আমেরিকা গ্রেট নয়, ফার্স্টও আর থাকবে না

এক বছর এখনও শেষ হয়নি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের। এরই মধ্যে দেশের ভেতরে ও বহির্বিশ্বে বড় ধরনের তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন রিয়েল এস্টেট মোগল থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়া ট্রাম্প। হুমকিতে ফেলেছেন বিশ্বজুড়ে আমেরিকার নেতৃত্বদানের গ্রহণযোগ্যতাকেও। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন পাওয়ার উদ্যোগ নেয়ার পর থেকেই নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়ে এসেছেন। এমনকি পপুলার ভোট (জনগণের দেয়া ভোট) প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে কম পেয়েও ইলেক্ট্ররাল কলেজ ভোট বেশি পেয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। এতে সমস্যার কিছু নেই, কারণ এটিই আমেরিকার গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। জটিল নির্বাচনী সমীকরণের কারণেও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন সব সময় তা নিয়ে দেশটির ভেতরে যতটুকু, ঠিক ততটুকুই উত্তেজনা থাকে সারা বিশ্বে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তার আগের প্রেসিডেন্টের অনেক সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন হিসেবে তিনি এটি করতে পারেন। দেশের সংবিধান তাকে সে ক্ষমতা দিয়েছে। ফলে আমেরিকার ভেতরে এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা প্রতিবাদের মুখে তাকে খুব একটা পড়তে হয়নি। এর মধ্যে আগের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নেয়া স্বাস্থ্যসেবা বিল (ওবামা কেয়ার হিসেবে পরিচিত), কর সংস্কারসহ কয়েকটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের আমেরিকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি আলোচিত-সমালোচিত সিদ্ধান্ত খুবই দ্রুততার সঙ্গে নিয়েছেন ট্রাম্প। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হওয়ায় সেগুলোর প্রতি বহির্বিশ্বে কোনো প্রভাব পড়েনি, দেশের ভেতরে তার সমর্থন কমা ছাড়া। ফলে ক্ষমতা নেয়ার পরপরই জনপ্রিয়তা সবচেয়ে কমে যাওয়া প্রেসিডেন্ট হয়েছেন তিনি। কিন্তু তার আরও কিছু সিদ্ধান্ত যেভাবে বহির্বিশ্বে আমেরিকার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে, এমনকি দেশটিকে কূটনৈতিকভাবে একঘরে করে দিয়েছে তাতে এমন প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয় তিনি ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ বা আমেরিকাকে ফের মহান কর- স্লোগান নিয়ে যে ক্ষমতায় এসেছেন তা কি বজায় থাকছে, নাকি পরাশক্তি হিসেবে বিশ্বে আমেরিকার একক নেতৃত্ব খোয়ানোর সূচনা হয়েছে? নিজের আচরণ, অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন না করার নীতি (বিশেষত নারীদের প্রতি), একরোখা মনোভাব ইত্যাদির কারণে নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই পাগলাটে, ক্ষেপাটে উপাধি পাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পরও তার একই আচরণ (দায়িত্ব নিলে ঠিক হয়ে যাবে- অনেকের এমন আশায় গুড়েবালি দিয়ে) বজায় রেখেছেন। ক্ষমতা নেয়ার পরপরই তিনি ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বা টিপিপি নামে আগের প্রেসিডেন্টের নেয়া বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করে দিয়েছেন, যার মধ্য দিয়ে তার কথিত আমেরিকা ফার্স্ট নীতি বাস্তবায়ন শুরু হয়। আসলে আমেরিকা ফার্স্ট নাকি ট্রাম্পের চাওয়াটাই ফার্স্ট এমন ভাবনা অত্যুক্তি হওয়ার কথা নয়। এরপরই গোটা বিশ্ববাসীর বহু প্রচেষ্টার ফল (অবশ্যই আমেরিকার শ্রম বেশি ছিল তাতে) প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাতিল করে দেন।
