যুক্তরাষ্ট্রসহ চার দেশের দূতাবাস বন্ধ: কিয়েভে বিপদ সংকেত ভয়াবহ যুদ্ধের আশঙ্কা by মোহাম্মদ আবুল হোসেন

ভয়াবহ এক যুদ্ধের আশঙ্কা। আতঙ্কে দৃশ্যত কাঁপছে ইউরোপ। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের দূতাবাস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, গ্রিস ও স্পেন। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বন্ধ করে দেয়ার পর পরই কিয়েভে সাইরেন বাজানো হয়েছে। তার কিছু সময় পরে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে ‘এন্টি-পারসোনেল’ স্থলমাইল দিতে রাজি হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্র যদি সামরিক সহায়তা কর্তন করে তাহলে ইউক্রেন যুদ্ধে হেরে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গাজা, লেবানন, ইরানকে কেন্দ্র করে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। তা এখনো বিদ্যমান। কিন্তু তাকে যেন অতিক্রম করে গেছে রাশিয়ার ভেতরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের হামলা। এটাকে শুধু একটি হামলা হিসেবে দেখলে ভুল হবে। এর বদলা নেয়ার হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমনকি তিনি পারমাণবিক অস্ত্রও ব্যবহার করতে পারেন। যদি সেটাই করেন, তাহলে এই উত্তেজনা, এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশ্বময়। শুরু হতে পারে প্রলয়ঙ্ককরী তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। রাশিয়া যদি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে হামলার জবাব দেয়, তাহলে তার পশ্চিমা শত্রুরাও বসে থাকবে না। ফলে নতুন করে বিশ্ব অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে  পারে। এমন অবস্থায় যেমন যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন, তেমনি আতঙ্কে শঙ্কায় ভুগছে ইউরোপ। এমন আতঙ্কে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস অস্থায়ী সময়ের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

২০শে নভেম্বর বিরাট আকারে আকাশপথে রাশিয়া হামলা চালাবে বলে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কন্স্যুলার অ্যাফেয়ার্স বলেছে- প্রচুর পরিমাণে সতর্কতার জন্য দূতাবাস বন্ধ থাকবে। দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। সারাবিশ্বের সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম এখন রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন যুদ্ধ। এর কারণ, এই যুদ্ধ শুরু হলে পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন। তিনি এসব অস্ত্র ব্যবহারের ওপর থেকে নিজের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন। ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসন এই উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ দেয়া অস্ত্র রাশিয়ার ভেতরে ব্যবহারের বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছেন তিনিও। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে হামলা করেছে ইউক্রেন। তাতে অন্তত একটি সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বেশ কিছু বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইউক্রেনকে ‘এন্টি-পারসোনেল’ স্থলমাইন দিতে চাওয়াকে বাইডেন প্রশাসনের একটি বড় ভুল বলে অভিহিত করেছেন বিশ্বনেতারা। ব্রাজিলে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন থেকে ফিরে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান বলেছেন, শুরু থেকেই আমরা বিশ্বাস করে এসেছি যে- আরও অস্ত্র, আরও রক্তপাত, আরও কান্না, আরও শান্তি প্রচেষ্টা, আরও সদিচ্ছা ও কূটনীতি ছাড়া ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শেষ হবে না। ইউক্রেনকে স্থলমাইল দেয়ার সিদ্ধান্তকে বাইডেন প্রশাসনের বড় ভুল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধের রশদ সরবরাহ দেয়া হবে। ওদিকে উত্তেজনা প্রশমিত করার আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং।

পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নতুন নীতির অধীনে ইউক্রেনের হামলার বিরুদ্ধে উপযুক্ত জবাব দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাশিয়া। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ‘বিশ্বাসযোগ্য’ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কাঁপছে পুরো ইউরোপ। পশ্চিমা কর্মকর্তারা মনে করছেন, রাশিয়ার প্রতিক্রিয়ার ধাক্কা শুধু ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রকে নয়, কাঁপিয়ে দেবে বিশ্বকে। রাশিয়া কি প্রতিক্রিয়া দেখাবে তা নিয়ে ব্রিফ করা হয়েছে যেসব মানুষকে তাদের মতে, ইউরোপে তারা স্যাবোটাজ ঘটাতে পারে, হত্যাকাণ্ড চালাতে পারে, অথবা মধ্যপ্রাচ্যে ও ইন্দো-প্যাসিফিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষকে আরও অস্ত্র সরবরাহ দেয়ার পথকে সুগম করবে। মঙ্গলবার রাশিয়ার যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে ব্রাসেলসে মিটিং করেছেন ইউরোপিয়ান মন্ত্রীরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, পোল্যান্ড, স্পেন ও বৃটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। তারা যৌথ বিবৃতিতে ইউরোপিয়ান নিরাপত্তা বিষয়ক স্থাপনায় পর্যায়ক্রমিকভাবে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন। ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ইউরোপ এবং বিশ্ব জুড়ে হাইব্রিড যুদ্ধ চালাচ্ছে রাশিয়া। এর জন্য আমরা বিশ্বাসযোগ্যভাবে সচেতন। ইউরোপিয়ান মিত্র, বিশ্ব জুড়ে অন্য মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা নিয়ে আমরা কাজ করছি। সম্প্রতি বাল্টিক সাগরে সমুদ্রের তলদেশে দু’টি ফাইবার-অপটিক যোগাযোগ বিষয়ক ক্যাবলে স্যাবোটাজের প্রসঙ্গ তুলে ম্যাথিউ মিলার বলেন, এরকম আরও কোনো কর্মকাণ্ড চালালে তার জন্য রাশিয়াকে জবাবদিহিতায় আনা হবে। কিন্তু যতটা উত্তেজনা এই মুহূর্তে আছে, সম্ভবত তার ফাঁদে পা দেবেন না পুতিন। এরও কারণ আছে। যুক্তরাষ্ট্রে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দৃশ্যত তার সম্পর্ক ভালো। বিখ্যাত সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড-এর মতে ২০২১ সালে ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর কমপক্ষে সাতবার পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন ট্রাম্প। তিনি এবার নির্বাচিত হওয়ার পর পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। আগামী ২০শে জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন ট্রাম্প। পুতিন হয়তো সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন। তিনি হয়তো ট্রাম্পের নির্দেশনার অপেক্ষা করবেন। এরই মধ্যে রাশিয়ার প্রতিপক্ষ ইউক্রেনকে দেয়া সহায়তা কমিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি একটি শান্তিচুক্তি করার কথা বলেছেন, যা খুব বেশি রাশিয়ার পক্ষে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া ক্ষেপণাস্ত্র অ্যাটাকম প্রথম ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে হামলা করে ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, তা আঘাত করেছে রাশিয়ার একটি অস্ত্রের গুদামে। রাশিয়া অবশ্য বলেছে সরাসরি আঘাত করতে পারেনি ওই ক্ষেপণাস্ত্র। ৬টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে তারা ৫টিকে আকাশেই নিষ্ক্রিয় করেছে। অন্যদির ধ্বংসাবশেষ ওই অস্ত্রের গুদামে পড়ে তাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই অঞ্চলটি কুরস্ক অঞ্চলের উত্তর-পশ্চিমে। ব্রায়ানস্কে হামলার বিষয়টি সরাসরি নিশ্চিত করেননি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, এখন আমাদের আছে অ্যাটাকম। এটি ইউক্রেনের দূরপাল্লার সক্ষমতা। সেটা ব্যবহার করবো আমরা। তবে হামলার উপযুক্ত জবাব দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। আগেই পুতিন বলেছেন, তাদের এই জবাব ওয়াশিংটন ও ন্যাটোতে তার মিত্রদের জন্য হবে ভয়াবহ এক হামলা। এই হামলা থেকে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ শুরু হতে পারে। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে যে নিয়মকানুন মেনে চলে রাশিয়া তাকে রিভাইজ করে একটি ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন পুতিন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাশিয়ায় ওই হামলার খবর প্রচার হয়। কিন্তু রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তকে হেয় করে দেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একজন মুখপাত্র। তিনি বলেছেন, কয়েক সপ্তাহ ধরেই তাদের এই রিভিশন চলছিল। কিন্তু রাশিয়ার পারমাণবিক অবস্থানে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। রাশিয়া যে বিবৃতি দিয়েছে তার প্রেক্ষিতে আমাদের পারমাণবিক অবস্থান নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখার কোনো কারণ পাইনি। রাশিয়ার নতুন পারমাণবিক মতবাদের কারণে ইউক্রেনকে সমর্থন দেয়া থেকে বিরত থাকবেন না বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। ব্রাজিলে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে দায়িত্বহীনের মতো বাগাড়ম্বরতা দেখা যাচ্ছে। এর ফলে ইউক্রেনকে আমাদের সমর্থন কমে যাবে না। কিন্তু পর্দার আড়ালে অন্য দৃশ্য। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান অবকাঠামোর ওপর রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হামলার হুমকি নিয়ে আলোচনা করছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান কর্মকর্তারা। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর এই ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। বৃটেন ও ইউরোপিয়ান মন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, রাশিয়ার হাইব্রিড হামলা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের ভিন্নতা, অভূতপূর্ব ভয়াবহতা মারাত্মক নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। পলিটিকোকে ফিনল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যান্টি হাক্কানেন বলেছেন, এসব গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে সুরক্ষিত রাখতে হলে আরও অনেক কিছু করতে হবে ন্যাটো ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে। এ মাসের শুরুর দিকে ন্যাটো সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক রুত্তি’র কণ্ঠেও একই রকম শঙ্কার কথা শোনা গেছে। তিনি বলেছেন, ক্রমবর্ধমান হারে হাইব্রিড হামলা পরিচালনা করছে রাশিয়া। তাতে দেখা যাচ্ছে, এই যুদ্ধ (রাশিয়া-ইউক্রেন) এখন শুধু ইউক্রেনের মধ্যেই নেই। এর ফ্রন্টলাইন ক্রমশ বাল্টিক অঞ্চল, পশ্চিম ইউরোপ এবং আরও উত্তরের দিকে সীমান্ত অতিক্রম করে বহমান। সম্প্রতি বাল্টিক সাগরে যে ক্যাবল নেটওয়ার্কে ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এতে যে ক্ষতি হয়েছে তা স্যাবোটাজ বলে মনে হচ্ছে মঙ্গলবার এমন দাবি করেছেন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বোরিস পিসটোরিয়াস। তিনি বলেন, কেউই বিশ্বাস করেন না যে- ওই ক্যাবল দুর্ঘটনাক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমিও বিশ্বাস করতে চাই না যে, কোনো জাহাজের নোঙর আকস্মিকভাবে এই ক্ষতি করেছে। এর ফলেই রাশিয়া সীমান্তের ভেতরে অ্যাটাকমস ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন এর প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রীয় মদতে ক্রমবর্ধমান হামলা দেখতে পারে ইউরোপ। এর মধ্যে রয়েছে স্যাবোটাজ, অগ্নিসংযোগ, হত্যাকাণ্ড, সামরিক ঘাঁটিতে, পরিবহন ও টেলিকম বিষয়ক অবকাঠামোতে হামলা। মস্কো এভাবে যদি হাইব্রিড যুদ্ধ চালায় তাহলে তা মোকাবিলার জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন মোটেও প্রস্তুত নয় বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপিয়ান সাবেক একজন সিনিয়র কর্মকর্তা। সাবেক ওই কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়ার ওই স্যাবোটাজমূলক হামলা মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় রিসোর্সের ঘাটতি আছে ইউরোপের।

