ইয়েমেন থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সেনা প্রত্যাহারের নেপথ্য কারণ: পর্ব-দুই
বিভিন্ন
ইস্যুতে আবুধাবি ও রিয়াদের মধ্যকার বিরোধ প্রকাশ্যে আসায় বিশেষ করে ইয়েমেন
থেকে সেনা প্রত্যাহার কিংবা সেনা সংখ্যা হ্রাসের বিষয়ে সংযুক্ত আরব
আমিরাতের ঘোষণা সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের অস্তিত্বের ওপর সরাসরি
প্রভাব ফেলেছে।
ইয়েমেন থেকে আমিরাতের সেনা সংখ্যা কমিয়ে আনার এ ঘোষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব হচ্ছে এতে করে ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরব কার্যত একা হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের ধ্বংস বা পতন অনিবার্য। ২০১৫ সালে ১০টি দেশকে সঙ্গে নিয়ে এ জোট গঠন করা হলেও এ জোটের মূল শক্তি হচ্ছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। কিন্তু আমিরাত সরকার ইয়েমেন থেকে সেনা প্রত্যাহার করায় সামরিক জোটের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমিরাতের পিছু হটার অর্থ হচ্ছে ইয়েমেন যুদ্ধে ওই জোটের পরাজয়। এর ফলে সৌদি আরব শুধু যে একা হয়ে পড়বে তাই নয় এ ধারণাও করা হচ্ছে, আনসারুল্লাহকে ধ্বংসের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে তারা ইয়েমেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে যাতে "আরব ভিয়েতনাম"-এর এই চোরাবালি থেকে উদ্ধার পেতে পারে রিয়াদ।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ইয়েমেন থেকে সেনা প্রত্যাহার কিংবা সেনা সংখ্যা কমিয়ে আনার ঘোষণা দিলেও গত চার বছরে দেশটি ইয়েমেনে তাদের অনুগত যে মিলিশিয়া বাহিনী গড়ে তুলেছে এখন তাদেরকে ব্যবহার করবে আবুধাবি। "আল-নোখবে আল শাবওয়ানিয়ে", "আল-হেজাম আল-আমানি" ও "আবুল আল-আব্বাস ব্রিগেড" আমিরাত সরকারের সমর্থনপুষ্ট তিনটি মিলিশিয়া বাহিনী যারা ইয়েমেনে প্রভাব বিস্তার করে আছে। ইয়েমেনের একটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে কাতারের আল জাজিরা নিউজ চ্যানেল জানিয়েছে, "উন্নত প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনুগত অন্তর্বর্তী পরিষদের শত শত সদস্যকে ইয়েমেনের বাইরে স্থানান্তর করা হয়েছে।" লেবাননের আল-মিয়াদিন টিভি চ্যানেলও জানিয়েছে, "আমিরাত সরকার তাদের অনুগত বাহিনীর ৫০০ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য দক্ষিণ ইয়েমেনের এডেন বন্দর থেকে রাজধানী আবুধাবিতে স্থানান্তর করেছে।"
আমিরাতের সমর্থনে ২০১৭ সালে অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠন করা হয়েছিল। ইয়েমেনের পদত্যাগী সরকারে প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হাদির বরখাস্তকৃত গভর্নর ইদ্রিস আয যাবিদিকে ওই পরিষদের প্রধান করা হয়।
বর্তমানে দক্ষিণ ইয়েমেনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে আমিরাত সমর্থিত এই পরিষদের নিয়ন্ত্রণে। ইয়েমেন থেকে আমিরাতের সেনা সংখ্যা কমিয়ে আনার ঘোষণাকে যদিও ওই যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের পরাজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে কিন্তু এর অর্থ এটা নয় যে ইয়েমেন থেকে আমিরাত পুরোপুরি সরে গেছে। আমিরাত ইয়েমেন থেকে সেনা প্রত্যাহার বা সেনা সংখ্যা কমিয়ে আনলেও সেখানে তাদের অনুগত মিলিশিয়া বাহিনী তৎপরতা চালাবে। এ অবস্থায় ইয়েমেনের পদত্যাগী সরকারের প্রধানমন্ত্রী মানসুর হাদির অনুগত সৌদিপন্থী মিলিশিয়া বাহিনীর সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে যা কিনা সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের মধ্যে তীব্র ভাঙনের আলামত। বলা হচ্ছে, ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ বাহিনী যদি দক্ষিণের দিকে অগ্রসর হয় তাহলে একদিকে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যকার রাজনৈতিক উত্তেজনা তীব্রতর হবে অন্যদিকে রিয়াদ ও আবুধাবির অনুগত মিলিশিয়া বাহিনীর মধ্যেও লড়াই ছড়িয়ে পড়বে যা সৌদি আরবের জন্য শুভকর হবে না।
