চীনের নিয়ন্ত্রণে ই-কমার্স বাজার by এমএম মাসুদ
ঢাকা
স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শেয়ার ও দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা
দাতা প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশ’র শেয়ার কেনার পর বাংলাদেশে অনলাইন মার্কেটপ্লেস
হিসেবে কাজ করে ‘দারাজ’কেও কিনে নিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স
প্রতিষ্ঠান ‘আলিবাবা’। ‘দারাজ’র একশো ভাগ শেয়ারই কিনেছে আলিবাবা। দারাজ
প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ২০১২ সালে পাকিস্তানে। পরে বাংলাদেশ, মিয়ানমার,
শ্রীলঙ্কা এবং নেপালেও তাদের ব্যবসা সমপ্রসারণ করে। সংশ্লিষ্টরা জানান,
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কিনে নেয়া প্রমাণ করে চীনা
উদ্যোক্তাদের পছন্দের শীর্ষ তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ।
দারাজ মূলত অনলাইন মার্কেটপ্লেস হিসেবে কাজ করে, যেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে পারে। এটির প্রধান কোম্পানি ছিল রকেট ইন্টারনেট। জার্মান এই কোম্পানিটি মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের পুরো ব্যবসাই তারা আলিবাবার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।
ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) তথ্য অনুযায়ী, ঢাকাসহ সারা দেশেই রয়েছে নানা রকম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোগ। কয়েক বছর ধরেই ঢাকা ও এর বাইরে ই-কমার্সের ক্রেতা ও গ্রাহক বেড়েছে। ঢাকার বাইরে ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ই-ক্যাব আরো বড় হয়েছে। গত কয়েক বছরে ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ নির্ভর বাণিজ্যের হার বেড়েছে। ই-ক্যাবের সদস্য সংখ্যা বতর্মানে ৭৩০।
‘দারাজ’ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চুক্তির ফলে আলিবাবার অভিজ্ঞ নেতৃত্বে প্রযুক্তি, অনলাইন কমার্স, মোবাইল পেমেন্ট এবং লজিস্টিকস দ্বারা লাভবান হবে দারাজ, যা নিশ্চিত করবে দক্ষিণ এশীয় এই পাঁচটি দেশের সফল উন্নতি ও অগ্রগতি। আলিবাবার কাছে বিক্রি হলেও দারাজের ব্র্যান্ড নামে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে জানিয়েছেন দারাজ বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা। পাকিস্তানের কোম্পানি রকেট ইন্টারনেটের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানটি শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার ও নেপালেও অনলাইনে বিকিকিনি চালিয়ে আসছে। দারাজের সহ-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিয়ার্কে মিক্কেলসেনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, এই চুক্তির ফলে আলিবাবা পরিবারে জায়গা করে নিলো দারাজ। আলিবাবার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে এই অঞ্চলের উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়ন করার জন্য দারাজ ‘প্রস্তুত’ বলে জানান দারাজের আরেক সহ-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাথন ডোয়ার।
এদিকে বাংলাদেশে আলিবাবার প্রবেশ নিয়ে স্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন, এতে করে স্থানীয় স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর সম্প্রসারণ ব্যাহত হবে। তিনি বলেন, ই-ক্যাবের তরফ থেকে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। যাতে কোনো বাইরের কোম্পানি বাংলাদেশের কোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ৪৯ শতাংশের বেশি শেয়ার কিনতে না পারে। ৫১ শতাংশ বা সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ার যেন দেশীয় মালিকানায় থাকে। উল্লেখ্য, দারাজ ছাড়া বাংলাদেশে অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ইন্টারনেট কোম্পানির মধ্যে আছে বিক্রয় ডট কম, আজকের ডিল ও ফুড পান্ডা।
ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, আলিবাবা বাংলাদেশে আসার জন্য স্বাগত জানাই। তবে কিছু উদ্বেগ রয়েছে। যেমন- মূল্য নির্ধারণে প্রতিযোগিতা হতে পারে। দেখা গেল গ্রাহক ধরার জন্য প্রথম দিকে বিভিন্ন পণ্য কম দামে বিক্রি শুরু করেছে। এতে করে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পেরে উঠতে পারবে না। এজন্য আমরা সরকারের কাছে ই-কমার্স নীতিমালা তৈরি করে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছি। আশা করি নীতিমালা হয়ে গেলে তখন আর কোনো বৈষম্য থাকবে না।
ই-ক্যাবের সাবেক সভাপতি রাজীব আহমেদের মতে, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় ই-কমার্সের সম্প্রসারণ ঘটছে বেশ দ্রুত গতিতে। স্বাভাবিকভাবেই এখানে ঢুকতে আগ্রহী হবে আলিবাবা বা আমাজনের মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলো।
তিনি বলেন, দেশে ই-কমার্স খাতে ব্যবসা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে দুই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। তার মতে, আলিবাবার মতো প্রতিষ্ঠান যদি বাংলাদেশে প্রবেশ করে, সেটি ই-কমার্সের ভোক্তাদের মধ্য আস্থা তৈরি করতে পারবে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, আমাদের দেশে এখনো পর্যন্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে মানুষের সেরকম বিশ্বাস বা আস্থা তৈরি হয়নি। শতকরা আশিভাগ ক্ষেত্রেই পেমেন্ট হয় ক্যাশ অন ডেলিভারি পদ্ধতিতে। বাইরের বড় কোম্পানিগুলো তাদের প্রযুক্তি এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে এখানে ই-কমার্সের চেহারা পাল্টে দিতে পারে এবং এ ব্যাপারে ভোক্তাদের আস্থাও বাড়িয়ে দিতে পারে।
জানা গেছে, সম্প্রতি দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের ২০ শতাংশ শেয়ার কিনেছে চীনের এই জায়ান্ট কোম্পানি আলিবাবা। এর আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী হওয়ায় জন্য ২৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা পেয়েছে চীনের সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, আলিবাবা কোম্পানির সারা বিশ্বে সুখ্যাতি রয়েছে। কোম্পানিটির আমাদের দেশে বিনিয়োগ করা একটা ভালো ইঙ্গিত বহন করছে। এতে করে দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রযুক্তিগত দিকও উন্নতি ঘটবে বলে মনে করেন তিনি।
দারাজ মূলত অনলাইন মার্কেটপ্লেস হিসেবে কাজ করে, যেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে পারে। এটির প্রধান কোম্পানি ছিল রকেট ইন্টারনেট। জার্মান এই কোম্পানিটি মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের পুরো ব্যবসাই তারা আলিবাবার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।
ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) তথ্য অনুযায়ী, ঢাকাসহ সারা দেশেই রয়েছে নানা রকম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোগ। কয়েক বছর ধরেই ঢাকা ও এর বাইরে ই-কমার্সের ক্রেতা ও গ্রাহক বেড়েছে। ঢাকার বাইরে ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ই-ক্যাব আরো বড় হয়েছে। গত কয়েক বছরে ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ নির্ভর বাণিজ্যের হার বেড়েছে। ই-ক্যাবের সদস্য সংখ্যা বতর্মানে ৭৩০।