এ দুটি সিদ্ধান্তের পর ওয়াশিংটনের অনেক সমালোচনা হলেও তা ছিল লঘু। কারণ নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র মাইকেল ব্ল–মবার্গসহ বহু মার্কিন খ্যাতিমান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনে সরকারকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের পক্ষ থেকে তহবিল বরাদ্দ দিয়ে হলেও প্যারিস চুক্তি ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত আমেরিকা নিজেকে চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করেই নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী নানা আলোচনা-সমালোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত নিজেদের বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত তারা নিতেই পারে বিধায় সেগুলো নিয়ে দেশটিকে নাজেহাল হতে হয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত একতরফাভাবে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করে ও তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস সেখানে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে তোপের মুখে ঠিকই পড়েছে আমেরিকা (ট্রাম্প নয়), কারণ জাতিসংঘের নিরাপত্তা ও সাধারণ পরিষদে ভোট কিন্তু পড়েছে আমেরিকার বিপক্ষে, ব্যক্তি বা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিপক্ষে নয়। যেভাবে মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে একবার নিরাপত্তা পরিষদে (যদিও সেখানে ভেটো ক্ষমতা থাকায় প্রস্তাবটি আটকে দিয়েছে ওয়াশিংটন) ও আরেকবার সাধারণ পরিষদে আমেরিকার বিরুদ্ধে বিপুল ভোট পড়েছে (নিরাপত্তা পরিষদে ১৫-এর মধ্যে ১৪টি এবং সাধারণ পরিষদে ১২৮টি) তা একক বিশ্বশক্তি হওয়ার পর আমেরিকা আর কখনও মোকাবেলা করেছে বলে কোনো নজির নেই। এখানে দুটি বিষয় লক্ষণীয়, একটি হল আমেরিকাকে আবার মহান করা ও আমেরিকা ফার্স্ট নীতি, অন্যটি হল মার্কিন কূটনীতির শিষ্টাচার। একটি দেশকে যদি মহান করতে হয় তবে তো প্রথমে তাকে সবার সমীহ আদায় ও নেতৃত্বদানের অবস্থানে ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। অন্যদিকে আমেরিকা ফার্স্ট-এর অর্থও তো এমনটিই হওয়ার কথা যে আমেরিকা থাকবে সবার সামনের সারিতে, অন্যরা সবাই তাকে অনুসরণ করে পেছনে চলবে। সেক্ষেত্রে ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময় ইসরাইলের দখলে নেয়া সব অঞ্চল থেকে ইসরাইলকে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে এবং জাতিসংঘের ২৪২ নং প্রস্তাব থেকে নিরাপত্তা পরিষদের অন্তত সাতটি প্রস্তাব (২৫২, ২৬৭, ২৭১, ২৯৮, ৪৬৫, ৪৭৬ ও ৪৭৮) উপেক্ষা করে একতরফা জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়ে আমেরিকাকে যে ফের মহান করা যাবে না, তা তো বিশ্ববাসী চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। গোটা বিশ্ব বলছে নানা হুমকি-ধামকির পরও ১২৮টি দেশের জেরুজালেম ইস্যুতে আমেরিকার বিপক্ষে ভোট দেয়া, ৩৫টি দেশের ভোটদানে বিরত থাকা ও সর্বোপরি ২১ দেশের অনুপস্থিতি এবং মাত্র ৭টি দেশের ভোট (আমেরিকা ও ইসরাইল বাদে) পাওয়া সুপার পাওয়ার দেশটির কূটনৈতিক পরাজয় এবং নিশ্চয় দেশটির নাগরিকদের এটা হজম করা অনেক কঠিন। নিউইয়র্ক টাইমস এ পরাজয়কে