই যে মানুষের চলাচলের পরিবেশ নিশ্চিত করতে রাস্তা থেকে বরফ সরাবে তা নয়। আসলে তাদের কাজ হলো আশপাশের ছোট রাস্তাগুলো দেখা। আর বড় বড় রোড দেখতে কর্তৃপক্ষ তো রয়েছেই। এমনটাই বিবিসি দায়িত্বপ্রাপ্ত একজনের সূত্র ধরে বলছে।
No comments