রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচারে আইসিসিকে উৎসাহিত করা উচিত বাংলাদেশের
রোহিঙ্গাদের
বিরুদ্ধে চালানো অপরাধের তদন্ত ও বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত
(আইসিসি)কে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার
বিষয়ক সংগঠন ফোরটিফাই রাইটস। বুধবার সংস্থাটির নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত
প্রতিবেদন এ আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে যেভাবে
নির্যাতন করে দেশছাড়া করা হয়েছে তার তদন্ত ও বিচারের জন্য আইসিসিকে
উৎসাহিত করা উচিত বাংলাদেশের। এদিকে বর্মী নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে প্রাণে
বাঁচতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বাংলাদেশের মতামত চেয়েছে
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। বিশেষ করে তাদের ওপর যে বর্বর নির্যাতন হয়েছে সে
বিষয়ে মামলা চালানোর অধিকার আইসিসি’র আছে কি-না তা চানতে চেয়েছে দ্য হেগের
ওই আদালত। আইসিসির প্রি-ট্রায়াল চেম্বার গত সোমবার ঢাকাকে এ সংক্রান্ত একটি
চিঠি পাঠান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, তারা সেই
চিঠি পেয়েছেন এবং জবাব প্রস্তুতিতে কাজও শুরু করেছেন। আইসিসি নির্ধারিত
ডেটলাইন ১১ই জুনের মধ্যেই বাংলাদেশ তার মতামত জানাবে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র
সচিব মো. শহীদুল তাৎক্ষণিক গণমাধ্যমকে বলেন- ‘আমরা তাদের অনুরোধ পেয়েছি এবং
বিষয়টি বিবেচনা করছি।’ আইসিসির চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমার থেকে
রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের কারণে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে আদালত মনে করে
বাংলাদেশের এ বিষয়ে মতামত দেয়া উচিত। ওদিকে ঢাকা সফররত জাতিসংঘ মহাসচিবের
বিশেষ দূত প্রমীলা পাট্টিন গতকাল পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে
বৈঠক করেছেন। বর্মী বর্বরতার বিচারে সোচ্চার জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা গতকাল
মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সেখানে এ বিচার প্রক্রিয়ার বিষয়ে
তাদের মধ্যে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের সেক্সচুয়াল
ভায়োলেন্স ইন কনফ্লিক্ট বিষয়ক বিশেষ দূত প্রমীলা গত নভেম্বরে প্রথম
বাংলাদেশ সফর করেন। সেই সময়ে তিনি একটি ফ্যান্ট ফাইন্ডিং মিশনের নেতৃত্ব
দিচ্ছিলেন। কক্সবাজারে তিনি নির্যাতিত অনেক নারী ও কিশোরীর সঙ্গে কথা বলেন।
প্রমীলাই প্রথম বলেন- রোহিঙ্গা অনেক নারীকে গ্যাং-রেপ বা গণধর্ষণ করেছে
মিয়ানমার আর্মি। বর্মীদের অত্যাচার থেকে প্রাণে বাঁচতে রাখাইন থেকে পালিয়ে
আসা অসংখ্য নারীর সঙ্গে কথা বলে সহিংসতায় যৌননির্যাতন বিষয়ক জাতিসংঘ টিম
এটি নিশ্চিত হয়েছে বলেও ঢাকা ছেড়ে যান তিনি। পরবর্তীতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা
পরিষদ এবং আন্তর্জাতিক আদালতের কাছেও বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি। এবারও তিনি
কক্সবাজার যাচ্ছেন। সেখানে তার টিমের সদস্যরা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে
জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন- দ্বিতীয় দফায়
জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত প্রমীলা পাট্টিনের কক্সবাজার সফর এবং সেখান
থেকে প্রাপ্ত নির্যাতনের ক্ষত বয়ে বেড়ানো নারী ও কিশোরীদের
সাক্ষ্য-রেকর্ডগুলো বিচার প্রক্রিয়ায় সহায়ক হবে। আগের বার এমন এক
ভুক্তভোগীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল যাকে ৪৫ দিন বন্দি করে রেখে বর্মীরা গণধর্ষণ
করেছে। ওই নারীর শরীরে ক্ষতচিহ্ন, আঘাতের দাগ, কামড়ের ছাপ রয়েছে, যা তাদের
ওপর হওয়া নিপীড়নের সাক্ষ্য বহন করছে বলেও জানিয়েছিলেন বিশ্বব্যাপী কাজ করা
