এভারেস্ট প্রকল্প থেকে ভারতকে বাদ দিয়েছে নেপাল, নেপথ্যে চীন!
নেপালের
সঙ্গে মিলে ফের মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা মাপার প্রস্তাব রেখেছিল ভারত।
কিন্তু নয়াদিল্লির এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি নেপাল। বরং গোটা সমীক্ষাটা
তারা একাই সারতে চাইছে। অবশ্য এ বিষয়ে ভারত ও চীন উভয় দেশ থেকেই প্রয়োজনীয়
তথ্য সাহায্য নেবে নিতে চায় কাঠমান্ডু। ২০১৯ সালে ওই কাজ শুরু হবে। ১৯৫৬
সালে শেষবার মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা মেপেছিল ভারত। ১৯৭৫ এবং ২০০৫ সালে
এককভাবে এভারেস্টের উচ্চতা মাপে চীনও। এরই মধ্যে ২০১৫ সালের এপ্রিলে
হিমালয়ে ঘটে গেছে ভয়াবহ ভূমিকম্প। যার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে প্রায় ৭.৮।
ওই ভূমিকম্পে মৃত্যু হয় অন্তত আট হাজার মানুষের। গৃহহীন হয়ে পড়েন লক্ষ
লক্ষ মানুষ। ভারতের ডিপার্টমেন্ট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির তরফে জানানো
হয়েছে, ২০১৫ সালের নেপালে ‘গোর্খা’ ভূমিকম্পের পরে বৈজ্ঞানিক মহলে
এভারেস্টের উচ্চতা নিয়ে সংশয় দেখা গেছে। এ বছরই ২৫০ বছর পূর্ণ করেছে সার্ভে
অব ইন্ডিয়া-সংস্থাটি। বর্তমানে এটি কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
মন্ত্রণালয়ের অধীনে। কয়েক মাস আগেই সংস্থাটি নেপালের জমি জরিপ দফতরের সঙ্গে
যৌথভাবে এভারেস্টের উচ্চতা মাপার কথা ঘোষণা করেছিল।
তবে এখন সেই যৌথ
উদ্যোগে সাড়া দিচ্ছে না নেপাল। আর নেপালের এই সিদ্ধান্তের পিছনে চীনের
উস্কানিই অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন ভারতীয় কূটনীতিকেরা। যদিও নেপালের
দাবি, মাপার কাজটি একাই সারতে চায় তারা। সার্ভেয়র জেনারেল অব ইন্ডিয়া মেজর
জেনারেল গিরীশ কুমার জানান, ভারতের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি কাঠমান্ডু। তবে
তারা বলছে, এই কাজে চীন কিংবা ভারত কারওকেই জড়াবে না। নিজেদের উদ্যোগের
এভারেস্টের উচ্চতা মাপবে তারা।’’ গিরীশ কুমার জানান, কাঠমান্ডুতে এ নিয়ে
একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে অন্যান্য দেশের সমীক্ষকরা ছাড়াও
উপস্থিত ছিলেন ভারত ও চীন উভয় দেশেরই একজন করে প্রতিনিধি। এমনিতেই গত জুন
মাস থেকে দোকলাম এলাকা নিয়ে ভারত ও চীনের সংঘাত চলছিল। সে সময়ে স্নায়ুযুদ্ধ
চলে একটানা ৭৩ দিন ধরে। এই মুহূর্তে অনেকটাই লঘু হয়েছে সেই সংঘাত। তবে
নিজেদের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই জারি রেখেছে দু’দেশই। আর সেই লড়াইয়ের পরে এ
বার নেপালকে ভারতের থেকে দূরে রাখতে উদ্যোগী হয়েছে চীন— এমনটাই মনে করছেন
ভারতীয় কূটনীতিকদের একাংশ। নেপালের সরকারি মুখপাত্র ভাট্টা জানিয়েছেন,
যৌথভাবে প্রকল্প না এগোলেও ভারত ও চীন— উভয়ের থেকেই উচ্চতা সম্পর্কে
প্রয়োজনীয় তথ্য সাহায্য চাইছেন তারা। ইতিমধ্যেই ভারতের কাছ থেকে এভারেস্টের
উচ্চতার সমান্তরাল পরিমাপ তথ্য এবং চিনের কাছ থেকে উল্লম্ব পরিমাপ তথ্য
চেয়ে পাঠিয়েছে তারা। ভাট্টা আরো জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে ওই প্রকল্প শুরু করবে
তারা। তবে এই প্রকল্পের জন্যে চীনের সীমানা লঙ্ঘন করতে চান না তারা।
No comments