‘দারাজ’ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চুক্তির ফলে আলিবাবার অভিজ্ঞ নেতৃত্বে প্রযুক্তি, অনলাইন কমার্স, মোবাইল পেমেন্ট এবং লজিস্টিকস দ্বারা লাভবান হবে দারাজ, যা নিশ্চিত করবে দক্ষিণ এশীয় এই পাঁচটি দেশের সফল উন্নতি ও অগ্রগতি। আলিবাবার কাছে বিক্রি হলেও দারাজের ব্র্যান্ড নামে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে জানিয়েছেন দারাজ বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা। পাকিস্তানের কোম্পানি রকেট ইন্টারনেটের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানটি শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার ও নেপালেও অনলাইনে বিকিকিনি চালিয়ে আসছে। দারাজের সহ-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিয়ার্কে মিক্কেলসেনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, এই চুক্তির ফলে আলিবাবা পরিবারে জায়গা করে নিলো দারাজ। আলিবাবার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে এই অঞ্চলের উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়ন করার জন্য দারাজ ‘প্রস্তুত’ বলে জানান দারাজের আরেক সহ-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাথন ডোয়ার।
এদিকে বাংলাদেশে আলিবাবার প্রবেশ নিয়ে স্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন, এতে করে স্থানীয় স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর সম্প্রসারণ ব্যাহত হবে। তিনি বলেন, ই-ক্যাবের তরফ থেকে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। যাতে কোনো বাইরের কোম্পানি বাংলাদেশের কোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ৪৯ শতাংশের বেশি শেয়ার কিনতে না পারে। ৫১ শতাংশ বা সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ার যেন দেশীয় মালিকানায় থাকে। উল্লেখ্য, দারাজ ছাড়া বাংলাদেশে অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ইন্টারনেট কোম্পানির মধ্যে আছে বিক্রয় ডট কম, আজকের ডিল ও ফুড পান্ডা।
ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, আলিবাবা বাংলাদেশে আসার জন্য স্বাগত জানাই। তবে কিছু উদ্বেগ রয়েছে। যেমন- মূল্য নির্ধারণে প্রতিযোগিতা হতে পারে। দেখা গেল গ্রাহক ধরার জন্য প্রথম দিকে বিভিন্ন পণ্য কম দামে বিক্রি শুরু করেছে। এতে করে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পেরে উঠতে পারবে না। এজন্য আমরা সরকারের কাছে ই-কমার্স নীতিমালা তৈরি করে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছি। আশা করি নীতিমালা হয়ে গেলে তখন আর কোনো বৈষম্য থাকবে না।
ই-ক্যাবের সাবেক সভাপতি রাজীব আহমেদের মতে, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় ই-কমার্সের সম্প্রসারণ ঘটছে বেশ দ্রুত গতিতে। স্বাভাবিকভাবেই এখানে ঢুকতে আগ্রহী হবে আলিবাবা বা আমাজনের মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলো।
তিনি বলেন, দেশে ই-কমার্স খাতে ব্যবসা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে দুই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। তার মতে, আলিবাবার মতো প্রতিষ্ঠান যদি বাংলাদেশে প্রবেশ করে, সেটি ই-কমার্সের ভোক্তাদের মধ্য আস্থা তৈরি করতে পারবে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, আমাদের দেশে এখনো পর্যন্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে মানুষের সেরকম বিশ্বাস বা আস্থা তৈরি হয়নি। শতকরা আশিভাগ ক্ষেত্রেই পেমেন্ট হয় ক্যাশ অন ডেলিভারি পদ্ধতিতে। বাইরের বড় কোম্পানিগুলো তাদের প্রযুক্তি এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে এখানে ই-কমার্সের চেহারা পাল্টে দিতে পারে এবং এ ব্যাপারে ভোক্তাদের আস্থাও বাড়িয়ে দিতে পারে।
জানা গেছে, সম্প্রতি দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের ২০ শতাংশ শেয়ার কিনেছে চীনের এই জায়ান্ট কোম্পানি আলিবাবা। এর আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী হওয়ায় জন্য ২৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা পেয়েছে চীনের সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, আলিবাবা কোম্পানির সারা বিশ্বে সুখ্যাতি রয়েছে। কোম্পানিটির আমাদের দেশে বিনিয়োগ করা একটা ভালো ইঙ্গিত বহন করছে। এতে করে দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রযুক্তিগত দিকও উন্নতি ঘটবে বলে মনে করেন তিনি।
No comments