ওই নারী কর্মকর্তা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আহ্বান: এদিকে- রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নির্যাতনের জন্য মিয়ানমারকে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) নিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংস্থার ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস প্রোগ্রামের সহযোগী পরিচালক প্রেম-প্রীত সিং মঙ্গলবার বলেন, এখন যেহেতু নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ভয়াবহতার কথা রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের কাছ থেকে সরাসরি জেনেছে, তাই দায়ীদের জবাবদিহিতা পরিষ্কার করা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, মিয়ানমার নৃশংসতার দায় বারবার অবিশ্বাস্যভাবে অস্বীকার করে আসছে। সেই সঙ্গে সেখানে দীর্ঘদিন ধরে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে। তাই ভুক্তভোগীদের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতই ন্যায়বিচার পাওয়ার একমাত্র আশা। নৃশংসতার বিস্তারিত প্রমাণ অস্বীকারের মাধ্যমে মিয়ানমার সরকারের মূলত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো ভয়ানক অপরাধ সমাধানে কোনো অভিপ্রায় নেই। দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা নির্যাতনের তদন্ত করার যে ফাঁপা প্রতিশশ্রুতি দিয়েছেন তা পুনরাবৃত্তি করা নিরাপত্তা পরিষদের উচিত হবে না। এটি আইসিসিতে পাঠানোর মতো একটি আদর্শ মামলা। সরকার যা করতে চায় না তা করার জন্যই তো আইসিসি সৃষ্টি করা হয়েছে, যোগ করেন প্রেম-প্রীত সিং। মিয়ানমার আইসিসির সদস্য নয় এবং তারা আদালতটির বিচার ব্যবস্থা মেনে চলে না। তাই রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়টি সেখানে নিতে নিরাপত্তা পরিষদের উদ্যোগ নিতে হবে, বলেন তিনি। উল্লেখ, রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি সরাসরি দেখার জন্য চলতি মাসের শুরুর দিকে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদের সিনিয়র কূটনৈতিকরা বাংলাদেশ সফর করেন এবং কক্সবাজারের উদ্বাস্তু শিবিরে যান। চার দিনের মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফরকালে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মিয়ানমারের বেসামরিক নেত্রী অং সান সু চি ও দেশটির সেনাপ্রধানসহ বিভিন্ন মানবিক সহায়তা সংস্থা, সুশীল সমাজ, সংসদ সদস্য এবং সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আহ্বান: এদিকে- রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নির্যাতনের জন্য মিয়ানমারকে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) নিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংস্থার ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস প্রোগ্রামের সহযোগী পরিচালক প্রেম-প্রীত সিং মঙ্গলবার বলেন, এখন যেহেতু নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ভয়াবহতার কথা রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের কাছ থেকে সরাসরি জেনেছে, তাই দায়ীদের জবাবদিহিতা পরিষ্কার করা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, মিয়ানমার নৃশংসতার দায় বারবার অবিশ্বাস্যভাবে অস্বীকার করে আসছে। সেই সঙ্গে সেখানে দীর্ঘদিন ধরে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে। তাই ভুক্তভোগীদের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতই ন্যায়বিচার পাওয়ার একমাত্র আশা। নৃশংসতার বিস্তারিত প্রমাণ অস্বীকারের মাধ্যমে মিয়ানমার সরকারের মূলত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো ভয়ানক অপরাধ সমাধানে কোনো অভিপ্রায় নেই। দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা নির্যাতনের তদন্ত করার যে ফাঁপা প্রতিশশ্রুতি দিয়েছেন তা পুনরাবৃত্তি করা নিরাপত্তা পরিষদের উচিত হবে না। এটি আইসিসিতে পাঠানোর মতো একটি আদর্শ মামলা। সরকার যা করতে চায় না তা করার জন্যই তো আইসিসি সৃষ্টি করা হয়েছে, যোগ করেন প্রেম-প্রীত সিং। মিয়ানমার আইসিসির সদস্য নয় এবং তারা আদালতটির বিচার ব্যবস্থা মেনে চলে না। তাই রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়টি সেখানে নিতে নিরাপত্তা পরিষদের উদ্যোগ নিতে হবে, বলেন তিনি। উল্লেখ, রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি সরাসরি দেখার জন্য চলতি মাসের শুরুর দিকে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদের সিনিয়র কূটনৈতিকরা বাংলাদেশ সফর করেন এবং কক্সবাজারের উদ্বাস্তু শিবিরে যান। চার দিনের মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফরকালে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মিয়ানমারের বেসামরিক নেত্রী অং সান সু চি ও দেশটির সেনাপ্রধানসহ বিভিন্ন মানবিক সহায়তা সংস্থা, সুশীল সমাজ, সংসদ সদস্য এবং সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
No comments