বলেছে, আত্ম-পরাজয়। এমন একটি উদ্যোগ নিয়ে হেরে যাওয়া যার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। যা হোক, কোনো কিছুর তার শীর্ষবিন্দু থেকে পড়ে যাওয়ার জন্য এমন অপ্রয়োজনীয় সামান্য ভুলেরই দরকার হয়। আমেরিকা আজকে যে অবস্থানে আছে, একদিনে তাতে পৌঁছায়নি দেশটি। এজন্য এর বহু প্রজন্মকে কত শ্রম দিতে হয়েছে, যুগের পর যুগ কত কূটনৈতিক প্রচেষ্টা নিতে হয়েছে, কত অর্থের জোগান দিতে হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। অথচ এক জেরুজালেম ইস্যু (তা-ও নিজেদের সরাসরি স্বার্থ নয়) নিয়ে আমরা আমেরিকার কূটনীতির যে বিশ্রি অবস্থা দেখেছি, একে আসলে আমেরিকান ডিপ্লোমেসি বলা যায় না। বড়জোর একে বলা যেতে পারে পাড়ার পাতি মাস্তানের হুমকির মতো। কল্পনা করুন তো, নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবে ওয়াশিংটনের বিপক্ষে ১৪টি দেশ ভোট দেয়ার পর আমেরিকার স্থায়ী প্রতিনিধি নিকি হ্যালি বলেছেন, ‘এটি আমেরিকা মনে রাখবে। জীবনে কখনও বিষয়টি ভুলব না’। সাধারণ পরিষদে একই ধরনের আরেকটি প্রস্তাব তোলার আগে তো রীতিমতো হুমকি দিয়ে ও সদস্য দেশগুলোকে মেইল পাঠিয়ে নিকি হ্যালি বলেছেন, কে কে আমাদের বিপক্ষে ভোট দেয় তা টুকে রাখা হবে এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানানো হবে। এমনকি বিপক্ষে ভোট দিলে আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়। খোদ ট্রাম্পও বলেছেন, আমরা তাদের পেছনে অর্থ ব্যয় না করে সঞ্চয় করব। লক্ষণীয় বিষয়, এমন হুমকি-ধামকির পরও সদস্য রাষ্ট্রগুলো সেটা শোনেনি। আসলে কূটনীতির কাজ পাতি রাজনৈতিক নেতার মতো হুমকি দিয়ে যে হয় না, এটি তারই নজির। বরং এতে হিতে বিপরীত হয়েছে বলা যায়। তার প্রমাণ হল কানাডা সাধারণত যে কোনো বিষয়ে আমেরিকার পক্ষে ভোট দিলেও ওয়াশিংটনের হুমকি-ধামকিতে বিরক্ত হয়ে এবার ভোটদানেই বিরত থাকে। অন্যদিকে হুমকি দিলেও পদ্ধতিগত ও দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের কারণে হয়তো আমেরিকা অনুদান দেয়া বন্ধ করতে পারবে না অনেক দেশকে। ফলে এবার আমেরিকার ভয়ে ভোটদানে বিরত থাকা ও অনুপস্থিত থাকা দেশগুলো ভবিষ্যতে দেশটির অসঙ্গত চাপকে আমলে না-ও নিতে পারে। প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর রাজনৈতিক ভাষায় নিকি হ্যালি বলেছেন, আমেরিকা আর বিশ্ববাসীর বড় কোনো ইস্যুতে সঙ্গে থাকবে না। জানতে ইচ্ছে করে, এ প্রস্তাবের একদিন পরই আমেরিকার প্রস্তাবে পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হল সর্বসম্মতিতে, তাতে যদি উত্তর কোরিয়ার মিত্র চীন বা রাশিয়া ভেটো দিত, তবে কি প্রস্তাবটি পাস হতো? এবং তেমনটি ঘটলে মার্কিনিদের কেমন লাগত? এবার আসি আমেরিকার অনুদান ও দেশটির জাতিসংঘকে চাঁদা দেয়ার বিষয়ে। জাতিসংঘ যেসব দেশকে অনুদান দেয় তাদের থেকে কৌশলগত, বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক স্বার্থে আরও বহুগুণ বেশি কি আদায় করে নেয় না? এক ইসরাইলের পেছনে হয়তো আমেরিকা নিঃস্বার্থ ব্যয় করে, অন্য কারো বেলায়ই তা বিভিন্ন স্বার্থের বাইরে নয়। এছাড়া যেসব দেশ ওয়াশিংটনের অনুদান ছাড়া চলতে পারবে না তারাই- নাউরু, মার্শাল আইল্যান্ডের মতো ক্ষুদ্র ৭টি দেশ বাদ দিলে বাকিরা তো বুঝিয়ে দিয়েছে যে, তারা আমেরিকার অনুদান ছাড়াই চলতে পারে। বরং অনেক ক্ষেত্রে তাদের অনুদান নেয়ার কারণে সার্বভৌমত্ব নিয়ে দরকষাকষির মুখে পড়তে হয়, যাতে তারা বিরক্ত। এছাড়া সদস্য ফি ৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়া