প্রথম ইন্তিফাদায় অংশ নেয়া সেই কালো পোশাকের তরুণী
ফিলিস্তিনি
ভূমিদখলের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ যে শুধু মুসলিমদের নয়, সেখানকার ফিলিস্তিনি
খ্রিস্টানরাও ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ছিলেন সরব। তেমনই এক খ্রিস্টান
নারীর ছবি ফিলিস্তিনিদের প্রথম ইন্তিফাদা বা অসহযোগ আন্দোলনের (১৯৮৭) সময়
ভাইরাল হয়ে পড়ে। ৩০ বছর আগের সেই ছবিটি পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লেও কারো
জানা ছিল না ছবির নারীর পরিচয়। হলুদ স্যান্ডেল হাতে নিয়ে কালো পোশাকের
একজন ফিলিস্তিনি নারী ইসরাইলি পুলিশের দিকে পাথর ছুড়ে মারছেন এমন দৃশ্য
পুরো বিশ্বকে নাড়া দেয়। দখলকৃত পশ্চিমতীরের বেইট সাহোর গ্রামে ইসরাইলি
সেনাদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি তরুণদের সংঘর্ষের সময় ওই ছবিটি তুলেছিলেন আলফ্রেড
ইজোবযাদেহ। কিন্তু ছবির সেই নারীর পরিচয় এত বছরেও কারো জানা ছিল না।
সম্প্রতি তার পরিচয় জানা গেছে। তার নাম মিশেলাইন আওডা।
তিনি একজন
ফিলিস্তিনি খ্রিস্টান। ওই ঘটনার দিন তিনি ছিলেন সেখানকার এক চার্চে।
মিশেলাইন বলেন, সেদিন আমার বিশেষ একটি ম্যাসের অনুষ্ঠান ছিল, তাই ওরকম কালো
পোশাক পরেছিলাম। সেদিন কোনো বিক্ষোভ হবে বলে ভাবিনি। কিন্তু আমি দেখতে
পেলাম, ইসরাইলি সেনাবাহিনী এসে তরুণদের সঙ্গে লড়াই শুরু করেছে। আমি সেই
তরুণদের সঙ্গে তখনই যোগ দিলাম। একসময় আমি দৌড়াতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু
স্যান্ডেল পরে দৌড়াতে পারছিলাম না বলে সেগুলো খুলে হাতে নিলাম। পরে একসময়
নিচু হয়ে একটি পাথর কুড়িয়ে ইসরাইলিদের দিকে ছুড়ে মারলাম। কিন্তু আমি
জানতাম না কেউ আমার ছবি তুলছে। মিশেলাইন আওডার বয়স এখন ৬৩। তিনি স্থানীয়
একটি হোটেলে চাকরি করেন। তার দুই সন্তান রয়েছে, কিন্তু তিনি চান না তারা
আবার এ রকম কোনো সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ুক। প্রসঙ্গত, ইসরাইলি দখলদারিত্বের
প্রতিবাদে ১৯৮৭ সালে ‘ইন্তিফাদা’ বা গণজাগরণের আন্দোলন শুরু করেন
ফিলিস্তিনিরা। ওই আন্দোলনে ১ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি আর ২৭১ ইসরাইলি নিহত হন।
২০০০ সালে দ্বিতীয় দফার ইন্তিফাদা শুরু হয়েছিল। সেই সময় মারা যান ৩
হাজার ৩৯২ ফিলিস্তিনি আর ৯৯৬ ইসরায়েলি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক
জেরুজালেমকে দখলদার ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার পর তৃতীয় ইন্তিফাদার ডাক দেয়া
হয়। এখন পর্যন্ত এ লড়াইয়ে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন
দুই সহস্রাধিক।
No comments