যেখান থেকে পানির স্রোত এসেছে সেটা সামনে আসে নাই
জিয়া
অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গতকাল চতুর্থদিনের মতো যুক্তি-তর্ক
উপস্থাপন করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজাক খান। এই মামলায়
রাষ্ট্রপক্ষ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে
সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে তাকে খালাস দিতে আদালতের কাছে আর্জি
জানান রেজাক খান। তার যুক্তি উপস্থাপন শেষে খালেদা জিয়ার অন্য আইনজীবী
খন্দকার মাহবুব হোসেন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন। ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ
আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে আজ আবারো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন
করবেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বিচারকাজ
রাজধানীর বক্শীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত অস্থায়ী
আদালতে চলছে। মামলায় হাজিরা দিতে গতকাল বেলা সোয়া ১১টায় কড়া নিরাপত্তায়
আদালতে আসেন খালেদা জিয়া।
১১টা ২০ মিনিটে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন আবদুর রেজাক খান। দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ১৫ মিনিটের বিরতিতে যান আদালত। বিরতি শেষে ২টা পর্যন্ত শুনানি হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান (প্রয়াত) অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত ছিলেন বলে উল্লেখ করেন রেজাক খান। আদালতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এই টাকা আকাশে ভাসতে ভাসতে আসে নাই। অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা আছে মোস্তাফিজুর রহমানের মাধ্যমে এই টাকা এসেছে। মামলার সাক্ষীরাও এই কথা বলেছেন। কে কোথায়, কখন অনুদান দিয়েছে, আগে প্রমাণ করতে হবে অনুদানটা কে আনিয়েছে। উনারতো (খালেদা জিয়া) প্রশ্নই ওঠে না। খালেদা জিয়াও তার বক্তব্যে বলেছেন মোস্তাফিজুর রহমান এই টাকা এনেছেন। তাই এই টাকার ভাগীদার মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, ৪০৯ ধারা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি বাক্যও উচ্চারণ করা হয়নি। তবে, এই কথাটা ওঠেছে যে যেহেতু মোস্তাফিজুর রহমান মারা গিয়েছে তাই তার নামে মামলা হয়নি। রেজাক খান বলেন, প্রাথমিক ডকুমেন্ট দিয়েই মামলার সবকিছু প্রমাণ করতে হয়। এজাহারের প্রতিবেদন অনুযায়ী এই মামলায় মোস্তাফিজুর রহমান অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আসামিপক্ষ যখন মামলায় একটা কিছু থ্রো করে কিছু বক্তব্য দেয়ার চেষ্টা করে তখন এটা গ্রহণ করা না করা- এর একটি মাপকাঠি থাকে। রেজাক খান বলেন, পুরো টাকাটা নিয়ে অনুসন্ধান প্রতিবেদন এসেছে। এই টাকার দু’টো ভাগ হয়েছে। একভাগ গেছে অরফানেজ ট্রাস্টের নামে বাগেরহাট। অন্য ভাগ গিয়েছে চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে বগুড়ায়। মোস্তাফিজুর রহমানকে বাদ দিয়েই এই মামলা সাজানো হয়েছে। তিনি মারা গিয়েছেন। তাতে কি? বেনিফিসিয়ারি ওই যে ব্যাংকের যোগসাজশ যাদের ছিল তারাতো আছে। অনুসন্ধান প্রতিবেদনে আছে একরকম। আর এজাহারে এসে হঠাৎ করে যেখানে খালেদা জিয়ার সংশ্লিষ্টতা আছে শুধু সেটাই নিয়ে আসা হলো। এজাহারে আরম্ভ করলো ৪ লাখ দিয়ে। শেষ করলো ২ লাখ দিয়ে। এর কোনো ব্যাখ্যা নেই। কৈফিয়তও নেই।
রেজাক খান বলেন, যদি কোনো মামলায় অসৎ উদ্দেশ্য থাকে, পারসিকিউট (হয়রানি) করা হয়, বেছে বেছে একে দিলাম তাকে দিলাম, আর কিছু ছেড়ে দিলাম, আদালতের কাছে আমি নিবেদন করবো এই যে দৃষ্টিভঙ্গিটা অনুগ্রহ করে এটি বিবেচনায় নেবেন। আদালতের উদ্দেশ্যে সিনিয়র এ আইনজীবী বলেন, এই বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একজন বিজ্ঞ বিচারক হিসেবে আপনি বিবেচনা করবেন যে, এই মামলা ধোপে টিকেছে কিনা।