আমেরিকা জাতিসংঘকে অতিরিক্ত ৬ বিলিয়ন ও শান্তিরক্ষী বাহিনীকে আড়াই বিলিয়ন ডলার দেয়, তা-ও বিভিন্নভাবে তাদের স্বার্থের পক্ষে বলেই তো দেয়। যদি এসব অনুদান বন্ধ করাও হয় (যদিও সেটা করার যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই এবং পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বলেছেন কেবল ভোটের ভিত্তিতে অনুদান বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেই), তাতেও সমস্যার কিছু নেই। সংস্থাগুলো চলতে পারবে।
কারণ, বর্তমানেসহ বহুবার আমেরিকা ইউনেস্কো থেকে সরে গেছে ও অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু এতে সংস্থাটির কার্যক্রম খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। যা হোক, জেরুজালেম ইস্যুতে আমেরিকার একগুয়েমির কারণে এরই মধ্যে ফিলিস্তিন বলে দিয়েছে তারা আমেরিকাকে আর মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মানবে না। এরই মধ্যে রাশিয়া নিজেকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে প্রস্তুত বলে ঘোষণাও দিয়ে ফেলেছে। মস্কোর যে সে সক্ষমতা আছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের বিপক্ষে গিয়ে সিরিয়া সংকট সমাধানের পথ দেখিয়ে তার প্রমাণও দিয়েছে সাবেক সোভিয়েত পরাশক্তি। ক্ষমতায় এক বছর পূর্ণ করার আগে ট্রাম্প এমন একটি পরিস্থিতিতে পড়েছেন, যাতে পূর্বের কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টকে পড়তে হয়নি। গোটা মুসলিম বিশ্ব, ইউরোপ, এমনকি ইসরাইল ছাড়াও খোদ খিস্ট্রান সম্প্রদায়- সবাই ট্রাম্পের জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী স্বীকৃতির বিরোধিতা করছেন। এ অবস্থায় ট্রাম্প প্রশাসন তার অবস্থানে অনড় থাকবে নাকি পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটানোর জন্য নমনীয় হবে, তার ওপর ভবিষ্যৎ যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব নির্ভর করছে। কারণ কেউ এগিয়ে না এলে বাকি বিশ্ব তার জন্য বসে থাকবে, এমন দিন শেষ। চীন ও রাশিয়া যে কোনো ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে, অনুদান-বিনিয়োগ ঢালতে যে চাতক পাখির মতো বসে আছে, আমেরিকাও তা জানে। এজন্যই কিছু বিশ্লেষক বলছেন, এটা মূলত নির্বাচনী প্রচারণায় রাশিয়া-সংশ্লিষ্টতা থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য ট্রাম্পের কৌশল। যদি তা-ই হয় তবে ভালো। অন্যথায় জেরুজালেম ইস্যুই হতে পারে আমেরিকার নেতৃত্ব খোয়ানোর সূচনা। উর্দু একটি প্রবাদের বাংলা এমন- ‘বহু বছর কষ্টের পর যা কিছু অর্জিত হয়, সেগুলো জোড়ানো যত কঠিন, খোয়ানো তার ছিটেফোঁটাও নয়’। পূর্বসূরি ও মার্কিন জাতির কয়েক শতাব্দীর প্রচষ্টোর ফল- অর্জিত নেতৃত্ব ও মহত্ত্ব খুইয়ে আমেরিকাকে একঘরে করে ফেলতে যাচ্ছেন এক বছরেও নিজের টিম গঠন পূর্ণাঙ্গ করতে না পারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এটা আর যাই হোক ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ অন্তত নয়। বর্তমানে উদীয়মান পরাশক্তি দু-একটির দেখা মিললেও কেবল ইসরাইলের বেলায় একচক্ষু নীতি ছাড়া মানবাধিকার ও অন্যান্য ক্ষেত্রে আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বী কাউকে এখনও যে বিশ্ববাসী প্রত্যাশা করে না- আমেরিকানদের তা বুঝতে হবে। অন্যথায় আরও বেশি একঘরে হয়ে পড়া সময়ের ব্যাপার।
সাইফুল ইসলাম : সাংবাদিক
saifulh92@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.