নেপাল থেকে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ কেনার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের স্যাপ্টকোসি হাই ড্যাম থেকে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ কেনার প্রস্তাব দিয়েছেন। এ বাঁধটি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে নেপালের ভিতরে নির্মিত হবে। গতকাল আদ্দুতে সমাপ্ত ১৭তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের এক ফাঁকে সাংগিরি-লা রিসোর্টে নেপালের প্রধানমন্ত্রী ড. বাবুরাম ভট্টরাইর সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এ প্রস্তাব দেন।


প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের সঙ্গে জলবিদ্যুত্ উত্পাদন ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে আগামী ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের জন্য নেপালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ বা সমতার ভিত্তিতে বণ্টন বা সরাসরি ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে প্রকল্প নির্মাণের প্রস্তাব দেন। উভয় প্রধানমন্ত্রী
উপ-আঞ্চলিক ও আঞ্চলিক পর্যায়ে দ্রুত জলবিদ্যুত্ ও জলাধার নির্মাণ প্রকল্প নিতে একমত পোষণ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গার পানিপ্রবাহ বৃদ্ধির জন্য নেপালে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল যৌথ জলাধার নির্মাণ করতে পারে। এই তিন দেশের ৬৮ হাজার ৬০০ কিউসেক প্রবাহ বৃদ্ধির সম্ভাবনাময় স্যাপ্টকোসি বাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন।
নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য স্থল শুল্ক স্টেশন ও স্থলবন্দর উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। রোহনপুর-সিঙ্গাবাদ রুটে নেপালে যাওয়ার রেল ট্রানজিটের জন্য বাংলাদেশ এরই মধ্যে ভারতের সঙ্গে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এই রুট দিয়ে নেপালে প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন সার পরিবহন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১২ সালের মধ্যে বিরল-রাধিকাপুর সেক্টরের রেলপথ মাল্টিগেজে রূপান্তরিত হলে তা বাংলাদেশ ও নেপাল এবং একই সঙ্গে তৃতীয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সমপ্রসারণে সহায়ক হবে। তার ভারত সফরকালে ভারতের সঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে নেপালের কার্গো বাংলাদেশের ভেতরে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট থেকে ২০০ মিটার পর্যন্ত প্রবেশের অনুমতি পাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও নেপাল পর্যটনের উন্নয়ন, দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ এবং বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নেপালের শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করতে পারে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় বাবুরাম ভট্টরাইকে অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, দেশটিতে শান্তি প্রক্রিয়া ও সংবিধান রচনার কাজ সফল হবে। তিনি নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে তার সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ অন্যান্যের মধ্যে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.