ইয়েমেনবিরোধী যুদ্ধের ভবিষ্যত এবং সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের অবস্থানকে কয়েকটি দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়। প্রথমত, ইয়েমেন ইস্যুতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। বিশেষ করে শারজা, দুবাই ও রাআস আল খেইমে অঙ্গরাজ্যগুলো ইয়েমেন যুদ্ধের তীব্র বিরোধী এবং তারা যুদ্ধ বন্ধের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছে। কারণ এ যুদ্ধের ফলে আমিরাত ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এ ছাড়া, উগ্র যুদ্ধবাজ হিসেবে পরিচিত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দ্বারা পরিচালিত সৌদি আরব বর্তমানে রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও মানবাধিকার ইস্যুতে তীব্র সংকট ও চাপের মুখে রয়েছে। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত চায় না ইয়েমেন বিরোধী সামরিক জোটের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন সংকটে জর্জরিত সৌদি আরবের সঙ্গে শামিল হতে। বলা যায়, রিয়াদ ও আবুধাবির মধ্যকার বিরোধ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সরাসরি এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটে।
ইয়েমেনবিরোধী যুদ্ধের ভবিষ্যত এবং সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের অবস্থানকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে দ্বিতীয় যে বিষয়টি সবার নজর কেড়েছে তা হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সৌদি আরবকে বাদ দিয়ে ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে আলোচনার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
কোনো কোনো খবরে বলা হচ্ছে, ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারে কয়েকটি চ্যানেলের গোপন যোগাযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে অপ্রকাশ্য কিছু গোপন সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে। এ অবস্থায় আনসারুল্লাহ ও আমিরাত সরকারের মধ্যে যে সমঝোতাই হোক না কেন সেটা ইয়েমেনবিরোধী সামরিক জোটের জন্য বিরাট ব্যর্থতা। কারণ এর ফলে একদিকে সৌদি আরব প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়বে এবং অন্যদিকে দক্ষিণ ইয়েমেনের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য রিয়াদ ও আবুধাবির অনুগত মিলিশিয়া বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হতে পারে।
ইয়েমেনবিরোধী যুদ্ধের ভবিষ্যত এবং সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের অবস্থানকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে তৃতীয় যে বিষয়টি পর্যবেক্ষকদের নজর কেড়েছে তা হচ্ছে, তাদের মতে, ইয়েমেন থেকে সেনা প্রত্যাহারে আমিরাতের সিদ্ধান্ত রিয়াদ ও আবুধাবির মধ্যকার উত্তেজনাকে বাড়িয়ে তুলবে। এ অবস্থায় সৌদি আরব ইয়েমেন যুদ্ধের ব্যাপারে তাদের অবস্থানের বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য হবে। এ মুহূর্তে আমিরাত যেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে স্বাভাবিকভাবেই সে এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টার করবে সৌদি আরব। এরইমধ্যে তারা কয়েকটি সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। এ অবস্থায় ইয়েমেনে আমিরাত ও সৌদি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