আদালতের উদ্দেশ্যে রেজাক খান বলেন, আমার রুলস হচ্ছে বিজ্ঞ আদালতকে আইনি সহায়তা দেয়া। কোনোদিন অ্যাবস্ট্রাক্ট ল’ দিয়ে কোনো মামলার বিচার হয় না। উচ্চ আদালতও বলেন, বিচারিক আদালতে সর্বপ্রথমে ফ্যাক্টস (তথ্য) যত আছে তা উপস্থাপন করতে। তারপর আইনের সহায়তা নিতে, আইন দিয়ে ব্যাখ্যা করতে বলা হয়। এই মামলায় একতরফাভাবে যেটি রেকর্ডেও নেই সেটাও আনার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আদালতের বাইরে কি হচ্ছে না হচ্ছে সেটা নিয়ে আমরা বলতে চাই না। কিন্তু সর্ব প্রথম আমরা শুনলাম যে মোস্তাফিজুর রহমান মারা গিয়েছেন- এজন্য তার নামে মামলা হয়নি। এটি আদালতের ভিতরের কথা নয়, কিন্তু বলার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোন নথিপত্র নেই। মৌখিকভাবেও কেউ বলেনি যে তার নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। কুয়েতের অ্যাম্বেসি থেকে এই টাকা এসেছে। সেই নথিপত্র আমরা আদালতে উপস্থাপন করেছি। যেখান থেকে পানির স্রোত এসেছে, সেটা কিন্তু সামনে আসে নাই। কিন্তু আমরা একটি সত্যকে আমরা প্রকাশ করেছি। আমরা একটি প্রতিবেদন এফিডেভিট আকারে জমাও দিয়েছি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। কিন্তু এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (মোশাররফ হোসেন কাজল) এটি প্রমাণ করতে পারেননি। তিনি এটা কোথাও প্রমাণ করতে পারেননি যে খালেদা জিয়া অ্যাকাউন্ট খুলেছেন, টাকা তুলেছেন।
এই মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তেব্যর উদ্ধৃতি দিয়ে রেজাক খান বলেন, সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এ মামলা দায়ের করা হয়। এ সরকারের আমলেও তাঁর বিরুদ্ধে অনেক মামলা দেয়া হয়েছে। মামলার ভারে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে। শুনানিতে রেজাক খান বলেন, এই মামলা খালেদা জিয়ার জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলা। কিন্তু দুদক কেন এই মামলা বেছে নিল এর কোন জবাব নেই। মামলা যদি প্রমাণ হয় হবে। এত মামলা রয়েছে কিন্তু ১৯৯১ থেকে ২০০৯ কিংবা ২০১০- এই ১৯ বছরে এই মামলা নিয়ে দুদক ভালোভাবেই দৌড়ঝাঁপ করতে পারতো। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই মামলার অভিযোগ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আমরা খালেদা জিয়ার খালাসের দাবি জানাচ্ছি। রেজাক খান শুনানি শেষ করলে সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। আদালতের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা যাই বলি না কেন, সাক্ষ্য-প্রমাণে যাই থাকুক না কেন এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা। আমরা যাই বলি না কেন যে কোনোভাবেই হোক খালেদাকে চোর বলতে হবে- এটাই এই মামলার উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, এই টাকা কে পাঠিয়েছে, এ বিষয়ে কি নির্দেশনা ছিল তা প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি।
শুনানি শেষে দুদকের কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে কিভাবে ব্যর্থ হয়েছে সেটাতো তারা (আসামিপক্ষ) বলেননি। এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। এই সাক্ষীদের মধ্যে কোনো কোনো সাক্ষী ব্যর্থ হয়েছেন সেটাতো তারা উল্লেখ করেননি। তিনি বলেন, সাক্ষীদের প্রত্যেকেই বলেছেন যে খালেদা জিয়া তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার সময়ে মোস্তাফিজুর রহমান এই টাকা নিয়ে এসেছিলেন। তিনি (খালেদা জিয়া) তার বাড়িতে বসে এই ট্রাস্ট গঠন করেছিলেন।