ঘটনা পরিক্রমা এখানেই থেমে থাকবে না। স্যাবোটাজ নানাভাবে করতে পারে রাশিয়া। তার মধ্যে ইরান ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রক্সি যুদ্ধে লিপ্ত মিত্রদের দেয়া সহায়তা বৃদ্ধি করতে পারে। বিশেষ করে ইয়েমেনের হুতি এবং লেবাননের হিজবুল্লাহকে।  ফলে একদিকে যখন রাশিয়া হাত দেবে, তখন তাকে মোকাবিলা করা খুবই কঠিন হবে এবং তা নতুন ধরনের একটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে। ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা করে যে অপরাধ করছে, তার চেয়ে গাজায় কী ইসরাইল কম অপরাধ করছে? গাজায় যে পরিমাণ মানুষকে ইসরাইল গণহত্যা চালিয়েছে, তা কী বিশ্বের আরও কোথাও এত অল্প সময়ে হয়েছে? হামাসকে নির্মূল করার নাম করে পুরো গাজাকে, পশ্চিমতীরকে পুরোপুরি দখলে নেয়ার পাঁয়তারা করছে ইসরাইল। সেখানকার ছোট্ট শিশু, নারী, পুরুষ- কারও আর্তনাদ বাইডেন প্রশাসন সহ পশ্চিমাদের কর্ণকুহরে প্রবেশ করে না। দ্বৈতনীতির এই বিশ্বে তাহলে কীভাবে মানবতা বেঁচে থাকে!

No comments

Powered by Blogger.