চতুর্থ বিষয়টি হচ্ছে, ইয়েমেন যুদ্ধ থেকে আমিরাতের সরে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে সৌদি আরব একা হয়ে পড়বে এবং ইয়েমেনের সেনা ও আনসারুল্লাহ যোদ্ধাদের মোকাবেলায় তাদের পরাজয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
ইয়েমেন থেকে আমিরাতের সেনা সংখ্যা কমিয়ে আনার এ ঘোষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব হচ্ছে এতে করে ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরব কার্যত একা হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের ধ্বংস বা পতন অনিবার্য। ২০১৫ সালে ১০টি দেশকে সঙ্গে নিয়ে এ জোট গঠন করা হলেও এ জোটের মূল শক্তি হচ্ছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। কিন্তু আমিরাত সরকার ইয়েমেন থেকে সেনা প্রত্যাহার করায় সামরিক জোটের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমিরাতের পিছু হটার অর্থ হচ্ছে ইয়েমেন যুদ্ধে ওই জোটের পরাজয়। এর ফলে সৌদি আরব শুধু যে একা হয়ে পড়বে তাই নয় এ ধারণাও করা হচ্ছে, আনসারুল্লাহকে ধ্বংসের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে তারা ইয়েমেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে যাতে "আরব ভিয়েতনাম"-এর এই চোরাবালি থেকে উদ্ধার পেতে পারে রিয়াদ।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ইয়েমেন থেকে সেনা প্রত্যাহার কিংবা সেনা সংখ্যা কমিয়ে আনার ঘোষণা দিলেও গত চার বছরে দেশটি ইয়েমেনে তাদের অনুগত যে মিলিশিয়া বাহিনী গড়ে তুলেছে এখন তাদেরকে ব্যবহার করবে আবুধাবি। "আল-নোখবে আল শাবওয়ানিয়ে", "আল-হেজাম আল-আমানি" ও "আবুল আল-আব্বাস ব্রিগেড" আমিরাত সরকারের সমর্থনপুষ্ট তিনটি মিলিশিয়া বাহিনী যারা ইয়েমেনে প্রভাব বিস্তার করে আছে। ইয়েমেনের একটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে কাতারের আল জাজিরা নিউজ চ্যানেল জানিয়েছে, "উন্নত প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনুগত অন্তর্বর্তী পরিষদের শত শত সদস্যকে ইয়েমেনের বাইরে স্থানান্তর করা হয়েছে।" লেবাননের আল-মিয়াদিন টিভি চ্যানেলও জানিয়েছে, "আমিরাত সরকার তাদের অনুগত বাহিনীর ৫০০ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য দক্ষিণ ইয়েমেনের এডেন বন্দর থেকে রাজধানী আবুধাবিতে স্থানান্তর করেছে।"
আমিরাতের সমর্থনে ২০১৭ সালে অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠন করা হয়েছিল। ইয়েমেনের পদত্যাগী সরকারে প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হাদির বরখাস্তকৃত গভর্নর ইদ্রিস আয যাবিদিকে ওই পরিষদের প্রধান করা হয়।
বর্তমানে দক্ষিণ ইয়েমেনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে আমিরাত সমর্থিত এই পরিষদের নিয়ন্ত্রণে। ইয়েমেন থেকে আমিরাতের সেনা সংখ্যা কমিয়ে আনার ঘোষণাকে যদিও ওই যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের পরাজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে কিন্তু এর অর্থ এটা নয় যে ইয়েমেন থেকে আমিরাত পুরোপুরি সরে গেছে। আমিরাত ইয়েমেন থেকে সেনা প্রত্যাহার বা সেনা সংখ্যা কমিয়ে আনলেও সেখানে তাদের অনুগত মিলিশিয়া বাহিনী তৎপরতা চালাবে। এ অবস্থায় ইয়েমেনের পদত্যাগী সরকারের প্রধানমন্ত্রী মানসুর হাদির অনুগত সৌদিপন্থী মিলিশিয়া বাহিনীর সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে যা কিনা সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের মধ্যে তীব্র ভাঙনের আলামত। বলা হচ্ছে, ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ বাহিনী যদি দক্ষিণের দিকে অগ্রসর হয় তাহলে একদিকে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যকার রাজনৈতিক উত্তেজনা তীব্রতর হবে অন্যদিকে রিয়াদ ও আবুধাবির অনুগত মিলিশিয়া বাহিনীর মধ্যেও লড়াই ছড়িয়ে পড়বে যা সৌদি আরবের জন্য শুভকর হবে না।