মামলার নথিপত্র অনুযায়ী জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে বিদেশ থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩রা জুলাই রমনা থানায় দুদক এ মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ই আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়। ২০১৪ সালের ১৯শে মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। এ মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৬শে জানুয়ারি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
১১টা ২০ মিনিটে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন আবদুর রেজাক খান। দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ১৫ মিনিটের বিরতিতে যান আদালত। বিরতি শেষে ২টা পর্যন্ত শুনানি হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান (প্রয়াত) অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত ছিলেন বলে উল্লেখ করেন রেজাক খান। আদালতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এই টাকা আকাশে ভাসতে ভাসতে আসে নাই। অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা আছে মোস্তাফিজুর রহমানের মাধ্যমে এই টাকা এসেছে। মামলার সাক্ষীরাও এই কথা বলেছেন। কে কোথায়, কখন অনুদান দিয়েছে, আগে প্রমাণ করতে হবে অনুদানটা কে আনিয়েছে। উনারতো (খালেদা জিয়া) প্রশ্নই ওঠে না। খালেদা জিয়াও তার বক্তব্যে বলেছেন মোস্তাফিজুর রহমান এই টাকা এনেছেন। তাই এই টাকার ভাগীদার মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, ৪০৯ ধারা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি বাক্যও উচ্চারণ করা হয়নি। তবে, এই কথাটা ওঠেছে যে যেহেতু মোস্তাফিজুর রহমান মারা গিয়েছে তাই তার নামে মামলা হয়নি। রেজাক খান বলেন, প্রাথমিক ডকুমেন্ট দিয়েই মামলার সবকিছু প্রমাণ করতে হয়। এজাহারের প্রতিবেদন অনুযায়ী এই মামলায় মোস্তাফিজুর রহমান অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আসামিপক্ষ যখন মামলায় একটা কিছু থ্রো করে কিছু বক্তব্য দেয়ার চেষ্টা করে তখন এটা গ্রহণ করা না করা- এর একটি মাপকাঠি থাকে। রেজাক খান বলেন, পুরো টাকাটা নিয়ে অনুসন্ধান প্রতিবেদন এসেছে। এই টাকার দু’টো ভাগ হয়েছে। একভাগ গেছে অরফানেজ ট্রাস্টের নামে বাগেরহাট। অন্য ভাগ গিয়েছে চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে বগুড়ায়। মোস্তাফিজুর রহমানকে বাদ দিয়েই এই মামলা সাজানো হয়েছে। তিনি মারা গিয়েছেন। তাতে কি? বেনিফিসিয়ারি ওই যে ব্যাংকের যোগসাজশ যাদের ছিল তারাতো আছে। অনুসন্ধান প্রতিবেদনে আছে একরকম। আর এজাহারে এসে হঠাৎ করে যেখানে খালেদা জিয়ার সংশ্লিষ্টতা আছে শুধু সেটাই নিয়ে আসা হলো। এজাহারে আরম্ভ করলো ৪ লাখ দিয়ে। শেষ করলো ২ লাখ দিয়ে। এর কোনো ব্যাখ্যা নেই। কৈফিয়তও নেই।
রেজাক খান বলেন, যদি কোনো মামলায় অসৎ উদ্দেশ্য থাকে, পারসিকিউট (হয়রানি) করা হয়, বেছে বেছে একে দিলাম তাকে দিলাম, আর কিছু ছেড়ে দিলাম, আদালতের কাছে আমি নিবেদন করবো এই যে দৃষ্টিভঙ্গিটা অনুগ্রহ করে এটি বিবেচনায় নেবেন। আদালতের উদ্দেশ্যে সিনিয়র এ আইনজীবী বলেন, এই বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একজন বিজ্ঞ বিচারক হিসেবে আপনি বিবেচনা করবেন যে, এই মামলা ধোপে টিকেছে কিনা।
