ইরানকে ঠেকাতে ইউএইর কাছে অস্ত্র বিক্রির চিন্তা যুক্তরাষ্ট্রের

সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) কাছে বিপুল পরিমাণ সামরিক রসদ বিক্রির পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে বাংকার-বিধ্বংসী কয়েক হাজার অত্যাধুনিক বোমাসহ অন্যান্য যুদ্ধোপকরণ রয়েছে। ইরানের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক জোট গঠন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনায় জড়িত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গতকাল শুক্রবার এ কথা জানিয়েছে।ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে, পারস্য উপসাগরের মিত্র রাষ্ট্র ইউএইর কাছে অস্ত্র বিক্রির ব্যাপারে খুব শিগগির হয়তো সরকারিভাবে ঘোষণা দেওয়া হবে।


অস্ত্র বিক্রির ব্যাপারে সম্প্রতি ইউএইর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব চুক্তি হয়েছে, এর পাশাপাশি আরো চার হাজার ৯০০টি যুদ্ধোপকরণ (জেডিএএম) বিক্রির প্রস্তাবটি বর্তমানে মার্কিন সামরিক সদর দপ্তর পেন্টাগনের বিবেচনাধীন। এ জেডিএএম বাংকার-বিধ্বসী বোমা হিসেবে পরিচিত। মার্কিন বোয়িং কম্পানি এসব সরঞ্জাম তৈরি করে। এসব চুক্তির অধীনে বিমান থেকে ভূমিতে আঘাত হানতে সক্ষম ৫০০টি ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে। পত্রিকাটির দাবি, ছয় সদস্যের উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদকে (জিসিসি) ইরানের বিরুদ্ধে সমন্বিতভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে ওবামা প্রশাসন। সৌদি আরব, বাহরাইন, ওমান, কাতার, ইউএই ও কুয়েতের সমন্বয়ে এ পরিষদ গঠিত।
সম্প্রতি ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির ব্যাপারে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় তেহরান বিষয়ে ওয়াশিংটনের উদ্বেগ আরো বেড়েছে। তবে এখনই ইরানে সামরিক হামলায় আগ্রহী নয় যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাবটি শিগগিরই মার্কিন কংগ্রেসে তোলা হতে পারে। তবে এ ব্যাপারে পেন্টাগন বা মার্কিন প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগী সংস্থার (ডিএসসিএ) পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ডিএসসিএ ভিন্ন দেশের কাছে মার্কিন সরকারের অস্ত্র বিক্রির ওপর নজরদারি করে।
পত্রিকাটির দাবি, এসব অস্ত্রের মাধ্যমে ইউএইর বিমানবাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো হবে। বিমান থেকে ভূমির নিচে লুকানো বাংকার ও সুড়ঙ্গে আঘাত হানতে সক্ষম জেডিএএম। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাস, মাটির নিচে বাংকার ও সুড়ঙ্গের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র তৈরির কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে ইরান।
প্রস্তাবিত এ অস্ত্র বিক্রির ব্যাপারে বোয়িং কম্পানির মুখপাত্র গারেট ক্যাস্পার জানান, বিদেশি সামরিক বাহিনীর কাছে প্রস্তাবিত অস্ত্র বিক্রির ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে অপারগ। কারণ হিসেবে ক্যাস্পার বলেন, দুই দেশের সরকারি পর্যায়ের আলোচনার ব্যাপার এটি।
ইউএইর কাছে প্রস্তাবিত এ অস্ত্র বিক্রির বাইরে সম্প্রতি সৌদি আরবের কাছে রেকর্ড ছয় হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে ওবামা প্রশাসন। এ তালিকায় রয়েছে অত্যাধুনিক এফ-ফিফটিন যুদ্ধবিমান, প্রায় দুই হাজার পাউন্ড জেডিএএম ও অন্যান্য শক্তিশালী যুদ্ধোপকরণ। এ ছাড়া ইউএইর কাছে ৭০০ কোটি ডলারের টার্মিনাল মিসাইল ডিফেন্স প্রোগাম বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

No comments

Powered by Blogger.