ইয়েমেনবিরোধী যুদ্ধের ভবিষ্যত এবং সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের অবস্থানকে কয়েকটি দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়। প্রথমত, ইয়েমেন ইস্যুতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। বিশেষ করে শারজা, দুবাই ও রাআস আল খেইমে অঙ্গরাজ্যগুলো ইয়েমেন যুদ্ধের তীব্র বিরোধী এবং তারা যুদ্ধ বন্ধের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছে। কারণ এ যুদ্ধের ফলে আমিরাত ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এ ছাড়া, উগ্র যুদ্ধবাজ হিসেবে পরিচিত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দ্বারা পরিচালিত সৌদি আরব বর্তমানে রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও মানবাধিকার ইস্যুতে তীব্র সংকট ও চাপের মুখে রয়েছে। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত চায় না ইয়েমেন বিরোধী সামরিক জোটের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন সংকটে জর্জরিত সৌদি আরবের সঙ্গে শামিল হতে। বলা যায়, রিয়াদ ও আবুধাবির মধ্যকার বিরোধ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সরাসরি এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটে।
ইয়েমেনবিরোধী যুদ্ধের ভবিষ্যত এবং সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের অবস্থানকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে দ্বিতীয় যে বিষয়টি সবার নজর কেড়েছে তা হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সৌদি আরবকে বাদ দিয়ে ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে আলোচনার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
কোনো কোনো খবরে বলা হচ্ছে, ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারে কয়েকটি চ্যানেলের গোপন যোগাযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে অপ্রকাশ্য কিছু গোপন সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে। এ অবস্থায় আনসারুল্লাহ ও আমিরাত সরকারের মধ্যে যে সমঝোতাই হোক না কেন সেটা ইয়েমেনবিরোধী সামরিক জোটের জন্য বিরাট ব্যর্থতা। কারণ এর ফলে একদিকে সৌদি আরব প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়বে এবং অন্যদিকে দক্ষিণ ইয়েমেনের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য রিয়াদ ও আবুধাবির অনুগত মিলিশিয়া বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হতে পারে।
ইয়েমেনবিরোধী যুদ্ধের ভবিষ্যত এবং সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের অবস্থানকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে তৃতীয় যে বিষয়টি পর্যবেক্ষকদের নজর কেড়েছে তা হচ্ছে, তাদের মতে, ইয়েমেন থেকে সেনা প্রত্যাহারে আমিরাতের সিদ্ধান্ত রিয়াদ ও আবুধাবির মধ্যকার উত্তেজনাকে বাড়িয়ে তুলবে। এ অবস্থায় সৌদি আরব ইয়েমেন যুদ্ধের ব্যাপারে তাদের অবস্থানের বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য হবে। এ মুহূর্তে আমিরাত যেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে স্বাভাবিকভাবেই সে এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টার করবে সৌদি আরব। এরইমধ্যে তারা কয়েকটি সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। এ অবস্থায় ইয়েমেনে আমিরাত ও সৌদি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
চতুর্থ বিষয়টি হচ্ছে, ইয়েমেন যুদ্ধ থেকে আমিরাতের সরে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে সৌদি আরব একা হয়ে পড়বে এবং ইয়েমেনের সেনা ও আনসারুল্লাহ যোদ্ধাদের মোকাবেলায় তাদের পরাজয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
No comments