আদালতের উদ্দেশ্যে রেজাক খান বলেন, আমার রুলস হচ্ছে বিজ্ঞ আদালতকে আইনি সহায়তা দেয়া। কোনোদিন অ্যাবস্ট্রাক্ট ল’ দিয়ে কোনো মামলার বিচার হয় না। উচ্চ আদালতও বলেন, বিচারিক আদালতে সর্বপ্রথমে ফ্যাক্টস (তথ্য) যত আছে তা উপস্থাপন করতে। তারপর আইনের সহায়তা নিতে, আইন দিয়ে ব্যাখ্যা করতে বলা হয়। এই মামলায় একতরফাভাবে যেটি রেকর্ডেও নেই সেটাও আনার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আদালতের বাইরে কি হচ্ছে না হচ্ছে সেটা নিয়ে আমরা বলতে চাই না। কিন্তু সর্ব প্রথম আমরা শুনলাম যে মোস্তাফিজুর রহমান মারা গিয়েছেন- এজন্য তার নামে মামলা হয়নি। এটি আদালতের ভিতরের কথা নয়, কিন্তু বলার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোন নথিপত্র নেই। মৌখিকভাবেও কেউ বলেনি যে তার নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। কুয়েতের অ্যাম্বেসি থেকে এই টাকা এসেছে। সেই নথিপত্র আমরা আদালতে উপস্থাপন করেছি। যেখান থেকে পানির স্রোত এসেছে, সেটা কিন্তু সামনে আসে নাই। কিন্তু আমরা একটি সত্যকে আমরা প্রকাশ করেছি। আমরা একটি প্রতিবেদন এফিডেভিট আকারে জমাও দিয়েছি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। কিন্তু এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (মোশাররফ হোসেন কাজল) এটি প্রমাণ করতে পারেননি। তিনি এটা কোথাও প্রমাণ করতে পারেননি যে খালেদা জিয়া অ্যাকাউন্ট খুলেছেন, টাকা তুলেছেন।
এই মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তেব্যর উদ্ধৃতি দিয়ে রেজাক খান বলেন, সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এ মামলা দায়ের করা হয়। এ সরকারের আমলেও তাঁর বিরুদ্ধে অনেক মামলা দেয়া হয়েছে। মামলার ভারে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে। শুনানিতে রেজাক খান বলেন, এই মামলা খালেদা জিয়ার জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলা। কিন্তু দুদক কেন এই মামলা বেছে নিল এর কোন জবাব নেই। মামলা যদি প্রমাণ হয় হবে। এত মামলা রয়েছে কিন্তু ১৯৯১ থেকে ২০০৯ কিংবা ২০১০- এই ১৯ বছরে এই মামলা নিয়ে দুদক ভালোভাবেই দৌড়ঝাঁপ করতে পারতো। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই মামলার অভিযোগ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আমরা খালেদা জিয়ার খালাসের দাবি জানাচ্ছি। রেজাক খান শুনানি শেষ করলে সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। আদালতের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা যাই বলি না কেন, সাক্ষ্য-প্রমাণে যাই থাকুক না কেন এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা। আমরা যাই বলি না কেন যে কোনোভাবেই হোক খালেদাকে চোর বলতে হবে- এটাই এই মামলার উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, এই টাকা কে পাঠিয়েছে, এ বিষয়ে কি নির্দেশনা ছিল তা প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি।
শুনানি শেষে দুদকের কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে কিভাবে ব্যর্থ হয়েছে সেটাতো তারা (আসামিপক্ষ) বলেননি। এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। এই সাক্ষীদের মধ্যে কোনো কোনো সাক্ষী ব্যর্থ হয়েছেন সেটাতো তারা উল্লেখ করেননি। তিনি বলেন, সাক্ষীদের প্রত্যেকেই বলেছেন যে খালেদা জিয়া তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার সময়ে মোস্তাফিজুর রহমান এই টাকা নিয়ে এসেছিলেন। তিনি (খালেদা জিয়া) তার বাড়িতে বসে এই ট্রাস্ট গঠন করেছিলেন।
মামলার নথিপত্র অনুযায়ী জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে বিদেশ থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩রা জুলাই রমনা থানায় দুদক এ মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ই আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়। ২০১৪ সালের ১৯শে মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। এ মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৬শে জানুয়ারি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
No comments